বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল খুলনার দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ধেয়ে আসছে। অন্যান্য সময়ের ন্যায় এটি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তবে এখনি ঘূর্ণিঝড়টি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
আজ শনিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যেহেতু এটি এখন পর্যন্ত লঘুচাপ হয়ে আছে, এখনই আতঙ্ক কিংবা শঙ্কার কিছু নেই। আরেকটা বিষয় হলো ঘূর্ণিঝড় এগোনোর সময় প্রতিমুহূর্তে দিক পরিবর্তন করে। দিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন এলাকা আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়ে। সেজন্য আমরা আমাদের পুরো উপকূলকে সতর্ক করব, প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবহাওয়া অফিস ইঙ্গিত দিয়েছে , ভারতের উত্তর আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে আঘাত হানতে পারে। সবশেষ উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে আগামী বুধবারের দিকে বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত দেন আবহাওয়া অফিস।
বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বুধবার (১০ মে) দুপুরের আগেই এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে বিদেশি আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, নিম্নচাপটি বর্তমানে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে উত্তরদিকে অগ্রসর হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টা তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরনের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ‘মোখা’ মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) প্রধান ডা. এম মহাপাত্র।
তিনি বলেন, ঝড়টি আগামী ১১ মে পর্যন্ত উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে কেন্দ্রীয় বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটি মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ১১ মে বঙ্গোপসাগরে ঝড়টির বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার হতে পারে। এরপর ঝড়টির দিক পরিবর্তন হয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূলের দিকে যাবে। সূত্র: ইত্তেফাক
সিলেটে আবারও বন্যার আশঙ্কা করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। গত মাসেই সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়ে যায় এই বিভাগে। ১১ মে থেকে সিলেটে বন্যা দেখা দিলে তলিয়ে যায় ১২টি উপজেলার অধিকাংশ এলাকা।
এই বন্যার রেশ কাটতে না কাটতে আবারও সিলেটে বন্যার আশঙ্কায় হাওরবাসী চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। আগের বন্যায় কৃষি, সড়ক, বাঁধ, ঘরবাড়ি ও মাছের খামারের ব্যাপক ক্ষতি হয়। সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি রয়েছে। এখন নতুন করে বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া পেয়ে নদী ও হাওর তীরের মানুষ ভীষণ উদ্বিগ্ন।
গত বৃহস্পতিবার থেকে অবিরাহম বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানান, বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে। এতে সুরমা-কুশিয়ারা অববাহিকায় বন্যা দেখা দিতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সিলেটে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় কানাইঘাটে ৬৭ মিলিমিটার ও সিলেটে ৯৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। ভারতের বরাক নদীর পানি অমলসিদ পয়েন্টে বেড়ে কুশিয়ারা ও সুরমায় চাপ সৃষ্টি করেছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলছেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল তথা সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে চলতি মাসে স্বল্পমেয়াদী বন্যার সৃষ্টি হতে পারে। ভারি বর্ষণের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল, উত্তর মধ্যাঞ্চল ও দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের কিছু কিছু জায়গায় স্বল্পমেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে। সূত্র: ইত্তেফাক