a
সংগৃহীত ছবি
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে গত মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর আশপাশের ৭টি জেলায় কঠোর লকডাউন চলছে। আগামী বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত সারা দেশ থেকে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন রাখতেই সরকারের এই পদক্ষেপ। তবে সরকার কঠোর লকডাউন দিলেও মানুষের মধ্যে তার মানার ইচ্ছা নেই। তারা চলাচল করছেন স্বাভাবিক নিয়মেই। পার্থক্য শুধু লকডাউনে থাকা ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোর পরিবহন বন্ধ রয়েছে। তবু থেমে নেই মানুষের চলাচল। প্রাইভেটকার বা হেঁটে ঢাকায় ঢুকছেন মানুষ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা এসব চিত্র দেখা গেছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক ধরে আশপাশের জেলা থেকে অনেকেই ঢাকায় প্রবেশ ও ত্যাগ করছেন। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, জরুরি কাজেই ঢাকায় আসছেন ও ঢাকা থেকে যাচ্ছেন। ভেঙে ভেঙে চলাচল করায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও।
ভৈরব থেকে আসা কামরুল ইসলাম জানান, জরুরি কাজে তিনি বাড়িতে গিয়েছিলেন। অফিস খোলা থাকায় তাকে ঢাকা ফিরতে হয়েছে। মাইক্রোবাস ও বিভিন্ন পরিবহনযোগে তিনি ঢাকায় এসেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা ছোট চাকরি করি। কাজ না থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে। অফিস ও বাড়ি দুই-ই সামলাতে হয়। করোনার কারণে বাইরে চলাফেরা করা ঠিক না, এটা আমরাও বুঝি। কিন্তু উপায় না পেয়েই চলাচল করতে হচ্ছে।
এদিকে জরুরি কাজে সিরাজগঞ্জ যাবেন রতন মিয়া। তিনি বলেন, বাড়িতে যাওয়া খুবই দরকার। কিন্তু বাস চলাচল বন্ধ। কীভাবে যাব, কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তরা) মো. সাইফুল হক বলেন, ঘোষণা অনুযায়ী গাজীপুরেও লকডাউন চলছে। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের উত্তরার এই অংশে কোনো দূরপাল্লার বাস চলাচল করছে না। সড়ক নিয়ন্ত্রণে আমাদের টিম কাজ করছে। তবে অনেকেই অটোতে, রিকশায় এমনকি পায়ে হেঁটে শহরে প্রবেশ করছে।
এদিকে গাবতলী ফাঁকা থাকলেও আমিনবাজার ব্রিজের ওপর থেকে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। প্রাইভেটকার ও ট্রাকের জটে মানুষ পায়ে হেঁটেই আমিনবাজার পাড়ি দিচ্ছেন। অন্যদিকে সিএনজি অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত প্রাইভেট কারও যাত্রী পরিবহন করছে। প্রাইভেট কারগুলো সুযোগ বুঝে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া গ্রহণ করছে।
ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড মোড়ে একটি ছোট্ট শিশুকে সঙ্গে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন নোয়াখালীর চাটখিলের বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব রহিমা খাতুন। সম্প্রতি সৌদিপ্রবাসী ছেলেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদায় দিতে আসেন। যখন ঢাকায় আসেন তখন নোয়াখালী রুটে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু দেশে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সাত জেলায় লকডাউন ও ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ পথে বাইরের জেলা থেকে জরুরি পরিবহন ছাড়া সব যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা তিনি জানতেন না বলে জানান।
ফাইল ছবি
আবারও সিলেটে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রবিবার (৩০ মে) ভোর ৪টা ৩৫ মিনিট ৭ সেকেন্ডে দুই দশমিক ৮ মাত্রার এ ভূ-কম্পন অনুভূত হয়।
সিলেট আবহাওয়া ও ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহমুদুল হাসান সোহেল এ তথ্য নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভূমিকম্পটি খুবই মাইনর ছিল। তাই এটি আমাদের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়নি।
এর আগে শনিবার (২৯ মে) দেশের ইতিহাসে প্রথম একই অঞ্চলে একদিনে ৪ দফা ভূ-কম্পন অনুভূত হয়।
আবহাওয়া ও ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, শনিবার সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে রিখটার স্কেলে ৩ মাত্রার, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে ৫৩ সেকেন্ডে ৪ দশমিক ১ মাত্রার, ১১টা ২৯ মিনিট ৫১ সেকেন্ডে ২ দশমিক ৮ মাত্রার এবং ১টা ৫৮ মিনিটে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এর উৎপত্তিস্থল সিলেটের জৈন্তাপুর ও এর আশপাশে ছিল।
এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একই এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ২০২০ সালের এপ্রিলে সিলেট অঞ্চলে আরেকটা ভূমিকম্প হয়। এগুলো ছোটমাত্রার ভূমিকম্প ছিল।
শনিবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকেবলেছিলেন, ‘সিলেট অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই ভূমিকম্পের ঝুঁকির মধ্যে। বিশেষ করে তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশ। সিলেটের জৈন্তায় আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। তবে সবগুলোই ছোটো ধরনের ভূমিকম্প।’
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘ভূমিকম্পের প্রি-শক ও আফটারশক থাকে। অনেক সময় বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট কম্পন হয়। আবার বড় ভূমিকম্প হলে তারপর ছোট ছোট কম্পন হয়। যেহেতু সিলেট অঞ্চল ভূমিকম্পপ্রবণ সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। তাছাড়া ওই অঞ্চলে বড় ভূমিকম্পের ইতিহাস আছে।’
এদিকে শনিবারের ভূমিকম্পে সিলেট নগরের পনিটুলার দুটি বহুতল ভবনে হেলে পড়েছে। রাতে ওই স্থান পরিদর্শন করেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। পরে তিনি ওই বাসার সবাইকে রাতের মধ্যে সরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
ফাইল ছবি
যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় জ্বালানি পাইপলাইনে র্যানসামওয়্যার (ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে অর্থ দাবি) সাইবার হামলার পর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গতকাল রোববার (৯ মে) একটি বড় পাইপলাইন বন্ধ করার পর জ্বালানি ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সরবরাহ অব্যাহত রাখতেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
জানা যায়, কলোনিয়াল পাইপলাইনের মাধ্যমে দিনে ২৫ লাখ ব্যারেল জ্বালানি সরবরাহ করা হয়। যা ইস্ট কোস্টে সরবরাহ করা ডিজেল, গ্যাসোলিন ও জেট ফুয়েলের মোট ৪৫ শতাংশ। সাইবার অপরাধী গ্যাংয়ের হামলার পর এটি পুরোপুরি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বর্তমানে যা মেরামতের কাজ চলছে। জরুরি অবস্থা জারি হলেও সড়ক দিয়ে জ্বালানি পরিবহন সম্ভব হবে বলে জানানো হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজ সোমবার (১০ মে) জ্বালানির মূল্য ২ থেকে ৩ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা আছে। তবে এটি সময় বেশি নিলে পরিস্থিতি অনেক খারাপ হবে বলে জানান।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ডার্ক সাইড নামের সাইবার-অপরাধীদের দল এই র্যানসামওয়্যার হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার তারা কলোনিয়াল নেটওয়ার্কে অনুপ্রবেশ করে। পরে প্রায় ১০০ জিবি সমান উপাত্ত আটকে রাখে।
তথ্য-উপাত্ত আটকে রেখে তা কয়েকটি কম্পিউটার ও সার্ভারে স্থানান্তর করে তারা। শুক্রবার তারা তথ্য-উপাত্তগুলো ফেরত দেওয়ার বিনিময়ে মোটা অংকের অর্থ দাবি করেছে। যদি সে অর্থ না-দেওয়া হয়, তবে ইন্টারনেটে সেসব উপাত্ত ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়।