আগামীকাল থেকে আবারো নিয়মিত কার্যক্রমে যাচ্ছে গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পপ্রতিষ্ঠান। সরকারের হঠাৎ এ সিদ্ধান্তের ফলে শনিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকেই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌ-রুটের ফেরিঘাটগুলোতে বেড়েছে ঢাকামুখীদের ভিড়। দৌলতদিয়া ঘাটে মানুষের চাপে ফেরিতে উঠতে পারেনি রোগীবাহীসহ কোনো গাড়ি।
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, শনিবার বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিটি ফেরিতেই ঢাকামুখী অসংখ্য মানুষ। আছে অনেক মোটরসাইকেলও। আবার শিমুলিয়া হয়ে বাংলাবাজার যাচ্ছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী যাত্রীরা। তবে ফেরিতে দক্ষিনাঞ্চলগামী যাত্রীদের চেয়ে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় ছিল অনেক বেশি।
গার্মেন্টসসহ কালখানা খুলতে পারে এমন খবরে মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে বলে যাত্রীরা জানায়। এদিকে, যানবাহন না পেয়ে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়াঘাটে আসা ঢাকামুখী যাত্রীরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন পায়ে হেঁটে ও ছোট ছোট যানবাহনে করে ভঙ্গে ভেঙ্গে।
এদিকে, ঢাকামুখী মানুষের চাপে ফেরিতে উঠতে পারেনি রোগীবাহী গাড়ি এবং জরুরী পণ্যবাহী যানবাহনও।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের এজিএম (মেরিন) আহম্মদ আলী বলেন, ‘শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটে ছোট-বড়-মাঝারী মিলিয়ে মোট ৯টি ফেরি চলাচল করছে। জরুরি ও লকডাউনের আওতার বাইরে থাকা যানবাহন পারাপারে এসব ফেরি সচল রাখা হয়েছে।
লকডাউন বাস্তবায়ন ও ফেরিতে যাত্রী চলাচল নিয়ন্ত্রণে ঘাটের অভিমুখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। তবে তা অতিক্রম করতে যাত্রীরা বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে পার পাবার চেষ্টা করে।
বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের পাশাপাশি যাত্রীদেরও প্রচন্ড ভিড় রয়েছে। প্রতিটি ফেরিতেই শতশত ঢাকামুখী মানুষ। আবার শিমুলিয়া হয়ে বাংলাবাজার যাচ্ছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী অনেক যাত্রী। তবে ফেরিতে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের চেয়ে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় রয়েছে অনেক বেশি।
গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) থেকে জানা যায়, রবিবার (৩১ জুলাই) সকাল থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে উপছে পড়া ভিড়র দেখা গেছে। মানুষের চাপে ফেরিতে উঠতে পারেনি রোগীবাহীসহ কোনো গাড়ি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ঢাকামুখী যাত্রীর সংখ্যা।
ফেরিতে তিল পরিমান জায়গা নেই দাঁড়ানোর মতো। গায়ে গা লাগিয়ে ঠাসাঠাসি করে পার হচ্ছে যাত্রীরা, স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই নেই ফেরিগুলোতে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিক্সা, ভ্যান, অটো, মাহিদ্র, মোটরসাইকলসহ বিভিন্ন ছোট যানে যাত্রীরা আসছে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। কেউবা আসছে পায়ে হেটে। পাড়ে ভেড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পরছে ফেরিতে। ফলে ফেরি আনলোড করতেও সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ফেরি থেকে নামতে পারছেনা কোনো গাড়ি।
রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ খানের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গত মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট ) সকাল ১০:৩০ মিনিটে নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের দঃ লক্ষীপুর নিজ বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে তাঁর। এর আগে গ্রামের ঈদগাহ মাঠে তাঁর প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ খানের দাফনের আগে নবীনগর থানা পুলিশের একটি চৌকস দল ও কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল গার্ড অব অনার প্রদান করেন। এ সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের সাবেক সভাপতি, ওয়ার্ডের মেম্বার ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি দির্ঘ্যদিন যাবৎ হৃদরোগে ভুগছিলেন। গত সোমবার (০২ আগস্ট ) বিকেলে তিনি তাঁর নিজ বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট থেকে কর্পোরাল পদমর্যাদা নিয়ে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে সারাদেশে সরকার ঘোষিত ৭ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। সরকারি বিধিনিষেধ এবং মানুষের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে মাঠে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি, র্যাব, আনসার এবং সেনা সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
কঠোর লকডাউনের প্রথম দিনে সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারীদের গ্রেফতার করা হয় ৫৫০ জনকে। সাজা দেওয়া হয়েছে ৮ ব্যক্তিকে। এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০৭ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২৭৪টি গাড়িকে মামলা দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৬টি গাড়ি। রেকারিং করা হয়েছে মোট ৭৭টি গাড়ি। ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক জরিমানা করা হয়েছে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০ টাকা।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, যৌক্তিক কারণ ছাড়া যারাই বের হবে তাদেরকেই মামলার মুখোমুখি হতে হবে।
গ্রেফতারকৃতদের বাইরে যারা আটক হয়েছেন তারা যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারলে তাদের বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর যদি যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারে সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন পুলিশের এ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।