a
ফাইল ছবি
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ করেছেন যু্ক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
জি২০ সম্মেলনে যোগ দিতে বাইডেন এবং শি জিনপিং সোমবার ইন্দোনেশিয়ায় পৌঁছে দুই নেতা সাক্ষাৎ ও করমর্দন করেন। খবর আনাদোলুর।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার কোনো ইচ্ছা চীনের নেই। চীন চায় তার স্বাধীনতায় কেউ যাতে হস্তক্ষেপ না করে।
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে জি-২০ সম্মেলন। এ সম্মেলনে যোগ দিতে বিশ্বনেতারা বালিতে সমবেত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর শির সঙ্গে বাইডেনের এটিই প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ। যদিও ২০২১ সালের জানুয়ারিতে বাইডেন শপথ গ্রহণের পর দুই নেতার মধ্যে পাঁচবার ফোনে বা ভিডিওকলে কথা হয়েছে।
তাদের সর্বশেষ দেখা হয়েছিল, বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালে এবং বাইডেন সেসময় ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
পরে সাংবাদিকদের সামনে বক্তৃতা দেন বাইডেন। সেখানে তিনি চীনের সঙ্গে ব্যক্তিগত এবং সরকারি উভয় পর্যায়ে যোগাযোগের রাস্তা সবসময় খোলা রাখারও প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় শি চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে বাইডেনের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহও প্রকাশ করেছেন। সূত্র: যুগান্তর
ফাইল ছবি । মোদি, পুতিন ও শি জিনপিং
ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দু’জনেই যথেষ্ট অভিজ্ঞ নেতা। ভারত-চীনের মধ্যেকার যে কোন সমস্যা তারা নিজেরাই মিটিয়ে ফেলতে পারবেন। এই বিষয়ে তৃতীয় কোনো আঞ্চলিত শক্তি না থাকাই ভাল।
শনিবার এসব মন্তব্য করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমি জানি ভারত-চীনের মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে বিরোধ রয়েছে। এটা প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে হয়েই থাকে। আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ব্যক্তিগত ভাবে জানি। তারা অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ।
তিনি আরো বলেন, তারা পরস্পরকে শ্রদ্ধা করেন। আমার বিশ্বাস কোনো সমস্যা তৈরি হলে, তারা ঠিক সমাধানসূত্র নিজেরাই বের করবেন। তবে এটাও দেখা জরুরি, এই ইস্যুতে যেন অন্য কোনো আঞ্চলিক শক্তি প্রবেশ না করে।
আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রুশ প্রেসিডেন্টের শেষের উক্তিটি আমেরিকার উদ্দেশেই করা হয়েছে। কারণ, ভারত-চীন দ্বন্দ্বে নয়াদিল্লির পাশে দাঁড়িয়ে প্রথম থেকেই বেইজিংয়ের বিরোধিতায় সরব রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া এই চার দেশের তৈরি আঞ্চলিক সংগঠন ‘কোয়াদ’ নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কার সঙ্গে কার, কতটা বন্ধুত্ব হবে তা নিয়ে মস্কো আগ্রহী নয়। তবে কোনো একজনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করা উচিত নয়।’ সূত্র: জিনিউজ ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।
সংগৃহীত ছবি
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজনৈতিক ঐক্য সংকটকালীন সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং যে কোনো সংকট মোকাবিলায় এটি একেবারে অপরিহার্য। শেখ হাসিনা-পরবর্তী সময়ে নতুন কোনো রাজনৈতিক সমঝোতার আশা আমরা এখনো পাইনি। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি, দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই আরও তীব্র হয়েছে। জাতি তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগে রয়েছে এবং এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
এই সংকটময় সময়ে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। জাতি আশা করে, এই দুই দলের মধ্যে ঐক্য হবে, কারণ এর কোনো বিকল্প নেই।
১৯৭৫ সালের নভেম্বর বিপ্লবের পর যে জাতীয় ঐক্য তৈরি হয়েছিল, তা ছিল দেশের রাজনৈতিক ঐক্যের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। নবগঠিত বিএনপির নেতৃত্বে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক ঐক্য সেই সময়ে নবজাতীয়তাবাদী শক্তি এবং বিদ্যমান ইসলামী রাজনৈতিক শক্তির একটি সফল মেলবন্ধন হিসেবে কাজ করেছিল।
জিয়াউর রহমানের দক্ষ নেতৃত্বে সৃষ্ট রাজনৈতিক ঐক্য অল্প সময়ের মধ্যেই সকল সংকট মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছিল। এটি সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র ঐক্যের কারণেই।
জাতীয় ঐক্যকে জাতীয় শক্তির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জাতি যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তবে কোনো কিছুই তাদের ক্ষতি করতে পারে না। এটি একটি জাতির জন্য সুপার পাওয়ার হিসেবে কাজ করে।
সম্প্রতি রাজধানীতে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মানুষের জমায়েত এবং দুই ছাত্র দলের সংঘর্ষ স্পষ্ট বার্তা দেয় যে, দেশের শত্রুরা অরাজকতা সৃষ্টি করতে সক্রিয় রয়েছে।
বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির একের পর এক অবনতি সরকার এবং জাতির জন্য কোনো শুভ লক্ষণ বহন করে না। বড় আকারের আইনশৃঙ্খলা সংকট দেখা দেওয়া অসম্ভব নয়, যা বর্তমান সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর আন্তরিক সমর্থন সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করতে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শক্তি জোগাতে পারে। তবে সরকারকে তাদের কাজের গতি বাড়াতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
এই মুহূর্তে বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর ঐক্য অপরিহার্য, নতুবা অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত শত্রুরা এর সুযোগ নিতে দ্বিধা করবে না। বিপ্লবের সময় কয়েকশো মানুষের জীবন এবং জনগণের অমানবিক কষ্টের মাধ্যমে অর্জিত সুযোগ কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। এই সময়ে জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য উভয় দলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
জাতীয় স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখতে হবে। রাজনৈতিক ঐক্য ছাড়া জাতিকে অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত হুমকির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব নয়।
জাতীয় সংকটকালে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং কোনো দলেরই এটি উপেক্ষা করা উচিত নয়। বিএনপি, যেহেতু দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল, তাদের দায়িত্ব অন্যান্য রাজনৈতিক দলের তুলনায় অনেক বেশি। যদি তারা ১৯৭৫ সালের মতো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার গুরুদায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়, তবে ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
বিএনপিকে বিচক্ষণতার সঙ্গে জাতিকে নেতৃত্ব দিতে হবে এবং তারা কোনোভাবেই ভুল করার সুযোগ নিতে পারবে না। তারা ভুলে গেলে চলবে না যে, পুরো জাতি তাদের যোগ্য নেতৃত্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তাদের অবশ্যই সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে একটি নিরাপদ এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা যায়।
যেমনটি তারা অতীতে প্রমাণ করেছিল, এবারও তাদের সেই সামর্থ্য প্রমাণ করতে হবে, ইনশাআল্লাহ।
লেখক: প্রফেসর ড. এস কে আকরাম আলী
সম্পাদক, মিলিটারি হিস্ট্রি জার্নাল