ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে বালুবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে শতাধিক যাত্রীবাহী একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার ফলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৯ নারী ও শিশু রয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম জানা যায়নি।
শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইস্কা বিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করেছেন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়েছে। আহতদের কয়েকজন হলেন- আইয়ূব মিয়া (৪০), ইব্রাহীম (১২), আহমদউল্লাহ (১৩), মুরাদ মিয়া (৩৫), তানজির (১০) ও ফারুক মিয়া (৪৫)।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খাঁন ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে দেখতে আসেন।
নৌকার যাত্রী সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের আঁখি আক্তার বলেন, তিনি তার স্বামী মুরাদ মিয়া, দুই ছেলে, শাশুড়ি, ভাসুরের তিন ছেলেসহ বিজয়নগরের চম্পকনগর ঘাট থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আনন্দবাজার ঘাটে আসতে নৌকায় উঠেন। নৌকায় প্রায় শতাধিক যাত্রী ছিলেন। নৌকাটি পথিমধ্যে লইস্কা বিলে এসে বালুবোঝাই একটি ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। তিনি তার স্বামী ও এক শিশু পুত্রকে নিয়ে সাঁতরে বিলের কিনারে আসতে পারলেও তার আরেক ছেলে, শাশুড়ি ও ভাসুরের তিন ছেলে নিখোঁজ রয়েছে।
অপরদিকে, হাসপাতালে আহত মুরাদ মিয়া বলেন, হঠাৎ ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। তারপর অনেক কষ্টে এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে সাঁতরে উপরে উঠেছি। আমার এক ছেলে, মা ও তিন ভাতিজা এখনো নিখোঁজ।
নৌকায় থাকা যাত্রী মোহাম্মদ রাফি বলেন, আমি নৌকার ছাদে বসেছিলাম। বিজয়নগরের চম্পকনগর নৌকাঘাট থেকে বিকাল সাড়ে ৪টায় নৌকাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার আনন্দ বাজার ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। নৌকাটি লইস্কার বিলে এলে বালুবোঝাই একটি ট্রলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। আমি ঝাঁপ দিয়ে পানিতে পড়ে সাঁতরে উপরে উঠি। তিনি আরও বলেন, নৌকার নিচে ও উপরে শতাধিকের মতো যাত্রী ছিল।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে আছি। এ পর্যন্ত ৯ নারীসহ ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এখনো নৌকাটি উদ্ধার করা যায়নি। তিনি বলেন, হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার দাবিতে রাজধানীর বনানীতে কামাল আতাতুর্ক সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নুরে আজম মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘হাফ পাস থাকলেও সম্ভবত কোনো শিক্ষার্থীর কাছে হাফ ভাড়া নেওয়া হয়নি এ কারণে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করতে পারেন।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গুলশান-বনানী-নতুনবাজার রোডে চক্রাকার যেসব বাস চলাচল করে সেগুলোতে কর্তৃপক্ষ হাফ ভাড়া নিচ্ছে না। অথচ প্রতিদিন প্রায় হাজারখানেক শিক্ষার্থী এই পথে যাতায়াত করে। আড়াই কিলোমিটার দূরত্বের এই পথে ভাড়া নেওয়া হয় ৩০ টাকা।
বনানী বিদ্যানিকেতনের শিক্ষক ও পুলিশ দুপুর সোয়া ১২টার দিকে শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা দাবি মানার ঘোষণা না দিলে সড়ক থেকে সরবে না বলে জানিয়ে দেয়। সূত্র: ইত্তেফাক
বিস্ফোরণের পর চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে টিন ও লোহার টুকরা। আশপাশের অনেক ভবনের দেয়াল ফেটে গেছে। উড়ে গেছে টিনের চালা। ভেঙে গেছে অনেক ঘরের কাচ। এলাকাবাসীরা বলছেন, বিস্ফোরণের পরের অবস্থা দেখে তাঁদের মনে হয়, এ যেন এক বিধ্বস্ত জনপদ।
গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। শিল্পে ব্যবহৃত অক্সিজেন উৎপাদনের এ কারখানায় বিস্ফোরণে অন্তত ৬ জন মারা যান এবং গুরুতর আহত হন ৩০ জন।
কারখানাটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। বিস্ফোরণে কারখানার আশপাশের অন্তত এক বর্গকিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। এমনকি বিস্ফোরণস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূর পর্যন্ত উড়ে যায় লোহার পাত। আশে পাশের বিভ্ন্নি ভবনের দেয়াল ও ছাদ বিদ্ধস্ত হয়ে যায়। পাশাপাশি ভেতরে আরও নিহত ও আহত ব্যক্তি থাকতে পারেন বলে অনেকে মনে করছেন।
এলাকাবাসী বলছেন, বিকট শব্দ ও কম্পনে তাঁরা ভয় পেয়ে যান। কারও মনে হয়েছে, হয় তো বড় ভূমিকম্পন হয়েছে। কেউ ভেবেছেন, বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। তারা দাবি করছেন বার বার সীতাকুন্ডে এধরণের অগ্নিকান্ড ও বিস্ফোরন না হয় তার স্থায়ী সমাধান আশা করছেন।
কদমরসুলের সীমা অক্সিজেন কারখানা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে জাহানপুর এলাকা। এলাকাটির বাসিন্দারা গতকাল বিকেলে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনে ভয় পেয়ে যান।
বিস্ফোরণে লোহার পাত আধা কিলোমিটার দূর পর্যন্ত উড়ে যায়। এই লোহার পাতের আঘাতে দুজন মারা যান। এখনো নিহত ও আহতের পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালগুলোতে ভীড় করে আছেন।
সীমা অক্সিজেন কারখানা থেকে অন্তত ৩০০ মিটার দূরে আল ছাফা রিরোলিং মিল। বিকট শব্দে মিলটি কেঁপে ওঠে এবং ভেঙে যায় মিলের কাচ। আশে-পাশে অনেক ক্ষয় ক্ষতি হয়। সূত্র: প্রথম আলো