পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২০ সে.মি. ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৬টায় তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহের উচ্চতা রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ মিটার ৩৫ সেন্টিমিটার। অর্থাৎ বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার (বিপৎসীমা ৫২ মিটার ১৫ সেন্টিমিটার) ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, রংপুর গংগাচড়ার লক্ষ্মীটারী, নীলফামারীর ডিমলার কালিগঞ্জ, ঝাড়সিংহেশ্বর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর, ডাউয়াবাড়ী, লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ফকিরপাড়া, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ি, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারীর মহিষখোচা, পলাশী ও সদরের ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর এবং গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌলা গণমাধ্যমকে জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ বাড়তে শুরু করেছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
সোমবার সকাল ৬টা বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। সূত্র: ইত্তেফাক
হবিগঞ্জ জেলা শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার সুরাবই টিলার নিকটস্থ জসিম মিয়ার বাড়ীর উঠানে গত ০১-১০-২০২১ইং সকাল ৭-৩০ মিনিটে পূর্ব শত্রুতার জেরে দুলাল মিয়া ৩৯ কে হাটুতে কূপ দেয় একই উপজেলা ও একই গ্রামের মৃত হাসিম মিয়ার ছেলে কুখ্যাত ফারুক ওরফে লাদেন।
গুরুতর আহত দুলালকে এলাকাবাসী ও তাঁহার আত্মীয় স্বজন উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় দুলাল মিয়া স্বাক্ষরিত এক এজাহার শায়েস্তাগঞ্জ থানায় দাখিল করা হয়। যাহা নং ০২-তাং ০২-১০-২০২১ইং ধারা ৪৪৭/৩২৩/৩২৬/৩০৭/৫০৬ জি আর মোকদ্দমা নং ৯২/২০২১ ইং শায়েস্তাঃ সাধাঃ ডাঃ ৪৩০৯(৩)/১- তাং ০২-১০-২০২১ইং।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একই গ্রামের জসিম মিয়া কুখ্যাত ফারুক ওরফে লাদেন এর ভয়ে নিজ ঘরবাড়ি ভেংগে নিয়ে অন্যত্র বসবাস করার প্রস্তুতি নেয়। পুরাসুন্দা গ্রামের মৃত হাজি মুতি মিয়ার পুত্র দুলাল মিয়া ৩৯ জসিম মিয়ার স্ত্রীকে বলে ভাবী ঘর দোর ভেংগে ফেলছেন কেনো? ইহা বলার সাথে সাথেই ফারুক মিয়া ওরফে লাদেন রামদা দিয়া দুলাল প্রানে হত্যার উদ্দ্যেশ্যে কূপ দেয়। প্রাণ ভয়ে দুলাল লাফ দিলে মাটিতে পড়ে যায়। কূপটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে দুলালের বাম পায়ের হাটুতে পড়ে, হাটুটির প্রায় অর্ধেক দায়ের আঘাতে কেটে যায় এবং অবস্থা অতি গুরুতর।
প্রথমে কূপ ও পরে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করে। জখমী দুলাল মিয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়, যার রেজিঃ নং ১৬১১৮ তাং ০১-১০-২০২১ ইং।
এ বিষয়ে শায়স্তাগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোঃ মুর্শেদ আলম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। জখমীর স্বাক্ষরিত আবেদন আমরা পাইয়া তদন্ত করি, তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এফ আই আর মূলে আসামীকে গ্রেফতার করতে অভিযান পরিচলনা করা হচ্ছে। আসামী পালিয়ে আছে, তবে অনতিবিলম্বে আসামীকে ধৃত করে বিজ্ঞ কোর্টে সোপর্দ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নজরুল একাডেমির কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে শুক্রবার বিকেলে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী 'বিদ্রোহী' কবিতার ওপর হাসান আলীম রচিত 'কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার নন্দনতত্ত্ব ' গ্রন্থ নিয়ে একটি মনোজ্ঞ আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন নজরুল একাডেমির সভাপতি সাবেক রাষ্ট্রদূত জনাব মসউদ মান্নান। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট কবি ও গবেষক ড. মাহবুব হাসান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, নজরুল গবেষক, নজরুল সংগীতজ্ঞ, নজরুল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মিন্টু রহমান।
নন্দনতত্ত্ব গ্রহ্নের ওপর মূল্যবান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্দান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক জসিম উদ্দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য পেশ করেন বিশিষ্ট কবি ও গীতিকার জাকির আবু জাফর, বিশিষ্ট গবেষক অধ্যাপক ড.ফজলুল হক সৈকত, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট হারুন ইবনে শাহাদাত, বিশিষ্ট সাহিত্যিক, অনুবাদক, ইংরেজির শিক্ষক আনিস ফাতিমা। ধন্যবাদ জানান নজরুল একাডেমির সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল হান্নান।
অনুষ্ঠানে নজরুলের বিদ্রোহী কবিতার আবৃত্তি করেন রোকসানা ইমাম। নজরুলকে নিবেদন করে কবিতা পাঠ করেন কবি এম আলীম, কবি সাইফ সাদী, কবি সুমন রায়হান, কবি শাহীনুল ইসলাম, কবি রাহমান মাজিদসহ আরো অনেকে।
প্রবন্ধকার অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, নজরুল একাডেমিতে ধারাবাহিকভাবে তিন বছর গবেষণা করে হাসান আলীম এই অসাধারণ গ্রন্থ রচনা করেছেন। আমার মতো কোনো অধ্যাপকের ৩০ বছর গবেষণা করেও এ রকম একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থ রচনা করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন এ গ্রন্হের চৌদ্দটি অধ্যায় মৌলিক গবেষণা। হাসান আলীম যেভাবে প্রতিটি শব্দের বিশ্লেষণ এবং গাণিতিক ফর্মুলার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছেন তা একেবারে নতুন। আর কোনো গবেষক এভাবে কোনো কবিতার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করতে পারেনি। এটি একটি অসাধারণ গবেষণা গ্রন্থ।
প্রধান অতিথি ড.মাহবুব হাসান বলেছেন, হাসান আলীম বিদ্রোহী কবিতার নন্দনতত্ত্ব যেভাবে বিশ্লেষণ করেছেন তা আমার কাছে একেবারে নতুন লেগেছে। আমার জানা মতে এমন আর একটি গ্রন্থ আমাদের ভাষায় রচিত হয়নি। তিনি বলেন, বিদ্রোহী কবিতার ধ্বনিতত্ত্ব, ধ্বনি তাত্ত্বিক ম্যাজিক নম্বর, ছন্দ বিশ্লেষণ, চিত্রকল্প, অলংকার ও রস প্রসঙ্গে হাসান আলীম যে বিশ্লেষণ করেছেন, তাতে আমি বিস্ময় প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন বিদ্রোহী কবিতার এত বিস্তৃত বিশ্লেষণ হতে পারে তা আমার ধারণা ছিল না। আর কারো পক্ষে এমন বিশ্লেষণ করা সম্ভব কিনা আমার সংশয় জাগে। হাসান আলীম একটি অসাধারণ কাজ করেছেন।
কবি জাকির আবুজাফর বলেন, এটি হাসান আলীমের একটি অসাধারণ কাজ। কত রাত জেগে জেগে কঠিন সাধনা করে এ অসাধারণ গ্রন্থটি রচনা করেছেন তার হিসেব মেলানো দুষ্কর। এ গবেষণা গ্রন্থটি বিদ্রোহী কবিতার সাথে সাথে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
তিনি বলেন, বিদ্রোহী কবিতার এত নন্দনতাত্বিক বিশ্লেষণ আর কেউ করতে পারেননি।
অধ্যাপক ড.ফজলুল হক সৈকত বলেন, হাসান আলীম একজন বিশিষ্ট কবি ও গবেষক। তিনি আমাদের মতো অধ্যাপক নন। তিনি কবিতার নন্দনতত্ত্ব এবং শিল্প বোঝেন। চমৎকার করে তিনি যেভাবে বিদ্রোহী কবিতার নন্দনতত্ত্ব বিশ্লেষণ করেছেন তা কোনো অধ্যাপকের পক্ষে সম্ভব নয়- কারণ অধ্যাপকেরা কবিতা হত্যা করে, ভালো মন্দ বলে, ডিসেকশন করে- কবিতার নন্দনতত্ত্ব বা শিল্প আলোচনা করেন না। কিন্তু হাসান আলীম নিগুঢ়ভাবে কবিতার সৌন্দর্য বিশ্লেষণ করেছেন। এ গ্রন্থটি পিএইচডি গবেষণা এবং উচ্চতর শিক্ষার জন্য রেফারেন্স বই হতে পারে। পাঠ্য হতে পারে।
কলামিস্ট এবং সাংবাদিক হারুন ইবনে শাহাদাত বলেন, বিদ্রোহী কবিতা নিয়ে যে অপবাদ অপব্যাখ্যা ছিল, ধর্মীয়গোড়ামীর অপঘাত ছিল, তা হাসান আলীম অত্যন্ত বিজ্ঞতার সাথে, যুক্তি নির্ভরভাবে, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা পৃথিবীর মধ্যে অদ্বিতীয় এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কবিতা। প্রেস বিজ্ঞপ্তি