ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর উপ-প্রধান খলিল আল-হাইয়া বলেছেন, যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখতে হলে ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকায় দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনর্গঠন করতে হবে। ইহুদি বসতি চালিয়ে গেলে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।
আজ শুক্রবার আল-আকসা টিভিতে প্রকাশিত এক খবর এমনটাই জানানো হয়েছে। খলিল আল-হাইয়া আরও বলেছেন, গাজার পুনর্গঠনের সাথে সম্পর্কিত হুমকিকে প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস এবং এব্যাপারে কোনো ধরনের রাজনৈতিক আপস করা হবে না।
জেরুজালেম এবং আল-আকসা মসজিদে ইহুদি বসতি স্থাপন বন্ধ না করা পর্যন্ত ইসরায়েলকে মারাত্মক পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে বলেও হুমকি দিয়ে বলেন, যুদ্ধবিরতি নাজুক অবস্থায় রয়েছে এবং এ জাতীয় সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এটি কার্যকর করা গুরুত্বপূর্ণ। সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের দুই নেতা এবং বাংলাদেশে কাজ করা মানবাধিকার কর্মীদের আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানির বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক।
এক বিবৃতিতে তিনি মানবাধিকারকর্মী ও অন্যান্য সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের জন্য নিরাপদ ও সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি ও মার্তা হুরতাদো গণমাধ্যমকে এ উদ্বেগের কথা জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় এক দশক ধরে ড. ইউনূস হয়রানি ও ভয়ভীতির মুখোমুখি। বর্তমানে তিনি শ্রম আইন লঙ্ঘন ও দুর্নীতির দু’টি অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন। যেগুলোতে তার কারাদণ্ড হতে পারে।
হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, বাংলাদেশে সুশীল সমাজ, মানবাধিকারকর্মী এবং ভিন্নমত পোষণকারীদের আইনি প্রক্রিয়ায় হয়রানি করা হচ্ছে, যা উদ্বেগজনক। বাংলাদেশের স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য এ মামলাগুলো একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য অধ্যাপক ইউনূস সুপরিচিত। তিনি আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাবেন।
তিনি বলেন, অধিকারের নেতা আদিলুর রহমান খান ও নাসিরুদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে মামলা জাতিসংঘ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যেগুলোর রায় ৭ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সঙ্গে ১০ বছর আগের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংক্রান্ত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সম্পর্ক রয়েছে।
বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার বলেন, ইউনূসের বিরুদ্ধে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে অনেক সময়ই মানহানিকর প্রচারণা আসছে। আমরা এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন। এতে তিনি ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
যথাযথ প্রক্রিয়া এবং ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের বিচার বিভাগকে এই মামলাগুলোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পর্যালোচনা নিশ্চিতের আহ্বান জানান হাইকমিশনার।
বাংলাদেশের নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইনটিও জাতিসংঘ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে ভলকার তুর্ক বলেন, নতুন আইনটিতে কারাদণ্ডের পরিবর্তে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি অপরাধের জন্য জামিনের সুযোগ থাকবে। তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আটকাতে আইনের স্বেচ্ছাচারী ব্যবহার রোধ করতে সব উদ্বেগের সমাধান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূত্র: ইত্তেফাক
আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের পর ঝড়ের গতিতে একের পর এক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিচ্ছে তালেবান। তালেবান আবারও আফগানিস্তান নিয়ন্ত্রণ করবে এসব সম্ভাবনায় অপরাপর অনেক দেশই উদ্বিগ্ন। তবে সবচেয়ে বেশি উৎকন্ঠায় আছে ভারত। খবর বিবিসি বাংলা।
এ প্রসঙ্গে দিল্লির জওহারলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ড. সঞ্জয় ভরদোয়াজ বলেন, অনেক দেশই আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকন্ঠায়, কিন্তু অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে আফগানিস্তানে সবচেয়ে বেশি স্বার্থ এখন ভারতের। তালেবান আবার ক্ষমতা নিলে ভারতের ক্ষতি হবে সবচেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, ভারতের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য আফগানিস্তানের গুরুত্ব অপরিসীম। ফলে ভারত এখন জটিল এক সংকটে পড়েছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, আফগানিস্তানে প্রভাব বিস্তারে ভারত গত দুই দশকে চার শতাধিক সামাজিক-অর্থনৈতিক এবং বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পে ৩০০ কোটি ডলারেও বেশি বিনিয়োগ করেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ডজন ডজন প্রকল্প ছাড়াও, দিলারাম-জারাঞ্জ মহাসড়ক নামে ২১৮ কিমি দীর্ঘ গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক তৈরি করে দিয়েছে ভারত। কাবুলে নতুন আফগান পার্লামেন্ট ভবনটিও তৈরি করেছে তারা।
চলমান শত শত প্রকল্পের কাজও এখন মুখ থুবড়ে পড়বে। যে উদ্দেশ্যে এসব বিনিয়োগ, তার ভবিষ্যৎ কী? এগুলো কি পানিতে যাবে? ভারতের নীতি-নির্ধারকরা এখন সে চিন্তায় অস্থির।
তবে শুধু ৩০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের বিষয় নয়, বরং আরও অনেক কারণে ভারতের জন্য আফগানিস্তানের গুরুত্ব রয়েছে। মধ্য এশিয়ার বাজারে ঢোকার জন্য ভারতের জন্য আফগানিস্তান খুবই জরুরি। তবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ এসবের চেয়েও বেশি।
নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ভরদোয়াজ বলেন, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে এবং লাদাখ নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতের বিপজ্জনক দ্বন্দ্ব চলছে। এখন আফগানিস্তান শত্রু রাষ্ট্রে পরিণত হলে ভারতের জন্য তা এক বড় রকম মাথাব্যথা তৈরি হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা