a
ফাইল ছবি
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে অভিষেকেই ইতিহাস গড়লো শেরিফ তিরাসপল। মলডোভার প্রথম ক্লাব হিসেবে ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতায় নাম লেখায় তারা। ইউরোপের এলিট টুর্নামেন্টে রূপকথা নিয়ে হাজির হয়েছে তারা। প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলতে এসেই শেরিফ ২-০ গোলে হারিয়ে দেয় ইউক্রেনের জায়ান্ট শাখতার দানেৎস্ককে। দ্বিতীয় ম্যাচে আরো বড় চমক নিয়ে হাজির হলো নবাগত দলটি।
মঙ্গলবার রাতে শেরিফ তিরাসপল হারিয়ে দিল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল ও ১৩ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদকে। তাও আবার সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গিয়ে! মুহুর্মুহু আক্রমণ করে কোনোরকম সমতায় ফিরলেও শেষ রক্ষা হয়নি রিয়াল মাদ্রিদের। অন্তিম সময়ে ফের গোল হজম করে বসে কার্লো আনচেলত্তির দল। শেরিফ জেতে ২-১ গোলে! অবিশ্বাস্যভাবে টানা দুই জয়ে 'ডি' গ্রুপের শীর্ষে এখন শেরিফ তিরাসপল। তিন পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নেমেছে রিয়াল মাদ্রিদ। এক পয়েন্ট নিয়ে তিন ও চারে আছে যথাক্রমে ইন্টার মিলান ও শাখতার দানেৎস্ক।
কাল রাতে গ্রুপের প্রথম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করে দল দুটি। তাতে দুটি দলই গ্রুপপর্ব থেকে ছিটকে যাওয়ার আশঙ্কায় পড়ল। অবশ্য রিয়াল হারলেও ম্যাচজুড়ে দাপট দেখিয়েছে তারা। ৭৫ শতাংশ বল দখলে রেখে ৩১টি শট নিয়েছে। যার ১১টিই ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে, গোলের উদ্দেশ্যে চারটি শট নিয়ে তিনটিই লক্ষ্যে রেখেছে শেরিফ। তাতেই বাজিমাত। স্বপ্নের জয়। শেরিফের এই জয়টিকে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে অন্যতম সেরা অঘটন বলে বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রতিযোগিতার চলতি আসরের প্রথম ম্যাচে ইন্টার মিলানকে হারিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। সেই ম্যাচজুড়ে একচেটিয়া রাজত্ব করেছে ইতালিয়ান ক্লাবটি।
কিন্তু সৌভাগ্যবশত জিতে যায় রিয়াল। শেরিফ ম্যাচে রিয়াল দেখল মুদ্রার উল্টো পিঠ। এবার শিকারি নয়, আনচেলত্তির দল শিকার হলো রূপকথার শেরিফের কাছে। ম্যাচের ২৫ মিনিটে সান্তিয়াগো বার্নাব্যু স্তব্ধ করে দেয় মলডোভা লিগ চ্যাম্পিয়নরা।
ইয়াসুরবেক ইয়াখশিবোয়েভের গোলে লিড নেয় শেরিফ। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে বেশ আরাম করেই হেডে জালে বল জড়ান তিনি। সমতায় ফিরতে মরিয়া রিয়াল সর্বস্ব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুঁচকে দলটির ওপর। যদিও গোলের জন্য রিয়ালকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ৬৫ মিনিট পর্যন্ত। শেরিফের ডি-বক্সে ভিনিচিয়াস জুনিয়র ফাউল হলে ভিএআরের সহায়তা নিয়ে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। স্পট কিক থেকে গোল করে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা।
এই গোলেই ফরাসি স্ট্রাইকার ছাড়িয়ে গেলেন রিয়াল কিংবদন্তি রাউল গঞ্জালেসকে (৭১)। টুর্নামেন্টে বেনজেমা এখন চতুর্থ সর্বোচ্চ গোলদাতা। সমতায় ফেরা রিয়াল দ্বিতীয় গোলের জন্য আরো মরিয়া হয়ে ওঠে।
কিন্তু শেরিফ গোলরক্ষক আথানাসিয়াদিজ স্বাগকিদের হতাশা বাড়াতে থাকেন। গোলপোস্টের নিচে এদিন অতিমানবীয় পারফর্ম করেছেন তিনি। তার কারণেই গোল মিসের মহড়া বসান বেনজেমা, ভিনিচিয়াস, মডরিচরা। রিয়াল আর দ্বিতীয় গোল পায়নি। বরং ৮৯ মিনিটে ফের গোল হজম করে বসে রিয়াল। গোল করে শেরিফকে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ভাসান সেবাস্তিয়ান থিল। অতিথিরা অবশ্য ৭২ মিনিটেই দ্বিতীয় গোলটা পেতে পারতো। কিন্তু ক্রিশ্চিয়ানোর ক্রস থেকে ব্রুনো যে গোলটা করেছিলেন সেটা বাতিল হয় অফসাইডের ফাঁদে পড়ে।
২৫ বছর বয়সী শেরিফের সেই হতাশা দূর হয়েছে ম্যাচের শেষ সময়ে। নতুন মৌসুমে উড়ন্ত সূচনা করেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। কিন্তু হঠাৎ করেই ছন্দ হারাল লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা দুই ম্যাচ ধরে জয়হীন থাকল আনচেলত্তির দল। আগের ম্যাচে লা লিগায় ভিয়ারিয়ালের সঙ্গে ড্র করেছিল রিয়াল। এবার তো শেরিফ রূপকথার কাছেই হার মানতে হলো তাদের। এই হারটা মাদ্রিদ জায়ান্টদের জন্য বড়সড় ধাক্কা হয়েই এলো।
ফাইল ছবি
টানা ৯ বছর শিরোপা জিততে থাকা জুভেন্টাস এর শিরোপায় এবার ভাগ বসালো ইন্টার মিলান। ইতালিয়ান লিগে গত ৯ বছর একাই আধিপত্য বিস্তার করে চলছিল জুভেন্তাস।
২০১১-১২ মৌসুমে যা শুরু করেছিলেন বর্তমান ইন্টারমিলান কোচ কন্তে। এবার সেই কন্তের দলের কাছেই শিরোপার ধারাবাহিকতা হাতছাড়া করলো জুভেন্টাস। দীর্ঘ ১১ বছর পর সিরি-এ লিগের শিরোপা জিতেছে ইন্টার মিলান।
গত রবিবার সাসুলোর বিপক্ষে আটালান্টা ১-১ গোলে ড্র করায় ইন্টারের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যায়। লিগে চার ম্যাচ এখনো বাকি আছে।
শনিবার সাসুলের বিপক্ষে আটালান্টা ম্যাচের পরই শিরোপা উৎসবের আমেজ শুরু করে ইন্টার সমর্থকরা। সাসুলোর বিপক্ষে আতালান্তা ম্যাচে না থেকেই ছিল তারা। খেলাটি ড্র হওয়ার পরই মিলানের রাস্তায় নেমে উৎসব করতে থাকেন ইন্টার মিলানের সমর্থকরা।
করোনাভাইরাসের সময়ও এই উৎসব দীর্ঘ ১১ বছরের অপেক্ষার অবসানের। ২০০৯-১০ মৌসুমে নাম্বার ওয়ান নামে পরিচিত হোসে মরিনহোর অধীনে সিরি-এ, কোপা ইতালিয়া এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জেতার পর নিজেদের হারিয়ে খুজছিল ইন্টার মিলান।
এমনকি কিছু মৌসুম চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও খেলার যোগ্যতা হয়নি তাদের। সে দলকে কন্তে দায়িত্ব নিয়েই পরিবর্তন করতে থাকেন। গত মৌসুমে শিরোপার স্বপ্ন উকি দিয়েও তা বাস্তবরুপ পায়নি কিন্তুএবার ঠিকই চার ম্যাচ হাতে রেখে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ইন্টার মিলান এ পর্যন্ত শিরোপা জিতেছে ১৯টি। তারা ছাড়িয়ে গেছে এসি মিলানের ১৮ ট্রফি জয়কে। ৩৬টি ট্রফি নিয়ে তালিকায় সবার ওপরে জুভেন্তাস।
ফাইল ছবি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেস আবারও নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করায় মমতা ব্যানার্জিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। বুধবার মমতা ব্যানার্জিকে লেখা এক পত্রে ড. মোমেন এ অভিনন্দন জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ধারাবাহিকভাবে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠনে জনগণের সমর্থন লাভ করেছে, যা আপনার নেতৃত্বের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের জনগণের অব্যাহত আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতিফলন।
আমরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ আপনি বাঙালির দীর্ঘ লালিত মূল্যবোধ ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ’ ধারণ করেছেন এবং এ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সারাজীবন অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
ড. মোমেন উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিদ্যমান এবং সাম্প্রতিক বছরে দু’দেশের পারস্পারিক সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো আরও প্রসারিত হয়েছে।
অবিভক্ত ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা, মূল্যবোধ এবং বংশানুক্রমিক সংযোগ দু’দেশের জনগণের সম্পর্ককে অনন্য ও শক্তিশালী করেছে। বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের জনগণ বাংলদেশিদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান দখল করে রেখেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মুজিববর্ষ এবং বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপনের এ বিশেষ বছরে আমি পশ্চিমবঙ্গের জনগণসহ ভারতের জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বের সমর্থন ও আত্মত্যাগকে কৃতজ্ঞতার সহিত স্মরণ করছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার অঙ্গীকার ও সহযোগিতার মাধ্যমে দু’দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং অনিষ্পন্ন বিষয়গুলোর সমাধান হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’
ড. মোমেন আরও বলেন, অজানা শত্রু করোনাভাইরাসের ফলে সারাবিশ্ব নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ দু’দেশের পারস্পারিক সম্পদ ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সবাই সম্মিলিতভাবে এ মহাবিপদ থেকে মুক্ত হয়ে শিগগিরই স্বাভাবিক জীবন-যাপনে ফিরে আসবো।