ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ১১ দিন ধরে চলা ইসরায়েলি বর্বরতার হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ২২৭ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৪ জন শিশু ও ৩৮ জন নারী রয়েছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন দেশের নিন্দা-প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে দখলদার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।
এ কারণে ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যে ইসরায়েলি মালিকানাধীন একটি ড্রোন কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনকারীরা।
কারখানাটির ছাদে অনেকেই প্রতিবাদ হিসেবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। তাদের নামাতে স্থানীয় দমকল বাহিনী ডেকেছিল ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ, কিন্তু তারা জানিয়ে দিয়েছে, মানবিক কাজে নিয়োজিত এই বাহিনী ফিলিস্তিনপন্থীদের গায়ে হাত দিতে পারেন না।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করছে, নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর আক্রমণ চালাতে ব্যবহৃত ড্রোন ওই কারখানায় তৈরি করা হয়। এজন্য কারখানাটির প্রবেশদ্বারে তালা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তারা। এতে সেখানকার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলেও দাবি তাদের। সূত্র : বিবিসি
তাইওয়ান ও চীনের মধ্যে আবার উত্তেজনা বেড়েছে। দ্বীপটি ঘিরে আবার বড় ধরনের সামরিক কার্যক্রম চালানো শুরু করেছে বেইজিং। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, আজ শনিবার ১৭টি চীনা যুদ্ধবিমান ও ৫টি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান ঘিরে চক্কর দিতে দেখা গেছে। এর মধ্যে চারটি যুদ্ধবিমান তাইওয়ান প্রণালিতে তাইওয়ান ও চীনের অলিখিত সীমা বা মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে বলে দাবি করেছে তাইপে।
তাইওয়ানের সামরিক বাহিনী জানায়, তাদের পর্যবেক্ষণে বেইজিংয়ের নতুন সামরিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি ধরা পড়েছে। তাইওয়ান নিউজের বরাতে বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে চীনের সামরিক কর্মকাণ্ড দেখতে পাওয়া যায়।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) এয়ার ফোর্সের ১৭টি যুদ্ধবিমানের মধ্যে ৮টি সীমানা অতিক্রম করে। এগুলোর মধ্যে ছিল চারটি শিআন জেএইচ–৭ ফাইটার বোম্বার, দুটি সুখোই এসইউ–৩০ ফাইটার ও দুটি সেনইয়াং জে–১১ জেট বিমান। এগুলোর মধ্যে জেএইচ–৭–এ এসইউ–৩০ যুদ্ধবিমানগুলো উত্তর প্রান্ত ও জে–১১ ফাইটার বিমানগুলো দক্ষিণ প্রান্ত দিয়ে সীমানা অতিক্রম করে।
তাইওয়ানের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, চীনের সামরিক কর্মকাণ্ডের মুখে তারা নজরদারি ও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কমব্যাট এয়ার প্যাট্রোলস (সিএপি), নৌবাহিনীর জাহাজ ও প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সক্রিয় করার ব্যবস্থা নেয়।
চীনের কড়া হুঁশিয়ারির পরও এ মাসের শুরুতে তাইওয়ান সফর করেন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তাঁর ওই সফর ঘিরে তাইওয়ান নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর গত রোববার মার্কিন কংগ্রেসের আরেকটি প্রতিনিধিদল তাইওয়ানে গেলে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। চীনের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে বলা হয়, তাদের যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের দোরগোড়ায় রয়েছে। তাইওয়ানের কাছাকাছি পেংহু দ্বীপের ভিডিও প্রকাশ করে পিএলএ।
তাইওয়ানকে নিজের ভূখণ্ড মনে করে বেইজিং। কিন্তু তাইওয়ানের মানুষ নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবেই দেখেন। এই দ্বীপের নিয়ন্ত্রণ নিতে প্রয়োজন হলে সামরিক শক্তি খাটানোর হুমকিও দিয়ে আসছে বেইজিং। চীন বলে আসছিল, ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ান সফরে গেলে এর পরিণাম হবে ভয়াবহ। কিন্তু বেইজিংয়ের সতর্কবার্তা উপেক্ষা করে পেলোসি তাইওয়ান যান। তাঁর এই সফর কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তেজনায় তাইওয়ান প্রণালিতে ব্যাপক সামরিক মহড়া চালায় চীন। মোতায়েন করা হয় যুদ্ধজাহাজ, যুদ্ধবিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র। ১৯৯৬ সালের পর এটাই ছিল চীনের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া। পেলোসি ও তাঁর পরিবারের ওপর নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছে চীন। অবশ্য তাইওয়ানের দাবি, সামরিক মহড়া শুরুর পেছনে পেলোসির সফরকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করেছে চীন।
এর মধ্যেই আবার মার্কিন কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল তাইওয়ান সফর করে। এতে আরও বেশি ক্ষোভ প্রকাশ করে বেইজিং। তাদের সফর ঘিরে সোমবার সেখানে আবারও সামরিক মহড়া চালায় বেইজিং। চীনের সামরিক বাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের মুখপাত্র শি ই বলেন, তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ান। রাজনৈতিক কূটকৌশলও খাটাচ্ছে তারা। এই সামরিক মহড়া তারই একটি জবাব। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েবিন বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় প্রয়োজন হলে চীন শক্ত পদক্ষেপ নেবে।
বেইজিংয়ের এমন হুমকির মুখে অবশ্য শক্ত অবস্থানে রয়েছে তাইপেও। তাইওয়ান এয়ার ফোর্সের ভাইস চিফ অব স্টাফ তুং পেই-লুন অবশ্য তাইওয়ান প্রণালিতে পেংহুর কাছে চীনের মহড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, বেইজিং কথার লড়াই চালাচ্ছে।
এদিকে তাইওয়ান প্রণালি ঘিরে উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আগামী সপ্তাহ বা মাসের মধ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। তাইওয়ান ঘিরে চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক কার্যকলাপের জবাব দেওয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র এ পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
গত বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, স্থিতাবস্থাকে ক্ষুণ্ন করার জন্য বেইজিংয়ের চলমান প্রচেষ্টার মুখে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য যুক্তরাষ্ট্র কঠোর পদক্ষেপ নেবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রজুড়ে এই পদক্ষেপগুলো নেওয়া হবে। আগামী সপ্তাহ এবং মাসগুলোতে তা প্রকাশ পাবে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রে এ চ্যালেঞ্জকে দীর্ঘমেয়াদি বলে মনে করছে। সূত্র: প্রথম আলো
জার্মানির ডুসেলডর্ফে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ের একটি বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ওই বোমার ওজন প্রায় ৫০০ কিলোগ্রাম।
বোমাটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকা নিক্ষেপ করেছিল। তবে সে সময় বোমাটি বিস্ফোরণ হয়নি। এতদিন পর সেটিকে উদ্ধার করা হলো। বোমাটি নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ এবং দমকলকর্মীরা বোমাটি উদ্ধার করেছে।
দমকল বাহিনী বোমাটিকে নিষ্ক্রিয় করার চেষ্টা করছে। তবে তার আগে প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কোনও কারণে বোমাটি বিস্ফোরণ হলে স্থানীয় মানুষের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করা হয়েছে বলে ডুসেলডর্ফের প্রশাসন জানিয়েছে।
স্থানীয় মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর পাশাপাশি একাধিক রাস্তাও বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। বন্ধ করা হয়েছে কয়েকটি ট্রামের রাস্তা। দূরপাল্লার কয়েকটি ট্রেনও বাতিল করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে পুলিশ জানিয়েছে, বোমাটি বিস্ফোরণ হলে এর ভয়াবহতা হবে ব্যাপক। তাই সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জার্মানিতে এর আগেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলের বোমা উদ্ধার করা হয়েছি। ২০২০ সালে ফ্রাঙ্কফুর্টে যুক্তরাজ্যের তৈরি একটি বোমা উদ্ধার হয়েছিল। সেখানেও প্রায় ১৩ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়। সূত্র: ডয়েচে ভেলে, এএফপি, দ্য লোকাল জার্মানি