ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান দুলাল বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন ধর্মপ্রাণ খাঁটি মুসলমান হিসেবে তাঁর সময়ে ইসলামের খেদমত,উন্নয়ন ও প্রসারে বিশেষ অবদান রেখেছেন।
স্বাধীনতার পরে ওআইসি সম্মেলনে যোগদান, বাংলাদেশকে ওআইসি’র সদস্যভূক্তকরণ ,টঙ্গিতে বিশ্ব ইজতেমার জন্য সম্পত্তি দান,মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও ইসলামী ফাউন্ডেশন গঠনসহ ইসলামের প্রসারের জন্য তিঁনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতায় ওআইসি’র সদস্যভূক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে ইসলামি বিশ্বের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের সৌহার্দ্যপূণ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে নবতর দিগন্তের সুচনা হয়। এর ফলে ইসলামি দেশগুলো বাংলাদেশকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে স্বীকৃতি দেওয়া শুরু করে। ধর্মপ্রাণ পিতার সেই ইসলামী আদর্শকে ধারণ ও লালন করে তাঁর সুযোগ্যা কণ্যা দেশরতœ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়ন,ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা,কওমী মাদ্রাসাকে মাষ্টার্সের সমমানের স্বীকৃতি দিয়ে ও দেশের প্রতিটি উপজেলায় মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ সহ ইসলামের উন্নয়ন ও কল্যাণে বিশেষ অবদান রাখছেন। পিতার ন্যায় ধর্মপ্রাণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ইসলাম বান্ধব সরকার।
এ সরকারের হাতে ইসলাম নিরাপদ। তাই কোন গুজব,অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের দ্বারা প্রভাবিত হবেন না। বাংলাদেশে ইসলাম স্বমহিমায় পূর্বে ছিল, বর্তমানে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে ইনশাআল্লাহ। ১৩ মার্চ শনিবার পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার (নেছারাবাদ) ঐতিহ্যবাহী ছারছীনা দরবার শরীফের ১৩১ তম বার্ষিক মাহফিলের দ্বিতীয় দিন বাদ জোহর প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। এসময় সভাপতির বয়ানে আমীরে হিযবুল্লাহ ছারছীনা দরবার শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা. জি. আ.) বলেছেন- ইসলাম শান্তির ধর্ম। এতে ধর্মান্ধতা,জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই। যারা ইসলামের নামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করে তারা মূলতঃ ইসলামের কেউ নয় বরং শত্রু। হয় তারা কারো অর্থে ও স্বার্থে বিপথগামী হয়ে অথবা প্রকৃত অর্থ না বুঝে ভুল পথে ধাবিত হচ্ছে। বর্তমান সরকার সময়োচিত পদক্ষেপ নিয়ে জঙ্গীবাদ দমনে সক্ষম হয়েছে। তবে ইসলামের সঠিক মর্মবাণী প্রচার করা হলে কোন অপব্যখ্যা করার সুযোগ থাকবে না। হযরত পীর ছাহেব কেবলার বড় ছাহেবজাদা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ আবু নছর নেছারুদ্দীন আহমদ হুসাইন ছারছীনা দরবার শরীফের ইতিহাস ও ঐতিহ্য এবং ইলম ও আমলের গুরুত্ব তুলে ধরে নাতিদীর্ঘ বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, কবরে শান্তি ও আখেরাতে মুক্তি পেতে হলে নিয়মিতভাবে তরীকা মশক করতে হবে এবং সুন্নত তরীকা মোতাবেক জীবন গঠন করতে হবে। তিনি পবিত্র কুরআন ও হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে আমলের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন এবং সত্যিকারের মুত্তাকী মুসলমান হবার জন্য সবার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
দ্বিতীয় দিন বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নূরুল ইসলাম পিএইচডি, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং দৈনিক সময়ের আলোর সম্পাদক মন্ডলির সভাপতি আলহাজ্ব এমএম এনামুল হক,ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড আব গভর্ণরস এর গভর্নর ড. মুফতী আল্লামা কাফিল উদ্দিন সরকার ছালেহী, পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক আবু আলী মোঃ সাজ্জাদ হোসেন, পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান,স্বরূপকাঠি ( নেছারাবাদ) উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোশারেফ হোসেন,ওসি আবির মোহাম্মাদ হোসেন প্রমূখ। মাহফিলের ২য় দিন লাখো মুসল্লীর উপস্থিতিতে মাহফিল ময়দান কানায় কানায় পূর্ন হয়ে যায়। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিলোনা। প্রসঙ্গত ছারছীনা দরবার শরীফের পীর হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মাদ মোহেব্বুল্লাহ ( মাঃ জিঃ আঃ) শুক্রবার বাদ ফজর তিনদিন ব্যাপি এ মাহফিলের উদ্বোধন করেন। আগামীকাল ১৪ মার্চ বাদ জোহর তিন দিনব্যাপী এ মাহফিলের আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত।
এদিন হযরত পীর ছাহেব কেবলা আলহাজ্ব হযরত মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল্লাহ (মা. জি. আ.) দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সার্বিক সুখ,সমৃদ্ধি,শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করবেন।
একুশে সংবাদ/রা.সু/আ
আপনার মতামত লিখুন :