বাড়িতেই করোনায় আক্রান্ত হওয়া মানেই ভয়ে ভেঙে পড়বেন না। এই রোগের চিকিৎসা হতে পারে বাড়িতে থেকেও। এজন্য সংক্রমণ সম্পর্কে কয়েকটি বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেই আতঙ্ক তৈরি হয়েছে সর্বত্র। হাসপাতালে জায়গা পাওয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে আশঙ্কা। কিন্তু সংক্রমণের ভয়ের মাঝেও এসব কথা মাথায় রাখা জরুরি যে, বাড়িতে কিছু ব্যবস্থা রাখতে হবে। খেয়াল রাখা দরকার, কীভাবে বাড়িতেই নিজেদের চিকিৎসা অনেকটাই করা যায় হাসপাতালে না ভর্তি হয়েই। তবে প্রয়োজনে চিকিৎসকের সাহায্য নিতে হবে।
৮৫ শতাংশ করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা বাড়ি থেকে করা সম্ভব বলে মনে করেন ভারতীয় চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। তার মতে, বাড়িতে কয়েকটি ওষুধ মজুত রাখতে হবে এই সময়ে। প্যারাসিটামল, মাল্টি ভিটামিন আর কাশিতে কাজে লাগার মতো অ্যান্টিহিস্টামিন। এছাড়াও, একটি অক্সিমিটার থাকা দরকার। পরিস্থিতি বুঝে মজুত রাখা যায় অক্সিজেন সিলিন্ডারও।
বিশেষভাবে জেনে রাখা দরকার, কোন উপসর্গ দেখা দেওয়া মানে কতটা গুরুতর হয়েছে সংক্রমণ। যেমন করোনা সংক্রমণের তিনটি মূল স্তর রয়েছে। প্রথম স্তরে ভাইরাস থাকে নাক-গলায়। এই স্তরে বিশেষ জ্বর বা বড় কোনও অসুবিধা দেখা দেয় না। সংক্রমণ গলা পর্যন্ত গেলে, কারও কারও গলা জ্বালা করে। এমন উপসর্গ দেখা দিলে ভিটামিন-সি খেতে হতে হবে জরুরীভিত্তিতে।
দ্বিতীয় স্তর হল, যখন কাশি বেশি হয়। জ্বরও বাড়ে এমন ক্ষেত্রে। শরীরের প্রতিরোধ শক্তি অনেকটাই নড়বড়ে হয়ে পড়ে সংক্রমণ এই স্তরে পৌঁছে গেলে। ফুসফুস আক্রান্ত হলে কাশি বাড়ে। শ্বাসের অসুবিধাও হতে পারে। তবে শ্বাসের সমস্যা বেশি না হলে এই স্তরেও আতঙ্কিত হয়ে পড়ার কারণ নেই। বাড়িতেই বারবার গরম পানি করে ভাপ নেওয়া, গরম পানিতে ওষুধ ফেলে গার্গল করা এবং নিয়মিত ভিটামিন খাওয়া গেলে ধীরে ধীরে ভাল হয়ে উঠবে রোগী।
সংক্রমণের তৃতীয় স্তরের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বেশি মাত্রায় হতে পারে। ফুসফুসের পাশাপাশি হৃদ্যন্ত্র, বৃক্কেও ক্ষতি করতে পারে ভাইরাস। দুর্বলতাও মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছায়। এমন ক্ষেত্রে জরুরীভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
চিকিৎসকেদের মতে, করোনায় আক্রান্ত যারা হচ্ছেন, তাদের একটা বড় অংশের সংক্রমণের মাত্রা থাকছে মাঝারি স্তরে। এমন রোগীদের বারবার পানি খাওয়া প্রয়োজন। আর ভালভাবে খাওয়া-দাওয়া করতে হবে।
ডাক্তার অরুণাংশু বলেন, “করোনা এখন ঘরে ঘরে হচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। যাদের উপসর্গ তেমন থাকছে না, তারা বাড়িতে আরামে চিকিৎসা করাই ভাল।”
যারা ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ কিংবা থাইরয়ডের ওষুধ নিয়মিত খান, তাদের নিজেদের নিয়মের বাইরে যাওয়া যাবে না। করোনার চিকিৎসা চলাকালীন সময়েও সেসব ওষুধ খেয়ে যেতে হবে।
যতক্ষণ না শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে, ততক্ষণ চিকিৎসা বাড়ি থেকে করাই ভাল বলে অভিমত চিকিৎসক সাত্যকি হালদারের।
তবে তিনি বলেন, “নিজের ইচ্ছা মতো চিকিৎসা করা যাবে না। সংক্রমিত হয়েছেন টের পেলেই কোনও ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যেতে হবে নিয়মিত। অক্সিজেনের মাত্রা কতটা থাকছে, তার খেয়াল রাখতে হবে নিয়ম করে।”
সংক্রমণের মাত্রা অল্প থেকে মাঝারি হলে সবচেয়ে জরুরি হল বিশ্রাম নেওয়া, এমনটিই মনে করেন সাত্যকিবাবু। তার পরামর্শ, বাড়িতে একজন সংক্রমিত হলেই সকলকে সাবধান হতে হবে। অসুস্থ ব্যক্তির সেবা যেমন করতে হবে দূরত্ব বজায় রেখে, তেমন আর কারও যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এজন্য পরিবারের একজন করোনা আক্রান্ত হলেই বাকিদেরও আইসোলেশনে থাকতে হবে।
তবে ভারতীয় এই চিকিৎসকদের মতে, হঠাৎ শরীর বেশি খারাপ হলে কোথায় যেতে হবে, সে বিষয়ে আগে থেকে জেনে রাখা দরকার। হাতের কাছেই রাখতে হবে কাছের কোনও হাসপাতালের নম্বর বা যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম। সূত্র: আনন্দবাজার
ভারতে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের নতুনরুপ হিসেবে ব্লাক এবং হোয়াইট ফাঙ্গাসের দেখা মিলেছে। এসব ফাঙ্গাস হওয়ার পিছনে বিশেষ কিছু কারণ রয়েছে ভারতীয় একদল চিকিৎসকের দাবি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাক সংক্রমণের জন্য অপরিচ্ছন্নতা নোংরা মাস্ক ব্যবহার একটি বড় কারণ বলে দাবি তাদের। কেউ যদি মাস্ক না ধুয়ে টানা দুই/তিন সপ্তাহ ব্যবহার করে তাহলে এই সংক্রমণ আশংকা রয়েছে।
রবিবার (২৩ মে) ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের বরাত দিয়ে এক ভারতীয় চিকিৎসক বলেছেন, অপরিচ্ছন্ন মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি স্টেরয়েড ব্যবহারকেও কালো ছত্রাক সংক্রমণের জন্য দায়ী করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, স্নায়ুবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক, চিকিৎসক পি শরৎ চন্দ্র সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অপরিচ্ছন্নতা ছত্রাক জাতীয় সংক্রমণের পিছনে বড় কারণ। তাঁর কথায়, ‘অনেকেই আছে যারা ২-৩ সপ্তাহের বেশি সময় না ধুয়ে একই মাস্ক ব্যবহার করে থাকেন'প্রতিরোধে নিয়মিত মাস্ক পরিবর্তন বা সেটিকে সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।
যদিও তার এসব কথার পিছনে এখনও যথেষ্ট পরিমাণে প্রমাণ নেই। তাছাড়া স্বাভাবিকভাবেই বুঝা যায় অপরিচ্ছন্ন যেকোন পদার্থ থেকেও রোগ ছড়াতে পারে।
ভারতীয় আরেক নামতরা বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক সুরেশ সিংহ নারুকা সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন ব্লাক বা হোয়াইট ফাঙ্গাস সংক্রমণের পিছনে যেমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে তেমনি আলোবাতাস ঢুকে না এমন ঘরে বসবাস কারীদেরও এই ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডা. জাফরুল্লাহ সাহেবের বয়স হয়েছে, তাই মাঝে মধ্যে ভুলভাল বলেন।
সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে তারেক রহমানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে ডা. জাফরুল্লাহর দেওয়া একটি বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম এমন মন্তব্য করেন।
সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের কালীবাড়ির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। তিনি মনে করেন, ‘বর্তমানে তারেক রহমান দলের সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছেন। পুরো দল তারেক রহমানের নির্দেশনায় কাজ করছে।’
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র মেনে তারেক রহমানকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। গঠনতন্ত্রে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান বলে কোনো পদ নেই।