দেশে চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) মাথাপিছু আয় গত অর্থবছরের তুলনায় এবার ১৬৩ ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান বছরে মাথাপিছু আয় হয় ২ হাজার ২২৭ ডলার। গত অর্থবছর (২০১৯-২০) ছিল ২ হাজার ৬৪ ডলার।
আজ ১৭মে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ তথ্য তুলে ধরেন। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রীরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে গণমাধ্যমকে তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, 'ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রী একটা বিষয় জানিয়েছেন, সেটা আমাদের উন্নয়নের সাথে জড়িত। আমাদের ২০২০-২১ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলারে উন্নীত হয়েছে। আগের তুলনায় এবছর মানুষের মাথাপিছু আয় ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।'
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, 'গত অর্থবছরে জিডিপি ছিল ২৭ লাখ ৯৬ হাজার ৩৭৮ কোটি, এবার এটা হয়েছে ৩০ লাখ ৮৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। যদিও পরিসংখ্যান এখনও পূর্নাঙ্গ হয়নি। অর্থ বিভাগ থেকে প্রাথমিকভাবে একটা হিসাব দেওয়া হয়েছে।'
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, 'জিডিপিও বেড়েছে, মাথাপিছু আয় ৯ শতাংশ বেড়েছে। মাথাপিছু আয় ২ হাজার ২২৭ ডলারকে টাকায় রূপান্তর করলে হয় এক লাখ ৮৮ হাজার ৮৭৩ টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ দশমিক ৮১ টাকা ধরে)। এটা বাংলাদেশর ইতিহাসে বিশাল এক অর্জন।'
জামানত ছাড়া কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে গুচ্ছভিত্তিক (ক্লাস্টার) ঋণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য চলতি বছরেই এসএমই ঋণের ১০ শতাংশ ক্লাস্টার ঋণ হিসেবে দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি এ সংক্রান্ত নীতিমালা সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় সিএমএসএমই খাতকে এগিয়ে নিতে গুচ্ছভিত্তিক অর্থায়ন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি ধারণা। সম্ভাবনাময় গুচ্ছগুলো যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তা দেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রাখবে। এ জন্য সিএমএসএমই খাতে গুচ্ছ ভিত্তিতে সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণ নিশ্চিত করতে নীতিমালা জারি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় ক্লাস্টারের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ ৫ কিলোমিটার সীমানায় অবস্থিত অনুরূপ, সমজাতীয় বা সম্পর্কযুক্ত পণ্য উৎপাদন বা সেবায় নিয়োজিত ৫০ বা ততোধিক উদ্যোগের সমষ্টিকে সামষ্টিকভাবে একটি ক্লাস্টার হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে ক্লাস্টারের আওতায় অবস্থিত উদ্যোগগুলোর ব্যাবসায়িক শক্তি, দুর্বলতা, সুযোগ ও হুমকি হবে একই ধরনের। এতে আরো বলা হয়, চলতি ২০২২ সালে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএমএসএমই খাতে যে ঋণ দেবে, তার ১০ শতাংশ গুচ্ছভিত্তিক হতে হবে। পরবর্তী সময়ে এ লক্ষ্যমাত্রার পরিমাণ প্রতি বছর কমপক্ষে ১ শতাংশ হারে বাড়িয়ে ২০২৪ সালের মধ্যে কমপক্ষে ১২ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনে এই লক্ষ্যমাত্রা পরিবর্তন করতে পারবে। ক্লাস্টারে যে ঋণ দেওয়া হবে, তার ৫০ শতাংশ বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ক্লাস্টারে দিতে হবে। বাকি ৫০ শতাংশ দিতে হবে অন্য ক্লাস্টারে।
ক্লাস্টারের উদ্যোক্তাদের চলতি মূলধন ও মেয়াদি উভয় ধরনের ঋণ দেওয়া যাবে। ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। তবে ঋণ পরিশোধে গ্রেস পিরিয়ড হবে সর্বোচ্চ ছয় মাস। ঋণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত, সামাজিক বা গ্রুপ জামানতকে বিবেচনায় নেওয়া যাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের আওতায় ঋণ দেওয়া যাবে।
প্রসঙ্গত, সিএমএসএমই খাতে ঋণ বাড়াতে ২৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করেছ কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যার সুদের হার সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ। এই তহবিলের ঋণে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সিএমএসএমই খাতের প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ নেওয়ার জন্য তারা প্রয়োজনীয় সহায়ক জামানত দিতে সক্ষম হন না। এ জন্য তাদের ঋণের বিপরীতে ক্রেডিট গ্যারান্টি সুবিধা প্রদান করার আবশ্যকতা দেখা দিয়েছে। এ জন্য ২৫ হাজার কোটি টাকার তহবিলের ঋণেও এই সুবিধা দেওয়া হবে। এর আগে ২০১৯ সালে সিএসএমএই খাতের মাস্টার সাকুলারে ক্লাস্টারের কথা উল্লেখ থাকলেও এর ব্যাখ্যা বা সংজ্ঞা নির্ধারণ করা ছিল না। ফলে কোন ঋণটি ক্লাস্টারের আওতায় পড়বে বা এর মানদণ্ডই বা কি হবে—তা নিয়ে ব্যাংকারদের মধ্যে স্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না।
এসব সমস্যা সমাধানে প্রথমবারের মতো ‘ক্লাস্টারভিত্তিক’ অর্থায়নে উত্সাহ দিতে এ বিষয়ে নীতিমালা জারি করল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
জাতীয় শিল্প নীতিতে ক্লাস্টারের কোনো সংজ্ঞা নির্ধারণ করা নেই। সে বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ভবিষ্যতে ‘জাতীয় শিল্পনীতিতে নির্ধারণ করে দেওয়া সংজ্ঞাই ‘ক্লাস্টার’ এর সংজ্ঞা হিসেবে ধরা হবে। পণ্য ও সেবার ধরন অনুযায়ী ১৩টি খাতকে অগ্রাধিকার ও উচ্চ অগ্রাধিকার এই দুই ভাগে বিভক্ত করা হয়। উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্লাস্টারসমূহের মধ্যে রয়েছে—কৃষি,খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কৃষি যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী শিল্প, তৈরি পোশাক শিল্প, নিটওয়্যার, ডিজাইন ও সাজসজ্জা, আইসিটি, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য শিল্প, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, পাট ও পাটজাত শিল্প।
অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়েছে প্লাস্টিক ও অন্যান্য সিনথেটিক্স শিল্প, পর্যটন শিল্প, হোম টেক্সটাইলসামগ্রী, নবায়নযোগ্য শক্তি বা সোলার পাওয়ার, অটোমোবাইল প্রস্তুত ও মেরামতকারী শিল্প, তাঁত, হস্ত ও কারুশিল্প, বিদ্যুত্সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি (এলইডি, সিএফএল বাল্ব উৎপাদন), ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি নির্মাণ শিল্প/ইলেকট্রনিক ম্যারেটিরিয়াল উন্নয়ন শিল্প, জুয়েলারি শিল্প, খেলনা শিল্প, প্রসাধনী ও টয়লেট্রিজ শিল্প, আগর শিল্প, আসবাবপত্র শিল্প, মোবাইল/কম্পিউটার/টেলিভিশন সার্ভিসিং খাত। এর বাইরে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও যে কোনো খাতকে ‘ক্লাস্টার’ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে তা অন্যান্য খাত হিসেবে দেখাতে পারবে। সূত্র: ইত্তেফাক
পিএসজির হয়ে মাঠে নামার অপেক্ষায় লিওনেল মেসি। অপেক্ষাটা সমর্থকদেরও। সবার মনেই এক প্রশ্ন-কবে পিএসজির জার্সিতে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের অভিষেক হচ্ছে? গেল ম্যাচে ব্রেস্টের বিপক্ষে দারুণ জয় পেয়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
কিন্তু দুর্ভাগ্য এই ম্যাচেও মাঠে নামা হয়নি মেসির। শুধু মেসিই নন, ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমারও খেলেননি এই ম্যাচে। তাই নতুন ক্লাবে মেসির অপেক্ষা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে, মাঠে নামার তাড়নায় হয়তো ছটফট করছেন মেসিও। কিন্তু কবে অবসান ঘটবে এই অপেক্ষার? এর উত্তর হয়তো পিএসজি কর্তৃপক্ষই জানেন। চলতি ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে পিএসজি এরই মধ্যে তিন ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তবে এক ম্যাচেও মাঠে দেখা যায়নি মেসিকে। মেসি অনুশীলন করেছেন পিএসজির হয়ে। কিন্তু মূল ম্যাচে নামা হচ্ছে না। হাতে অখণ্ড অবসর। দর্শক হয়ে বসে না থেকে তাই অবসর কাটাতে এবার বার্সেলোনায় ঘুরতে গেছেন মেসি।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাতে লিগে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ব্রেস্টের মুখোমুখি হয়েছিল পিএসজি। মেসি ও নেইমার জুনিয়রকে বাইরে রেখেই দল সাজিয়েছিলেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেই কোচ পচেত্তিনো। ছুটিতে আছেন, তাই একটু ঘুরে আসাই যায়। এই ভেবেই বার্সেলোনায় গিয়েছেন মেসি, এই সফরে সঙ্গী হয়েছেন নেইমারও।
এ সময় স্ত্রী ও তিন সন্তানকে নিয়ে প্রিয় ঠিকানায় পা রাখেন তিনি। সংক্ষিপ্ত সফর। অল্প কয়েকদিনের জন্য বার্সায় ক্যাস্তেলডেফেলসে নিজের বাড়িতেই থাকবেন মেসি।পিএসজির হয়ে প্রথম তিন ম্যাচে মেসিকে দেখা না গেলেও, গুঞ্জন আছে আগামী ২৯ আগস্ট অভিষেক হতে পারে মেসির। রেইমসের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মাঠে নামতে পারেন তিনি। তাই বার্সেলোনায় থাকার জন্য খুব বেশিদিন সময় হাতে নেই মেসির। অনুশীলনে যোগ দেওয়ার জন্য কয়েকদিনের মধ্যেই আবার পিএসজিতে ফিরে যাবেন মেসি।
মেসির অভিষেকের বিষয়ে কোচ পচেত্তিনো জানিয়েছেন, 'ক্লাবে যারা নতুন এসেছে তাদের সবাইকে ঠিকঠাক ম্যানেজ করতে হয়। এই সপ্তাহটা খুব ভালো কেটেছে মেসির। আশা করছি, আগামী সপ্তাহেই সে হয়তো দলের হয়ে মাঠে নামবে। এদিকে গতকাল মেসি-নেইমারবিহীন ম্যাচে বড় জয় পেয়েছে পিএসজি। ব্রেস্টকে ৪-২ গোলে হারিয়ে টেবিলের শীর্ষে উঠে এসেছে প্যারিসিয়ানরা। গেল মৌসুমে টেবিলের দুয়ে থেকে রানার্স আপ হয়েছিল পিএসজি। সেই আক্ষেপ ভুলে এবার যেন ট্রফি পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্য নয়বারের চ্যাম্পিয়নদের। ফরাসি লিগ ওয়ানে ব্রেস্টকে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয়ের স্বাদ পেল প্যারিসিয়ানরা।