রাজশাহী মহানগরীর নামোভদ্রার জামালপুর আবাসিক এলাকায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ অভিযান চালিয়ে নকল ওষুধের কারখানার সন্ধান পেয়েছে। এ সময় চারটি নামি দামী কোম্পানির বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ, যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট ও ওষুধ তৈরির কাঁচামালসহ জব্দ করা হয়েছে ওষুধ তৈরির একটি মেশিন। অভিযান চলাকালে পুলিশ একজনকে আটক করেছে।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাত ৯টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয় নকল ওষুধ তৈরির ওই কারখানায় (বাসায়)। নগরীর নামোভদ্রা জামালপুর এলাকার মৃত আনসার আলীর ছেলে আনিসুর রহমান (৪২) আটক।
অভিযানকালে মহানগর ডিবির সহকারী কমিশনার (এসি) রাকিবুল ইসলাম জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি ওই বাসায় তৈরি করা হয় নকল ওষুধ। এছাড়া আমরা অভিযোগ পেয়েছি, সেখান থেকে নকল ওষুধ সরবরাহ করা হয় বিভিন্ন দোকানে এবং ভুক্তভোগীরা বলেন বিভিন্ন দোকানে থেকে ওষুধ কেনার পর সেটি যে নকল তা বুঝতে পারেন। আমরা এমন অভিযোগের ভিত্তিতেঅনুসন্ধান শুরু করি।
আমরা অনুসন্ধানে জানতে পারি, রাজশাহীর বিভিন্ন জায়গায় এমন কারখানা আছে, ভেজাল ওষুধ উৎপাদন করা হয় যেখানে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই বাসায় অভিযান চালাই আমরা। অভিযান পরিচালনার সময় বিভিন্ন নামি-দামি কোম্পানির যে সকল ওষুধ মার্কেটে বেশি বিক্রি হয় বিভিন্ন দোকান থেকে সেসব বিপুল পরিমাণে নকল ওষুধ উদ্ধার করি। যার কারণে আমরা এই কোম্পানির মূল মালিককে আটক করতে সক্ষম হয়েছি।
আটক আনিসুর জানান, তিনি ঢাকা থেকে নকল ওষুধ উৎপাদন মেশিনটি নিয়ে এসে দীর্ঘ ১ বছর ধরে নকল ওষুধ তৈরি করে বিক্রি করছেন। রাজশাহী, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তিনি বিক্রি করে আসছেন নকল ওষুধ। অনেকটা নির্জন এলাকার অবস্থিত নিজের বাড়িতে মেশিন বসিয়ে চারটি নামি দামী কোম্পানির নকল ওষুধ তৈরি করা হতো। অভিযানের এক সময় বিপুল পরিমাণ নকল ওষুধ জব্দ ও ওষুধ তৈরির কারিগরকেও আটক করা হয়েছে। ওষুধের পরিমাণ কত তা এখনই সঠিক বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান এ বিষয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সরকারি ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চাওয়া ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অবশেষে ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেন জেলা প্রশাসন। নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলায় বাস করেন বৃদ্ধ ফরিদউদ্দিন আহমেদ। কিছুদিন আগে ফরিদউদ্দিন আহমেদ সরকারি হটলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সহায়তা পাননি বরং তাকে জরিমানা হিসেবে ১০০ জনকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করতে হয়েছিলো।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাইন গতকাল রবিবার সকালে জানিয়েছেন বয়োজ্যেষ্ঠ ফরিদউদ্দিনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ডিসি বলেন, ফরিদউদ্দিনের পরিবারের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। প্রথমে খবর বের হয়েছিল তিনি একজন বাড়িওয়ালা হয়েও ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সহায়তা চেয়েছেন এজন্য তাকে জরিমানা করা হয়েছিল এতে তিনি অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হন। পরে বিষয়টির সত্যতা খুজে বের করে তাদের যে পরিমাণ খরচ হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আজ সোমবারের মধ্যেই সেসব ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আছে ১৬ বছর বয়সি প্রতিবন্ধী ছেলে, স্নাতক পড়ুয়া মেয়ে ও স্ত্রী। জানা যায়, তিনি এক সময় হোসিয়ারি কারখানায় কাটিং মাস্টার হিসেবে কাজ করতেন। তিনবার ব্রেনস্ট্রোক করার পর এখন কাজ করতে পারেন না। এখন মাসে মাত্র আট হাজার টাকা বেতনে সেই কারখানাতেই শ্রমিকদের দেখবালের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান করোনাকালীন মহামারিতে সংকটে পড়ে নিরুপায় হয়েই জাতীয় কলসেন্টারের ৩৩৩ নম্বরে কল করে খাদ্য সহায়তা চেয়েছিলেন তিনি। ওই কলই তার জীবনে কাল হয়েছিল।
সরকারি সহায়তার আশায় তিনি কল করেছিলেন ওই নম্বরে। কিন্তু সহায়তা তো পাননি, উল্টো তিনি চারতলা ভবনের মালিক এমন তথ্যের কারণে ৬৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে তাকে। স্থানীয় লোকদের থেকে ধার করে তিনি জরিমানা পরিশোধ করেছিলেন বলে জানান তিনি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফা জহুরার নির্দেশে তাকে ১০০ জনের মধ্যে চাল, আলু, ডাল, লবণ ইত্যাদি খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে হয়েছিলো।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিমরাইল মোড় এলাকায় মার্কেট খোলার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) বেলা ১১ টায় ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন ব্যবসায়ীরা। এসময় বিভিন্ন মার্কেটের দুই শতাধিক ব্যবসায়ী বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচীতে অংশ নেন। বেলা ১১ থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানববন্ধন করেন ব্যবসায়ীরা।
বিক্ষোভ অনুষ্ঠানে বিল্লাল হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে দোকান খুলে দেওয়া হয়। নইলে ব্যবসায়ীদের না খেয়ে মরতে হবে।
আরেক ব্যবসায়ী মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ লকডাউন আমরা মানি না। গত বছর লকডাউনে আমরা ব্যবসায়ীরা বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। আমাদের দাবি না মানলে সামনে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ শেষে ব্যবসায়ীরা নিজ দায়িত্বে সুশৃংখলভাবে রাস্তা থেকে সরে যান। বিক্ষোভের আগে-পরে পুলিশের কোন উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি।
উল্লেখ্য, গতকাল মার্কেট খোলার দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও বিক্ষোভ করেন ব্যবসায়ীরা।