জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে নারা প্রদেশে ভাষণ দেওয়ার সময় শুক্রবার সকালে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক হামলাকারীকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খবর জাপান টাইমসের।
জাপানের নারা শহরে বক্তৃতা দেওয়ার সময় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢলে পড়েন। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎকরা তার অবস্থা গুরুতর বলে জানিয়েছেন।
জাপানের স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি প্রচারাভিযানে শিনজোকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
অসুস্থতার কারণে ২০২০ সালের আগস্টে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন শিনজো আবে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করার কথা ছিল কিন্তু এক বছর আগেই দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন।
২০১২ সালে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া শিনজো আবে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে দায়িত্ব পালন করা জাপানি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সূত্র: যুগান্তর
পাকিস্তানের গত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কারচুপির দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করা রাওয়ালপিন্ডি ডিভিশনের কমিশনার লিয়াকত আলী চাট্টাকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগের পর পুলিশের কাছে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন চাট্টা। পরে তার অফিসে অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রশাসন রেকর্ড জালিয়াতি ঠেকাতে অফিসটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ওই কমিশনারকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।
রাওয়ালপিন্ডি জেলা প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সামগ্রী ও তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষিত করা হয়েছে। শনিবার রাওয়ালপিন্ডির কমিশনার লিয়াকত আলী চাট্টা তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে দাবি করে তিনি তার পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে লিয়াকত আলী বলেন, নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি হয়েছে এবং তিনি নিজেও এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। শুধু অনিয়ম ও ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হওয়াকে তিনি নিতান্তই কম বলে উল্লেখ করে দাবি করেন, নির্বাচনে অনেক বড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন যারা ৭০ থেকে ৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন এবং তাদের আমরা জাল ভোট দিয়ে হারিয়ে দিয়েছি।
লিয়াকত আলী বলেন, নির্বাচনে এমন অনেকে আছেন যারা হেরে যেতেন; কিন্তু তাদের আমরা ভোট জালিয়াতি করে জিতিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। সূত্র: ডন নিউজ
আজকে তোমার জন্মদিন।। গতবছর
বলেছিলো আজকের এই
দিনে সে সুন্দর
একটা শাড়ি পড়বে।। চুল
বেধেঁ চোখে কাজল
দিবে।। হাত ভর্তি লাল-
নীল কাঁচের চুড়ি।।
শাড়ি পরে ও আমার
সামনে আসবে।। চুড়িঁর
শব্দ শুনবো, আর
ওকে বলবো তোমাকে ভারি সুন্দর
লাগছে।।
আজকে ওর
জন্যে একটা নীল রংয়ের
শাড়ি এনেছি,আর লাল
নীল কাচেঁর
চুড়ি,সামান্য একটু
কাজল।।ও এসব
দেখে নীরবে শুধু
হেসেছে।।
ছুয়েঁও দেখে নি,ও কেবলই
বলে আমাকে, শুনো আমি দেখতে খুব
খারাপ হয়ে গেছি।।
সাজলে পেত্নীর মতন
লাগবে,
প্লিজ একটু, একবারের
জন্য সাজো না।।
না।।
কেন?
যে মেয়ে দুদিন পর
মারা যাবে,তার
সাজলে চলে!
তমা সেজেছে,হাতে লাল নীল
চুড়িঁ, চোখে কাজল, খোলা চুল।।
হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে আছে।।
আর বলছে,
বাবু চায়ে চিনি ঠিকমত
হয়েছে তো??
আজকাল জীবনটা কেমন
যেন বিরষ হয়ে গেছে।।
অসুস্থ হলেও কেউ
কপালে হাত
দিয়ে দেখে বলে না, বাবু
তুমি বলো নাই কেন
যে তোমার জ্বর আসছে?
কেউ আর
বৃষ্টিতে ভিজতে বারণ
করে না।।
কেউ আর শাসন
করে না রাতে দেরি করে বাসায়
ফিরলে।।
এখন আর চোখ বন্ধ
করলে তমার
ছবি দেখতে পাই না, খুব চেষ্টা করেও পারি না।।
আগের মত মনেও
পড়ে না।।
মাঝে মাঝে নিজেকে খুব
ছোট মনে হয় এই
ভেবে যেই
তমাকে এতোটা ভালোবাসি, তাকে এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলাম, কি করে?
আমি বৃষ্টিতে ভিজতে চাই নি,
তুমি জোর করে আমায় নিয়ে ভিজতে চাইতে।।
বৃষ্টির জল ছোঁয়া মাথায় লাগলে
যার হাড় কাপাঁনো জ্বর চলে আসতো সেই আমাকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে চাইতে।।
জ্বরের ঘোরে যখন শুয়ে থাকতাম,
ভাবতাম এই বুঝি তুমি আসবে,
আমার পাশে বসবে।। তুমি আসো নি।।
আকাশে এখনো জোছনা হয়, তারা ভরা আকাশ
ও দেখা যায়, কেবল
শুনতে পাই না তমার
সেই লাজুক হাসির শব্দ।।
জানি ফিরে তুমি আসবে না কখনো...
লিখেছেনঃ Nil Akasher Doorbin
১। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে , প্রত্যেক ছেলে মানুষ বিয়ের আগে ৭ বার প্রেমে পড়ে। :D
২। “love” শব্দটি এসেছে সংস্কৃত lubhyati থেকে যার মানে ইচ্ছা এবং মিউজিক জগৎ এ সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত শব্দ।
৩।বিয়ের আংটি সব সময় অনামিকা আঙ্গুলে পড়ানো হয়। কারণ সেই আঙ্গুলের সাথে হার্ট এর সংযোগ আছে বলে ধরা হয়।
৪। গোলাপ ভালোবাসার প্রতীক এবং এর বিভিন্ন কালার ভালোবাসার বিভিন্ন অর্থ বহন করে। লাল গোলাপ- প্রকৃত ভালোবাসা, লাইট পিংক গোলাপ-ইচ্ছা; আকাঙ্খা, হলুদ গোলাপ-বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের জন্য।
৫। ছেলেরা সেই সব মেয়েদের প্রতি বেশি আগ্রহী যাদের কোমরের পরিধি কটিদেশের প্রায় ৭০ ভাগ।
৬। যে স্বামী তার স্ত্রীকে প্রতিদিন সকালে কিস করে সে অন্যদের চেয়ে পাচঁ বছর বেশি বাচেঁ।
৭। যারা নতুন নতুন প্রেমে পড়ে তাদের দেহে সেরেটোনিন নামক এক প্রকার হরমোন উৎপন্ন হওয়া কমে যায়। যার ফলে মন কিছুটা উদাস থাকে বা বিষণ্ণতায় ভুগে।
৮। বেশিরভাগ ব্রেক-আপ হয়ে থাকে রিলেশনের ৫-৬ মাসের মাথায়। :|
৯। প্রেম হওয়ার একটি প্রধান ফ্যাক্ট হচ্ছে সবসময় সন্নিকটে বা কাছাকাছি থাকা। যার কারণে কলেজ বা ভার্সিটিতে প্রেম হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
১০।পরিসংখ্যানে দেখা গেছে প্রকৃত প্রেমিকরা কিস করার সময় ডান গাল থেকে শুরু করে । ;)
ছেলেটির দুহাত ধরে মেয়েটি কথা দিয়েছিল
জীবনে প্রথম সমুদ্র দেখবে ছেলেটির সাথে,
যদি তার এই শপথ পূরণ না হয়,
তবে কোনদিন সে সমুদ্রের সামনে দাড়াবেনা ।
আজ সে অন্য কারো সাথে সমুদ্রস্নানে মত্ত,
ঢেউয়ের তোড়ে কোথায় যে ভেসে গেল
পুরনো দিনের সেইসব অর্থহীন প্রতিস্রুতি !!!
ছেলেটি নিজে নিজে কিছুই করতে পারতনা,
জীবনের ছোট বড় সবকিছু মেয়েটি মনে করিয়ে দিত-
সেভ করার কথা,চুল কাটার কথা,
এমনকি ঠিক মত খেল কিনা,ঘুমাল কিনা তাও ।
আজ ছেলেটি একা একাই সব করে ,
সময় মত ঘুম থেকে ওঠে , নাস্তা করে অফিসে যায় ,
কখন কোন মিটিঙে যাবে কেউ মনে করিয়ে দেয়না ।
কথা ছিল ওদের ঘরে থাকবে আসমানি রঙের পর্দা,
আজ মেয়েটির ঘরে কাল পর্দা , ছেলেটির ঘরে সাদা !
কথা ছিল সপ্তম বসন্তে সারাদিন একসাথে কাটাবে দুজন,
আজ সেই দিন ,তবু মনে নেই কারোই !
ক্যালেন্ডারের পাতা গুলো হাওয়ায় ওড়ে ।
স্মৃতির উপর সময়ের প্রলেপ জমতেই থাকে ,
সবকিছু হয়ে যায় ঝাপসা , ভালবাসাও ???
১. চুমু খাওয়া স্বাস্থ্যকর!
২. ছেলেরা যদি কোন মেয়েকে অপমান করে, এর অর্থ সে তাকেপছন্দ করে ।
৩. 89% মেয়েই ছেলেদের কাছ থেকে প্রথমে প্রপোজ আশা করে ।
৪. একটা মেয়েকে পেছন থেকে যখন তার বয়ফ্রেন্ড কোমড় জড়িয়ে ধরে,এটা সে সবচেয়ে বেশী পছন্দ করে
৫. স্ত্রীরা সেই মুহূর্তটা ভালবাসে যখন তাদের স্বামীরা তাদেরকে টাই বেঁধে দিতে কিংবা কোটটা পড়িয়ে দিতে বলে
৬. ছেলেরা তাদের পছন্দের মেয়েকে রাগিয়ে লাল টুকটুকে চেহারাখানা দেখতে ভালোবাসে !
৭. সত্যিকারের বন্ধুরা কখনোই আপনার বন্ধুত্বের পরীক্ষা নিবে না
৮. পৃথিবীতে কেউ না কেউ অবশ্যই আছে যার চোখের জলকে আপনি নিজের জীবনের চাইতেও বেশী মূল্য দেন.
৯. যদি আপনি অন্তর থেকে কাউকে চান, জেনে রাখুন সেই মানুষটাও আপনাকে ভেবেই ঘুমুতে যায়
১০। ৯৯% ছেলে তার ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে ঘুমানোর আগে চিন্তা করে
১ । ♥ বাস্তবের ভালোবাসাটাকে সাজাতে পারি নি ,
কিন্তু কল্পনার ভালোবাসাটা রঙ্গিন আমার ।♥
২ । এই দুনিয়ার আজব নীতি, যে যার
যোগ্যো সে তাকে পায় না!
৩ । খুব বেশি করে চাওয়া তোমায় আর কখনই
হবে না পাওয়া
তবুও হয়তো তোমাকেই খুঁজে ফিরব
সারাটা জীবন ......।। ।।
৪ । যারা হারাবার তাঁরা হারাবেই মাঝখানে আপনার
জীবনটাকে এলোমেলো করে দিয়ে যাবে :(
৫ । আমার হারিয়ে ফেলার কেউ নেই । কাজেই
খুঁজে পাওয়ারও কেউ নেই । তাই
আমি মাঝে মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলি , আবার
খুঁজে পাই ....
৬ । আমি যদি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাই,
তুমি হয়তো সেদিন আমাকে ভুলে যাবে। কিন্তু ঐ
আকাশের তারা গুলো আমাকে মনে রাখবে। কারণ,
তারা গুলো আমার বন্ধু। ঐ তারা গুলো দেখেছে আমার
চোখের জল, আমার বুকের আর্তনাদ। তুমি হৃদয়
দিয়ে প্রশ্ন করো তারা গুলোকে, তারা গুলো বলবে,
'আমি তোমাকে কতটুকু ভালবাসতাম'।
৭ । আকাশটা যত সুন্দর, তার চেয়ে বেশি সুন্দর তার
বিশালতা। নদীটা যত সুন্দর, তার চেয়ে বে...শি সুন্দর
তার বয়ে যাওয়া। ব্ষ্টি যত সুন্দর, তার
চেয়ে বেশি সুন্দর তার ঝরে পড়া। মানুষ যত সুন্দর,
তার চেয়ে বেশি সুন্দর তার ভালোবাসা....... ...
৮ । মানুষের সব ইচ্ছা নাকি পূরণ হয় না ,
আসলে মানুষের চরমভাবে চাওয়া ২ ১
একটা ইচ্ছা পূরণ হয় না ,সেই ইচ্ছাগুলোই পূরণ
হয় না যা বাকি সব ইচ্ছার যোগফলের চাইতেও
বেশি ............... ..।
৯ । “জীবন” মৃত্যুকে জিগ্যেস করলো “মানুষ কেন
আমাকে ভালোবাসে কিন্তু তোমাকে ঘৃণা করে??”
“মৃত্যুর উত্তরঃ কারন তুমি হচ্ছ “সুন্দর” মিথ্যা...
আর আমি হচ্ছি “বেদনাদায়ক সত্য!!!
১০ । "ভালবাসায় যদি সব সুখ নিহিত
থাকতো তাহলে পৃথিবীতে এত বিরহের গান
রচনা হতনা ,গায়ক তার করুণ কন্ঠে প্রিয়ার
খোঁজে পাগলের মত গান গেয়ে বেড়াতনা এদিক ওদিক
শুন্য গন্তব্যে ,কবি তার সব ব্যকুলতা দিয়ে বিরহের
কবিতা লিখতোনা ।ভালবাসায় সূখ সাময়িক ,দূঃখ
চিরসাথী।"
"আলশাহরিয়ার শিহাব"
প্রেম হয় শুধূ দেখা আর চোখের ভালো লাগা থেকে , রাগ থেকে প্রেম হয় , ঘৃণা থেকে প্রেম হয় , প্রেম হয় অপমান থেকে , এমনকি ঘৃণা থেকেও প্রেম হয় ।
প্রেম আসলে লুকিয়ে আছে মানবসম্প্রদায়ের প্রতিটা ক্রোমোজম এ । সুযোগ পেলেই জেগে উঠে ।
- - - হুমায়ূন আহমেদ
বাঁচবো না এই আমি তোমাকে ছাড়া.....
থাকবো না এই আমি একেলা হয়ে.....
ভালোবাসা কি তা আমি জানি না.....
তবে চোখে জল আসে.....
কান্নায় নদী হয়.....
এখনও আমার ভেসে যাচ্ছে দু নয়ন.....
কিছু ব্যাথায় কিছু হতাশায়.....
বিশ্বাস করো আমি কাদছি.....
আর ভাসছি অথই সাগরে.....
ভালবাসা কি আমি জানি না.....
তবে বাঁচবো না এই আমি.....
তোমাকে ছাড়া.......
ভালবাসা সম্পর্কে আমার একটা থিওরি আছে। আমার মনে হয়,
প্রকৃতি প্রথমে একটি নকশা তৈরি করে।
অপূর্ব ডিজাইনের সেই নকশা হয় জটিল
এবং ভয়াবহ রকমের সুন্দর।
তারপর ,
প্রকৃতি সেই ডিজাইনকে কেঁটে দু ভাগ করে।
একটি ভাগ দেয় এক তরুণ বা পুরুষকে,
অন্যটি কোন তরুণী বা নারীকে।
ছেলেটি ব্যাকুল হয়ে নকশার
অন্য অংশ খুঁজে বেড়ায়।
মেয়েটিও তাই করে।
কেউ যখন তার ডিজাইনের
কাছাকাছি কিছু দেখে তখনই
সে প্রেমে পড়ে যায়।
তারপর
দেখা যায় ডিজাইন টি ভুল
- এটা তার নয়।
তখন হতাশা নেমে আসে।
এই কাজ প্রকৃতি ইচ্ছে করেই করে।
মূল ডিজাইনের কাছাকাছি কিছু
দেখিয়ে আবার সরিয়ে নেয়।
প্রকৃতি চায় না তারা একত্র হোক,
দুজনে মিলে মূল ডিজাইনটি তৈরি করুক।
এই না চাওয়ার কারণ আছে -
মূল ডিজাইনটি দেখে ফেলা মানেই
এবসলিউট বিউটির মুখোমুখি হওয়া ।
প্রকৃতি মানুষকে তা দিতে রাজি নয়।
তার ধারণা এবসলিউট বিউটি দেখতে
মানুষ এখনও প্রস্তুত হয় নি
- হুমায়ূন আহমেদ.
তোর টানা চোখের
তেতো দৃষ্টি ,
তোর বেপরোয়াভাবে হাসির
সৃষ্টি ,
তোর কালো চুলের
আন্দোলন ,আহ্ কি মিষ্টি !
ভুলবনা আমি কখনো …
যত দিন আছে প্রান …
যত দিন আছে প্রান …হাত
ধরে অমনি তা ছেড়ে দেয়া ,
পিছু
না ফিরে ওভাবে চলে যাওয়া , আমার কাছ
থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া ,
ক্ষমা করব না কোন দিন …
যত দিন আছে প্রান …
যত দিন আছে প্রান …
বৃষ্টিতে তোর উদ্দাম নৃত্যকে , কথায় কথায় তোর অকারন
অভিমানকে ,
দুষ্টুমি ভরা তোর শব্দকে ,
ভালবেসে যাব আমি …
যত দিন আছে প্রান … যত দিন
আছে প্রান …
তোর
দেয়া কসম ,মিথ্যা কথাকে ,
তোর দেখানো কপট ঐ
স্বপ্নকে ,
তোর নির্দয় ঐ বদ দোয়াকে ,
ঘৃনা করে যাব আমি … যত দিন আছে প্রান …
যত দিন আছে প্রান …
দিনটি ছিল বর্ষাকাল।
ঘুম থেকে উঠতে দেরী হয়ে গেল।আসলেই বৃষ্টি আর লোডসেডিং মানুষকে বহু কষ্ট দেয়।কিভাবে যে এ জালা সহ্য করি।আজ ১১ টায় পরীক্ষা। এমনিতে দেরী করে ঘুম থেকে উঠলাম তার মধ্যে বাহিরে তুমুল বৃষ্টি পড়ছে।কাল রাতেও সালার লোড সেডিং এর কারণে ভালোভাবে পড়া হয়নি।আল্লাহ জানে আজ কপালে কি আছে।তবুও আল্লাহর নাম নিয়ে বের হয়ে গেলাম। রিক্সা পাচ্ছিনা।বের হয়ে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজেই কোনোমত পরিক্ষা হলে ঢুকলাম।প্রশ্ন পত্র দেখে মাথা বেথা শুরু হয়ে গেল। কোনোমত পরিক্ষা দিয়ে বাসায় পৌঁছলাম।বাসায় ঢুকতে না ঢুকতেই আম্মু FM শুরু হয়ে গেলো "'বই পত্র গুছিয়ে রাখতে পারিসনা??এত বড় হয়ে গেছিস তবুও নিজে ছেলেমানুষি করে বেড়াস।।আমাকে কেন এত জালাস? "' ইত্যাদি ।।..কোনোমত গলা দিয়া দুটো ভাত ঢুকিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম ...বন্ধুগুলাও সব নিজের কাজে বিজি ..পরীক্ষাটাও তেমন ভালো হয়নি । মনটাও খারাপ তাই মোবাইল টা নিয়ে ছাদে চলে গেলাম...সময় তখন বিকাল ৫টা..সাভাবিকভাবে ছাদের চাবি আমাদের কাছে থাকে.. কারণ আমরা সেই বিল্ডিঙ্গের ৬ তালায় থাকতাম ..আর আমি ছাদে যেতে বেশি পছন্দ করতাম..ছাদে দাড়িয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতেছিলাম ..তখন পিছন থেকে একটা ছেলে বলল
আসসালামু আলাইকুম ভাই কেমন আছেন?
আমি পিছন ঘুরে দেখলাম প্রায় ৫.৬ ইঞ্চি লম্বা একটা ছেলে। বলাম-জি ভাই ভালো..সরি আপনাকে ঠিক চিনতে পারলামনা..
ভাই আমরা এই বাসায় নতুন ভাড়াটিয়া ..তিন তলায় থাকি..ভাই শুনলাম ছাদের চাবিটা নাকি আপনার কাছে থাকে?'.
জি ভাই আমার কাছেই থাকে'..
তা ভাই আপনার নামটা জানতে পারি?
জি আমার নাম মোঃ আকাশ.আপনার?
'ভায়া আমার নাম সজল.
কি করেন আপনি?
আমি স্টাডি করি এবার অনার্স থার্ডইয়ার।আপনি?
জি ভায়া আমি আপনার থেকে জুনিয়র।মাত্র অনার্স ফার্স্টইয়ার।
ওকে নো প্রবলেম । একই ছাদের নিচে যেহেতু থাকি তাহলেতো আমরা ভাইবন্ধু কি বলেন? ( হাসতে হাসতে আমাকে বলতেছে )
জি ভাই ঠিক বলেছেন ( আমিও হাসতে হাসতে উত্তরটা দিলাম )
ভাই পড়ালেখা কেমন চলতেছে?
ভাই সেই টেনসনই করতেছি।পরিক্ষাতো দিয়ে আসলাম আল্লাহ যানে কি হবে।
আল্লাহর রহমতে ভালোই হবে,আপনি চিন্তা করবেননা :) [:)]
জি ভাই দোয়া করবেন :) [:)]
আচ্ছা ভাই আপনার কাছে কি আরেকটি ছাদের চাবি হবে?
জি ভাই আমার কাছে দুটা আছে
একটা কি দেয়া যাবে?
জি ভাই সিউর..নিন
থেন্ক্স ব্রাদার
জি ওয়েলকাম.
আবার মনেহয় বৃষ্টি আসবে।
জি ভাই তাই মনে হচ্ছে।আবারো আকাশটা মেঘলা হয়ে গেলো।
আমাদের কথার মাঝে কে যেন পিছন থেকে হঠাৎ খুব মিষ্টি করে বলছে 'ভাইয়া তোমাকে আম্মু ডাকতেছে।তাড়াতাড়ি ঘরে চলো।
সজল ভাই বলল 'এইতো আসছিরে পাগলি তুই ঘরে যা।
তখন আমি পিছন ঘুরে তাকালাম।দেখলাম বাতাসে তার চুলগুলো দিয়ে মুখটা ঢেকে আছে । মুখটা আবছা দেখা যাচ্ছে।
তখন সে টেরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে চলে গেলো।
আমিও আর তাকালাম না।কিন্তু তার তাকানোর ভঙ্গিটা আমার কাছে খারাপ লাগলনা :D :D
আচ্ছা আকাশ ভাই আমি তাহলে এখন যাই।ঘরে একটু কাজ আছে।
জি ভাই আমিও নেমে যাবো চলেন।
(ছাদ থেকে নামছি আর কথা বলছি)
আকাশ ভাই আপনারা কয় তালায় থাকেন?
ভাই আমরা ৬ তলায় থাকি
ও আচ্ছা।আপনার ফোন নাম্বারটা দিন ছাদে গেলে ফোন দিয়েন
ওকে ভায়া ।ভায়া আপনি আমাকে তুমি করে বলতে পারেন
ওকে ভাই ।
আচ্ছা ভাই যাই ' আল্লাহ হাফেজ '
আল্লাহ হাফেজ
পরের দিন ঘুম থেকে উঠলাম খুব তাড়াতাড়ি।ব্রাশ করতে করতে ছাদে যাবার জন্য সিরি দিয়ে উঠে দেখি ছাদের গেটটা খোলা।আমি একটু অবাক। মনে মনে ভাবছি 'এত সকালে ছাদে কে আসলো ?'ছাদের দরজা দিয়ে ঢুকে দেখি সেই মেয়েকে দেখা যাচ্ছে।যে মেয়েটি গতকাল সজল ভাই কে ডাক দিতে আসছিল । মেয়েটি গোলাপফুল গাছটায় পানি দিচ্ছে।আমি একটু জোরে সরেই বললাম ' এইযে শুনুন আপনি।এখানে কি করছেন?'
কি করছি মানে?দেখছেননা কি করছি?চোখে পানি দিয়ে এসে ভালো দেখেন আমি কি করছি।
জি ওইটা আমার গোলাপ গাছ।আমি লাগিয়েছি ।
বাহ বাহ।লাগিয়েছেন ভালো কথা কিন্তু যত্ন নেবারতো কোনো খবরই নাই।দেখেনতো গাছের পাতাগুলা কেমন শুকিয়ে গিয়েছিল।আমি এখন গাছে পানি দেওয়াতে গাছ কেমন সুন্দর লাগছে
আমি হেসে হেসে বললাম - মেডাম এই বর্ষায় যে বৃষ্টি আসে এতে আবার গাছে পানি দেয়া লাগে?
না মানে
ওকে ইটস ওকে
গোলাপ আপনার কাছে ভালো লাগে?
ভালো লাগে মানে?অনেক ভালো লাগে।
আচ্ছা আপনি সজল ভাইয়ের কি হন?
সজল আমার বড় ভাইয়া।
ও আচ্ছা।
আমি এখন যাই। দেরি হলে আম্মু বকা দিবে।
ওকে যান তাহলে।
আজ পরিক্ষা নেই।আবার ৩দিন পর।বহু সময় হাতে আছে।তাই একটু নিশ্চিন্তএ সময় কাটাচ্ছি।সত্যি কথা বলতে আমি একটু পড়া চোর :p :p ।সময় পেলেই গান শুনি আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই।আর পরীক্ষার আগেরদিন সারাদিন সারারাত বই নিয়ে ঘুমায়।তখন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট হয়ে যাই।বই খাতা ছাড়া কিচ্ছু বুঝিনা।তখন ব্রিলিয়ান্ট ছাত্ররা আমার কাছে হার মানে যায় :D :D ।
পর্ব-২
বিকালে ছাদের আবার গেলাম..একা একা ছাদে অনেকটা সময় দাড়িয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম...তখনও আকাশটা অনেকটা মেঘলা ছিল..দমকা বাতাস মনটাকে ছুয়ে যাচ্ছে ...জোরে একটা নিশ্বাস নিলাম...অসম্ভব সুন্দর বাতাসের গন্ধ ...দু এক ফোটা বৃষ্টির জল শীতল করে দিচ্ছে মনটাকে ...মন চায় হারিয়ে যাই কোনো এক অজানা দেশে ...জানিনা কেন প্রকৃতিটাকে এত ভালবাসতে ইচ্ছে করে...এক একটা সময় মনে হয় এই মেঘ এই আকাশ,বৃষ্টি,শীতল ঠান্ডা দমকা হাওয়া সবই আমার আপনজন....মন চায় তাকে নিয়ে চলে যাই সেই মেঘগুলোর ওপরে আরো ওপরে যেখানে থাকব শুধু আমরা দুজন..আর অনুভব করব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ..
কিন্তু কাকে নিয়ে ? কার কথা ভাবছি আমি নিজেও জানিনা
এইযে শুনুন
পিছন থেকে কে যেন ডেকে উঠলো..পিছন ঘুরে তাকিয়ে দেখি সেই মেয়েটি..চোখে চো
১. পোশাক-পরিচ্ছদ টাইট বা আঁটসাঁট হওয়া চলবে না। অর্থাৎ পোশাক হতে হবে ঢিলে ঢালা। এমন পোশাক পরিধান করা যাবে না, যে পোশাক পরিধান করার পরও লজ্জাস্থানের অবয়ব বোঝা যায়। রাসূলুল্লাহ সা: ওই সব লোকদের অভিসম্পাত করেছেন যারা পোশাক পরার পরও উলঙ্গ থাকে।
২. এমন পাতলা বা ফিনফিনে কাপড় পড়া যাবে না যে কাপড় পরার পরও লজ্জাস্থান দেখা যায়।
৩. নারী-পুরুষের এবং পুরুষ-নারীর পোশাক পরিধান করা যাবে না। এখন অনেক ছেলেদের দেখা যায় যারা হাতে বিভিন্ন রকমের বালা পরিধান করে, কানে দুল দেয়,গলায় মালা বা চেইন পরে, পাঞ্জাবির সাথে ওড়না পরে ইত্যাদি। অন্য দিকে মেয়েরা তাদের নিজস্ব পোশাক পরিধানের পরিবর্তে জিন্সের প্যান্ট, টিশার্ট, স্কিন টাইট গেঞ্জি, পাঞ্জাবি ইত্যাদি পরিধান করছে। রাসূলুল্লাহ সা: ওই সব পুরুষকে লা’নত করেছেন যারা নারীর বেশ ধারণ করে এবং ওই সব নারীকে লা’নত করেছেন যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে।
৪. পুরুষের স্বর্ণের অলঙ্কার পরাযাবে না। স্বর্ণ পুরুষের জন্য হারাম। অনেক ছেলেদের দেখা যায় গলায় স্বর্ণের চেইন ব্যবহার করে। হাতে স্বর্ণের আংটি পরে। বিশেষ করে বিয়েতে মেয়ে পক্ষ ছেলেকে স্বর্ণের আংটি ও গলার চেইন দেয়। হজরত আবু হুরাইয়া রা: থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলসা: পুরুষকে স্বর্ণের আংটি পরতে নিষেধ করেছেন। শুধু আংটি নয়, পুরুষের জন্য স্বর্ণের যেকোনো অলঙ্কার হারাম।
৫. পুরুষের রেশমি কাপড় পরিধান করা যাবে না। এটা পুরুষের জন্য হারাম। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশমি কাপড় পরিধান করবে আখেরাতে তার জন্য কোনো অংশ নেই। অন্য একটি হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রেশমি কাপড় দুনিয়াতে কাফেরদেরজন্য আর মুমিনদেরজন্য পরকালে।
৬. বিজাতীয় পোশাক পরিধান করা যাবে না। অন্য ধর্মাবলম্বীদের নির্ধারিত ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করে এমন পোশাক পরিধান করা জায়েজ নেই। যেমন খ্রিষ্টানদের ক্রুশ অঙ্কিত পোশাক, হিন্দুদের মতো উল্কি আঁকা,সিঁদুর পরা ইত্যাদি। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি অন্য কোনো জাতির অনুসরণ করবে সে সেই জাতির উম্মত হিসেবে গণ্য হবে। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, লা’নত বর্ষিত হোক সেই সব নারীর ওপর যারা উল্কি এঁকে নেয় এবং যারা উল্কি আঁকায়, যারা চুল উঠিয়ে ফেলে, ভ্র প্লাক করে, সৌন্দর্য বৃদ্ধিরজন্য দাঁত কেটে চিকন করে, দাঁতের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি করে যা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তনএনে দেয়।
৭. বেশি চাকচিক্য পোশাক পরিধান করা যাবে না, যাতে বিপরীত লিঙ্গকে আকৃষ্ট করে। নারী-পুরুষ উভয়ই পর নারী বা পর পুরুষকে আকৃষ্ট করার জন্য বেশি চাকচিক্য পোশাক পরিধান করা যাবে না। বিশেষকরে নারীরা এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘তারা যেন (নারীরা) যা সাধারণত প্রকাশমান এমন সৌন্দর্যছাড়া অতিরিক্ত সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে বেড়ায়।’
৮. পুরুষের টাকনুর নিচে পোশাক পরিধান করা যাবে না। আজকাল অধিকাংশ পুরুষকে দেখা যায় তারা তাদের প্যান্ট পায়ের পাতা পর্যন্ত ঝুল দেয়। এর মধ্যে যারানামাজি তারা নামাজের সময় তাদের প্যান্ট টাকনু পর্যন্ত গুছিয়ে নেয়। আসলে টাকনু পর্যন্ত কাপড় পরা পুরুষদের সব সময়ের জন্য আবশ্যক, শুধু নামাজের সময় নয়। রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেছেন, ‘যেসব পুরুষ অহঙ্কারের (ফ্যাশনের) জন্য টাকনুর নিচে কাপড় পরে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।’
পূর্বোক্ত পোশাকের নীতিমালা মেনে চললে বর্তমানে দেশে বিরাজমান অস্থিরতা অনেকাংশে কমবে। টিনেজার ও যুব সমাজকে তাদের সঠিক পথে চালনা করা সহজ হবে। তাদেরকে চারিত্রিক অবক্ষয়, ঝরে পড়া সর্বোপরি নেশাথেকে বাঁচানোর সম্ভব হবে। তা ছাড়া আমরা আমাদের জাতি সত্তা ও ধর্মীয় সংস্কৃতি রক্ষা করতে পারব।নচেৎ আমাদের ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণুর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। অধিক অস্থিরতার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
•মহান আল্লাহ সূরা আ’রাফের ২৬ নম্বর আয়াতে ইরশাদ করেছেন, ‘হে বনি-আদম! আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেজগারির পোশাক, এটি সর্বোত্তম।’ অন্য দিকে বেহায়াপনা, বেল্লাপনা ও উলঙ্গপনাকে হারাম করা হয়েছে। একই সূরার ৩৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘আপনি বলে দিন, আমার পালনকর্তা প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীল বিষয়গুলো হারাম করেছেন। এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা ভাবনা করে।
নেদারল্যান্ডের মনোবিজ্ঞানী ভ্যান্ডার হ্য...াভেন পবিত্র কোরআন অধ্যয়ন ও বারবার ‘আল্লাহ’ শব্দটি উচ্চারণে রোগী ও স্বাভাবিক মানুষের ওপর তার প্রভাব সম্পর্কিত একটি নয়া আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেছেন।
ওলন্দাজ এই অধ্যাপক বহু রোগীর ওপর দীর্ঘ তিন বছর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েও অনেক গবেষণার পর এই আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। যেসব রোগীর ওপর তিনি সমীক্ষা চালান তাদের মধ্যে অনেক অমুসলিমও ছিলেন, যারা আরবি জানেন না। তাদের পরিষ্কারভাবে ‘আল্লাহ’ শব্দটি উচ্চারণ করার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই প্রশিক্ষণের ফল ছিল বিস্ময়কর, বিশেষ করে যারা বিষন্নতা ও মানসিক উত্তেজনায় ভুগছিলেন তাদের ক্ষেত্রে। সৌদি আরব থেকে প্রকাশিত দৈনিক আল-ওয়াতান পত্রিকা হ্যাভেনের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, আরবি জানা মুসলমানরা যারা নিয়মিত কোরআন তিলাওয়াত করেন তারা মানসিক রোগ থেকে রক্ষা পেতে পারেন। ‘আল্লাহ’ কথাটি কিভাবে মানসিক রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে তার ব্যাখ্যাও তিনি দিয়েছেন।
তিনি তার গবেষণা কর্মে উলেখ করেন, ‘আল্লাহ’ শব্দটির প্রথম বর্ণ আলিফ আমাদের শ্বাসযন্ত্র থেকে আসে বিধায় তা শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করে। তিনি আরও বলেন, লাম বর্ণটি উচ্চারণ করতে গেলে জিহ্বা উপরের মাঢ়ী সামান্য স্পর্শ করে একটি ছোট বিরতি সৃষ্টি করে এবং তারপর একই বিরতি দিয়ে এটাকে বারবার উচ্চারণ করতে থাকলে আমাদের শ্বাসযন্ত্রে একটা স্বস্তিবোধ হতে থাকে। শেষ বর্ণে হা-এর উচ্চারণ আমাদের ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের মধ্যে একটা যোগসূত্র সৃষ্টি করে তা আমাদের হৃদযন্ত্রের স্পন্দনকে নিয়ন্ত্রণ করে।
অনেক অনেক দিন আগে ,
এক বৃদ্ধ বাবা ও তার সন্তান উটের পিঠে চড়ে এক কাফেলার সাথে হাজ্জ পালনের উদ্দেশে রওনা দিলেন । মাঝ পথে হটাত বাবা তার ছেলে কে বললেন , ''
...
'' তুমি কাফেলার সাথে চলে যাও , আমি আমার প্রয়োজন সেরেই তোমাদের সাথে আবার যোগ দিব, আমাকে নিয়ে ভয় পেয়না , ''
এই বলে বাবা নেমে পরলেন উটেরর পিঠ থেকে , ছেলেও চলতে লাগল কাফেলার সাথে, কিছুক্ষন পর সন্ধ্যা হয়ে এল ,ছেলে আশে পাশে কোথাও বাবা কে খুজে পেলনা , সে ভয়ে উটের পিঠ থেকে নেমে উল্টা পথে ...হাটা শুরু করল , অনেক দূর যাওয়ার পর দেখল তার বৃদ্ধ বাবা অন্ধকারে পথ হারিয়ে বসে আছেন,
ছেলে দৌরে বাবার কাছে গিয়ে বাবাকে জরিয়ে ধরলেন , অনেক আদর করে বাবা কে নিজ কাঁধে চড়ালেন , তার পর আবার কাফেলার দিকে হাটা শুরু করলেন,
বাবা বললেনঃ আমাকে নামিয়ে দাও আমি হেটেই যেতে পারব ,
ছেলে বললেনঃ বাবা আমার সমস্যা হচ্ছে না , তোমার ভার ও খোদার জিম্মাদারি আমার কাছে সব কিছুর চেয়ে উত্তম ,
এমন সময় বাবা কেদে দিলেন ও ছেলের মুখে বাবার চোখের পানি গড়িয়ে পরল ...
ছেলে বললঃ বাবা কাদছ কেন?? বললাম না আমার কষ্ট হচ্ছে না ,
বাবা বললেনঃ আমি সে জন্য কাদছি না , আজ থেকে ৫০ বছর আগে ঠিক এই ভাবে এই রাস্তা দিয়ে আমার বাবা কে আমি কাঁধে করে নিয়ে গিয়েছিলাম , আর বাবা আমার জন্য দোয়া করেছিলেন এই বলে যে , '' তোমার সন্তান ও তোমাকে এরকম করে ভালবাসবে ♥ ♥
আজ বাবার দোয়ার বাস্তব রূপ দেখে চোখে পানি এসে গেল ♥ ''
বৃদ্ধ মা বাবা কে আপনি যেমন করে ভালবাসবেন , ঠিক তেমনটাই আপনি ফেরত পাবেন আপনার সন্তানদের মাধ্যমে ! তাই বলছি , নিজের সুখের জন্য হলেও মা বাবার সেবা যত্ন করো !
'' রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বায়ানি সাগিরা ''
পোস্ট ভাল লাগলে শেয়ার করুন ! ধন্যবাদ বন্ধুরা !
তোমাকে বলছি “আভা” (আমি ভালবেসে ওকে আভা নামে ডাকতাম)
লেখার শুরুতে আমি অনুরোধ করছি নির্জনে ও গভীর রাতে ছাড়া পত্রটি পড়বেনা। কারন পত্রের কথাগুলো তুমি গভীর রাতে ছাড়া অনুভব করতে পারবেনা। কা...রন, গভীর রাতে মানুষ কৃত্তিমতা ছেড়ে ধরাদেয় নিজের মনের কাছে। এখন রাত ১.৪৫ মিনিট। কেমন আছো তুমি? অবাক হচ্ছো? আসলে অবাক হবারই কথা। যে মানুষটি আগে চোখ বন্ধ করেও বলেদিতে পারতো তুমি কেমন আছো, সে আজ নিজেই জানতে চাইছে!!! আমি ভালো নেই। ভেবেছিলাম তোমাকে ভুলে যেয়ে ভালথাকব। কিন্তু না পেরেছি তোমাকে ভুলতে, না পেরেছি ভালথাকতে। মনের উপর শাসন চলেনা, বিপরীত ফল হয় তাতে। তাই হয়ত তোমাকে যতই ভুলতে চাচ্ছি ততোই তুমি দৃড়ভাবে আঁকড়ে যাচ্ছ আমার হৃদয়পটে। তুমি আমাকে যে নিস্বাথ্ ভালোবাসা দিয়েছ তা সত্তিই ভুলবার নয়। আসলে প্রিয় মানুষদের আগলে রাখার ক্ষমতা সবার থাকেনা। তবে তোমাকে আগলে রাখতে না পারলেও আগলে রেখেছি আমাদের স্মৃতিগুলো। আচ্ছা, তুমি কি এখন আর চাঁদ দেখ? শত ব্যস্ততার মাঝে আমি এখনো চাঁদ দেখি। আর সভাবসুলভ ভাবেই ফোন দিই তোমাকে। যদিও অপরপ্রান্ত থেকে প্রতিদিনই দুঃখিত শব্দটি ভেসে আসে। চাঁদই এখন আমার একমাত্র বন্ধু। আমি তাকে যতো কটুকথায় বলিনা কেন, সে আমার উপর একদমই অভিমান করেনা। শুধু একদৃষ্টিতে চেয়েথাকে আমার দিকে, আর দেখে আমার সরলতাই ভরা পাগলামি। তবে যখন তার হৃদয় আকাশ মেঘলা থাকে, তখন সে আমার উপর কিছুটা অভিমান করে। পরক্ষনেই মেঘের আড়াল থেকে ছুটে আসে আমায় দেখবার জন্যে। আমি তার সাথে কথা বলতে বলতে একসময় ঘুমিয়ে পড়ি, তখনও সে জানালা দিয়ে আমার দিকে অপলক তাকিয়ে হাসতে থাকে। তাকে বিদায় জানাবার আগে আমি ঘুমিয়ে পড়লেও তার চোখে থাকেনা কোন অভিমানের চিহ্ন। চাঁদ ছিল আমাদের ভালবাসার নিরব সাক্ষী। তোমাই ভালবেসে চাঁদকে যখন দেখতাম মনেহতো, চাঁদটা টিপ হয়ে তোমার কপালে শোভা পাচ্ছে। এখন চাঁদকে আর আগের মতো সুন্দর লাগেনা, হয়তো আমাদের ভালবাসার এমন করুন পরিনতি সইতে না পেরে চাঁদ নিজেই নিজেকে করেছে ক্ষত-বিক্ষত। আমাকে দেখলেই এখন সে মেঘের আরালে লুকায়। আভা আমি এখন বড় অগোছালো। তোমার দেয়া গোলাপের চারাগুলো যত্নের অভাবে শুকিয়ে, গেছে ঠিক আমার চোখের জলের মতোই। ছেলেরা সাধারনত তাদের কান্না কাওকে দেখতে বা অনুভব করতে দেইনা। তাই হয়তো আমার কান্নাও তুমি কখনো অনুভব করতে পারনি। মাঝে-মধ্যে আমি কখন যে কি করে বসি তা নিজেও বুঝতে পারিনা। নিজের অজান্তেই অন্যদের মনে কষ্ট দিয়ে ফেলি। মাঝে মাঝে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা হয়, হে নিষ্ঠুর পৃথীবি আমি আর পারছিনা। কেন জানিনা প্রিয় মানুষদের কষ্ট দিতে আমার খুব ভাল লাগে। আভা সত্যি বলছি, এগুলো আমার ইচ্ছাকৃত না। আসলে আমার জীবনটা এমনই, ঝড়ো হাওয়ার মতো গতিময় কিন্তু উদ্দেশ্যবিহীন। এই দেখ, হঠাৎ তোমার জীবনে আসলাম, ভালোবাসি বললাম, আবার হঠাৎই সব থমকে গেল। কি এমন বলেছিলাম, যে এভাবে আমাকে ছেড়ে চলেগেলে? শুধু মুখের কথাটাই দেখলে, আমার মনের ভাষাটা একবারও বুঝতে চেষ্টা করলে না। তুমি না আমাকে অনেক ভালবাসতে!!! আমি বকাদিলে, তোমার ফোন রিসিভ না করলে তুমি খাওয়া বন্ধ করে দিতে। তোমার আম্মু ফোন দিয়ে আমাকে সব বলতো। তখন আমি ফোন দিয়ে অনেক চেষ্টা করে তোমার রাগ ভাঙ্গাতাম। খুব ভাললাগতো তোমার এই ভালোবাসা। আভা, আমিও তোমাকে অনেক বেশি ভালবাসি কিন্তু সেটা বোঝানোর ক্ষমতা আমার নাই। যদি পারতাম তাহলে এই নশ্বর পৃথিবীকে জানিয়ে দিতাম তোমাকে কত ভালোবাসি। আমি আগে রাত জাগতে পারতাম না। তোমার রাতজেগে কথা বলতে ভাললাগত, তাই আমাকে অনেক রাত জেগে তোমার সাথে কথা বলতে হয়েছে। কখনো বলিনি আমার ঘুম আসছে। আমি জানি প্রত্যেকটা মেয়েই একটু অবুঝ টাইপের হয়। যতই ভালোবাসা হয় ততই শিশুর মত অবুঝ হয়ে ওঠে। হঠাৎ একটু কষ্ট পেলে সয়তে না পেরে কেঁদে ফেলে। কিন্তু তারা বোঝেনা এই কষ্টের পেছনেই ছিল প্রিয় মানুষটির দেয়া কতটা ভালোবাসা। আমি কখনো তোমাকে কাঁদাতে চাইনি। তুমি যদি আমার ভালবাসাকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে তাহলে কখনই আমাকে ছেড়েযেতে পারতে না। তোমার তো ছিল একটাই অভিযোগ, আমি খুব রাগী আর আমার ভেতর সমঝোতা নামক জিনিষটা নায়। জানো, আমি এখন আর একদম রাগ করিনা। আমার সব রাগ এখন স্বপ্নে পরিনত হয়েছে। আমার প্রিয় একটা নদী আছে। ইচ্ছা ছিল আমরা প্রায়ই সেখানে ঘুরতে যাব। নদীটার খুবকাছেই থাকবে আমাদের একটা বাংলো। বাংলোটার থাকবে অদ্ভুত সুন্দর একটা নাম। নামটা হবে অবশ্য তোমার পছন্দের। বাংলোটির খুবকাছেই থাকবে শ্বেতপাথরে বাঁধানো একটা ঘাট। আমি ঘাটের উপরের দিকের সিঁড়িতে বসে থাকবো, আর তুমি জলের খুব নিকটে তোমার কোমল পা দুটি জলে ছুঁয়ে বসে থাকবে। আর মাঝে মধ্যে আমার দিকে একটু করে জল ছিটিয়ে দিবে। থাক এসব কথা। আমি হয়তো স্বপ্ন একটু বেশিই দেখি। সবকিছু নিজেরমত করে ভাবতে চাই। আমি মাজার শরীফ তেমন বিশ্বাস করিনা। তবু কোন বড় পীরের মাজারে ভ্রমনে গেলে শুনতাম, পীরদের নামে মান্নত করলে নাকি মনের আশা পুরন হয়। তখন আমি আধা বিশ্বাস নিয়ে মনে মনে শুধু তোমাকেই চাইতাম। হয়তো মনে বিশ্বাসের কমতি থাকার কারনেই তোমাকে পেয়েও হারিয়ে ফেলেছি। শুনেছি একান্ত মনথেকে কোনকিছু চাইলে সেটা পুরন হয়। আমি আমার অন্তরের গভীর থেকে চাই, তোমার ভালবাসার মানুষ যেন পৃথীবিতে সবচেয়ে তোমাকে বেশি ভালবাসে। তুমি যেন জীবনে অনেক সুখি হতে পার। আর আমার জীবন? আমার জীবন যেন খোদা আমার চোখের জলের মতই নিঃশব্দে ও সবার অজান্তে ইতি ঘটিয়ে দেয়। আভা, বল আমি কি করবো? আমার একদিকে প্রথম প্রেম আর একদিকে তুমি। না ভুলতে পারছি তোমাকে না ওকে। আমিতো তোমাকে সাকিলার কথা নাও বলতে পারতাম। কিন্তু আমি বলেছি যাতে তুমি আমাকে কখনো অবিশ্বাস করতে না পার। এটাই কি আমার অপরাধ? জানো, কখনো কখনো মনে হয় আমি সেই নদীটার ধার দিয়ে একমনে হাঁটছি আর ক্লান্ত হয়ে সেই শেতপাথরে বাঁধানো ঘাটটিতে বসছি। আর কানপেতে আছি শুধুমাত্র একটি কথা শোনার অপেক্ষাই “জান আমি ফিরে এসেছি”। দেখ, হঠাৎ আবার কি পাগলামি শুরু করলাম। জানো, আমি এখন এমনই হয়েগেছি। যেখানে যা না বলার তাও বলে ফেলছি। আজ তোমাকে ফেরানোর জন্য আমার এই চিঠি নয়, আমার অপ্রকাসিত ভালোবাসা প্রকাশ করার জন্যই আমার এই চিঠি। আমি নিশ্চিত জীবনে কোন একদিন তুমি আমার ভালবাসাকে হৃদয় থেকে অনুভব করতে পারবে। আর সেদিন আমার উদ্দেশে তোমার মুখ থেকে করুনার স্বরে একটি কথাই উচ্চারিত হবে “ কিছু মানুষ হয়তো এভাবেই নিঃস্বার্থভাবে অপরকে ভালবেসে কষ্টপেতে পৃথিবীতে আসে”। আভা আমি সত্যিই আর পারছিনা। একলা নদীরতীরে হাঁটতে হাঁটতে আজ বড় ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। ভেবেছিলাম অন্যতম সার্থক LOVE STORY গুলোর মত আমাদের টারও হবে একটা HAPPY ENDING. আর আমার মনে হয় কি জানো আমাদের LOVE STORY এর ENDING টা HAPPY না হলেও কিন্তু সার্থক। কারণ দুজনের মধ্যে এখনো রয়েছে যথেষ্ট ভালোবাসা। আভা ফেরার কি আর কোন উপাই নেই? আমি আবার তোমার সাথে রাত জেগে চাঁদ দেখতে চাই, তোমার সাথে অনেক রাত পর্যন্ত ফোনে কথা বলতে চাই। নিজের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটাকে হারিয়ে ফেলা যে কত কষ্টের আর তাকে সামনে পেয়েও নিজের করে না পাওয়া যে কি দুঃসহ তা আমি তোমাকে বোঝাতে পারবনা। কি বলবো, হয়তো হাতের রেখায়ই তুমি নাই। যদি কখনো শুনো আমি আর নেই, অবিশ্বাস করোনা। কারন বেঁচে থেকেও আমাকে এখন মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করতে হচ্ছে। আমি এখন স্পষ্ট শুনতে পাই মৃত্যুর পদধ্বনি। হয়তো আমার নিয়তি এটাই। তুমি সুখে থেকো। আর বেশি লিখছিনা, রাত চারটা বেজে গেছে। আর বেশি বড় লিখলে হয়তো তুমি কখন পড়াই বন্ধ করে দেবে। তখন দেখা যাচ্ছে আমার পত্রেরও HAPPY ENDING হচ্ছে না। তোমার কাছে আমার শেষ অনুরোধ, আমার মৃত্যুর খবর শুনে কিছু না হলেও আমার এই পত্রটি লিখতে যে ক-ফোটা চোখের জল পড়েছে, ভালবেসে আমার স্মৃতির উদ্দেশ্য অন্তত সে ক-ফোটা চোখের জল তুমি ফেলো। হয়তো সেটাই হবে আমার LIFE এর HAPPY ENDING.
ইতি আর কে হবে...........................
জায়গাটা উত্তরা,সেক্টর ২।এয়ারপোর্ট থেকে খুব দূরে নয়।এই সেক্টরের ব্লক বি তে সুউচ্চ এপার্টমেন্ট বিল্ডিং মারলিন।মারলিনের দ্বিতীয় ফ্লোরে থাকে কাজী পরিবার।তাদের দুই মেয়ে আর তিন ছেলের মধ্যে মেজো ছেলেটা খ...ুব হ্যান্ডসাম,নাম আবির।যেমন চেহারা তেমন তার গঠন।ঝাকড়া চুল,তার সাথে খোচা খোচা দাড়ি,মানিয়েছে খুব।আর ছেলেটার ব্যবহার ও খুব অমায়িক,যে কাউকেই প্রথম পরিচয়েই আকর্ষন করার মতো।আবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রির ফার্স্ট ইয়ার এর স্টুডেন্ট।
একই বিল্ডিং এর চতুর্থ ফ্লোরে থাকে মির্জা পরিবার।বেশ সুখী একটা পরিবার।এই পরিবারের একমাত্র মেয়ে স্নেহা মির্জা।তার বাহ্যিক সৌন্দর্যের বর্ণনা দেয়া মুসকিল।সুন্দর গঠন,চমতকার গায়ের বর্ণ।ও রাজুক উত্তরা মডেল কলেজের ক্লাস নাইনে পড়ে।সাইন্সে পড়ে।মেধার দিক দিয়েও খুব ভাল আর অনেক ফ্রেন্ডলি।স্নেহার মা বাবা ফিজিক্স আর কেমিস্ট্রির শিক্ষক হিসেবে আবিরের কথা ভাবলেন।ছেলেটা খুব মেধাবী আর সাইন্সের ও স্টুডেন্ট।
স্নেহাকে আবির পড়াচ্ছে প্রায় ১ মাস ধরে।এর মধ্যে দুজনের মাঝে খুব বন্ধুত্ব হয়ে গেছে।স্নেহাকে পড়াশোনা ছাড়াও যেকোন কাজে হেল্প করে আবির।মোটকথা চান্স পেলেই ওরা নিজেদের মধ্যে গল্প গুজবে মেতে উঠে।এভাবে কেটে গেল কয়েক মাস।এর মধ্যে স্নেহার দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষার রেজাল্ট দিল।দেখা গেল ও ফিজিক্সে ৮৩ আর কেমিস্ট্রিতে ৮৯ নম্বর পেয়েছে।স্নেহার বাবা মা খুব খুশি আর স্নেহা নিজেও খুব খুশি।মনে মনে ও আবিরকে ধন্যবাদ দিল।
একদিন বিকেল বেলা স্নেহা ছাদে গেল।আর হতাত সে আবিরকেও ছাদে পেল।সেদিন বিকেলে ওরা অনেক গল্প করল আর সন্ধায় বাসায় ফিরে গেল।এভাবেই মাঝে মাঝে ওরা ছাদে গল্প করত।একদিন স্নেহা ওর ভাল রেজাল্টের জন্য আবিরকে আইস্ক্রিম খাওয়ালো।দুজনে ছাদে গল্প করছে আর আইস্ক্রিম খাচ্ছে।আবির ও মাঝে মাঝে ওকে আইস্ক্রিম,চকলেট খাওয়াতো।এভাবেই ওরা দিন দিন খুব ভাল বন্ধু হয়ে গেল আর ভাব জমছিলো দুজনের মধ্যে।
একদিন তৃতীয় তলার মলি আন্টি ওদেরকে একসাথে ছাদে দেখলো।মলি আন্টি স্নেহা আর আবির দুজনের বাবা মাকেই এই ব্যাপারে জানাল।স্নেহার বাবা মা তাই অন্য ধরনের কিছু ঘটার আগেই ঠিক করলো স্নেহাকে আবিরের কাছে আর পড়াবেনা।পরদিন স্কুল থেকে ফিরে স্নেহা তা জানতে পারলো।সাথে সাথে স্নেহার স্বচ্ছ,সুন্দর মনটা আধারে ঢেকে গেল।এর পরের কয়েকদিন স্নেহার সাথে আর দেখা হলনা আবিরের।আবির ও নিজেকে আর সামলাতে পারলনা।স্নেহার সাথে থাকা প্রতিটা মুহূর্ত ওর মনে উকিঝুকি দিতে থাকল।ছাদে স্নেহার সাথে ওর গল্প,হাসি,কথা,স্নেহার সব স্মৃতি ওকে কষ্ট দিতে শুরু করল।
এর পরের কয়েক মাস আবিরের সাথে আর কথা হয়নি স্নেহার,ওর মনের না বলা কথাগুলো আর বলা হয়নি আবিরকে।ওদিকে হটাত করে স্নেহাদের ইউ।এস।এ যাওয়ার ভিসা হয়ে গেল।এক মাস পর ফ্লাইট।এই খবর শুনে স্নেহা আরো ব্যাকুল হয়ে গেল।অজানা এক বেদনায় ওর হৃদয়,মন সব কিছুতে একটা ঝড় বয়ে গেল।আবির ও এই খবরটা শুনে কষ্ট পেল।একদিন বাসার নিচে আবির আর স্নেহার দেখা হল।স্নেহা কবে চলে যাচ্ছে আবির জানতে চাইল।স্নেহা জানাল দুইদিন পর।বলার সাথে সাথে স্নেহার চোখে পানি এসে গেল।আবির স্নেহাকে ইউ।এস।এ গিয়ে ওর কথা স্মরণ করতে বলল।স্নেহা আর উত্তর দিতে পারলনা,চলে গেল।
দুইদিন পর।রাত ৯:৩০।স্নেহা গাড়িতে উঠে বসল।দুতলায় বেলকনিতে আবিরকে দেখতে পেল ও।আবির হাত নাড়ে।কিন্তু কিছুই বলতে পারলনা স্নেহা।কিভাবে আর কখন যেন আবিরকে ভালবেসে ফেলেছে স্নেহা নিজের অজান্তে।আর ওর সেই অসমাপ্ত ভালবাসার বিসর্জন দিতে হচ্ছে শুধুই চোখের জল দিয়ে।এইত সেদিনের সেই রৌদ্দ্রুজ্জ্বল পড়ন্ত বিকাল,সেই ছাদ,সেই স্মৃতি।কিন্তু নিয়তির অমোঘ টানে তা এখন শুধুই স্মৃতি,যেন তা ফুরাবার নয়।
প্লেন নিউইয়র্কের যে।এফ।কে এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করল।স্নেহাদের জন্য ওদের রিলেটিভরা আগেই এপার্টমেন্ট ঠিক করে রেখেছিল।ওখানেই উঠল ওরা।কিন্তু স্নেহার ভাবনার কেন্দ্রবিন্দু ওই আবির আর আবিরের স্মৃতি।টেলিফোনে আবিরের নম্বর ডায়াল করে রিসিবার কানে ঠেকাল স্নেহা।কিন্তু আবিরের ফোন বন্ধ।একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে ফুপিয়ে কাদতে থাকল স্নেহা।তা যেন আর থামার নয়।এ কান্না ওর সারাটা জীবনের,যতদিন বেচে থাকবে আবিরের স্মৃতি।
১ । ভালবাসার মানুষটির উপর যত রাগ, অভিমানই থাকুকনা কেন যখন ভালবাসার মানুষটি কাছে এসে, একটু মিষ্টি হেসে বলে Sorry তখন আর কোন রাগ বা অভিমান থাকে না।
২। যেটুকু সময় ভালবাসার মানুষটির সাথে থাকি পাশে থাকি সেই সময় তুকু মনে হয় খুব ধ্রুত ফুরিয়ে যায়,আর যখন দূরে থাকি তখন কবে কখন আমার ভালবাসার মানুষটির সাথে দেখা হবে কথা হবে সেই চিন্তায় সময় যেন ফুরাতেই চায়না্......।।আসলে দূরে থাকলে বুজা যায় আমরা আমাদের ভালবাসার মানুষটিকে কত ভালবাসি.........।।
স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন সে আপনার চায়ে ছোট একটি চুমুক দেয়। কারণ, সে নিশ্চিত হতে চায় চা টি আপনার পছন্দ মত হয়েছে কিনা।
স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন সে আপনাকে নামাজ পড়তে জোর করে। কারণ সে আপনারই সাথে জান্নাতে যেতে চায়।
স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন সে তৈরি হতে দীর্ঘ সময় পার করে দেয়। কারণ সে চায় তাকে আপনার চোখে সবচেয়ে সুন্দর লাগুক।।
...
স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন তাকে সুন্দর দেখায়। কারণ সে আপনারই, তাই প্রশংসা করুন।
স্ত্রী কে ভালবাসুন -যখন সে আপানাকে নিয়ে ঈর্ষান্বিত হয়। কারণ, সে অন্য সমস্ত মানুষকে রেখে শুধুমাত্র আপনাকেই বেঁছে নিয়েছে।
ধানমন্ডিতে গিয়েছিলাম কিছু কাজে। বাসায় ফিরব বলে অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে আছি, রিকশা পাচ্ছিলাম না। যে রিকশাই দেখি, রিকশাওয়ালা ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ চেয়ে বসে। মেজাজটা এমনিতেই খারাপ কারণ সহ্যের সীমা অতিক্রম করে ফেলছিলাম। হঠাৎ একজন হ্যাঙলা পাতলা মতন ছেলে আমার সামনে রিকশা নিয়ে এসে বলল, “স্যার কোথায় যাবেন?” আমি একটু অবাক হলাম, কারণ রিকশাওয়ালারা সচরাচর স্যার বলে না, “মামা বলে”; আমি তাকে বললাম বকশিবাজার যাব, বোর্ড অফিসের পাশে। সে আমার কাছে ঠিক ঠিক ভাড়া চাইল। আমি মোটামুটি আকাশ থেকে পড়লাম, মনে করলাম এতক্ষণ পরে মনে হয় আধ্যাত্নিক সাহায্য এসে হাজির হয়েছে। যাইহোক বেশি চিন্তা না করে তাড়াতাড়ি রিকশাই উঠে পড়লাম। মনে মনে বললাম “আহ্! এখন একটু শান্তিমত মানুষ দেখতে দেখতে বাসায় যাওয়া যাবে”; ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তা দিয়ে রিকশায় যাওয়াকে অনেক এনজয় করি। তবে সেদিনের রিকশা ভ্রমনটা একটু আলাদা ছিল। খেয়াল করছিলাম রিকশাওয়ালা অনেক সাবধানে চালিয়ে যাচ্ছিল। কাউকে গালি দিচ্ছিল না। অন্যের রিকশার সাথে লাগিয়ে দেওয়ার আগেই ব্রেক করছিল। কেউ তাকে গালি দিলে সে কিছু না বলে মাথা নিচু করে নিজের রিকশা চালানোতে ব্যস্ত ছিল। কিছুক্ষন পরে একটু অবাক হলাম, রিকশা যখন ঠিক ঢাকা কলেজের সামনে আসল, তখন রিকশাওয়ালা মুখে কাঁধের গামছাটা ভাল করে পেচিয়ে নিল। তার চেহারা ঠিকমত দেখা যাচ্ছিল না। ভেতরে ভেতরে একটু ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম, ভাবছিলাম এইবুঝি ছিনতাইকারী ধরবে। নিজেকে সামলিয়ে নিতে রিকশাওয়ালার সাথে কথা বলা শুরু করে দিলাম। সেই একই রকমের প্রশ্ন দিয়ে শুরু করলাম, “মামা বাড়ি কোথায়?” সে একিরকম উত্তর দিল, রংপুর। পরের প্রশ্ন করার আগেই বলল “স্যার বেশিদিন হয়নাই রিকশা চালাই”; স্বভাবতই জিজ্ঞাসা করলাম ঢাকা আসছ কবে? সে উত্তর দিল, “দুই বছরের কিছু বেশি হয়ছে”; এভাবেই অনেক কথা হল। একসময় হঠাৎ চালাতে গিয়ে আমার পায়ে টাচ্ লাগায় সে বলল, “সরি স্যার”; একটু অবাক হলাম তার ম্যানার দেখে। তাকে প্রশ্ন করতে দেরি করলাম না, “বললাম তুমি কি পড়ালেখা কর?” সে বলল, “স্যার অনার্স সেকেন্ড ইয়ার, ঢাকা কলেজে”; হতভম্ব হয়ে গেলাম। তার পোশাক আশাক চলন গড়ন আবার নতুন করে দেখা শুরু করলাম। দেখলাম পড়নে একটা প্যান্ট অনেক ময়লা, শার্টের কিছু জায়গায় ছেঁড়া। স্বাস্থ্য এতই কম যে মনে হয়, অনেক দিন না খেয়ে আছে। কৌতুহলবশত প্রশ্ন করলাম তুমি রিকশা চালাও কেন? সে বলল, তারা তিন বোন, এক ভাই। তার বাবা কিছুদিন আগে মারা গিয়েছে, মা ছোট থেকেই নেই। আগে বাবা দেশে দিনমজুর ছিল। এখন বাবা মারা যাওয়ার পরে তার তিন বোনকে সে ঢাকায় নিয়ে এসেছে, স্কুলে ভর্তি করিয়েছে, থাকে কামরাঙ্গির চরে, একটি রুম ভাড়া নিয়ে। কিছুদিন আগে তার দুইটি টিউশনি ছিল এখন একটিও নেই। সংসার চালানোর জন্য টাকা নেই যথেষ্ট, তাই উপায় না পেয়ে রাতের বেলা রিকশা চালাতে বের হয়েছে। মাঝে মাঝেই বের হয় এমন। তবে অনেক ভয়ে থাকে, যখন সে ঢাকা কলেজের পাশে দিয়ে যায়। পরিচিত কেউ দেখে ফেললে ক্লাস করাটা মুশকিল হয়ে যাবে। নিজে থেকেই বলল, “আমাকে হয়তো বলবেন অন্য কিছু করোনা কেন?” তারপর নিজে থেকেই উত্তর দেওয়া শুরু করল, পোলাপাইন অনেকে দেখি রাজনীতি করে, অনেক টাকা পায়, আবার অনেকে প্রতিদিন একটা করে মোবাইলের মালিকও হয়। কিন্তু আমার এমন কিছু করতে মন চায় না। সবসময় মনে করি একটা কথা, এই দেশকে কিছু না দিতে পারি কিন্তু এই দেশের কাছে থেকে জোর করে কিছু কেড়ে নিব না। আমার কাছে দেশ মানে আপনারা সবাই। আপনাদের সাথে কোন বেয়াদবি করা মানে দেশের সাথে নিমকহারামি করা। এই যে দেখেন আপনারা আছেন বলেই তো আমি এখন রিকশা চালায়ে কিছু টাকা আয় করতে পারছি। আমি বাকরুদ্ধ হয়ে তার কথা শুনছিলাম। হঠাৎ সে আমাকে বলল স্যার চলে আসছি। আমি তাকে কিছু বেশি টাকা জোর করেই হাতে ধরিয়ে দিলাম। মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেল। বাসায় এসে কোন কথা না বলেই শুয়ে পড়লাম বিছানায়।
মনে মনে ভাবছিলাম দেশপ্রেমটা আসলে কি? আমরা যখন অনেক বড় বড় কথা বলি, অনেক অনেক বড় বড় লোকের উদাহরণ দেই, বলি যে, “কি বিশাল দেশপ্রেমের উদাহরণ” কিন্তু আজকে যা দেখলাম, তা থেকে আমার মাথায় প্রোগ্রাম করা দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটা বদলে গেল এবং কিছুটা অবাকই হলাম এইটা ভেবে, পাঠ্যবইয়ে কোথাও দেশসেবার কোন বিশদ উদাহরণ দেখিনাই বাস্তব ক্ষেত্রে। যা পড়েছি সবই তো এখন ইতিহাস। এখন অনেক বড়, দেশের সেবা করতে গেলে আসলে আমাদের কি করা উচিৎ? ব্যাপারটা নিয়ে অনেক ভাবার পরে ছোট মস্তিস্ক থেকে কিছু ছোট ছোট উত্তর মিলেছেঃ
আমার কাছে মনে হয়েছে দেশপ্রেম মানে দেশের মানুষকে ভালবাসা, আর দেশের সেবা মানে দেশের মানুষের সেবা করা।
অনেকের কাছে দেশের সেবা করা মানে হল শুধু গ্রামে গিয়ে গরিব শ্রেনীর মানুষকে সাহায্য করা, স্কুল তৈরি করে দেওয়া, রাস্তার পাশে খেতে না পারা ছেলেমেয়েকে খাওয়ানো, পড়ানো, শীতবস্ত্র বিতরণ ইত্যাদি। এইসব অবশ্যই ভাল কাজ, দেশের সেবা, কিন্তু একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে বোঝা যায়, এইরকমের কাজ আমরা প্রতিনিয়ত করতে পারিনা। তারমানে কি আমরা প্রতিনিয়ত দেশের সেবা করতে পারব না? আরেকটু চিন্তা করে উপলব্ধি করা যায় যে, আমরা প্রতিনিয়ত যা করছি আমাদের কর্মজীবনে, সেটাকে ঠিকমত করাটাই হল দেশপ্রেম।
আমাদের মহান মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের দেশকে স্বাধীন করে আমাদের কাছে আমানত হিসেবে রেখে গিয়েছেন, এই আমানতকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখাটায় হচ্ছে দেশপ্রেম, দেশের সেবা । এই সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বিভিন্নজনের দায়িত্ব বিভিন্নরকম। কেউ ডাক্তার, কেউ প্রকৌশলী, কেউ শিক্ষক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ ঠিকাদার, কেউবা ঝাড়ুদার। কারও অবদান কোন দিক থেকে কোন অংশে কম না। তাই নিজের দায়িত্বকে কোন অংশে বড় করে না দেখে চিন্তা করা উচিৎ আমরা সবাই দেশের সেবা করছি, দেশ আমাদের সবার। মাকে যেমন তার ছেলেমেয়ে সবাই সমান ভালবাসতে পারে, তেমনি দেশ, যার ছেলে মেয়ে আমরা সবাই, আমরা চাইলেই সবাই নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করে, নিজেদের কাজ ছেড়ে না দিয়ে, বরং নিজেদের কাজ যথাযথভাবে করেই দেশের সেবা করতে পারি... --
যখন নিজেকে খুব একা লাগবে ,
সন্ধ্যার বাতাসে নিজেকে খুব হতাশ লাগবে ,
দুঃসহ স্মৃতিগুলো কষ্ট দিবে ,
একা একা বিষন্ন মনে বেলকনিতে বসে থাকবে ,
যখন কিছুই ভাল লাগবেনা
... তখন আমায় ডেকো একটিবার ।
আমি সব কিছু ফেলে চলে আসবো
তোমার কাছে..... তবে
চিন্তা করোনা কোন
কিছু চাইবনা তোমার কাছে ।
শুধু নিস্বার্থ ভাবে ভালবেসে যাবো ।
কলম্বিয়ার এক দল নাবিক এর একটি ফটোগ্রাফ বোর্ডের শেষ মিশন ছিল এটি,একটি মেঘ মুক্ত পরিষ্কার দিনে , সূর্য যখন ইউরোপ এবং আফ্রিকা মধ্যবর্তী অংশে আসে , ছবি টি ঠিক তখনি তোলা হয় ,
অর্ধেক হল রাত ও উজ্জ্বল অংশে আপনি দেখতে পাচ্ছেন আফ্রিকা উপরের অংশ সাহারা মরুভূমি.
...
হল্যান্ড , প্যারিস ও বার্সেলোনা তে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে, ও ডাবলিন ,লন্ডন ,লিসবন , ও মাদ্রিদ এ এখনও প্রখর সূর্যের তাপ !
সূর্যের আলো জিব্রাল্টার প্রণালী উপর এখনো পরছে , ভূমধ্য সাগর অন্ধকারের মধ্যে , আটলান্টিক মহাসাগরে মাঝখানে এজোরেস দ্বীপ দেখা যাচ্ছে ; তার ডান দিকে মদিরা দ্বীপ; তার একটু নিচে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ; এবং আরো দক্ষিণ দিকে দিয়ে আফ্রিকা পশ্চিম বিন্দু থেকে খুব কাছা কাছি , কেপ ভার্দি দ্বীপপুঞ্জ .
১. প্রথম
প্রেম:
--------------- --
জীবনের প্রথম প্রেম সবার কাছেই স্মরনীয়
হয়ে থাকে। প্রথম প্রেমের কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই
... তবে অনেকের ক্ষেত্রেই খুব কম বয়সে প্রথম প্রেম
এসে থাকে। প্রথম প্রেম বেশিরভাগ সময়ই এ প্রেম হয়না,
সেটা হয়ে থাকে Infatuation। প্রথম প্রেম
হতে পারে কোন বাল্যবন্ধু, হতে পারে গৃহশিক্ষক
বা স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকা,
হতে পারে বয়সে বড় কোন আপু, হতে পারে কোন
ফিল্মের নায়ক বা নায়িকা, হতে পারে পাড়ার কোন
হ্যান্ডসাম তরুনী বা বড়ভাই ।
কারো কারো ক্ষেত্রে আবার জীবনের প্রথম প্রেমই
একমাত্র প্রেম ।
২. প্রথম দেখায় প্রেম/Love at First Site:
--------------- --------------- ---------------
---------
প্রথম দেখাতেই এই ধরনের প্রেমের সূত্রপাত। এ
ধরনের প্রেম অনেক ক্ষেত্রেই একতরফা হয় ।
ছেলেদের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রেম বেশি দেখা যায় ।
প্রথম দেখাটা হতে পারে কোন বিবাহ অনুষ্ঠানে,
শপিং মল, কলেজ, ভার্সিটি, কোচিং সেন্টারে, স্যারের
বাসায়, বন্ধু আড্ডায় । এমনকি বন্ধুর
মোবাইলে ছবি দেখেও এ ধরনের প্রেমের শুরু হতে পারে । এ ধরনের প্রেমে প্রায় অবধারিতভাবেই তৃতীয় পক্ষের (বন্ধুকূল বা বড়ভাই) সাহায্যের
দরকার পড়ে। এ ধরনের প্রেমের সূত্রপাতে রূপ
সৌন্দর্য্য ও দৈহিক সৌন্দর্য্যের ভুমিকাই বেশি ।
৩. বন্ধুত্ব থেকে প্রেম:
--------------- --------------- ---
এই ধরনের প্রেমের ক্ষেত্রে প্রেমিক ও
প্রেমিকা দু'জনেই প্রথমে বন্ধু থাকে।
আস্তে আস্তে বন্ধুত্ব কালের বিবর্তনে প্রেমে রূপ
নিতে থাকে, অনেক সময়ই দু'জনেরই অজান্তে ।
তবে আশেপাশের মানুষ (বিশেষত বন্ধুকূল) কিন্তু
ঠিকই খেয়াল করে । দুঃখজনকভাবে এধরনের প্রেম অনেক সময়ই অকালে ঝরে যায় কোন
একতরফা সিদ্ধান্ত বা পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে । অনেকে বন্ধুত্বের এই রূপান্তর
মেনে নিতে পারেনা বলে অনুশোচনায় ভোগে - বিশেষত মেয়েরা ।
৪. একরাতের প্রেম/One Night Stand:
--------------- --------------- ---------------
-----
এগুলোকে প্রেম বললে পাপ হবে । ৯০%ক্ষেত্রেই
ছেলেরাই এ ধরনের প্রেমের আয়োজক । দৈহিক বাসনাকে পূর্ণতা প্রদান করাই এই প্রেমের প্রধান
উদ্দেশ্য । উদ্দেশ্য পূরণের পূর্বে কিছু নাম মাত্র ডেটিং হতে পারে ।
উদ্দেশ্য পূরণের জনপ্রিয় স্থান:
কোন হোটেল, খালি ফ্ল্যাট, সমুদ্রতীরবর্তী কোন শহর ।
এই ধরনের প্রেমের মূলমন্ত্র হলো:
"আজকে না হয় ভালোবাসো, আর কোনোদিন নয়........"
৫. বিবাহোত্তর প্রেম
--------------- -----------
এই প্রেম শুধুমাত্র স্বামী ও স্ত্রীর
মধ্যে দেখা যায়। বিয়ের ঠিক পর পর প্রথম কয়েক মাস এই প্রেম প্রবল থাকে। স্বামী-স্ত্রী একে অপরের পূর্বপরিচিত নয় এমন দু'জনের মধ্যে এ্যারেন্ঞ্জ বিয়ে হলে এই ধরনের প্রেম প্রবল
রূপে পরিলক্ষিত হয় । প্রেম
করে বিয়ে হলে সেক্ষেত্রে বিবাহোত্তর
প্রেমে ভাঁটা পড়ে বলে একটি মতবাদ প্রচলিত আছে,
কবে এর সত্যতা পরীক্ষিত নয় । বিবাহোত্তর প্রেম
ফলাতে হানিমুনের জুড়ি নেই।
◆একটি ছেলে স্কুলে গিয়ে নতুন…শিখেছে, প্রতিটা কাজই মুল্যবান … কোনো কাজই ফেলনা নয়…
সব কাজেরই একটা অর্থ/মূল্য আছে…
… … এছাড়া কীভাবে বিল করতে হয়, তাও তাকে শেখানো হয়েছে…
একদিন ছেলেটি তার মা’র কাছে গিয়ে একটা বিল জমা দিল…
মা ছেলের দেয়া চিরকু...টটা পড়লেন…
ছেলে লিখেছেঃ-
১. গাছে পানি দেয়াঃ ১০ টাকা
২. দোকান থেকে এটা-ওটা কিনে দেয়াঃ ১৫টাকা
৩. ছোট ভাইকে কোলে রাখাঃ ৪০টাকা
৪. ডাস্টবিনে ময়লা ফেলাঃ ২০টাকা
৫. পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করাঃ৫০টাকা
৬. মশারী টানানোঃ ৫ টাকা
মোটঃ ১৪০ টাকা!!
°
°
°
°
মা বিলটা পড়ে মুচকি হাসলেন…
তারপর তার আট বছরের ছেলের মুখের দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন…
তার চোখে পানি চলে আসছে…
তিনি এক টুকরো কাগজ নিয়ে লিখতে লাগলেন….
১. তোমাকে ১০মাস পেটে ধারনঃ বিনা পয়সায়
২. তোমাকে দুগ্ধপান করানোঃ বিনাপয়সায়
৩. তোমার জন্য রাতের পর রাত জেগেথাকাঃ বিনা পয়সায়
৪. তোমার অসুখ-বিসুখে তোমার জন্য দোয়া করা, সেবা করা, ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়া,তোমার জন্য চোখের পানি ফেলাঃ বিনা পয়সায়
৫. তোমাকে গোসল করানোঃ বিনা পয়সায়
৬. তোমাকে গল্প,গান,ছড়া শোনানোঃ বিনা পয়সায়
৭. তোমার জন্য খেলনা, কাপড় চোপড় কেনাঃ বিনা পয়সায়
৮. তোমার কাথা ধোওয়া, শুকানো, বদলে দেওয়াঃ বিনা পয়সায়
৯. তোমাকে লেখাপড়া শেখানোঃ বিনা পয়সায়
১০. এবং তোমাকে আমার নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসাঃ সম্পূর্নবিনা পয়সায় …
অতঃপর সন্তান তার মার হাত থেকে বিলটা নিয়ে নিচে ছোট্ট করে লিখে দিল =এ বিল জীবন দিয়েও পরিশোধ করা সম্ভব নয়।
◆সন্তান এর চোখ এর কোনায় তখন অশ্রুর অবস্থান
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ এবং নিঃস্বার্থ ভালবাসা হল মায়ের ভালবাসা।
সেই মাকে যেন আমরা কোনভাবেই কষ্ট না দেই ।
_____________________________________
খুব ছোট বেলায় যখন আমরা দুইরুমের একটা বাসায় থাকতাম, আমাদের ছোট কিচেনটার ভেন্টিলেটারে দুইটা চড়ুই পাখি বাসা বেঁধেছিল। আমাদের বাসাটা ছিল অন্ধকার, চারিদিকে বড় বড় বিল্ডিং’র ভীড়ে আমাদের ছোট বাসাটাকে খুঁজে পেত না সূর্যের আলো। কিন্তু ঐ ভেন্টিলেটর ভেদ করে পড়ন্ত বিকেলে কীভাবে যেন ফাঁকফোঁক দিয়ে এসে ঢুকতো একটুকরো রশ্মি। ভেন্টিলেটরের চারটা পাখার ফাঁক দিয়ে আসা রশ্মি অদ্ভূদ এক নকশা তৈরী করতো কিচেনের মেঝেতে। তারমধ্যে যখন চড়ুই পাখি দুইটা উড়াউড়ি করতো, আমি ভীষন ভাল লাগায় যেন আরেক জগতে চলে যেতাম। পুতুল খেলতেও ভুলে যেতাম চড়ুই পাখি আর সূর্যরশ্মির আলো-আঁধারির নকশা দেখতে দেখতে।
তখন সব ভাই-বোন মিলে আমরা একটা খেলা খেলতাম। সবার হাত মাটিয়ে বিছিয়ে একজন কিল দিতে দিতে ছড়া বলতে থাকবে। ছড়াটার শেষ শব্দ যার হাতের উপরে শেষ হবে, তার সেই হাত বাদ। অনেকগুলো ছড়ার মধ্যে একটা ছড়া আমার খুব প্রিয় ছিল। …চড়ুই পাখি বারটা/
ডিম পেরেছে তেরটা/
একটা ডিম নষ্ট/
চড়ুই পাখির কষ্ট!
আমার খুব অবাক লাগতো! এতগুলো ডিম থেকে একটা ডিম নষ্ট হলে কী-বা আসে যায়?আম্মু বলতো- তোমার বাকী চারভাইবোন থেকে একজন চলে গেলে তোমার কেমন লাগবে? আমি তাও বুঝতাম না।
তারপর একদিন হঠাত করে ‘নজিনি’ (ওকে দুষ্টুমী করে আমরা এই চাইনিজ নামে ডাকতাম!) মরে গেল! একদম বিনা নোটিশে…
আমি প্রথম বুঝলাম চড়ুই পাখির যত ডিম-ই থাকুক, একটা ডিমও যদি নষ্ট হয়, তাহলে তার বুকটাও ঠিক এভাবেই টুকরো টুকরো হয়ে যায়।
ইসলামাবাদে যখন প্রথম ঈদ ভেকেশানে ফরেনার স্টুডেন্ট ছাড়া আর সবাই চলে গেছে যার যার বাড়িতে, গ্রুপ-ট্রাভেলেও বেরুতে ইচ্ছা করছিলনা বলে একলা থেকে গেছি হল-ওয়ানের থার্ড ফ্লোরে… আমার ফ্লোরের একদম শেষপ্রান্তে শুধু একটা কেনিয়ান মেয়ে আছে; তখনো দিনের সবচে বড় সময় চলে যেত হল-ওয়ান গার্ডেনে চড়ুই পাখিদের উড়াউড়ি দেখে।
কেনিয়ান মেয়েটা অবাক হয়ে যেত। আমার সাথে বসত। তারপর একসময় ধৈর্য্য হারিয়ে উঠে যেত। আমার কেন যেন সূর্যের আলোয় ফুল আর চড়ুইদের খেলা দেখতে কিছুতেই বিরক্তি লাগতোনা। এক একসময় ঘাসের উপর শুয়ে যেতাম ক্লান্ত হয়ে। তাও রুমে ফিরতে মন চাইতোনা। চড়ুই দেখতে দেখতে, আকাশ দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে যেতাম ঘাসের উপরেই।
কেনিয়ান ওর নাম ছিল- ট্যাটু।
জিজ্ঞেস করেছিলাম ‘ট্যাটু’ অর্থ কী?
বলল- আমাদের লোকাল ভাষায় এর অর্থ-‘তিন’।
-তিন?!
- হ্যা। আরবীতে যেমন চারনাম্বার বাচ্চা মেয়ে হলে নাম রাখে ‘রাবিয়া’(চার), ওরকম আমাদের ওখানেও তিন নাম্বার মেয়ে হলে নাম রাখে ‘ট্যাটু’।
-এক-কে কী বল?
-মোজা।
-মোজা?!! তুমি জানো আমাদের ভাষায় মোজা কাকে বলে?!
-কাকে?
-সকস্ কে!
-হাহাহাহাহাহা!
-আর দুই?
-বিলি।
আমি তখন ওকে তিনটা চড়ুই পাখি দেখিয়ে হাতের আঙ্গুল দিয়ে গুনে গুনে দেখাই- হেয়ার ইস মোজা, দ্যাটস বিলি এন্ড হেয়ার ইস ট্যাটু!!
ও হাসতে হাসতে লনের সিড়ি থেকে বলতে গেলে গড়িয়ে পড়ে যায়!
ছোট থাকতে ক্লাসে যখন পড়ালো আমাদের জাতীয় পাখি দোয়েল; আমি অবাক হয়ে বইয়ের ছবি দেখতাম। দেখতে খারাপ লাগতো না। কিন্তু কেন যেন মনটা পড়ে থাকতো চড়ুই পাখির কাছে। বইয়ে ছবি দেখলেও আমি দোয়েল পাখি চিনতাম না অনেক বড় হয়েও! মাত্র ক’বছর আগে প্রথম দোয়েল পাখি চিনেছি আমার ফুপাতো বোনের কাছে। আমাদের বাড়ির পুকুরের পাশের গাছে বসে ছিল। দেখে ভীষন অবাক হয়ে ভেবেছি- ধুর! এটা একটা জাতীয় পাখি হল?! তারচে’ চড়ুই পাখি হাজারগুনে সুন্দর!
এরপর যাযাবরের মত নিজের থাকার জায়গা বার বার চেইঞ্জ হতে থাকায় চড়ূই পাখিদের হারিয়ে ফেলি নাগরিক ব্যাস্ততায়। অনেক অনেক দিন পর, সেদিন পরীক্ষার পড়া পড়ছিলাম।পড়তে পড়তে আকাশ দেখা আমার প্রিয় অভ্যাস।জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছি, হঠাত খেয়াল হল, একি!! এসির খোপ থেকে একটা জলজ্যান্ত চড়ুই পাখি বের হচ্ছে!! আমি হা করে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই দেখি আরেকটা!!
দ্রুত উঠে জানালার শাটার খুলে দেখি- আরে তাইতো!!
এসির খোপের ভিতর চড়ুই পাখির বাসা!
নীচেই রাস্তা থাকায় আমি সাধারনত শাটার খুলিনা।গাড়ির আওয়াজ আমার ভালো লাগেনা। কিন্তু এখন, প্রতিদিন ভোরে শাটার খুলে চুপ করে চেয়ারে বসে থাকি। সকাল বেলা এই দুইটা চড়ুই যেন ভীষন ব্যাস্ত থাকে। এই বের হয়, এই ঢুকে, একটা আরেকটার সাথে চিউক চিউক করে কী যেন বলে; যেন দু’জনে মিলে সারাদিনের প্ল্যান ঠিক করে। সূর্যটা ভালো করে উঠতে শুরু করলেই দু’জনে চলে যায় খালি বাসা ফেলে।
আমি যেন সারাদিন পড়ার ফাঁকে ফাঁকে পাহারা দেই ওদের ছোট্ট বাসাটা!
তারপর আবার যখন ওরা ফিরে আসে সন্ধ্যায়, আস্তে আস্তে উঁকি দিয়ে দেখে নেই- ওরা দু’জন ভালই আছে। এখনো ওদের দু’জনের চিউক চিউক শুনতে শুনতে লিখছি আর ভাবছি- পড়ার টেবিলের জানালার পাশে চড়ুই পাখি থাকা মন্দ না!
শহর থেকে খানিকটা দূরে গেলে ছোট্ট একটি পাহাড় আছে,
পাহাড়টির ঠিক পেছনে ছোট্ট একটি গ্রাম।
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা গ্রামটিতে সুখে শান্তিতে বাস করত একজোড়া চড়ুই পাখি।
পাখি দুজনের মাঝে ছিল গভীর ভালোবাসা।
... দুজনে একসাথে তাদের বাসা বেঁধেছিল মোড়ল বাড়ির বারান্দায়।
একদিন তারা দুজন উঠোনে ধান খাচ্ছিল আর
মেয়ে চড়ুইটা ছেলে চড়ুইকে গান শোনাচ্ছিল।
হঠাৎ মেয়ে চড়ুইটি গান বন্ধ করে ছেলে চড়ুইকে জিজ্ঞেস করল,
"প্রিয়তম আমাকে ছেড়ে তুমি কখনো উড়ে যাবে নাতো?"
তখন ছেলে পাখিটি বলল-
"উড়ে গেলে তুমি আমাকে ধরে আটকে ফেলো।"
মেয়ে চড়ুইটি বলল -
"নাহ্ জোর করে কাওকে আটকে রেখে তো তার মন পাওয়া যায় না।"
তখন ছেলে চড়ুইটির চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরে পড়লো, সে ধান কাঁটার কাঁচিটি দিয়ে তার পাখাটি কেটে ফেলল আর বলল-
এখন থেকে আমরা সবসময় একসাথে থাকব। :)
এরপর তারা মনের আনন্দে বাস করতে লাগলো,
একদিন তারা কাছের একটি জঙ্গলে ঘুরতে গেলো,
সেখানে হঠাৎ অনেক ঝড় শুরু হল,
মেয়ে চড়ুইটি উড়ে চলে যাচ্ছিল, তখন ছেলে চড়ুইটি বলল-
''তুমি উড়ে যাও আমার তো পাখা নেই, আমি উড়তে পারব না।''
মেয়ে চড়ুইটি ছেলে চড়ুইটিকে নিজের খেয়াল রাখতে বলে উড়ে চলে গেলো।
যখন ঝড় থেমে এল এবং মেয়ে চড়ুইটি ফেরত এলো, দেখল-
ছেলে চড়ুইটি রক্তাক্ত অবস্থায় মরে পড়ে আছে।
.
.
.
.
.
আর একটি গাছের ডালে রক্ত দিয়ে লেখা-
"যদি সে একবার বলত যে তোমাকে একা ফেলে আমি যাবো না, তবে ঝড়ের আগে হয়ত আমি মরতাম না। :)"
ভালোবাসা খুবি অনুভূতিপ্রবণ। একে অনুভব করো, সম্মান করো এবং ভালোবাসো।
নীলা বেশ শান্ত একটা মেয়ে। দেখতেও বেশ সুন্দরী। একটা প্রাইভেট ভার্সিটি তে পড়ে।
তার সাথে মাহমুদ নামে এক ছেলের সাথে সম্পর্ক আছে। মাহমুদ আর নীলা একে একে অপরকে খুব ভালবাসে।
মাহমুদ পড়াশুনার কারনে লন্ডনে থাকে। সেখানে সে ল পড়ছে। নীলা আর মাহমুদের মধ্যে প্রায় ৪ বছরের সম্পর্ক। নীলা আর মাহমুদ উভয়ের পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে ঠিক হয়। ফোনে তাদের বিয়ে হবে।
... বিয়ের জন্য মাহমুদের ফ্রেন্ড কেনা কাটা করে। নীলার জন্য জামদানী, ডায়মন্ডের নাক ফুল ইত্যাদি কেনা হয়। বিয়ের দিন ঠিক হয়ে আছে। আজ রাত পেরোলেই কাল বিয়ে।
কিন্তু পরদিন বিয়ে হয় না। নীলার ফোন বিয়ের আগের রাত থেকেই বন্ধ। মাহমুদ তার বন্ধুকে ফোন দিয়ে ঘটনা কি জানতে চায়? ফ্রেন্ড জানায় বাদ দে ওই মেয়ের কথা। ওই মেয়ে খারাপ। সে অন্য একজনকে বিয়ে করবে। নীলার অনুরোধে মাহমুদের ফ্রেন্ড নাইম কে এই মিথ্যা কথা গুলো বলতে হয়।
মাহমুদ কিছুতেই মেনে নিতে পারে না। সে নির্বাক হয়ে বসে থাকে। বিয়ের আগের রাতে নীলা অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তার চেহারা ক্রমশ ফ্যাকাসে হয়ে আসছিলো। তার পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। জানা যায় নীলার ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে। নীলা কিছুতেই মাহমুদকে তার জীবনের সাথে জড়াতে চাইছে না। নীলা বলে আমি আর মাত্র কয়েক মাস, আমি ওকে এই কয়েকটা দিনের জন্য ঠকাতে পারবো না। ওর জীবন আমি নষ্ট করে দিতে চাই না।
নীলা নাইম কে মেসেজ করে, নাইম যেন মাহমুদকে ভুল বোঝায়, যেন বলে নীলা তার সাথে টাইম পাস করেছে। সে অন্য ছেলেকে ভালবাসে তার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে, নীলা খারাপ একটা মেয়ে ইত্যাদি। কিন্তু নাইম পারে না তার বন্ধুকে এই কথা গুলো বলতে।
নাইম মাহমুদকে সব বলে দেয়।
মাহমুদ সব জানার পর নীলার সাথে অনেক কষ্টে যোগাযোগ করে, কেননা নীলা মাহমুদকে ভুল বোঝাতে চেয়েছিল। মাহমুদকে নীলা অনেক বোঝায়। মাহমুদের এক কথা " আমি তোমাকে ভালবাসি, তুমি যদি একদিন বাঁচো... আমি তাও তোমাকে বিয়ে করবো... আমি ওই একটা দিন তোমাকে নিয়ে বাঁচতে চাই... "
যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ টিনিসাইডের পূর্ব বলডনের বাসিন্দা র্যাচেল পেশায় একজন হেয়ার ড্রেসার। তার সঙ্গে সাড়ে পাঁচ বছর আগে প্রেমিক গ্লেনের মন দেয়া-নেয়া হয়। মনের মতো মানুষ পেয়ে উভয়েই যখন বিয়ে করে ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছিলেন ঠিক তখন ২০০৯ সালে র্যাচেলের বাম কাঁধে মরণব্যাধি ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সারকে জয় করতে ক্যামো ও রেডিও থেরাপি নিয়েও র্যাচেল ক্যান্সারের কাছে পরাজিত হন। ধীরে ধীরে তা তার ব্...রেইন ও ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তার বাম হাত কেটে ফেলতে হয় এবং অবস্থার ক্রমেই অবনতি হতে থাকে। এক পর্যায়ে হাসপাতালই তার আবাস হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় র্যাচেলও বুঝতে পারেন তার জীবনকাল ফুরিয়ে আসছে। তাই জীবনের শেষ ইচ্ছা হিসেবে র্যাচেল গত ২৫শে জানুয়ারি গ্লেনকে বিয়ে করার ইচ্ছা পোষণ করেন। প্রেমিক গ্লেনও তার প্রিয়ার শেষ ইচ্ছা বাস্তবায়নে কোন রকম আপত্তি তুলেননি। উভয়ের সম্মতিতে হাসপাতালের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে সেদিনই আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ে উপলক্ষে র্যাচেলের হাসপাতালের কক্ষে ব্যানার ও বেলুন টানানোর পাশাপাশি এই নব দম্পত্তিকে বিবাহ-উত্তর সংবর্ধনাও দেয়া হয়। কিন্তু বিয়ে করার মাত্র তিন দিন পর ২৮শে জানুয়ারি র্যাচেল তার মায়ের কোলে মাথা রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পৃথিবীর সব বন্ধন ছিন্ন করে চিরতরে চলে যান পরপারে। প্রেমিক গ্লেনের কাছে প্রেমিকা র্যাচেলের স্মৃতি ছাড়া আর কিছুই রইল না। তাই প্রিয়ার স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন গ্লেন। তাদের এই মহাকাব্যিক বিয়ে বর্তমান স্বার্থপরতার যুগে প্রেম-ভালবাসার জগতে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
২০০৯, ১৪ ফেব্রুয়ারী, সকালে ঘুম থেকে উঠে জানালা খুলে দেখলাম অঝর বৃষ্টি। মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। গতরাতে ওর সাথে অনেক্ষন কথা হয়েছিল। ওকে বলেছিলাম সারপ্রাইজ দিব। কিন্ত খুব ঝড় বৃষ্টি। যাইহোক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম ওর বাসায় সামনে যাব। কিন্ত ওর বাসা তো আর ঢাকার ভিতরে না যে চাইলাম আর গেলাম। যা হবার হবে, ঝড় বৃষ্টির ভেতরেই গাবতলি গেলাম। অবস্থা ভয়াবহ কোন গাড়ি নাই। একটু পর মাইকে ঘোষণা আসলো ঈগল... পরিবহনের একটা গাড়ি খুলনা যাবে। দৌড়ে গিয়ে টিকেট কাটলাম। ঘড়িতে ১০ টা বাজে। গাড়ি ছাড়ল ১০.৩০। পাটুরিয়া ঘাটে ভায়াবহ জ্যাম। এই জ্যাম থেকে গাড়ি বার হয়তে সারা রাত লেগে যাবে। বাসের সুপারভাইজারকে অনেক বুঝিয়ে লঞ্চ এ নদী পার হলাম। সময় তখন ১.৩০। মাগুরা যখন নামলাম তখন বাজে দুপর ৩টা। মাগুরা তখন তুমুল বৃষ্টি। ওর বাসার সামনে গিয়ে ওদের টিএন্ডটি ফোনে কল দিলাম। ওই ফোন ধরল, হ্যালো? বললাম, কেমন আছ? ও বলল “আম্মা বাসায় ফোন দিছো কেন”? বললাম একটু বারান্দায় আসো? ও বলল “ ক্যান তুমি কই আসছ” এই বলে দৌড় বারান্দায় আসলো। তখন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিল। ও বারান্দায় এসে আমাকে দেখে কি যে খুশি আর অবাক হয়েছিল। দূর থেকে ওর চোখের পানি বুঝতে পারছিলাম। ওর এই অবাক চোখের অঝর কান্নায় আমার সব কষ্ট মুছে দিয়েছিল। আমার মনের ভিতর তখন অদ্ভুত এক ভালোলাগা খেলা করছিলো। হয়ত এটাই ছিল ওর প্রতি আমার ভালবাসার অনুভতি। আর এই সময়টাই আমার জীবনের সেরা সময়।
এক বাচ্চা ছেলে আর এক বাচ্চা মেয়ে খেলছিল...
ছেলের কাছে মার্বেল ছিল,আর মেয়ের কাছে ছিল কিছু চকলেট!
ছেলেটি মেয়েকে বলল "তুমি যদি তোমার সব চকলেট আমাকে দাও
...
তাহলে আমি আমার সব মার্বেল তোমাকে দেব"
মেয়ে রাজি হল। ছেলেটি সবচে সুন্দর একটা মার্বেল
আলাদা করে রেখে বাকিগুলো মেয়েটিকে দিয়ে দিল।
অন্যদিকে মেয়েটি তার সবগুলো চকলেট ই ছেলেকে দিল!
রাতের বেলাতে মেয়েটি শান্তিতে ঘুমাল কিন্তু ছেলেটি শুধু চিন্তা করলো
মেয়েটিও কি তার মার্বেল এর মত কিছু চকলেট আলাদা করে রেখেছে??
যাকে ভালোবাসেন মন প্রাণ উজার করেই ভালোবাসুন । আপনি নিজে ১০০%
ভালো না বাসতে পারলে সবসময় সন্দেহে ভুগবেন, অন্যজন কি তার ১০০% দিচ্ছে !!!!
একদিন একটা ছেলে এবং একটা মেয়ে সিনেমা দেখে বাড়ি ফিরছিল। ছেলেটি গাড়ি চালাচ্ছিল। মেয়েটিকে নীরব বসে থাকতে দেখে সে আন্দাজ করতে পেরেছিল কিছু হয়েছে। মেয়েটি তখন সেই নীরবতা ভেঙ্গে বলল " আমি এখন আর তোমাকে ভালোবাসি না।। আমি অনেক ভেবে দেখেছি আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়াই উচিত হবে। "
কথাটি শুনে ছেলেটি চোখ দিয়ে অশ্রু গড়িয়ে পরল, এবং সে পকেট থেকে একটা চিরকুট বের করে মেয়েটিকে দিল। ঠিক তখনি একটা ট্রাক তার নিয়ন্ত্রণ হারা...নোর ফলে গাড়িটির দিকে ছুটে আসতে লাগলো। ছেলেটি ট্রাকটিকে তাদের দিকে আসতে দেখে হঠাৎ গাড়িটি ঘুরিয়ে নিল, যার ফলে ট্রাকটি সোজা চালকের বসার স্থানটিতে আঘাত করল। ছেলেটি তার ভালোবাসার মানুষটিকে বাঁচানোর একটা ক্ষীণ চেষ্টা করল। হয়ত তার এই চেষ্টায় সৃষ্টিকর্তাও মুগ্ধ হয়ে গেলেন। তাইতো আশ্চর্যভাবে মেয়েটি বেঁচে গেলো এত ভয়াবহ দুর্ঘটনার পরও। মেয়েটি অবাক বিস্ময়ে ছেলেটির রক্তাক্ত মৃতদেহটির পাশে বসে ছেলেটির দেয়া চিরকুটটি পড়ল। তাতে লেখা ছিল -
........."তোমার ভালোবাসা ছাড়া আমি বাঁচব না।".........
(সংগৃহীত)
(১)
-এই যে মিস্টার ! ! কেমন আছেন ? এই নিন , আপনার জন্য তাজা লাল গোলাপ ।
-- প্লিজ তুমি এখন যাও । মা ডাক্তারের সাথে দেখা করতে গেছেন । তোমাকে দেখলে অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন ।
- দেখুক না ! তাতে কি ? তোমার বউ হয়ে গেলে দেখবে না বুঝি ! !
-- আরে এটা তো অনেক পরের কথা । আমি এখনও তোমার কথা মাকে বলিনি । প্লিজ আমাকে আর বিপদে ফেলো না ।
- আমি তোমার জন্য এত সুন্দর ফুল আনলাম আর তুমি কিনা আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছ !
ok . . . আর কোন দিন আমার সাথে ফুচকা খাওয়ার কথা বলে দেইখো । শিক্ষা দিয়ে দিব ।
-- তুমি শুধু শুধুই রাগ করছো ।
- কেনো করবো না বলো ?
কত বার করে বললাম আর মোটরসাইকেল চালিয়ো না । শুনলে না তো !
যদি শুনতে , তাহলে কি আর আজকে এই হাসপাতালের বেডে পরে থাকতে হত ? প্রিয়জনের কথা না শুনলে এমনই হবে ।
-- বাদ দাও তো এসব কথা । কালই আমার রিলিজ হয়ে যাবে । অপেক্ষা করো । তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে ।
(২)
. . . . . কিছুদিন পর , . . . .
কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়াজকে দেখে আদ্রিতা বলল ।
--এই নিয়াজ , তুমি না বলেছিলে আমার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে ? আজ কিন্তু আমার বার্থডে । আজকে সেটা দিতেই হবে । নিয়াজ
বলতে লাগলো "সারপ্রাইজটা হলো. . . . . .থাক আর বলবো না ।দেখি তুমি কতদিন সহ্য করতে পারো।"
-আমি আর পারছি না । প্লিজ বলো না . .
--ঠিক আছে । প্রথম বলে নিই ।
মাকে আমি তোমার কথা বলেছিলাম । মা , তোমার ছবি দেখে তোমার একটা উপাধিও
দিয়ে দিয়েছেন ।
- আমি জানি তোমার মা কি বলেছে । তিনি বলেছেন "২ নম্বর ছাগলের ৩ নম্বর ছাঁও" আমার যা চেহারা ! একেবারে কালো পেত্নি !
--কি যে বলো না তুমি ! শাড়িতে কিন্তু তোমাকে ভারী সুন্দর লাগে । যাই হোক আমি একটা স্কলারশিপ পেয়েছি । আগামি মাসেই M.B .A করতে আমেরিকা যাচ্ছি ।
- ভালো । খুব ভালো । সবাই আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে । বাবা তো চিরদিনের জন্যই চলে গেলেন । আপুটারও বিয়ে হয়ে গেলো । তুমিই বা থাকবা কেনো ? চলে যাও ।
-- এই যে তুমি আবার রাগ করছো । দেখো , আমি যা করছি সবই তো তোমার আর আমার
future এর জন্যই করছি ।
- আমি তো "ছেড়া পাতা" আমাকে কেউ রাখতে চায় না । আচ্ছা ? ঐ দেশে গিয়ে আমার কথা মনে রাখবা তো ? ওখানের মেয়েগুলো কিন্তু ভারী সুন্দরী !
--এখন ঈর্ষা হচ্ছে ! তাই না ? আমি প্রতিদিন তোমাকে ফোন করবো ।
- promise করো ।
-- এই যে । তোমার হাতের এই "তিল" টা ছুঁয়ে promise করলাম । মাত্রই
তো কটা বছর । দেখতে দেখতে কেটে যাবে ।
. . . . . . নিয়াজ আমেরিকা চলে যাওয়ার পর ৩ বছর কেটে গেলো । একদিন নিয়াজের বন্ধু
আকাশের সাথে আদ্রিতার দেখা হলো । আকাশ বলল " এ কি ! আদ্রিতা যে ! কেমন
আছো ?" -জ্বি ভাইয়া ভালো ।
--তা ঐ নিয়াজটার কি খবর ? ও তো আজকাল ফোনও করে না । মাঝে মাঝে ফেসবুকে চ্যাট
হতো । এখন তাকে তো অনলাইনেই পাওয়া যায় না !
- আমাকে তো গত ৬ মাস কোন ফোন করে নি !
(৩)
. . . . . .সেদিন রাতেই নিয়াজ আকাশকে ফোন করলো । নিয়াজ আকাশকে একটা প্ল্যান এর
কথা জানালো ।
আকাশ বলল "দেখ দোস্ত । তুই যে প্ল্যান করছিস । তাতে মেয়েটা মানসিকভাবে অনেক
ভেঙ্গে পরবে ।"
নিয়াজ বলল "আহা ! দেখ । আমি পরশু দেশে আসছি । এসেই ওকে ফোন করবো ।
তারপর সোজা গিয়ে উঠবো ওর বাসায় । আদ্রিতাকে একটা speical surprise দেব । তুই শুধু আমাকে একটু support দিবি ।"
(৪)
নিয়াজ দেশে ফিরেছে । ফিরেই আদ্রিতাকে ফোন করলো ।
আদ্রিতা ফোন রিসিভ করেই বললো "হ্যালো নিয়াজ । আগে বলো তুমি কেমন আছো ? কতদিন
তোমাকে দেখি না ! তুমি কবে আসবে ?"
নিয়াজ বলল "আশা করি আমাকে আর তোমার দেখতে হবে না ।
আচ্ছা তুমি কি ভাবো নিজেকে ? তোমার মতো দুশ্চরিত্র মেয়ে আমি কখনো দেখিনি !"
-আমি কিছুই বুঝতেছিনা ! প্লিজ তুমি আমাকে ভুল বুঝো না ।
-- আমি তোমার প্রতি খুব দুর্বল হয়ে পরেছিলাম । তার সুযোগটাই তুমি নিয়েছো । ছিঃ ছিঃ । তোমার মতো মেয়ের সাথে আমি সর্ম্পক রাখবো না ।
বলেই ফোনটা কেটে দিলো নিয়াজ । পাশে দাড়ানো আকাশ বললো "দোস্ত । আমার
মনে হয় তুই একটু বেশিই বলে ফেলছিস ।"
"আরে ধুর ! শোন আকাশ । ও অনেক শক্ত মনের মেয়ে । just একটু মজা করলাম । এখন
দেরি না করে চল তারাতারি ।" বলল নিয়াজ ।
(৫)
আদ্রিতাদের বাসায় পৌছে নিয়াজ হতভম্ব হয়ে গেলো । কি এক
কারনে আদ্রিতাকে হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছে । ও সেখানে ছুটে গেলো । কিন্তু ততক্ষনে অনেক
দেরি হয়ে গেছে । আদ্রিতার ভা কান্নাভরা চোখে ওর হাতে একটা চিঠি দিলো । তাতে আদ্রিতার
হাতের শেষ লেখা
. . .
"আমি তো কোন দোষ করিনি ! তাহলে কেনো আমায় এতো বড় শাস্তি দিলে ?
সবার মতো তুমিও এই "ছেঁড়া পাতাকে" ছুঁড়ে ফেলে দিলে ! কেনো ?"
আদ্রিতার নিথর দেহটা তখন হাসপাতালের বেডে পরে আছে । চারপাশে স্বজনদের
আহাজারি । বিষক্রিয়ায় আদ্রিতার সুন্দর মুখটা নীল হয়ে খেছে । মুখের এককোনে একটু
যেনো অস্পষ্ট হাসি ।
নিয়াজ মনে মনে বলল "এই কি সেই মেয়ে ? যার জন্য আমি সারাটা জীবন অপেক্ষা করেছি ?"
আকাশের দিকে ফিরে বলল "জানিস আকাশ । ও ওই দিন কি বলেছিলো ? আমাদের সন্তান ছাড়া আর কারও জন্য ও এই বেডে শোবে না । কিন্তু ও তো কথা রাখলো না । আমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেলো ।"
আকাশ বলল "ও তো নিজে থেকে যায়নি নিয়াজ ! তুই । হ্যা তুই
ওকে খুন করেছিস । তুই ওকে কি surprise দিবি ? ওই তোকে সবচেয়ে বড় surprise
দিয়ে চলে গেলো । এই মজাটা না করলে কি চলতো না ? ?"
নিয়াজ আদ্রিতার নিষ্পান মুখটার দিকে চেয়ে রইলো । হটাত্ তার মনে হলো আদ্রিতা যেনো বলে উঠলো "এই যে মিস্টার ! ! এই নিন , আপনার জন্য তাজা লাল গোলাপ ।"
একটু কষ্ট হলেও পড়ুন :)
ঘটনা ১ ইমন কলেজে উঠেই নতুন মোবাইল কিনেছে। আনন্দে তাই সবার ছবি তুলছে।ছোট আপু রুমে শুয়ে শুয়ে বই পরছে, বড় আপু বাথরুম থেকে গোসল থেকে বের হয়েছে এরকম কত মজার ছবি। -এই কি করিস, এসব ছবি তুলছিস কেন?দেখছিস না আমি রেডি না। -দারাও না আপু একটু মজা করি……আরে তুলতে দাও না। ক্লিক……।। কয...়েক ঘন্টা পরে… -কিরে নতুন মোবাইল কিনছস নাকি? -আরে তুহিন নাকি…হ, দোস্ত... -দেখি একটু -নে -দোস্ত কয়েকটা গান লই আমার মোবাইলে… -নে। আর এভাইবে ট্রান্সফার হয়ে গেল ইমনের পারিবারিক কিছু ছবি। ঘটনা ২ তুহিনের বোন সামিয়া।মেডিকেলের পুরো ব্যাচ সহ এখন কক্সবাজারে। রাতের পার্টিতে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে। -ওহ সামিয়া, শাড়ী ছারা ওই শর্ট ড্রেসে তোকে যা সেক্সি লাগছে না। দারা তোর একটা ছবি তুলি। -শিমু, একদম ভাল হবে না বলে দিলাম। -আরে দ্বারা না……ক্লীক…ক্লীক -দ্বারা শিমু তাহলে তোরও একটা ছবি তুলি -তোল এই নাদিয়া তোরও একটা ছবি তুলি, দেনা? তুই এত মিন মাইন্ডেড কেন বলত?নিজেকে আপগ্রেড কর বুঝলি...। ক্লীক…ক্লীক সামিয়া, শিমু, নাদিয়া তিন বান্ধবি হাসতে হাসতে দেখতে লাগল স্বল্প বসনে তাদের ছবি। শিমুর পিঠা পিঠী বড় ভাই রুমেল বোনের ল্যাপটপ ব্রাউস করতে গিয়ে আবিস্কার করল আনারি ব্যাবস্থাপনায় হিডেন করে সংরক্ষন করা এইসব অর্ধনগ্ন ছবি।শুধুমাত্র বোনের ছবিগূলো বাদ দিয়ে ওর বান্ধবিদের ছবিগুলো চালান করে দিল নিজের পেন ড্রাইভে। নাদিয়ার বয়ফ্রেন্ড জুনায়েদ -এই কক্সবাজারে কি কি ছবি তুলেছ দেখাও না নাদিয়া। মোবাইলের গুলোই দেখাও। -এখন দেখান যাবে না। পারসনাল কিছু ছবি আছে।ওগুলো ডিলেট করে নেই তার পর দেখো। -আরে আমি পারসনাল ছবি গুলো দেখবনা।যেগুলো তোমার সেগুলো দেখব। -সত্যি তো -একদম সত্যি নাদিয়া জানতেও পারল না ব্লু-টুথ টেকনোলজি ব্যাবহার করে কোন এক ফাকে কয়েকটা ছবি ঠিকই জুনায়েদ ট্রান্সফার করে ফেলেছে শুধু নাদিয়ারগুলো ছারা। ঘটনা-৩ জুনায়েদের বোন ইমি। ভার্সিটি হলের রুমে ঘুমিয়ে আছে। রুমে এই মাত্র প্রবেশ করলো মিরা।ঘুমন্ত ইমিকে দেখে তার মনে জেগে উঠল প্রতিশোধের আগুন। এই ইমির জন্য সে তার পছন্দের মানুষটিকে পায়নি।দ্বারা ঘুমন্ত অবস্থায় এই আলুথালু বেশের ছবি তুলে সে ছরিয়ে দিবে সব ছেলেদের মধ্যে।ক্লিক…ক্লিক… -এই বাবু তোর জন্য একটা এক্সলুসিভ জিনিস আনছি। -কি আনছস মিরা। -তোমারে ছেকা দেওয়া ইমির হাই প্রোফাইল ছবি। -দেখি…।দেখেই মাথায় আগুন চাপল বাবুর। এই ইমি তার প্রেমের অফার প্রত্যাক্ষান করে আরেকজনকে ভালবেশেছে। আজকে তার প্রতিশোধ নেয়ার পালা। হাসছে মিরা।আজ চরম একটা প্রতিশোধ নেয়া গেল।কিন্তু আক্ষেপ একজায়গায়।মিরা ফাজিলটাকে ছবিতে নায়িকাদের মত সেক্সি দেখা যাচ্ছে।তাকেও কি এমন লাগেবে? পরিক্ষা করেই দেখা যাক।বাথরুমের আয়নার সামনে যেয়ে পোশকটা সরিয়ে তুলে ফেলল নিজের একটা ছবি। ভাবল “নাহ আমার ফিগারটাও খারাপ না” সেদিনই মার্কেটে যাওয়ার সময় মিরার মোবাইলটা ব্যাগসহ চুরি হয়ে গেল!!! ঘটনা ৪ বাবুর বোন বিন্দু আর দুলাভাই নিয়াজ। আজকে নিয়াজ একটা নতুন ঝকঝকে সাইবার শট মোবাইল কিনেছে।প্রথম দিনেই মাথায় ভুত চাপল তার নিজের ও স্ত্রীর কিছু রগরগে হলিউডি মার্কা ছবি ও ভিডিও তুলবে। বিন্দুর শত আপত্তি সত্তেও রাতে তার ইচ্ছাটা পুরন করলো নিয়াজ। সকালে অফিসটাইম তারাতারি হওয়ায় সিদ্ধান্ত নিল রাতে এসে সব ভিডিও ও ছবি কম্পিউটারে ট্রান্সফার করতে হবে।সারাদিন অফিসে লুকিয়ে লুকিয়ে কিছু ছবি দেখে তার বউয়ের সৌন্দর্য নিয়ে বেশ তৃপ্তি পেল সে। আর সন্ধ্যায় বাসায় আসার সময় ছিন্তাইকারীর হাতে পরে মোবাইল খোয়াল সে!!!! ইমন,তুহিন, রুমেল,জুনায়েদ, মিরা, বাবু, নিয়াজ কয়েকদিন পর আবিস্কার করল তাদের যার যার বোন বা কাছের মানুষের ছবি কয়েকটি পর্ন সাইটে আপলোডেড অবস্থায়।মাথায় হাত দেয়া ছার কিছুই করতে পারল না তারা।সাইটগুলোতে যত ভিজিটর বাড়তে থাকল তাদের বুকে যেন ততগুলো শেল এসে বিধল।শুধু তা একসাইটে না ছরিয়ে পরল আরো অনেক সাইটে।এমনকি খুব কাছের কিছু মানুষের পিসি বা মোবাইলেও। রুমেল,জুনায়েদ কিছুতেই বুঝে উঠতে পারল না কক্সবাজারের ছবিগুলোতে তাদের বোনদের ছবি আপলোড করল কে । ওগুলোতো তারা আপলোড করে নাই। তবে সবাই তারা একটা কথা বুঝলো যে পাপ তারা অন্যের বোন বা প্রিয়তমার সাথে করেছে সেই পাপ আজ তাদের নিজেদের ঘাড়ে এসে পরেছে। আর এভাইবেই আমাদের অসচেতনতার জন্য জানা বা না জানা উপায়ে আমাদের প্রিয় মানুষগুলোর ছবি বা ভিডিও চলে যাচ্ছে পর্ন সাইটে আর তার দর্শক হচ্ছে অসংখ্য বিকৃত মস্তিস্কের মানুষ। আপাতত দৃস্টিতে যা আপনার বোন, মা বা প্রিয়তমার ক্ষেত্রে যে ছবিটি শোভন তা অন্যের কাছে হয়ত ভয়াবহ বিকৃত আনন্দের খোরাক। তাই বলে কি স্বাভাবিক চলাচল বা স্বাভাবিক আনন্দ থেকে নিজেকে বিরত রাখব।না, অবশ্যই না।তাই সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে আসুন আমরা সবাই একটু সচেতন হই। আমাদের দেশের সামাজিক রীতিনীতি বা ধর্মীয় অনুশাসনকে পশ্চিমা কালচারের বড়াই করে বুড়ো আঙ্গুল না দেখাই কিংবা অভিহিত না করি “মিন মাইন্ডেড, ব্যাক ডেটেট, ক্ষেত” ইত্যাদি উপমায়। কিংবা জালাতন বা উৎপাত না করি উক্ত অনুশাসন মান্যকারিদের। নিজেরা নিজেরদের আচরন সংযত করি। সবার হয়ত ইমন,তুহিন, রুমেল,জুনায়েদ, মিরা, বাবু বা নিয়াজদের মত অভিজ্ঞতা নাও হতে পারে। তবে হতে কতক্ষন। দেশে ছয়কোটি মোবাইল গ্রাহকের এককোটিও যদি ক্যামেরা মোবাইলে ব্যাবহার করে থাকে তাহলে প্রতি মুহুর্তে আপনাকে আমাকে তারা করে বেরাচ্ছে এককোটি সুযোগসন্ধানি হিডেন ক্যামেরা লেন্স। সুযোগটাযে কখন আসবে... মূল সমস্যা হোল আজকে আমি মোবাইলে যে ছবি রাখছি তা বেহাত হতে পারে বিভিন্ন কারনে। যেমন আমার মোবাইল ছিনতাই হতে পারে, নষ্ট হলে তা দোকানে দিয়ে আসতে হতে পারে ইত্যাদি। আবার কম্পিউটার নষ্ট হলে তা সার্ভিসিং সেন্টারে দিতে হয়। মূলত এভাবেই মানুষের ব্যক্তিগত মুহুর্তগুলোর ভিডিও/ছবি সর্বত্র ছড়িয়ে পরে আর ভুক্তভোগী মেয়টিকে হয়তো আত্নহত্যার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। খুব সাধারন একটি ভুল বিশাল বিপদের কারন হয়ে দাঁড়ায়... আসুন নিজে সাবধান হই, অপরকেও সাবধান করি লিখাটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে । ধন্যবাদ।
ঝনঝন করে একটা গ্লাস ভেঙ্গে পড়ল হঠাত্ করেই।ভেঙ্গে যাওয়া গ্লাসের কাচেঁর টুকরো এসে বিধঁলো নীলিমার পায়ে।।বুঝে উঠার আগেই পায়ে আলতা রাঙ্গিয়ে দিলো ভাঙ্গা কাচঁ।।রক্তে ভেসে গেলো চারপাশ।।তার মাঝে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গেলো নীলিমা।।তারপর সব ই নিঃশব্দ।।
কৌশিকের সাথে নীলামার সম্পর্ক মাত্র চার মাসের।তবু কেন যেন মনে হয় দুজনের কাছেই,সর্ম্পকটা চার বছর পেরিয়ে গেছে।।বাংলাদেশের স্বনামধন্য একটা প্রকৌশুলি বিশ্ববিদ্যালয়ে তা...দের একসাথে লেখাপড়ার সুযোগ হয়।ক্লাসের সব মেয়েদের মধ্যে শান্ত মেয়ে ছিলো নীলিমা।।আর সবচেয়ে মনযোগী ছাত্র কৌশিক।।দুএকদিন পরেই কৌশিকের নজর কাড়লো নীলিমা।।চোখে চোখে চোখ রাখলেও পছন্দের কথা বলতে সাহস হয়নি কখনো কৌশিকের।।কৌশিকের গ্রামের বাড়ি বরিশাল।বাড়ী যাওয়ার জন্যে বাসে উঠতেই কৌশিক পেয়ে যায় নীলিমাকে।।জানা গেলো নীলিমা ও বরিশাল যাবে।ওর বাবা মা ওখানেই থাকেন।।
যেতে যেতে অনেক কথা হলো ওদের মাঝে।।নীলিমার ও ভালো লেগে গেলো ছেলেটিকে।।ফোন নম্বর টাও জেনে নিলো নীলিমা।।আস্তে আস্তে ভালোবাসা বাড়তে লাগলো ওদের মাঝে।।
ভার্সিটিতে একসাথে বসা,ফুচকা খাওয়ার পাল্লা দেয়া,চোখে চোখ রেখে কেবলই তাকিয়ে থাকা,পড়া বুঝিয়ে দেয়া সবকিছুতেই যেন অন্যরকম ভালো লাগা,,নতুন করে কাছে আসা।।।
ভালোবাসার ডাকপিয়ন ভালোবাসার সব চিঠি দিয়ে রাঙ্গিয়ে দিলো দুজনকে।।
একদিন কৌশিক নীলিমাকে একটা গোলাপ ফুল আর একটা কার্ড দিয়ে প্রপোজ করলো।নীলিমা কার্ডটা হাতে নিয়ে বলল এখন আসি পরে কথা হবে।।রাতে ফোনে নীলিমা জানালো এক সপ্তাহ সময় লাগবে।।পরে এক সপ্তাহ পরে নীলিমা কৌশিককে জানালো আমিও ভালোবাসি তোমাকে।।
তিন মাস কেটে গেলো।।নীলিমার কেনো যেন মনে হচ্ছিলো কৌশিক ওর সাথে টাইম পাস করছে।।ওর যখন ভালো লাগে তখন কথা বলে,যখন ভালো লাগে না কথা বলে না।একদিন নীলিমা কৌশিককে জিগ্যেস করলো আমাদের সর্ম্পক টা নিয়ে কি ভাবছো তুমি?তখন থেকেই খুব আনমনা হয়ে যায় কৌশিক।সে জানায় তার বাবা খুবই রক্ষনশীল।তিনি তাদের প্রেম মেনে নিবে না।আর সে পরিবারের বড় ছেলে।।পরিবার থেকে তার জন্যে মেয়ে ঠিক করলে সে তার বাবা মার মনে কষ্ট দিতে পারবে না।।
নীলিমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল।তাহলে তাদের এই ভালোবাসার কি কোন মূল্য নেই!প্রশ্ন আছে তবে উত্তর নেই।।
আজ ও নীলিমা অপেক্ষায় আছে কবে উত্তর পাবে।।কৌশিক কোন ভরসা দিতে পারছে না।।প্রশ্নটা যখন নীলিমা বলে,কৌশিক মাটির দিকে তাকিয়ে বলে জানি না।।
একদিন কষ্টে অভিমানে নীলিমা এক গাদা ঘুমের ঔষধ খেয়ে ফেললো।গ্লাসটা টেবিলে রাখতে গিয়ে পিছলে হাত থেকে পড়ে গেলো নিচে।।ভাঙ্গা কাচেঁর টুকরা গুলো এসে বিধঁল পায়ে।।রক্তে ছেয়ে গেলো চারপাশে।।অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলো নিচে।তারপর সব নিঃশব্দ।।
নীলিমা ভালো আছে।।কৌশিক ও চালিয়ে যাচ্ছে তার লেখাপড়া নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে।থেমে নেই তাদের ভালোবাসা ও।।তবে এতে কৌশিকের নেই কোন ভরসা।।নীলিমা ও আশা হীন হয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে নীড় বিহীন পাখি হয়ে আজ ও।।
আজ ঠিক ১৫ মাস ২২ দিন হোল তোমায় হারিয়েছি।
যখন তুমি আমার জীবনে ছিলে, তোমাকে কখনো গুরুত্ব দেই নি।
ভাবতাম তুমি অকারনে বড় বিরক্ত করো।
কথায় কথায় ফোন করা,
এখন আর কেও ছোট ছোট কথায় বিরক্ত করে না......
... কিন্তু কেন যেন আজকাল খুব বিরক্ত হতে ইচ্ছা হয়।
তোমার ছোট ছোট আবদার গুলো পালন করতে ইচ্ছা হয়।
তোমায় তোমার মত করে ভালবাসতে ইচ্ছে হয়।
জানি আজ তুমি আমার নও। কারো সংসার নিজের মত করে গুছিয়ে নিয়েছ।
নিশি আমি এও জানি তুমি আমায় এখনও ভালোবাসো।
কিন্তু এখন আর ফিরে আসবে না। কারন তুমি ওয়াদা করলে তা পালন ও করো
তাইতো আমায় করা ওয়াদা পালন করতে তুমি আজ অন্য কারো ঘরের গৃহিণী।
হয়ত এখন তুমি ভালোই আছো। অথবা কারো বুকে মাথা গুঁজে চোখের জল ঢাকো।
তখন বুঝিনি আমি তোমার মর্ম, আর এখন শুধু চোখের জলে লিখে যাই ফিরে এসো........................
জানি তুমি আসবে না, তবু এ মন তোমার অপেক্ষায় আছে,
যদি পার এ অভাগাকে মাফ করে দিও.....................
এভাবেই আমাদের ছোট ছোট ভুলে হারিয়ে ফেলি আমাদের প্রিয়জনকে। জীবনের দিকে আরেকবার ফিরে তাকান, আরেকবার ভেবে দেখুন, যাকে হারাচ্ছেন সে আপনার অনেক আপন কেও তো নয়? আসেন আর একবার আমরা ভালবাসার হাত বাড়াই। ভুলে যাবেন না আজ যাকে কষ্ট দিচ্ছেন কাল তার জন্যই এ মন ব্যাকুল হবে।
কখনও কখনও ঝুঁকি নাও !
সব সময় সত্যি কথা বল !
কাউকে মুখের উপর না করোনা !
...
জীবনে কখনও কাউকে বল, "ভালবাসি" !
সত্যিকারের ভালোবাসা অনুভব করো !
বোকাটাকে বল যে সে তোমাকে কষ্ট দেয় !
অপমান যার প্রাপ্য, তাকে আবার ছেড়োনা !
যদি মন চায়, বৃষ্টিতে ভিজে একাকী বসে কান্না করো !
পেট ব্যথা না হওয়া পর্যন্ত হাসতে থাকো !
হয়তোবা পারদর্শী না, তবুও নাচতে পারো !
বোকার মত ছবির জন্য পোজ দিতে পারো !
কাউকে HUG কর, যখন তার খুবই দরকার !
শিশুদের মত দুষ্টু হও !
বাবা-মাকে কষ্ট দিও না !
Live, Love ! Laugh ! And Keep Smiling....কেননা,
U LIVE JUST ONCE !
ছোট্ট বাবু আব্দুল্লাহর মেজাজ প্রচণ্ড গরম ছিল একসময়। অল্পতেই রেগে যেত অনেক, কিছুতেই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারত না । ছেলেকে নিয়ে আব্বু বেশ ঝামেলায় পড়ে যায়। অনেকক্ষন আনমনে চিন্তা করলো আব্বু। ব্যাগভর্তি পেরেক আব্দুল্লাহর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো, “এখন থেকে যখনই তোমার প্রচণ্ড রাগ হবে, হাতুড়ি দিয়ে দেওয়ালের গায়ে পেরেক গাঁথবে।”
প্রথমদিন দেওয়ালে ৩৭ টা পেরেক গাঁথল আব্দুল...্লাহ। দ্বিতীয় দিন কিছু কম। এভাবে ধীরে ধীরে রাগ নিয়ন্ত্রনে আনতে শেখার সাথে সাথে দৈনিক গাঁথা পেরেকের সংখ্যা কমতে থাকলো। আব্দুল্লাহ বুঝতে পারলো, দেওয়ালে পেরেক গাঁথার চেয়ে রাগ নিয়ন্ত্রনে রাখা অনেক সহজ। অবশেষে এমন একদিন আসলো যখন প্রায় সবরকম পরিস্থিতিতেই আব্দুল্লাহ তার রাগকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম হলো।
খুশী হয়ে আব্দুল্লাহ তার আব্বুকে তার এই উন্নতির কথা জানালো। আব্বু বললো,“বাবা, তুমি তোমার রাগ নিয়ন্ত্রনে আনতে পেরেছো জেনে আমি খুব খুশি হয়েছি। এখন তোমাকে আরেকটা কাজ করতে হবে। এতদিন তুমি দেওয়ালে যে পেরেকগুলো গেঁথেছ, প্রতিদিন সেগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা কর যতক্ষন না তোমার মেজাজ গরম হয় ”।
এরপর অনেক দিন কেটে গেল। অবশেষে আব্দুল্লাহ একদিন সবগুলো পেরেক তুলে নিতে সক্ষম হলো।
আব্বু আব্দুল্লাহকে সেই দেওয়ালের কাছে নিয়ে যেয়ে বললো, “তুমি অনেক ভাল করেছ বাবা। কিন্তু, দেওয়ালের ছিদ্রগুলোর দিকে তাকিয়ে দেখ। এগুলো কিন্তু ছিদ্রই রয়ে গেছে। ”
Moral : দেওয়ালটা আর কখনোই আগের মত হবেনা, ছিদ্রগুলো থেকেই যাবে । রাগের বশে আমরা যখন কোন কিছু করে ফেলি, বা কাউকে খারাপ কিছু বলে ফেলি সেখানে ঠিক এরকমই একটা ক্ষত রেখে দিই । একটা চাকু দিয়ে কাউকে আঘাত করার পর হাজারবার sorry বলেও আপনি তা রিকভার করতে পারবেন না। কাউকে কথা দিয়ে আঘাত করাও এরকম শারীরীক জখমের মত। আসুন, পারতপক্ষে রাগ নিয়ন্ত্রনে আনার চেষ্টা করি। সবার সাথে ভাল ব্যবহার করি। রাগ নিয়ন্ত্রনে না রাখার ফলাফলের মুখোমুখি হওয়ার চেয়ে রাগ নিয়ন্ত্রনে রাখা অনেক সহজ। (সংগৃহীত)
আজ এমন একটি গল্প দিচ্ছি যা আমাকে টাচ করে গেছে তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, না পড়লে মিস করবেন।
কথা দিচ্ছি অসাধারন একটা লিখা!!!
রিং বাজছে ফোনে।“Ammu Calling…”. এই একটা নাম্বার আমার কাছে রেড এলার্টের মতো।চায়ের দোকানে বসে ফ্রেন্ডদের সাথে সিগারেট টানতে টানতে আড্ডা দিচ্ছিলাম।জিসান খুব রসিয়ে তার ভার্সিটির একটা মেয়ের বর্ননা দিচ্ছিলো।চিৎকার করে সবাইকে থামতে বললাম।“ঐ ব্যাটারা থাম!Ammu Calling…Ammu Calling…!!!”…
এই কোড সবারই জানা।সবাই তাড়াতাড়ি মুখ লক করলো।জিসানকে মাস্টারলক করানো হলো।তার মুখটাই সবথেকে বেশি চলে।সবাই চুপ করার পর ফোন রিসিভ করলাম…
-হ্যালো আম্মু…
-কোথায় তুই?
-এইতো আম্মু।কৌশিকদের বাসায়।
-এত শব্দ কিসের?
-ঐতো আম্মু,রাস্তার পাশেই কৌশিকদের বাসা।আর বোলোনা…গাড়ির শব্দে না ঘুমাতে ঘুমাতে কৌশিকের ইনসোমনিয়া হয়ে গেছে।
-বাসায় ফিরবি না?
-হ্যাঁ,ফিরবো তো।
-কয়টা বাজে?
-এই তো আম্মু…উমম সাড়ে সাতটা…
-থাপ্পড় দিয়ে দাঁত ফেলে দিব।সাড়ে নয়টা বাজে।দশটায় গেট বন্ধ করে দিব।এর পরে আসলে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবি সারারাত।
-ঠিক আছে আম্মু।এখুনি আসছি…রাখি। …যদিও বললাম তবুও আরো অন্তত এক ঘন্টা থাকার প্ল্যান।
-শোন…
-যতক্ষন কথা বলবা…গেট বন্ধ করার সময়ের সাথে ততক্ষন add হবে।
-চোপ বেয়াদপ।যা বলছি সেটা শোন।
-অলরেডি ৩ মিনিট হয়ে গেছে…১০ টা ৩…
-প্রিয়তির জ্বর দুপুর থেকে…ওর জন্য কয়েকটা নাপা এক্সট্রা নিয়ে আসিস…
-আম্মু একটু ধরো তো…
“এই দোস্তরা থাক আমি গেলাম।প্রিয়তির জ্বর…” বলেই কারোর জবাবের অপেক্ষা না করে হাঁটা দিলাম।
-হ্যাঁ আম্মু,আমি আসতেছি…বাই।
কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও কোন রিকশা পেলাম না।অগত্যা হাঁটতে শুরু করলাম……।
অনেকদিন পর ছুটি পেয়েছি।বাসায় এসেছি গত পরশু।অনেকদিন পর দেখছি সবকিছু।সেই চিরপরিচিত দোকানপাঠ,রাস্তাঘাট,বাড়িঘর,মাঠ,গাছ…মানুষগুলো।পরিচিত যেসব মানুষগুলোর সাথে কখনো তেমনভাবে কথাবার্তাও হয়নি তাদের সাথে কথা বলতেও ভালো লাগে।
সবকিছু আমার একান্ত আপন।আমার নিজের শহর।বন্ধু,আত্মীয়-স্বজন,আব্বু-আম্মু,আর……প্রিয়তি।আমার আদরের ছোট্ট বোন।আর তার মুখের টিয়া পাখির মত সুরে “ভাইয়ামনি” ডাক।
প্রিয়তি…।
আমার জগৎটাকে আমি খুব সহজেই দুই ভাগে ভাগ করে ফেলতে পারি।একভাগে প্রিয়তি; অন্যভাগে বাকি সব।প্রিয়তির বয়স ৭।ক্লাস টু’তে পড়ে।চঞ্চলতার কোন ইভেন্ট অলিম্পিকে থাকলে অনায়াসে সে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম স্বর্ণপদকটা এনে দিত।তার ক্ষুদ্র মস্তিষ্কে সবসময় একসাথে কমপক্ষে ১০ টি বিষয় কাজ করে।তাই সে কোনটাতেই স্থির হতে পারেনা।আমাদের কলোনীর সবচেয়ে কিউট বাচ্চা সে।নিজের ছোটবোন বলে বলছি না।সবাই ওকে অনেক আদর করে।কিন্তু little princess কারো আদরই সহ্য করতে পারেননা।কেও তাকে একটু টাচ করলেই চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করে।এমনকি সে আব্বুর কাছেও কখনো যেতে চায় না।প্রতিটি ব্যাপারে তার অনেক strong opinion. একবার যেটা বলবে সেটাই।
বাসায় পৌঁছে কলিংবেল বাজাতেই টিয়াপাখির চিৎকার চেঁচামেচি শুনতে পেলাম।“Busy বিল্লি” “Busy বিল্লি”।
কোনো এক ক্লান্ত দুপুরে ঝিমাতে ঝিমাতে 9XM মিউজিক চ্যানেলটা দেখছিলাম।পাশে বসে ছিল প্রিয়তি।টিভির দিকে অনেক্ষন তাকিয়ে থেকে বেশ কিছুক্ষন ভেবে সে ঘোষনা করলো আমি নাকি দেখতে কার্টুন “ভিগি বিল্লি” র মতো।“ভিগি বিল্লি” টার্মটা কোনো এক কারনে তার কাছে মনে হয়েছে “বিজি বিল্লি”।
অনেক চেষ্টা করেছি তাকে বোঝাতে পারলাম না যে আমি দেখতে ওরকম না আর word টা “ভিগি বিল্লি”।
কিন্তু সে মানতে নারাজ।আগেই বলেছি সব বিষয়ে তার opinion অনেক strong. তারপর থেকেই আমি তার “Busy বিল্লি”।
নেহায়েৎ তার মনে গভীর ভাবের উদয় না হলে আজকাল আমাকে “ভাইয়ামনি” বলে ডাকেনা।
যা হোক,বাসার গেট খোলা হলো।খোলার সাথে সাথেই দেখি টিয়াপাখি দুই হাত উঁচু করে চোখ বন্ধ করে লাফাচ্ছে।অর্থ্যাৎ “কোলে নাও”।কোলে তুলে নিতেই ছোট্ট ছোট্ট হাত দিয়ে শক্ত করে আমার গলা জড়িয়ে ধরলো।শরীর পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে।তারপরও অস্থিরতার শেষ নেই।আম্মু দেখি পিছন পিছন ভাতের প্লেট হাতে নিয়ে ছুটছে।
-খেয়ে নে মা,আর জ্বালাস না…আম্মু বলল।
-নাআআআ…বলে চিৎকার করে আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁধে মুখ লুকালো।
আমি আম্মুকে ইশারা করলাম একটা।
-আম্মু কি ভাত?
-এইতো দুধ ভাত।
-আম্মু দুষ্টিপাখিরা কি খায় যেন?
-দুষ্টিপাখিরা তো দুধভাত খায়।
-ও…আমাদের বাসায় তো কোনো দুষ্টিপাখি নেই।তুমি এক কাজ করো…তাসিন বাবুকে (কাজিন) খাইয়ে দিও ঐটা।তাসিন বাবু দুষ্টিপাখি হয়ে যাবে তাহলে।
-নাআ…আমি দুষ্টিপাখি…’ আমার কাঁধে মুখ লুকিয়ে রেখেই বললো।
-তাহলে খেয়ে নাও বাবু।
-না…খাবোনা…।
আহ্লাদ করে ফুঁপিয়ে বললো।
বুঝলাম জ্বরে রুচি হারিয়েছে।পকেট থেকে ক্যাডবেরি চকলেট বের করে বললাম “আম্মু ক্যাডবেরিটা তাহলে তাসিন বাবুকে দিয়ে দিও।“
এবার কাজ হলো।ক্যাডবেরীর লোভে খেতে চাইল ভাত।কিন্তু আম্মুর হাতে খাবেনা।আমার হাতে খাবে।তাকে কোলে করে বসিয়ে খাওয়াতে লাগলাম।কিছুক্ষন “টম এন্ড জেরি”র গল্প করলো।তারপর কি মনে হলো সিদ্ধান্ত নিল সে নিজ হাতে খাবে।কি আর করা…ছেড়ে দিলাম তার হাতেই।যা খেল তার তিনগুন ছিটালো।নাকে মুখে দুধভাত মাখিয়ে দাঁত বের করে যখন আমার কাছে এসে বলল “খাওয়া শেষ” তখন তাকে দেখতে লাগছে একটা বিড়ালের মত।
বিড়ালের মুখ ধুইয়ে দিয়ে বিছানায় নিয়ে গেলাম কোলে করে।ওষুধ খাওয়াতে গিয়ে ভাত খাওয়ানোর তিনগুন পেইন নিতে হলো।তার “মিস্টার পান্ডু” (টেডি বিয়ার) কে খুঁজে পেতে আরো কিছুক্ষন সময় ব্যয় হলো।অবশেষে little princess ঘুমানোর জন্য রেডি হলেন মিস্টার পান্ডুকে কোলের মধ্যে নিয়ে।তখনো গায়ে অনেক জ্বর।মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিচ্ছি।বিড়ালের মত আরো কাছে সরে এলো।আমি ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছি।কিন্তু সে শুধু ছটফট করে।বেশ কিছুক্ষন পর নিজের ডান হাতের বুড়ো আঙ্গুল মুখে পুরে নিল।ঘুমানোর পুর্বাভাস।মাথার চুলে বিলি কেটে দিতে লাগলাম।আস্তে আস্তে ওর শ্বাস-প্রশ্বাস ভারী হয়ে এলো।ঘুমিয়ে পড়লো আমার দুষ্টিপাখি।আমি সারারাত জেগে থাকলাম অর পাশে।শেষ রাতের দিকে ওর জ্বর নেমে এলো।
কিছুদিন পর।
রুমের দরজা ঠেলে দিয়ে বারান্দায় বসে সিগারেট টানছি।কখন যে পিচ্চিটা গুটুর গুটুর করে ঢুকে পড়েছে খেয়াল করিনি।আমার হাতে সিগারেট দেখে সে কিছুক্ষন চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে রইলো।তারপরেই তারস্বরে চিৎকার করতে যাবে, “আম…ম…” আম্মু ডাকটা ডেকে শেষ করার আগেই মুখ চেপে ধরলাম।কিছুক্ষন অনেক জোরাজুরি করল।অবশেষে না পেরে হাল ছেড়ে দিলো।আমি তাড়াতাড়ি টেবিল এর ড্রয়ার থেকে ক্যাডবেরী বের করে দিলাম।এসব পরিস্থিতি সামাল দিতে রাখা লাগে।কিন্তু বোঝা গেল ঘুষ যথেষ্ট না।এখন তার সাথে ছাদে গিয়ে তার সাহেবদের কে খাওয়াতে হবে । সাহেব অর্থ্যাৎ তার কবুতররা।উপায় নেই।যেতে হলো।
আমি আর ও মিলে খাওয়াতে লাগলাম।বোঝা গেল কবুতরগুলো তাদের এই পিচ্চি মালকিনকে ভালোই চিনে।ও ওদেরকে ছুটে ছুটে তাড়া করছে।ধরছে।কবুতরগুলো কিছু মনে করছে না।খাওয়ানো শেষে দুষ্টিপাখির সাথে কিছুক্ষন খেলা করতে হলো।শেষ বিকালের দিকে ওকে কোলে করে ছাদে দাঁড়িয়ে আছি।অনেক্ষন বকবক করে এখন তিনি রেস্ট নিচ্ছেন।
-প্রিয়তি বাবু…
-হুম…
-তোমার ক্লাস পজিশান কত বাবু?
প্রশস্ত একটা হাসি দিয়ে বলল “ফার্স্ট”।
গাল টিপে আদর করে দিয়ে বললাম… “আমার সোনাপাখি”।
অমনি সে ভ্রু কুঁচকে ফেললো।কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে আমার মুখ খাঁমচে ধরল।
-এই এই,কি হলো ও ও…লাগছে তো…
-আমি সোনাপাখি না…দুষ্টিপাখি বল।
-আচ্ছা রে বাবা ঠিক আছে।দুষ্টিপাখি,দুষ্টিপাখি,আমার দুষ্টিপাখি।
অবশেষে থামলো।আমি এবার মেকি মন খারাপ করে বললাম…
-বাবু আমাকে খাঁমচে দিলা এখন কি হবে?আমি যে ব্যাথা পাইলাম…
আমার দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষন কি যেন ভাবল।তারপর আমার গালে চুমু দিয়ে দিলো একটা।দুষ্টিপাখিটাকে বুকে চেপে ধরে আদর করে দিলাম।আমার এই জা্নটাকে ছেড়ে দূরে ভার্সিটিতে আমি কিভাবে থাকি সে শুধু আমিই জানি।
সন্ধ্যায় তার মিস এসেছে।কিন্তু সে পড়তে চাইছে না কিছুতেই।পেট চেপে ধরে বসে আছে।আম্মু অনেক বকাবকি করছে।কিন্তু সে পেট চেপে ধরে বসেই আছে।আমি গিয়ে ওকে কোলে করে নিজের রুমে নিয়ে এলাম।জিজ্ঞাসা করলাম…
-বাবু কোথায় ব্যাথা করে?
-এইখানে… পেটে হাত দিয়ে দেখালো।
চকলেট বের করে বললাম…”এইটা খাইলে কি প্রিয়তি বাবুর ব্যাথা ঠিক হবে?”
কিন্তু ও চকলেটও খেতে চাইলো না।অবশষে আমি মিসকে চলে যেতে বললাম।ওকে আমিই পড়িয়ে নিব।কোন পর্যন্ত পড়ানো হয়েছে দেখে নিলাম।
কিন্তু রাত্রে ও বমি করলো।বেশ কাহিল হয়ে পড়লো।আমরা কিছুই বুঝতে পারলাম না কেন হচ্ছে।অবশ্য ও বেশ তাড়াতাড়িই ঘুমিয়ে পড়লো।
সকালবেলাতেই স্বাভাবিক।ছুটির দিন।স্বভাবসুলভ দুষ্টামিতে বাসা মাথায় করে রাখলো।
ঈদটা সেবার অনেক ভালো কাটলো।দুষ্টিপাখিকে বড় একটা টেডি বিয়ার ও কিনে দিলাম।ছুটি শেষ হয়ে এল।বুকে পাথর চেপে little princess টা কে বাসায় রেখে ভার্সিটিতে চলে এলাম।
ল্যাব,assignment,class test এর চাপে যখন জর্জরিত এরকম একটা দিনে আম্মু হঠাৎ ফোন দিয়ে বলল…
-“বাপ কালকে তুই বাসায় আসতে পারবি?”
আম্মুর কন্ঠে কি যেন ছিল।আমি ভয় পেয়ে গেলাম…
-কি হয়েছে আম্মু?
-তেমন কিছু না রে…তোর আব্বু একটু অসুস্থ।কাল তো বৃহস্পতিবার।তুই চলে আয়।শনিবারে চলে যাস আবার।
-আব্বুর কি হয়েছে আম্মু সত্যি করে বলো।আব্বুকে ফোনটা দাও।
-নে কথা বল।
আম্মু আব্বুর হাতে ফোনটা দিলেন।
-হ্যাঁ বাবা,তেমন কিছু হয়নি রে।একটু অসুস্থ হয়ে পড়লাম।তুই সেই কবে গেছিস।বাসা থেকে ঘুরে যা একটু।
-আব্বু তুমি ঠিক আছো তো?শরীর এখন কেমন?
-আমি ঠিক আছি রে বাবা।টেনশান করিস না।তুই চলে আয়।
-ঠিক আছে আব্বু।
-রাখি তাহলে?
-ঠিক আছে আব্বু।আমি চলে আসবো।
আব্বুর একবার হার্ট-এটাক হয়েছে।না জানি আবার কি সমস্যা হল।আমি পরের দিনের অপেক্ষা না করে সেদিনই চলে গেলাম।
বাসায় যখন পৌছালাম তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে।কলিংবেল চাপলাম।“বিজি বিল্লি” টাইপ কোনো চিৎকার শোনা গেল না।কয়েকবার কলিংবেল চাপার পরেও না।বাচ্চা হলেও বাসার পরিস্থিতিটা হয়ত বুঝতে পারছে প্রিয়তি।আব্বুকে ভয় পেলেও অনেক ভালোবাসে সে।তার ড্রয়িং খাতায় সে আমার পর আব্বুর ছবিই সবচেয়ে বেশি এঁকেছে।গেট খুললেন ফুপি।বাবার খবর পেয়ে মনে হয় সবাই এসেছেন।বাসায় ঢুকে অবশ্য ড্রয়িং রুমে ফুফা বাদে আর কাউকে দেখতে পেলাম না।ব্যাগ রেখে আব্বুর রুমে গিয়ে দেখি আব্বু নেই।বারান্দায় গিয়ে দেখি চেয়ারে বসে আছেন।আমাকে দেখে উঠে দাঁড়ালেন।
-এসে গেছিস বাবা…
-হ্যাঁ বাবা,তুমি ভালো আছো?
-হ্যাঁ রে…ভালো আছি।তুই কেমন ছিলি?আসতে সমস্যা হয়নি তো কোনো?
-না আব্বু।আমার কথা বাদ দাও।তোমার কি হয়েছিল সেটা বলো।
বাবা চুপ করে সামনের দিকে তাকিয়ে আছেন।
-আর প্রিয়তি আম্মু এরা কই?বাইরে গেছে নাকি?দেখলাম না তো।
বাবা চুপ করেই আছেন।
-কি হলো আব্বু,কথা বলোনা যে?
আব্বু বললেন…
-ঐযে…প্রিয়তি একটু অসুস্থ তো।ওকে নিয়ে একটু হসপিটালে গেছে।
-মানে?????প্রিয়তির কি হয়েছে আব্বু?
আস্তে আস্তে আমার কাছে সবকিছু পরিস্কার হতে থাকে।আসলে আব্বুর কিছু হয়নি।প্রিয়তির কিছু একটা হয়েছে।
-কি হয়েছে আব্বু বলো…চুপ করে আছো কেন?কোনো accident হয়েছে?আমাকে বলো…
-না রে বাবা…তেমন কিছুই না।একটু সর্দি জ্বর।
-আব্বু আমার কাছ থেকে লুকাবা না।বলো আমাদের প্রিয়তির কি হয়েছে?
আব্বু চুপ করে থাকেন কিছুক্ষন।তারপর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন…
-বাবা শোন।প্রিয়তি একটু sick.
-“আব্বু তুমি acting করবা না।বলো তুমি আমার প্রিয়তির কি হইছে…” অনিয়ন্ত্রিত ভাবে আমার চোখ বেয়ে কয়েক ফোঁটা অশ্রু নেমে আসে।
আব্বু আবার কিছুক্ষন চুপ করে থাকেন।বেশ কিছু দীর্ঘশ্বাস গোপন করে বলেন…
-শোন…শক্ত হ এ্কটু।প্রিয়তির লিউকেমিয়া হয়েছে।নতুন ব্লাড সেল ফর্ম করছে না।
আমি হা করে আব্বুর দিকে চেয়ে থাকি।
-“আব্বু প্রিয়তি একটা বাচ্চা মেয়ে……”
-“শোন পাগল…এত সিরিয়াস কিছু না।ডক্টর বলেছেন কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।
আমি চিৎকার করে বলি…”আমাকে শিখাবানা আব্বু।আমি জানি লিউকেমিয়া কি…”
আব্বু আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরেন।
আমি কাঁদতে কাঁদতে বলি… “আব্বু ভুল হইছে।ডাক্তাররা অনেক ভুল করে অনেক সময় তুমি জানোনা আব্বু।ওরা ভুল করেছে।প্রিয়তির কিছু হয়নি।ও তো একটা বাচ্চা মেয়ে…”
আর কিছু বলতে পারিনা।গলায় আটকে যায় সবকিছু।আমার জগৎ হঠাৎ অন্ধকার হয়ে যায়।
বাবা অনেক sensible মানুষ।আমাকে শকগুলা আস্তে আস্তে দিতে থাকেন।লিউকেমিয়ার প্রতিকার সম্ভব।একুশ দিন পর পর রক্ত পরিবর্তন করা লাগে।কিন্তু প্রিয়তির অনেক দেরি হয়ে গেছে।ওর blood cell গুলা খুব তাড়াতাড়ি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।Afford করা সম্ভব হচ্ছেনা।যার অর্থ আমার প্রিয়তির হাতে আর বেশিদিন সময় নাই।
আমার বিশ্বাস হয় না।কোন ভাবেই না।এইতো সেদিনকার বাচ্চা।দোলনায় শুয়ে হাত নেড়ে নেড়ে খেলা করতো।আমার কোলে আসলে চোখ বড় বড় করে আমাকে দেখতো।যাই দেখত তাই মুখে দিতে চাইত।আমার কোলে এসেই চশমা ধরে টানাটানি শুরু করত।যাকে এখনো পর্যন্ত কোলে করে বাথরুমে দিয়ে না আসলে সকালে ঘুম ভাঙ্গে না।যে এখনো অরেঞ্জ ফ্লেভারের টুথপেস্ট খেয়ে ফেলে…
আমি আর ভাবতে পারি না…
আব্বু আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।কেবিনে ঢোকার আগে নিজেকে পুরোপুরি শান্ত করে ফেলি।ঢুকে দেখি আমার দুষ্টিপাখি শুয়ে আছে…বিছানায় সাদা চাদর পাতা।তার উপর ছোট্ট একটা শরীর।মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে কেমন।ছোট্ট শরীরটা শুকিয়ে আরো ছোট্ট হয়ে গেছে।চোখটা তীক্ষ।কিন্তু আমাকে দেখেই সেই আগের ভঙ্গিমায় ফিক করে হাসিটা দিল।আমার বুকের ভিতর চিনচিন করে একটা ব্যাথা বেজে উঠলো।চোখে অস্থিরতা টা এখনো রয়েছে।কিন্তু হাত-পা নাড়ানোর ক্ষমতা কমে গেছে।আমার দিকে তাকিয়ে বললো…
-“বিজি বিল্লি”
ওর ছোট্ট মুখটা ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে দিলাম।ওর মাথার কাছে বসলাম।আস্তে আস্তে গুটুর গুটুর করে আমার সাথে গল্প করতে লাগলো।
মামনি যে কত দুষ্টু হয়েছে।হস্পিটালে তার মিস্টার পান্ডুকে আনতে ভুলে গেছে।তাই তার ঘুম হয় না।সেকথা বলতেও ভুললো না।
আমি আমার দুষ্টিপাখিটার সারা মুখে আলতো করে হাত বুলিয়ে দেই।
-বাবু তোমার কিছু হবেনা।তুমি আমার দুষ্টিপাখি না?দুষ্টিপাখিদের কি কিছু হয় নাকি?কিচ্ছু হয়না।
আমার বাবু ফিক করে হাসি দিয়ে বলল…
-আম্মু আমাকে বলেছে ডক্টর আঙ্কেলের বাসায় আসার পর ডক্টর আঙ্কেল আমাকে অনেক পছন্দ করেছেন।তাই যেতে দিচ্ছেনা।
-হ্যাঁ তাইতো সোনা।কিন্তু আমি যে তোমাকে ডক্টর আঙ্কেলের থেকেও বেশি পছন্দ করি।আমি তোমাকে তাড়াতাড়ি নিয়ে যাবো।
-হুম…তুমি কিন্তু অনেকদিন থাকবা এবার…তাড়াতাড়ি চলে যাবা না…
-হুম সোনা…তোমাকে ছেড়ে কোত্থাও যাবোনা…
-আর স্কুলে দুষ্টু ইভন আমার মাথায় মেরেছে…তুমি ওকে মেরে দিবা…
-ঠিক আছে সোনা…অনেক অনেক মেরে দিব।সাহস তো কম না…দুষ্টিপাখির গায়ে হাত তোলে।
ও একটা হাসি দেয়।আমি ওর সারা মুখে চুমু দিয়ে দেই আলতো করে করে।আমার দুষ্টিপাখি আদরটা ধরতে পারে।আমার দিকে ফিরে চোখ বন্ধ করে পড়ে থাকে।
সেদিন রাতে আমি বাসায় ছিলাম।রাত্রে শুনলাম প্রিয়তি বাবু রক্তবমি করেছে।পরদিন সারাদিন ছাড়া ছাড়া ভাবে জ্ঞান আসলো আর গেল।কোনো কথা বলতে পারলো না।তারপরদিন কথা বলার অবস্থা হলো।কিন্তু অনেক আস্তে আস্তে কথা বলতে লাগলো।
ওর কাছে গেলাম।
-দুষ্টিপাখি কেমন আছো?
প্রথমে কছুক্ষন চুপ করে থাকলো।তারপর আমাকে ডেকে বললো আম্মুকে দূরে যেতে বলো।আম্মুকে দূরে যেতে বললাম…হয়নি,আরো দুরে।আরো দূরে গেলো আম্মু।
প্রিয়তি আমাকে ডেকে কানে কানে বললো…
-ভাইয়ামনি শোন…
-বলো দুষ্টিপাখি।
-তুমি আর কিসারেট (সিগারেট) খাবানা।ডক্টর আঙ্কেল বলে কিসারেট খেলে ক্যান্সার হয়।
আমি প্রচন্ড কষ্টে আমার চোখের পানি আটকাই।
-ঠিক আছে বাবু।আমি আর কক্ষনো কিসারেট খাবোনা।
-প্রমিজ?
-প্রমিজ সোনা…
-না…পিঙ্ক প্রমিজ করো…
-হ্যাঁ সোনা পিঙ্ক প্রমিজ।
-প্রমিজ না রাখলে কিন্তু তোমার জিব্বা কালো হয়ে যাবে।
-আমি রাখবো সোনা।আমি তোমার লক্ষী ভাইয়ামনি না?
ও কিছুক্ষন চুপ করে থেকে দুষ্টামি হাসি দিয়ে বলে…”বিজি বিল্লি”।
আবার বলে…
-ভাইয়ামনি তুমি আমার মিস্টার পান্ডুকে কোলে করে ঘুমাবা বলো…
আমি আমার চোখের অশ্রু বেঁধে রাখার যুদ্ধে হেরে যাই…দু’এক ফোঁটা অশ্রু বেয়ে পড়ে…
-কেন রে সোনা?মিস্টার পান্ডু তো তোর কোল ছাড়া ঘুমায় না…
-আমি মিস্টার পান্ডুকে বলে দিছি…ও তোমার কোলে ঘুমাবে এখন থেকে।
-ঠিক আছে বাবু।আমি তোর মিস্টার পান্ডুকে কোলে করে ঘুমাবো।
-আর তাসিন বাবুকে দুষ্টিপাখি বানাবা না।আমি দুষ্টিপাখি…আম্মু বারবার তাসিন বাবুকে দুষ্টিপাখি বানিয়ে দেয়…
বলতে বলতে আমার প্রিয়তি বাবুর চোখ থেকে মুক্তার মতো কয়েকফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়ে।ছোট্ট পবিত্র এই বাচ্চাটার অশ্রু সহ্য করার ক্ষমতা আমার ছিলনা।দু’হাতে অর ছোট্ট মুখটা ধরে কপালে একটা চুমু দিয়ে দৌড়ে চলে এলাম বাইরে।
পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেটটা ছুড়ে ফেলে পা দিয়ে সজোরে রাস্তার সাথে পিশলাম।চোখ থেকে অনবরত পানি পড়েই যাচ্ছে…আকাশের দিকে তাকালাম…সপ্তম আসমানে আল্লাহ বলে একজন আছেন।যিনি সকল ক্ষমতার অধিকা্রী…তার কাছে মিনতি করে বললাম…হে আল্লাহ।এই অবুঝ নিষ্পাপ পরীর মত শিশুটি তো জীবনে কোনো পাপ করেনি।তবে কিসের শাস্তি তুমি ওকে দিচ্ছ?ও তো একটা ফেরেস্তা…ছোট্ট ফেরেস্তাটার কষ্ট যে আমি নিতে পারছিনা আর খোদা।আমি সিগারেট খাই…নামাজ পড়িনা।অনেক পাপ করি…তুমি ওর বদলে আমাকে তুলে নাও… কিন্তু আমার ছোট্ট নিষ্পাপ দুষ্টিপাখিটাকে ফিরিয়ে দাও।
আমার মত পাপী বান্দার মিনতি শোনার প্রয়োজন হয়তো আল্লাহ বোধ করেননি।……আমার দুষ্টিপাখিটা তাই উড়ে গিয়ে আকাশের তারা হয়ে জ্বলজ্বল করে জ্বলতে থাকে।
********************
**আমার পাশের বাসায় পরীর মত ছোট্ট একটা বাচ্চা ছিল।অনেক অস্থির,চঞ্চল আর মিষ্টি।বারান্দায় বসে ওর ছোটাছুটি আর খেলা করে বেড়ানো দেখতাম আর ভাবতাম…ইশ!আমার যদি একটা বোন থাকতো।কিছুদিন আগে মেয়েটার লিউকেমিয়া হয়।ছোট্ট বয়সেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়।যানিনা আল্লাহ পাহাড় সমান পাপ করে ফেলা মানুষগুলকে রেখে কেন ফেরেশতাগুলোকে এত আগে আগে তুলে নেন।শুনেছি আল্লাহ তার প্রিয় বান্দাদের আগে আগে তুলে নেন নিজের কাছে।সেজন্যই হয়তোবা হবে।তবুও আল্লাহর কাছে আমার প্রার্থনা…আল্লাহ,অন্ধকারাচ্ছন্ন এই দুনিয়ায় ফেরেশতার মত শিশুরাই আলোর উৎস।তুমি ফুলগুলোকে আমাদের কাছ থেকে এত তাড়াতাড়ি তুলে নিওনা।**
তানহা আজ খুব খুশি।আজ তার জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়া পূরণ হয়েছে।আজ সে অনেক গুলো গোলাপ কিনেছে,ফুলগুলোর মাঝে এক ধরনের স্নিগ্ধতা।দেখলে মন প্রশান্তি তে ভরে যায়।
তানহা গল্পের বই পড়তে খুব ভালো লাগে।আরো ভালো লাগে ফেসবুক ইউজ করতে।সে ফেসবুকের একটা পেইজ এর নিয়মিত পাঠিকা।একদিন একটা গল্প পড়ে তানহার কি যেন হয়ে গেলো।সে কেমন যেন আনমনে হয়ে গেলো।সে লেখকের ফেসবুক আইডি খুজেঁ পেতে বার বার SEARCH করলো।এক সময় পেয়ে ও গেলো।
...লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ দিলো এত ভালো লেখা পোষ্ট করার জন্য।
ধীরে ধীরে খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেলো ওরা।ছেলেটা ঢাকায় আর মেয়েটা খুলনায়।একদিন দেখা ও করলো ওরা।মেয়েটা কে খুব ভালো লাগল।তবে মেয়েটা ছেলেটাকে কল্পনাতে যেমন দেখতো বাস্তবে সেটা ভিন্ন রুপে দেখা দিলো।
ছেলেটাকে মেয়েটা এড়িয়ে যেতে লাগল।এভাবে তাদের মাঝে একটা GAP তৈরি হলো।ছেলেটার হার্টে সমস্যা ছিলো।মেয়েটার জন্যে এত কষ্ট হতো যে সে আরো সমস্যায় জড়িয়ে গেলো।তানহা কে ভুলে থাকতে সে আবার লেখালেখি শুরু করলঃ
একটি মেয়ে,যাকে এতো ভালোবাসি,যে এসেছিলো সেচ্ছায়।ভালোবাসার হাতটাও বাড়িয়ে দিয়েছিল মনের অজান্তে।সেই আবার চলে গেলো ঝলকেই।
তার কথা গুলো আজ ও ভাসে
"আমি খুব সাধারন,অনেকটা রবিঠাকুরের সাধারন মেয়ে কবিতার মত,আলাদা কিছু নই।।
“জীবন” ১ম পর্ব!!!
১৯৯০! বয়স ৮ অথবা ৯। আমরা ৩ ভাই। ঠিক এই সময় আমার বাবা-মা আলাদা হয়ে যায়। আমরা ৩ ভাই এবং মা মিলে খুলনাতে থাকতাম। মা আমার ছোট এবং বড় ভাইকে নিয়ে আলাদা হয়ে গেলো এবং আমার গানের টিচার কে বিয়ে করলেন। আমাকে ঢাকাতে বাবা’র কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হল। আমি আর বাবা ২জন ছোট্ট ১রুমে থাকা শুরু করলাম। আমাকে দেখা-শুনা করার কেউ নেই, কোন কিছুতে বাধা দেওয়ার কেউ নেই তাই খুব বেশি দুষ্টু হতে সময় লাগেনি। এই ভাবে কাটল ১-২ বছর। এর মাঝে মা খুব সামান্যই আমার খোঁজ নিতেন। আমি যে কেউ, হয়ত ভুলে গিয়েছিলেন।
একবার খুব অসুস্থ হেয় হাসপাতালে থাকতে হল কিছুদিন। তখন বাবা খুলনায় মা’র কাছে খবর পাঠালেন, জানতে পারলাম মা ঢাকা শ্যামলী তে থাকেন। বাবা মা’র কাছে প্রস্তাব দিলেন আমাকে তার সাথে রাখার জন্য এবং সব রকম খরচ বাবা বহন করবেন। আমি মা’র কাছে থাকা শুরু করলাম। মাত্র কিছু দিন পর বাবা’র ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হল। বাবা আর কোন খরচ বহন করতে পারবেন না। খরচ বহন করতে না পরলে আমাদের ঢাকাতে থাকা হবে না। তাই বাবা’র সাথে গ্রামের বাড়ী কুমিল্লাতে যেতে হাবে।
আমি রাজি হলাম না। মা জামালপুর চলে যাবেন কিন্তু আমাকে সাথে নেওয়া সম্ভব না। কারণ তার স্বামী জামালপুর থাকেন এবং তিনি খরচ বহন করবেন না। আমার বড় ভাই তখন ছোট্ট একটা জব করে। মা চলে গেলেন জামালপুর, বাবা কুমিল্লা যাবার সময় ১০০টাকা দিয়ে চলে গেলেন। আমি থাকলাম বড় ভাই এর সাথে। কিন্তু বিধি বাম, ১দিন পর ভাই এর রুমমেট আমাকে থাকতে দিতে নারাজ। বের হেয় গেলাম সেখান থেকে।
আমার একটাই পথ খোলা, কুমিল্লা যেতে হবে। কিন্তু জানি না কিভাবে যেতে হয়। কমলাপুর রেল ষ্টেশনে এসে সারা রাত থাকলাম। রাত কটা বাজে জানি না, প্লাটফরমে শুয়ে আছি। হটাত পুলিশ এসে পেটানো শুরু করলো সবাইকে। আমি ভয়ে সেখান থেকে বের হয়ে গেলাম। খুব মনে আছে সেদিন রাতে খুব বৃষ্টি ছিল। আমার কাছে টাকা বলতে ছিল ১০০টাকা। কুমিল্লা যেতে কত টাকা লাগে জানি না তাই রাতে কিছুই খাওয়া হয়নি। সারা রাত বৃষ্টি আর ক্ষুধা জালায় পার করলাম।
ভোর বেলায় এক মুরব্বি’র সাহায্য নিয়ে সকাল ১০.৩০মি: এ কর্ণফুলী ট্রেনের টিকেট কাটলাম ৬৫টাকা দিয়ে। ঢাকা থেকে ১০.৩০মি: যাত্রার কথা থাকলেও যাত্রা শুরু হল দুপুর ২.০০টার পর। কুমিল্লা, নাঙ্গলকোট যখন পৌঁছলাম তখন অনেক রাত। ষ্টেশনে শুধুই আমি একা। জীবনে কোন দিন মনে হয় এতো ভয় পাইনি। আমি জানি না এ পর কিভাবে যাব/যেতে হয়। প্ল্যাটফরম থেকে বের হয়ে দেখলাম এক রিক্সা। আমার জানা মতে বাড়ী’র পাসে জ্জোড্ডা বাজার। ষ্টেশন থেকে প্রায় ৭কি:মি:। রিক্সা অতো দূরে যেতে রাজী হল না। সব কিছু খুলে তাকে বলার পর হয়তো আমার প্রতি তার দয়া হল। তবুও কিন্তু থেকে যায়। সে আমাকে অর্ধেক রাস্তা পৌঁছে দেবে, বাকি পথ আমাকে হেঁটেই যেতে হবে। যাই হোক, রাতে বাড়ী পৌঁছলাম।
আমরা কখন গ্রামে থাকিনি, তাই বাড়ীতে বেশি দিন থাকা হল না। আমাকে আবার ঢাকা পাঠানোর পরিকল্পনা করা হল। যদিও বুজতে পারছিলাম বাবা আবার বিয়ে করবেন, তাই আমাকে ঢাকা পাঠানোর এই পরিকল্পনা। বড় ভাই এর সাথে কথা বলে আমাকে আবার ঢাকা পাঠানো হল ২০০০টাকা খরচ দেওয়ার কথা বলে। শুরু হল আর এ জীবন।
ভাই এর রুমমেট আমার সাথে “কাজের লোক’র” মত আচরণ করতো আমার বড় ভাই কিছুই বলতো না। কত যে দিন পার করেছি না খেয়ে বলতে পারবো না। বারান্দায় দাড়িয়ে আকাশ দেখে কত চোখের পানি ফেলছি....। এক দিন বাবা ঢাকা আসলেন আমার অবস্থা দেখে ঠিক করলেন তিনি ঢাকা চলে আসবেন এবং চাকির করবেন। মা আমার কথা জানার পর প্রস্তাব দিলেন আবার তিনি ঢাকা আসবেন। আমরা ৩ ভাই আর মা আবার এক সাথে থাকা শুরু করলাম।
“জীবন” ২য় পর্ব!!!
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পর গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসাবে জব শুরু করলাম। খুব অল্প সময়ে (৩ বছর) সারা ঢাকাতে আমার নাম ছড়িয়ে পরল। খুব ভালই কাটছিল। হয়তো বিধাতা আমার সুখ দেখতে পরেন না। হটাত ২০০৩ এর ১৪ই জুলাই মাসে আমার সব কিছু এলোমেলো করার উদ্দেশ দিয়ে একটি মেয়ে কে পাঠালেন। নাম পরী। অল্প সময়ের ব্যবধানে বুজতে পারলাম, তাকে ছাড়া আমার চলবে না। না দেখেই তাকে অনেক ভালোবেসে ফলছি। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমাদের কথা হত। আমার মন খারাপ হলে ভাল করে দিত। লাঞ্চ করতে একটু দেরি হলে, আমার খবর আছে সে দিন। কেমন জানো ঘোরের মাঝে পড়ে গেলাম। পরী আমার জীবনে আসার কিছু দিন আগে প্রিন্টিং জগত পৃথিবীর সবচেয় উন্নত টেকনোলোজি’র উপর ট্রেনিং ও পড়াশুনা করি। অনেক জব অফার আসে আমার কাছে দেশের বাইরে থকে। কিন্তু আমি রাজি হতাম না। হটাত এক দিন সেই আমাকে দেখা করতে বলে। আর ঠিক এক দিন পর কোন কিছু না বলে যোগাযোগ বন্ধ করে দিল। অনেক চেষ্টা করেও টার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি। পাগলের মত হয়ে গেলাম। আমার ডেক্স এর ফোন বাজলে মনে হতো তার ফোন। সকাল ৮.০০ থেকে অনেক রাত করে অফিস এ থাকতাম, যদি সে ফোন করে আর আমাকে না পায়। ডেক্স বসে থাকলে হটাত মনে হতো, সে আমার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে। বুজতে পারছিলাম আমার পরিণতি খুবই ভয়াবহ হতে যাচ্ছে।
মার্চ ২০০৫, কষ্ট সইতে না পেরে পাড়ি জমালাম দেশের বাইরে। যা ভেবেছিলাম হল তার উল্টো। প্লেন টেক-অফ করতেই পরী আমার কল্পনাকে ঘিরে ধরল। কোন ভাবেই নিজেকে সামাল দিতে পারছিলাম না। ফলাফল, তার সাথে যোগাযোগ। ধীরে ধীরে আবার আগে সেই পরীকে ফিরে পেলাম। এ ভাবেই চলছিল অনেক দিন। ঠিক করলাম, ২৩শে ডিসেম্বর তার জন্মদিনে, আমি দেশে আসব। দেশে আসার কিছুদিন আগে, ও জানালো তার জন্য পাত্র খোঁজা হচ্ছে। যে কোন দিন হয়তো জানাবো তরা বিয়ে হয়ে গেছে।
এ কথা শুনার পর, মাথায় পুরো সৌরজগৎ ভেঙ্গে পড়লো। কোন উপায় না দেখে, তাকে আবার ফোন দিলাম, এবং আমার মনের কথা গুলো জানালাম। দেশে ফিরে সে দিনই তার সাথে দেখা করলাম। শেষ বিকেলের আলোতে কলা পাতা সবুজ ড্রেসে তাকে যে কি সুন্দর লাগছিল বলে বোঝাতে পারবো না। সে তখন আমার কাছে জানতে চাইলো আমার উত্তর টা কি এখন দেবে কি না? কিন্তু আমি তাকে দেখে এবং যদি “না” বলে এই ভয়ে মানা করে দিলাম। পরদিন তার কাছে জানতে চাইলে, সে “না” বলে দিল। কারণ জানতে চাইলে সে বলে “সে আমাকে নিয়ে কখন এই ভাবে চিন্তা করে না। তাছাড়া, আমার ফ্যামিলি’র সমস্যা’র কারণে তার বাবা মা আমাকে মেনে নিবে না। সে আমাকে ভাল বন্ধু হিসাবে দেখতে চায়”। সে যখন এই সব কথা বলছিল, আমার দুচোখে তখন বাঁধ ভাঙ্গ কান্না। তাকে কিছু না বলে ফোন কেটে দিলাম। তার ভালবাসা পাওয়ার জন্য অনেক আকুতি-মিনতি করলাম, কোন লাভ হল না। এক বার সে বলেই দিল যাতে তাকে আর ফোন না করি। মানসিক ভাবে অনেক ভেঙ্গে পরেছিলাম যে কারণে আমার আর জবে ফিরে জাওয়া হল না।
প্রায় ৬মাস বেকার থাকার পর Enfatico তে জব নিলাম।
৪ বছর পর, একদিন পরী আমাকে ফোন করে দেখা করতে বলে। ধানমন্ডি ৮নং এ দেখা করি তার সাথে। সে জানালো, “আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ হেয় যাওয়ার পর সে বুজতে পেরেছে আমি তার জন্য কি ছিলাম”।
কেন জানি তার সে কথা বিশ্বাস করতে পরলাম না মন থেকে। আর তাই কোন উত্তর দিলাম না। সে দিন তার এক বান্ধবী ছিল তার সাথে “সুক্তি”। এর পর ২/১ দিন পর-পর পরী’র সাথে দেখা হয়। বেশীরভাগ সময় সুক্তি আমাদের সাথেই থাকতো। কিন্তু সে আমাদের ব্যাপার টা জানতো না। তাছাড়া আমাদের মাঝে কোন রিলেশন’ও ছিলনা। এই ভাবেই চলছিল। হটাত একদিন পরী জানালো তার সাথে একটি ছেলের রিলেশন হয়েছে। ছেলেটি ৩/৪ বছর ধের তার সাথে আছে। ছেলেটি তাকে প্রোপজ করায় সে রাজি হেয় গেল। আবার আমার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল, কিন্তু তাকে কিছু বুজতে দিলাম না।
এক সময় লক্ষ্য করলাম সুক্তি মেয়ে টি আমাকে নিয়ে চিন্তা করছে। তাকে অনেক মানা করলাম, বুঝালাম আমার পক্ষে সম্ভব না। তবুও সে করনে-অকারণে আমার সাথে দেখা করত। সুক্তি’র কাছ থেকে জানতে পারলাম সেই ছেলেটার সাথে পরী’র রিলেশন ৩/৪ বছর ধেরই চলছে। এবং তাদের দৈহিক সম্পর্ক আছে। রাগে দুঃখে পরী’র সাথে আবার যোগাযোগ বন্ধ করে দিলাম। কিন্তু সুক্তি’র সাথে যোগাযোগ ছিল। হয়তো পরী/ সুক্তি এক সাথে আছে, পরী ফোন দিলে ফোন ধরতাম না আবার সুক্তি ফোন দিলে কথা হতো । তখন খুব ভাল ভাবেই বুঝতাম পরী জেলাস। ২১শে ফেব্রুয়ারী, ২০১০। সকালে সে দেখা করতে চায়, সরাসরি মানা করে দেই। বলে, আমার প্রিয় কালো শাড়ী পড়ে সে ইডেন কলেজ এর গেঁটে অপেক্ষা করেছে। অনেক মানা করার পরও তার পাগলামি বাড়তে লাগলো। ইচ্ছা’র বিরুদ্ধে বিকাল বেলায় দেখা করতে গেলাম আর কোন দিন সে আমার সাথে যোগাযোগ করবে না এই সর্তে। যা দেখলাম, তা আমি কল্পনাও করিনি। সারাদিন না খেয়ে মুখ টা একদম শুকিয়ে গেছে, সারাদিন রাস্তায় থাকার কারণে সাঁজ-গোঁজ অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। আমার যে তখন কি কষ্ট....। সে কিছু বলতে চাইছিল, কিন্তু না বলেই চলে গেল।
সে এর পর ৫/৭ দিন পরী’র সাথে কথা হয়নি। সুক্তি’র কাছ থকে জানতে পারলাম ২১ তারিখে পরী’র এনগেইজমেন্ট হয়েছে। আর ২১ তারিখে রাত থেকে সে খুব অসুস্থ। ২২-২৫ তারিখ পর্যন্ত সে হাসপাতালে ভর্তি ছিল। আর পারলাম না। সাথে সাথে ফোন দিলাম, তার কি কান্না। আমাকে সে জানালো, সে আমাকে অনেক ভালবাসে, কিন্তু কোন দিন আমার হতে পারবে না।
অনেক চেষ্টা করেছি তাকে ফেরানোর, হয়নি। আমার সব স্বপ্ন ভেঙ্গে সে এখন অন্য এক জন এর স্ত্রী!
“জীবন” শেষ পর্ব!!!
পরী’র বিয়ে হল এপ্রিল, ২০১০। এ জীবন টা একটা অভিশপ্ত জীবন। এর শেষ দরকার।
একদিন সুক্তি আমাকে অনেক রিকোয়েষ্ট করলো, গাজীপুর তার বয় ফ্রেন্ড এর সাথে ঝামেলা হয়েছে, তাকে সেখানে নিয়ে যেতে। ভাবলাম যাই দেখি।
সুক্তি আমাকে নিয়ে গেলো তার পরিচিত এ বাসায়। এই বাসার ২টা বাচ্চাকে তার বয় ফ্রেন্ড পড়ায়। সেই বাসায় একটি মেয়ে’র সাথে পরিচয়। তেমন কথা হয় নি তার সাথে। বেশ রাত হয়ে যাবার কারণে আমাকে তাড়াতাড়ি ঢাকা ফিরতে হবে আর অপেক্ষা করলাম না। সুক্তি সেই বাসায় থেকে গেল। আমি ঢাকাতে চলে আসলাম। ৫/৬ দিন পর সুক্তি’র সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে সেই মেয়েটির কথা উঠল। সে নাকি আমাকে অনেক পছন্দ করছে। সে খুব ভাল একটা মেয়ে। সুক্তি তাকে আমার সম্পর্কে সব কিছু বলছে। এখন সে আমার সাথে দেখা করতে চায়। অনেক চিন্তা ভাবনার পর রাজী হলাম। গুলশান এ তার সাথে দেখা হল। নাম রোমানা। সারাদিন এক সাথে থাকলাম। আমার সব অতীত তাকে জানালাম। সব শুনে প্রধানমন্ত্রী’র কার্যালয় এর সামনের রাস্তায় সবার সামনে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলে “আমাকে বিয়ে করবে? আমি তোমাকে কোন দিন কষ্ট দিবো না। তার ফ্যামিলি’ও আমার মত আলাদা।” ভাবলাম যাক অন্তত সে হয়তবা আমাকে বুজতে পারবে।
রোমানা তার মা’র সাথে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। কিছুদিনের মধ্যে আমি তাদের ফ্যামিলি’র একজন হয়ে গেলাম। রোমানা চট্টগ্রামে থাকে নানা-নানীর কাছে। গাজীপুরে ৩/৪মাস পর পর বেড়াতে আসে।
সুক্তি আমাকে রোমানা’র সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় ঠিক, কিন্তু ৩/৪ দিন পর থেকে সে বলা শুরু করে রোমানা খুব খারাপ, তার বিয়ে হয়ে গেছে, সুক্তি’র কাছে প্রমাণ আছে। কিন্তু সে আমাকে দেবে না। কিছুই বুজতে পরছিলাম না। রোমানাকে সাথে নিয়ে সুক্তি ফোন দিলে সে কথা বলতে চাইত না। বুজতে পারলাম সুক্তির কোন মতলব আছে।
আমার সাথে পরিচয় হবার প্রায় ৩মাস পর রোমানা চট্টগ্রামে যেতে চাইল। রোজ কথা বলার কথা থাকলেও ২ মাসে হাতে গোনা মাত্র ক’বার তার সাথে কথা হল আমার। ২মাস পর আবার সে গাজীপুর আসল। রাগে আর অভিমানে তার সাথে কথা বলতাম না। কিছুদিন পর সে খুব জরুরী ভাবে আমাকে দেখা করতে বলে। দুপুরে তার বাসায় গিয়ে দেখি, বাসায় সে একা। সে দিন সে আমার সাথে সেক্স করতে চায়। হয়তো কেউ আমাকে বিশ্বাস করবেন না, আমি সরাসরি তাকে মানা করি। কিন্তু কোন লাভ হয়না। তার পর থেকে কেমন যেন একটা মায়া জড়িয়ে ধরল আমাকে।
রোমানা’র মা সব সময় বিয়ের কথা বলত, আমি রাজি থাকলেও রোমানা বলতো, ২০১১ এর জানুয়ারী তার বাবা দেশে আসবে তখন। আমি তাকে প্রচণ্ড বিশ্বাস করতাম তাই তেমন জোর করতাম না।
এর মাঝে এক দিন রোমানা আমাকে আর তার মা’কে জানালো, সে বিয়ের জন্য রাজী। সে দিন ছিল সোমবার। ঠিক হল শুক্রবার আমাদের আকদ্ হবে। সব ঠিকঠাক করে আমি আমার বাসার দিকে রওনা দিলাম। মনে মনে ঠিক করছিলাম কিভাবে রোমানা’র কথা বাসায় বলব, আকদ্ এ কাকে আসতে বলবো। আমার অবস্থা “গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল”। রোমানা’র SMS: “জান বাসায় ফিরে কাউকে কিছু বলবা না। আমি রাতে ফোন দিব। আমার সাথে কথা না বলে কাউকে কিছু জানাবে না।“
কথা হল রাতে, তার বাবা ১৫দিন পর দেশে আসবে। বাবা’র সাথে তার কথা হয়েছে, বাবা আগে আমার সাথে কথা বলতে চান। অনেক কষ্ট পেলাম কিন্তু তাকে বুজতে দিলাম না। সরল মনে তার কথা বিশ্বাস করলাম।
১৮ই ডিসেম্বর ২০১০, রোমানাকে নিয়ে সারা দিন ঘুরে বেড়ালাম। সে দিন সে আমাকে জানালো, সে ৩/৪ দিন এর জন্য চট্টগ্রামে যেতে চায়। প্রথমে রাজী হলাম না। তার পর অনেক কান্না কাটি করে সে আমাকে মানিয়ে নিলো।
২৮শে ডিসেম্বর ২০১০, সকালে সে চট্টগ্রামে চলে গেল। এয়ারপোর্ট থেকে তার বাস এর সাথে সাথে আমি বাইক চালিয়ে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত আসছি। যত দুর পর্যন্ত বাসটি দেখা যায় তাকিয়ে ছিলাম।
সেই থেকে শুরু হল তার ছলনা। আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিল। তার মা’র কাছে জানতে চাইলে বলত তারা রোমানা’র কোন খোজ জানে না। পাগলের মত হয়ে গেলাম। রোমানা মাঝে মাঝে SMS করত। আমি Reply দেওয়ার আগেই মোবাইল বন্ধ।
আর পারলাম না, আর পারলাম না। বাধ্য হলাম নিজেকে শেষ করে দিতে। ৩৮টা ঘুমের ঔষধ খেয়ে অবশেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৩২নং ওয়ার্ড। হা হা হা। হায়রে ভালবাসা!!!! ৩২নং ওয়ার্ড এর করিডোরে শুয়ে আছি, রোমানা’র ফোন..... “নাটক করার আর জায়গা পাও না”। ক ফোটা জল গড়িয়ে পড়লো চোখের কনে কে জানে। কোন কথা না বলে ফোন কেটে দিলাম।
আজ প্রায় ২বছর। ভালবাসা, বাবা, মা, জব সব হারিয়ে আজ আমি ধংশের শেষ খেলায় মেতে উঠেছি। এখন আর কষ্ট হয় না। এখন আমি এক অন্ধকার জগত এর মানুষ। সত্যিকার ভালবাসা’র চরম মূল্য দিয়ে যাচ্ছি। বুদ্ধদেব গুহু’র একটা লাইন আছে না-
“আলোকিত, তবুও অন্ধকার! জনাকীর্ণ, তবুও জনশূন্য! অনেকটা স্নিগ্ধ রায় চৌধুরীর বুকের মত”
শুধু একটাই শেষ ইচ্ছা, এক বার, মাত্র এক বার আমি বিধাতার কাছে জানতে চাই “কি আমার অপরাধ!!!”
আপনারা কেউ কি বলতে পারবেন????
-Adhar Amar
জীবনটা ভালোই কেটে যাচ্ছে। ২৭ বছরের জীবনে যে এত্ত কিছু একসাথে পেয়ে যাব তা আমি বা তন্বী কেউ ভাবিনি। ভাবছেন তন্বী কে? আমার বউ, আমার জীবন সাথী। পড়ালেখা যদিও খুব বেশি একটা করতে পারিনি। কারিগরী বোর্ডের আন্ডারে কম্পিউটারে ডিপ্লোমা করেছি। তাই কত....! ছোট্ট একটা পরীর মত মেয়ে হয়েছে আমাদের। নামটাও রেখেছি সেই রকম, “লিয়ানা ফাতিহা”। এই তো সেদিন জুনের ৬ তারিখে ছোট্ট একটা বাবু আল্লাহ্ আমাদের কে দুপুর ৩টার দিকে দিয়ে গেল। এখন সারাদিন ওকে দেখেই পার হয়ে যায় আমাদের দুজনের। প্রেমের বিয়ে আমাদের। অনেক বাধা-বিপত্তি পার করে আজ আমরা এক সাথে আছি। তাই এখনো দুজন দুজনাকে ছাড়া কিছু বুঝিনা। আমার বউ তো আমাকে প্রায়ই বলে, “আমাকে একা রেখে মরে গেলে কিন্তু খবর আছে!” শুনে হাসি...তা ছাড়া আর কি করব বলেন? মৃত্যু তো আর আমার হাতে নাই।
ছোট খাটো একটা ব্যবসা দাঁড় করিয়েছি আমি। টুক-টাক দিন চলে যায় আরকি। আমার বা তন্বীর কারোই সেরকম কোন উচ্চাশা নাই। আমরা যে একসাথে আছি এই আনন্দই ৫বছর ধরে শেষ করতে পারিনি! ২২বছর বয়সে বিয়ে করে কি বিপদেই না পড়েছিলাম! থানা-পুলিশ, পালানো, নির্ঘুম রাত কাটানো....বিশাল উত্তেজনাকর ঘটনা! সে কথা না হয় আর একদিন বলব। বর্তমানে স্ত্রী কন্যা নিয়ে ছোট্ট একটা দুই রুমের বাসায় বাংলাদেশে যতটুকু শান্তিতে থাকা যায় আছি আর কি। ধুর...যে কথা লিখতে বসলাম তা বাদ দিয়ে কি সব জীবন বৃত্তান্ত বলছি আপনাদের! কিছু মনে করবেন না। আমি একটু বাচাল প্রকৃতির (আমার বউ এর মতে)!
আমার মেয়েটা খুব লক্ষী। ভাবছেন নিজের সন্তান বলে বলছি? না...না...আপনিও এসে দেখে যেতে পারেন। আজ তার বয়স ৩ মাস পূর্ণ হলো। আর এই ৩ মাসে সে কখনোই উচ্চস্বরে কান্না-কাটি, জেদ করেনি। শুধু প্রবলেম একটাই...আমার মত আমার মেয়েও ঘুমাতে চায় না! আমার বউ তো বলে যে পুরোই নাকি আমার মত হয়েছে...হাঃ হাঃ হাঃ! বউ আমার খুব লক্ষী....কখনই আমার কাছে কিছু চায় না! মাঝে মাঝে ভাবি মানুষ এইরকমও হয়! কিন্তু আসলেই এইরকম না হলে আমার মত ছোট-খাটো ব্যবসায়ী মানুষের কাছে মুষ্কিল হয়ে যেত! দেখেছেন....আবার গল্প ফেঁদে বসেছি! আপনারা মনে হয় অনেকেই লেখা শেষ না করেই চলে গেছেন, তাই না....গেলে যান...অনেকদিন পর ব্যস্ত জীবনের ফাঁকে দুটো কথা বলার সুযোগ পেয়েছি...হেলায় হারাবো কেন?
সকালে প্রতিদিনের মতই বউ এর ডাকে বিরক্তি নিয়ে ঘুম ভাঙলো! ঘুম আমার খুব প্রিয়। উঠতে চাইছিলাম না...কিন্তু যখন বলল যে বাবুর দুধ শেষ হয়ে গেছে দুধ কিনতে হবে, তখন আর শুয়ে থাকতে পারলাম না। উঠে হাত-মুখ ধুয়ে শার্টটা গায়ে জড়িয়েই বেরিয়ে পড়লাম সাহেব বাজারের “বিস্কুট বিপণীর” উদ্দেশ্যে। মেয়ের আমার কপাল মন্দ! মায়ের দুধ পেটে সহ্য হয় না। ডাক্তার বলেছে ল্যাকট্রোজ না কি যেন নাম, ঐ টা বেশি। তাই কৌটার দুধ খাওয়াতে হচ্ছে। আর এদিকে এক প্যাকেট দুধ ৪দিনও যায়না ঠিকমতো! বলেন তো, আমি স্বল্প আয়ের মানুষ। আমার পক্ষে কি আর ৪০০/৫০০টাকা খরচ করে ৪দিন পর পর গুড়ো দুধ কেনা সম্ভব? তাই বলে আবার আমার মেয়েটাকে কেউ ধমক দিয়ে বসবেন না যেন! আমার তো একটাই লক্ষী মেয়ে। করলাম না হয় একটু কষ্ট! বাসা থেকে না খেয়েই বেরিয়ে পড়লাম। একটা রিকশাও পেয়ে গেলাম...রিকশাওয়ালার সাথে ভাড়া মিটিয়ে উঠে পড়লাম। দোকানে যেয়ে দেখি ৩৪৫টাকার দুধ ৩৯৫টাকা হয়ে গেছে! কেমন লাগে বলেন? আসলে আমরা যারা স্বল্প আয়ের মানুষ তাদের এই দেশে বসবাস করা খুব কঠিন! দুধের প্যাকেট টা নিয়ে দ্রুত বাসায় যেতে হবে। বাবু আমার এতক্ষণে হয়তো ক্ষুধায় অস্থির হয়ে গেছে! সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টের এই চার মাথার মোড় টা সবসময় ব্যস্ত থাকে। তার উপর আবার যমের মত পুরো রাজশাহী ধরে ঘুরে বেড়ায় রাজশাহী ভার্সিটির বাস গুলো। আর ট্রাফিক আইন মানা তো দূরের কথা ভাংতেই যেন সবাই ব্যস্ত। যারা দেখেছেন তারা বুঝতে পারবেন। এখন তো সকাল...শহরে সবে ব্যস্ততার শুরু। রাস্তাটা পার হয়েই আবার রিকশা নিতে হবে....তারপর সোজা বাসা। ডানে-বামে তাকিয়ে রওনা হয়ে গেলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে চমকে উঠলাম! চারদিক অন্ধকার হয়ে উঠল! লোকজন চিৎকার দিয়ে বলে উঠল, “আহ্হারে! মারা যাচ্ছে! মারা গেল!” আমি তো অবাক....! কে মারা গেল! এই মাত্রই তো সব দেখতে পাচ্ছিলাম! বাবার হাত ধরে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাচ্ছে, কেউ ব্যস্ত ভাবে কাঁচা বাজারের ব্যাগ নিয়ে দৌড়াচ্ছে, কেউবা আবার অফিসমুখী....কিন্তু চোখের সামনে থেকে অন্ধকারটা সরছে না কেন? কি হলো? কে মারা যাচ্ছে? আজব তো! হ্যাঁ...এই তো এবার দেখতে পাচ্ছি! কিন্তু ঝাপসা! শরীরটা একবারে হালকা লাগছে। উঠে দাঁড়ালাম আমি। মনে হচ্ছে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছি! সব লোকজন দেখি এদিকে ভিড় করে আসছে। সবাই রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ খেয়াল করলাম হাতে দুধের প্যাকেট নাই! আমার দুধের প্যাকেট কই? দুধের প্যাকেট? এই যে ভাই...আমার বাবুর দুধের প্যাকেট টা দেখেছেন? ‘বায়োমিল-সয়’....এই মাত্র ৩৯৫ টাকা দিয়ে কিনেছি! ছোট্ট মেয়েটা আমার না খেয়ে বসে আছে! আমি দুধ নিয়ে গেলে তারপর খাবে! প্লিজ....কেউ দেখেছেন কি? আমার কাছে তো আর টাকাও নাই! ৫০০টাকার একটায় নোট ছিলো! এখন কি হবে! মাহফুজের কাছ থেকে আবার ধার নিবো? নাহ্.... তাহলে? আরে..ঐ তো বায়োমিল-সয়ের প্যাকেট টা পড়ে আছে....যাক বাবা...এত্ত ভিড়ের মধ্যেও প্ওয়া গেল! কিন্তু একি!!! প্যাকেটটা রক্তে সয়লাব হয়ে গেছে তো! আর পাশে ঐ রক্তাক্ত শরীরটা কেমন যেন চেনা চেনা লাগছে!! শার্টটা তো আমারই!স্যান্ডেল ও আমার মত, যদিও আরেক পার্ট দেখতে পাচ্ছি না। ধুর...চোখের মাথা খেয়েছি মনে হয়! এটা তো আমারই শরীর! কেমন নিস্থর-রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছে। মাথার উপর দিয়ে বাসের চাকাটা চলে গেছে! হলুদ হলুদ ঘিলু গুলো চারদিকে ছড়িয়ে গেছে! তাই চেহারাটা চিনতে পারছিলাম না। ও....তাহলে আমিই মারা গেছি! অদ্ভুত ব্যাপার! এতক্ষণ টেরই পায়নি! আসলে আগে কখনো মরে দেখিনি তো, তাই অনুভুতিটা জানা ছিলো না। এই ভার্সিটির বাসগুলো আসলেই যে কি!! এত লোকের ভেতর আমাকেই মারতে হবে? আর মারবি তো ভালো কথা আরেকদিন মারিস....আজ না বাবুর দুধ কিনতে এসেছি? এটা কি ঠিক হলো? এখন নিষ্পাপ বাচ্চাটা কি খাবে??
অবশ্য মরে গিয়ে খুব একটা খারাপ লাগছে না। শরীরটা পাখির পালকের মত হালকা হয়ে গেছে। কেমন যেন কুয়াশার ভেতর আছি আমি। সবাইকে দেখতে পাচ্ছি....আরে..আমি এগুলা কি ভাবছি? আমার তো বাসায় যেতে হবে।সর্বনাশ....অনেকক্ষণ হয়ে গেছে....এইসব অ্যাক্সিডেন্ট নিয়ে পড়ে থাকলে হবে? লিয়ানা আমার না খেতে পেয়ে হয়তো কাঁদছে। ওর মা তো মনে হয় বাসাতেই ঢুকতে দিবে না! কি যে আছে কপালে! যায় রওনা দিই....আজ হাঁটতে হাঁটতেই যেতে হবে মনে হচ্ছে! যে ভিড় বাজারে! লোকজন হুমড়ি খেয়ে আমার লাশটাকে দেখছে....কয়েকজন তো আবার ভাংচুর ও শুরু করে দিয়েছে। নাহ্...এখানে আর থাকা যাবে না। তন্বী শুনলে বকা দিবে। আর আমি তো এখন সন্তানের বাবা...এসবের ভেতর থাকতে নাই। হাঁটা ধরলাম বাড়ির দিকে....মজার ব্যাপার হলো কেউ আমাকে দেখতেই পাচ্ছে না! কিন্তু রাস্তার কুকুরগুলো কেমন করে যেন কুঁকড়িয়ে তাকিয়ে আছে। থাকুক...আমার থামলে চলবে না।
বাসার সামনেটা সেইরকমই আছে। লোকজন সব ব্যস্ত। এদিকে কেউ কিছু জানে না। বাসায় ঢুকতেই ভয় লাগছে। এই থেঁতলানো চেহারা দেখে তন্বী আর বাবু তো ভয় পেয়ে যাবে! তারপরও ঢুকে পড়লাম। আজ আর কলিং বেল টিপতে হল না। বউ আমার মেয়েকে কোলে নিয়ে বসে আছে। মেয়েটা মাঝে মাঝেই ক্ষুধায় কেঁদে উঠছে! আহারে! তন্বীর উদাস চেহারা আর মেয়ের কান্না শুনে আরেকবার মরে যেতে ইচ্ছা হল! ওরা এখনও খবর পায়নি মনে হয়। আমি মেয়েটার কাছে গেলাম, “এই যে মা! বাবা চলে আসছে। কিন্তু আজতো একটু কষ্ট করতে হবে। তোমার দুধের প্যাকেটটা রক্তে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। আরেক প্যাকেট কেনার মত টাকাও নেই আমার কাছে! সমস্যা নাই আজ আমরা সবাই না খেয়েই থাকবো, কেমন?” তন্বীকে কেমন যেন চিন্তিত দেখাচ্ছে! ও কি টের পেয়ে গেছে নাকি! না মনে হয়।
টিং টং...টিং টং....এই সময় আবার কে আসলো!
আচ্ছা, অর্ক....কি হলো আবার! ছেলেটাকে ভদ্রতা শেখাতেই পারলাম না! কতবার বলেছি কলিংবেল একবার টিপে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে। ও আসলে তো আমাকে ফোন দিয়ে আসে। ছেলেটা এভাবে হাঁপাচ্ছে কেন? ভাবি ভাবি বলে চিৎকার করছে কেন?
দাঁড়া...আজ তোর খবর আছে! শালা অর্ক! তন্বী দরজা খুলতেই হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল।
“ভাবি, ভাই বাজারে যেয়ে অসুস্থ হয়ে গেছে, হসপিটালে আছে..আপনি এখনি চলেন।” ওরে মিথ্যুক! আমি অসুস্থ না? তোদেরকে আমি মিথ্যা বলা শিখিয়েছি! তন্বী তো শুনেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠল! “কি হয়েছে? বল? কি হয়েছে ওর?”
“না তেমন কিছুই হয়নি..আপনি আগে চলেন।” কেমন মিথ্যুক দেখেছেন আপনারা! আমার মাথার উপর দিয়ে বাসের চাকা চলে গেছে আর বলছে কিছু হয়নি!
এদিকে পুলিশ আমার লাশটা রাজশাহী মেডিকেলে নিয়ে আসলো। সেই চির চেনা পরিবেশ। কতবার যে কত মানুষের জন্য এসেছি। মাত্র তিন মাস আগেই মেয়েটাকে কোলে করে নিয়ে গেলাম এখান থেকে আর এখন নিজেই এসেছি লাশ হয়ে! বউ আমার বাবুকে কোলে নিয়ে ছুটে আসলো। ছোট বাচ্চাটা এখনও বুঝতেই পারেনি যে সে এতিম হয়ে গেছে। বাবা, মা, বোন, চাচা, মামা, শ্বশুর, শ্বাশুড়ী বন্ধুরা অনেকেই এসেছে দেখছি। বাহ্! একসাথে এত পরিচিত মুখ দেখে ভালোই লাগছে। লিয়ানা....আমার মামনি, ওকে আর একটু কাছে আনছে না কেন? মেয়েটাকে কেমন বিসন্ন দেখাচ্ছে! ও কি টের পেয়ে গেছে যে ওর বাবা আর নাই! ও আর বাবার কোলে চড়ে ঘুরতে পারবে না! কি জানি, ছোট বাচ্চারা তো ফেরেস্তার মত, হয়তো সব বুঝতে পারছে।ওদিকে আমার বউ দেখি কাঁদছে! মহা মুষ্কিল! তন্বী, ছিঃ! এইভাবে কাঁদতে হয় না। আমি তো তোমাদের ছেড়ে যেতে চায়নি। কিন্তু আমার কি দোষ বলো? ঘাতক বাস তো আমাকে বাঁচতে দিল না। তুমি ভেঙে পড়ো না প্লিজ! আমি আর তুমি একসাথে কত বিপদ পার করেছি ভেবে দেখো....কখনো কি আমাকে হতাশ হতে দেখেছো? তুমি যদি এভাবে ভেঙে পড়ো তাহলে বাবুর কি হবে? ও তো কেবল তিন মাস। আরও অনেক দিন বাকি আছে...এখন থেকে তো আমি সবসময় তোমাদের সাথে ছায়ার মত থাকতে পারবো। প্লিজ একটু শান্ত হও! আমি আর তোমাকে বিরক্ত করবো না। সারারাত জেগে থাকবো না। এখন তো কেয়ামত পর্যন্ত ঘুমিয়েই কাটাতে হবে। তোমার হাতে খাওয়া খুব মিস করবো। তারপরও কি করবো বলো? এটা কি আমার দোষ? আমি তোমাকে হয়তো ভালোবাসা ছাড়া কোনদিনই দামি দামি শাড়ি গয়না দিতে পারিনি। কিন্তু ভালোবাসার উপরে আর কিছু হয় বলো?
লিয়ানা ফাতিহা....নামটা আমার দেয়া। আমার একমাত্র সন্তান, আমার সব। মারে, পারলে ক্ষমা করো আমাকে। পিতা হিসাবে তোমার এই ক্ষুদ্র জীবনে যতটুকু সামর্থ্য ছিলো করেছি। আফসোস তোমাকে বড় দেখে যেতে পারলাম না! কত ইচ্ছা ছিলো তোমাকে মানের মত করে মানুষ করব। আমি যা পাইনি তার সব তোমাকে দিব। হাত ধরে স্কুলে নিয়ে যাবো, শপিং করবো, খেলবো, তোমার বিয়ে দিব.....তারাপর নাতি-নাতনির সাথে আনন্দ করে পরপারে যাব। কিন্তু হারামজাদা বাসটা তা হতে দিল নারে মা! এই বয়সে তুমি এতিম হয়ে গেলে! তোমার জীবন টা অনেক কঠিন হয়ে গেল। জীবনের প্রতি পদে আমার অভাব বুঝতে হবে তোমাকে। তাই বলে কিন্তু ভেঙে পড়লে চলবে না। অনেকেই আছে যাদের বাবা-মা দুটোই নাই। তোমার তো তাও মা আছে। তোমার এখন অনেক দায়িত্ব। বড় হয়ে মাকে দেখে শুনে রাখতে হবে না? মার তো এখন তুমি ছাড়া আর কেউ থাকলো না। মাগো, একটাই দোয়া করি তোমার জন্য, সবসময় সত্যকে সত্য বলে জানিও....মিথ্যার আশ্রয় নিও না কখনো। তোমার জন্য হয়তো টাকা পয়সা, ধন সম্পত্তি কিছুই রেখে যেতে পারলাম না। কিন্তু তোমার মাকে রেখে গেলাম। মাকে কখনোই অসম্মান করো না। এই মানুষটা তোমার বাবার জন্য সব বিসর্জন দিয়েছে। অনেক কষ্ট তার মনে।
বাবা...আমার বাবা। একমাত্র ছেলের লাশের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে আছে। কখনোই আমাদের দুই ভাইবোনের উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেননি এই মানুষটা। আমার সব অনিয়ম, অন্যায় আবদার মুখ বওজে মেনে নিয়েছেন। তারপরও অবুঝ আমি সবসময় তার সাথে উপদেশ গুলো অমান্য করেছি। বাবার ইচ্ছা ছিলো আমি যেন পড়ালেখা করে অনেক বড় হই। কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। আব্বু, আমার উপর অনেক রাগ করে আছো, তাই না? তমি আমার কাছে আসছো না কেন? কাছে এস আমার মাথায় একটু হাত বুলিয়ে দাও। তোমার সন্তানকে তো আর বেশিক্সণ কাছে পাবে না। আমাকে চলে যেতে হবে। তুমি কি বুঝতে পারছো আমার কথা?
আমার মা, তার কান্না কেউ থামাতে পারছে না। প্রাইমারী স্কুলের টিচার আমার মা। ছোট থেকেই আমাদের সে রকম সময় দিতে পারেনি। কিন্তু যতক্ষণ কাছে থেকেছে বুকে আগলে রেখেছে। মাগো....কেঁদে আর লাভ নাই। আমি তো আর ফিরবো না মা। তোমাদের কাছে আমার দুইটা কলিজার টুকরা রেখে গেলাম। পারলে একটু দেকে রেখো। কতদিন তোমাকে দুঃখ দিয়েছি! পারলে ক্ষমা কর মা। মাদের মন তো অনেক বড়্ ক্সমা করবে না মা?
অর্চি...আমার একমাত্র ছোট বোন। এই পাগলী, তুই এই ভাবে কান্নাকাটি করলে হবে? আর সবার মত তুই ও যদি এরকম করিস তা হলে কেমন হয় বল? তুই না কত কিছু বুঝিস। একটু থাম আপু। ঐ দেখ লিয়ানা তোর দিকে তাকিয়ে আছে। ওকে একটু কোলে কেরে আমার কাছে নিয়ে আয়.....আমি যেমন তোকে ছোট থেকে কোলে পিঠে করে মানুষ করেছি, আমার মেয়েটাকেও একটু দেখিস। তোকে কিন্তু আর্মি অফিসার হতেই হবে। আর আমি তো চলেই গেলাম...বাবা মাকে তোকেই দেখে রাখতে হবে কিন্তু। বাবা-মার মনে কখনোই কষ্ট দিবি না প্রমিস কর। আমি যে ভুল গুলো করেছি সেগুলা তুই কখনই করবি না, ঠিক আছে?
বন্ধুদের মধ্যেও অনেকে এসেছে দেখছি। এই শুভ্র, কিশোর, সেলিম, বিশ্ব তোরা বোকার মত দাঁড়িয়ে কি দেখছিস? কাছে আয় গাধার দল। আমি তো পারছি না। সোহের টা আবার আহাম্মকের মত কাঁদছে কেন? ওকে কেউ থামা! আরে গাধা, এই ভাবে কাঁদলে কি আমি ফিরে আসবো! আমি আর তোদেরকে জ্বালাবো নারে। রুবেল মামা, আপনার সাথে আর গাড়িতে ঘোরাও হবে না। এই শোন, তোদের কে যদি কোন কষ্ট দিয়ে থাকি মানে রাভিস না প্লিজ। আর আমার মেয়েটার দিকে একটু খেয়াল রাখিস।
বাবা, আমাকে এখানে ফেলে রেখেছো কেন? আমি বাসায় যাবো। ধুর...এই গন্ধ মেডিকেলে কেউ থাকে। আমাকে প্লিজ বাসায় নিয়ে যাও। আমি শেষ বারের মত আমার বিছানায় আরেকটু ঘুমাতে চাই। পুলিশরা বলছে আমার নাকি পোস্ট মর্টেম করবে! কি লাভ বলো বাবা? পোস্ট মর্টেম এ নাকি অনেক কষ্ট হয়। আমাকে নিয়ে চলো। আমি এখানে থাকবো না।
দুপুরের পর হসপিটালের সমস্ত ফরমালিটি সেরে আমাকে নিয়ে সবাই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলো। কিন্তু বাসার চারপাশে এত্ত ভিড় কেন? ওমা....এত এত পরিচিত মুখ কিন্তু আমি তো কারও সাথেই কথা বলতে পারছি না। সবাই কি মনে করবে! বাসায় দেখি আত্মী স্বজন ভর্তি। সবার চোখে পানি। কেমন লাগে বলেন আপনারা? এভাবে সবাই মিলে কাঁদলে কি হবে! কত কাজ বাকি এখনো!
কে? জনি ভাই নাকি? এত দেরি হলো কেন? কাজে গেছিলেন? আপনাকেই তো খুজছিলাম এতক্ষণ। আপনার তো বিশাল দায়িত্ব। আমার কবর খুড়তে হবে না? আপনাকে তো আগেই বলে রেখেছি। আর শোনেন, আপনার ভাবির খোজ খবর নিতে ভুলবেন না কিন্তু। মেয়েটাও থাকলো। অবশ্যই সবসময় দেখে রাখবেন। স্কুলে নিয়ে যাবেন....চিপস কিনে দিবেন.....আর আমার গল্প শোনাবেন। আমার মেয়েটাকে যেন কেউ কষ্ট না দেয়। তা না হলে কিন্তু আপনার খবর আছে। ভুত হয়ে আপনার ঘাড় মটকাবো আমি!
আসরের মধ্যে গোসল কমপ্লিট। সাদা কাফনে জড়িয়ে আমাকে এখন বাসার ডাইনিং এ রেখেছে। সন্ধ্যার একটু আগে আমাকে কবর দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিল সবাই। ঠিক আছে, আমি চলে যাবো, কিন্তু আমার মেয়েটা কই? এই তন্বী, মেয়েটাকে আমার কাছে একটু আনো। শেষবারের মত ওকে একটু ছুঁয়ে দেখবো। কি হলো? কে আছো? আমার মেয়েটাকে আমার কাছে নিয়ে আসো! মেয়ে আমার প্রত্যেকদিন বিকালে বাইরে ঘুরতে বের হত আমার সাথে। পাউডার মাখালেই খুশি হয়ে যেত, ভাবতো বাইরে নিয়ে যাব। তিন মাস বয়সেই বাবাকে চিনে ফেলেছিলো। কত কথা বলতো আমার সাথে...এখনই মা বলতে পারে। আর কয়দিন পর বাবা বলাও শিখে যেত। পাকানি হবে একটা! কিন্তু আফসোস মেয়ের মুখে বাবা ডাক শুনতে পেলাম না!
এইবার মনে হয় আমাকে কবর দেওয়ার জন্য টিকাপাড়া গোরস্থানে নিয়ে যাবে। শেষ বারের মত বাড়িটা ঘুরে দিখলাম। আর কোনদিন তো আসা হবে না! আমাদের ঘর, কম্পিউটার, আমার প্রিয় ল্যাপটপ, ছোট্ট লিয়ানার বিছানা আরও কত কি! স-ও-ব ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে! কি আর করার আছে! যায়....আর তো থাকা যাবে না। সবাই মিলে খাটিয়ায় তুলে আমাকে নিয়ে গোরস্তানের দিকে রওনা হল। পুরো পাড়ায় কান্নার রোল উঠল নতুন করে। রিয়ন আর বাবা সামনে ধরেছে। শুভ্র আর সোহেল ধরেছে পিছনে। তন্বী, লিয়ানা, অর্চি, আম্মু....কই তোমরা? আমার কাছে আসো.....শেষবারের মত আমাকে দেখে যাও। আমি তো আর থাকবো না। আমার মেয়েটাকে আমার কাছে কেউ নিয়ে আসছো না কেন? আমি তো শেষবারের মত ওকে একবার দেখতে চাই! মাগো...কই তুমি? ও লিয়ানা....লিয়ানা.....বাবার কাছে আসো একবার.....তোমার কপালে শেষ বারের মত একটা চুমু দিতে চাই।
মাগরিবের আগে জানাজা শেষ হলো...অনেক দূর দূর থেকেও অনেকে এসেছে। নামায শেষে বাবা সবার কাছে আমার হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিল। বাবা অধিক শোকে পাথর হয়ে গেছে! মাগরিবের নামায শেষ হতেই আমাকে কবরে নিয়ে যাওয়া হলো। বাহ্....জনি ভাইতো ভালোই কবর বানিয়েছে। কবর....কেয়ামতের আগে এটাই আমার স্থায়ী ঠিকানা। অদ্ভুত ব্যাপার, তাই না? আমাদের প্রত্যেককেই কবরে যেতে হবে। কিন্তু আমি মনে হয় একটু আগেই চলে এলাম! কবরে শোয়ানোর পর সবাই তিন মুঠো করে মাটি দিল। আমি অন্ধকারে চাপা পড়ে গেলাম.....অন্ধকার....নিকষ কালো অন্ধকার! সবাই যে যার মতো চলে গেল। কিন্তু বাবা এককোণে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে এখনো...। বাবা....তুমি এভাবে দাঁড়িয়ে থেকো না তোমাকে দেখে আমার কষ্ট হচ্ছে! প্লিজ চলে যাও....প্লিজ!
কবর সম্পর্কে আগে অনেক ভয় ছিলো! না জানি কেমন লাগবে থাকতে। কিন্তু এখন কি ভয় পেলে চলবে। এখানে তো আর তন্বী ঘুম দিয়ে দিবে না! এটাই এখন আমার স্থায়ী ঠিকানা। অভ্যাস হযে যাবে ধীরে ধীরে....।
অন্ধকারে শুয়ে শুয়ে কিছুই করার নাই। একটু পরই হয়তো বিচার শুরু হবে। কিন্তু ভাবছি কি দোষ ছিলো আমার? আল্লাহ্ কেন আমার তিন মাসের মেয়েটাকে এতিম করলো? কেন এত অল্প বয়সে আমার বউকে বিধবা হতে হলো? যে বাবা কোলে পিঠে করে বড় করেছে কেনই বা তার কাঁধে চড়ে কবরে আসতে হলো? আমি কার কাছে এর বিচার চাইবো? হতভাগী বউ আমার এতিম মেয়েটাকে নিয়ে কোথায় যাবে? কি করবে? মেয়ের দুধ কেনার টাকাই বা কোথায় পাবে? মেয়ে আমার কার কাছে বায়না ধরবে? আমার এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর কি আপনারা কেউ দিতে পারবেন? কারো কাছে উত্তর আছে? কি হলো? কেউ কথা বরছেন না কেন? আর কতদিন আপনারা চুপ করে থাকবেন? আর কত লিয়ানাকে এভাবে পিতৃহারা হতে হবে? আর কত তন্বীকে এই ভাবে অল্প বয়সে বিধবা হতে হবে? ছোট বাচ্চাটাকে নিয়ে মেয়েটা একন কোথায় যাবে? আর কত বাবাকে এই ভাবে ছেলের লাশ কাঁধে বইতে হবে? আর কত রুবায়েত অদক্ষ চালকের হাতে প্রাণ দিলে আপনারা বুঝবেন? প্লিজ জেগে উঠুন সবাই। আমার মত, আমার সন্তানের মত, আমার পরিবারের মত আর কারো জীবনে যেন এইরকম না হয়। সবাই সোচ্চার হন। আমরা বাঁচতে চাই...এভাবে সড়ক দুর্ঘটনায় লাশ হতে চাই না আর.................।।
*** লেখাটি মনের অজান্তেই লিখে ফেললাম। যাদের নাম অনুমতি ছাড়াই ব্যবহার করেছি তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি! বিশেষ করে তন্বীর কাছে। তাকে না বলেই গল্পটি প্রকাশ করলাম। এই গল্পের সকল নাম, চরিত্র এবং স্থান বাস্তব, শুধু মাত্র মৃত্যুটা কাল্পনিক। কিন্তু এইভাবে চলতে থাকলে সেইটাও বাস্তব হতে কতক্ষণ? এটা শুধু মাত্র একটা গল্প নয়। প্রতিদিন অসংখ্য পরিবার এভাবে অসহায় হযে পড়ছে। আমি আমার নিজের জীবন নিয়েই এটা লিখলাম। হয়তো কাল্পনিক চরিত্র ব্যবহার করতে পারতাম। কিন্তু তা হলে সেটা নিছকই গল্প হয়ে যেত। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সড়ক দুরঘটনায় মারা যাচ্ছে। পঙ্গুত্ব বরণ করছে আরও অনেকে। আজ হয়তো আমরা খবরের কাগজে, টিভি চ্যানেলে এই রকম অনেক খবর দেখছি। কিন্তু যে কোন সময় আমি, আপনি অথবা আপনার আপন কেউ এর শিকার হতে পারেন। লেখাটি আপনাদের wall/page/group-এ শেয়ার করলে খুশি হব। হয়তো এভাবে আরও কিছু মানুষকে সচেতন করা যাবে। আর ভালো লাগলে শুধু লাইক দিয়েই চলে যাবেন না, অবশ্যই একটা কমেন্ট করবেন। আমরা রক্তদানের পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য চেষ্টা করছি। আশা করি আমাদের সাথেই থাকবেন। আর আমার মেয়ের জন্য একটু দোয়া করবেন। কারন গল্পটা যে কোন একদিন সত্য হয়ে যাবে না তার কোন ভরসা নাই। সকলের প্রতি শুভ কামনা রইল।
আজ অনেক দিন পর ময়মনসিংহ পার্কে হাঁটতে বের হয়েছি । হাঁটতে ভালই লাগছে। সেই সাথে এক ধরনের শূন্যতাও গ্রাস করছে। কাউকে হারানোর শূন্যতা।
ময়মনসিংহ পার্কের এই পরিচিত রাস্তাগুলোতে অনেকবার টুসির হাত ধরে হেঁটেছি । আজ আর টুসি নেই । তাই একাই হাঁটতে হচ্ছে ।
টুসিকে আমার জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছি,প্রায় ছয় মাস হয়ে গেল ।
পার্কের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে কালামের ছোট চায়ের দোকানটা চোখে পড়লো । অনেকদিন এই দোকানটাতে চা খাওয়া হয় না । ১২-১৩ বছরের কালাম নামের এই ছেলেটা অসাধারণ চা বানায় ।
টুসি আর আমি এই দোকানটাতে অনেকবার চা খেয়েছি । টুসি যে স্যার এর কাছে Physics প্রাইভেট পড়তো সেই স্যার এর বাসা ছিল পার্কের কাছেই । বিকালবেলা ওর প্রাইভেট শেষ হলে মাঝে মাঝেই আমাকে ফোন দিয়া পার্কে আসতে বলতো । বিকালবেলা ওর সাথে পার্কে হাঁটতে এসে প্রায়ই কালামের দোকানে চা খাওয়া হতো ।
দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কালাম ডাকল, `শাফিন ভাই,কই যান?’
এইতো, হাঁটতেছি ।‘
চা খায়া যান । অনেকদিন ধরে তো আসেন না । আফা আহে নাই ?’
কালামের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে দোকানে গিয়ে বসলাম ।
দোকানে গিয়ে বসতেই কালাম এক কাপ চা বানিয়ে হাতে দিল ।
চা খেতে গিয়ে টুসির কথা প্রবলভাবে মনে হচ্ছিলো ।
ও আমার জীবনে কেন এলো , আর কেনইবা কষ্ট দিয়ে চলে গেলো ?
মনে হচ্ছে , এইতো সেদিনের ঘটনা । পাশের বাসায় আসা নতুন ভাড়াটিয়ার সুন্দরী মেয়েটিকে হঠাৎ আমার নজরে পড়লো । সে দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার । কলেজ শেষ করে যখন বাসায় ফিরি তখন পাশের বাসার ২য় তলার বারান্দায় চোখ চলে যায় । দেখলাম , উদাস উদাস ভাব নিয়ে একটি মেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে । প্রথম দেখাতেই মেয়েটিকে কেমন যেন ভালো লেগে গেলো । তারপর মাঝে মাঝেই মেয়েটির সাথে রাস্তায় দেখা হতো । কখনও দেখতাম বিকালে প্রাইভেটে যাচ্ছে , কখনও দেখেছি স্কুল টাইম এ রিকসার জন্য দাড়িয়ে আছে ।
একদিন হঠাৎ মাথায় ভূত চাপল টুসিকে রিকসার পেছন পেছন ফলো করে ওর স্কুল পর্যন্ত যাবো । যেই ভাবা সেই কাজ । ওর স্কুল টাইম এ বাসা থেকে সাইকেল নিয়ে বের হলাম । কিছুক্ষন পরই টুসি বাসা থেকে বের হয়ে রিকসায় উঠলো । আমিও সাইকেল নিয়ে ফলো করে ওর স্কুল পর্যন্ত গেলাম । ও স্কুলে ঢুকে গেলে আমি আবার বাসায় চলে আসলাম । এভাবে মাঝে মাঝেই ফলো করতাম । একদিন ফলো করছি এমন সময় দেখলাম , টুসি বারবার রিকসার পেছন দিকে তাকিয়ে আমাকে দেখছে । বুঝতে পারলাম ফলো করার বেপারটা ও ধরে ফেলেছে । তাই , ওই দিনের পর থেকে ভয়ে আর ফলো করি নাই । কিন্তু আমি যে টুসির প্রতি কিছুটা দুর্বল হয়ে পরেছি সেটা আস্তে আস্তে অনুভব করলাম । মনে মনে ছিন্তা করছিলাম , কিছু একটা অবশ্যই করতে হবে । আল্লাহের রহমতে একটা রাস্তা পেয়েও গেলাম ।
আমার এক মেয়ে ফ্রেন্ড টুসিদের বাসার নিচের তলার ফ্ল্যাট এ থাকতো । সুযোগ বুঝে আমার ফ্রেন্ডকে একদিন সব খুলে বললাম । ওর সাহায্যেই আমি পরে টুসির মোবাইল নাম্বারটা পেয়ে গেলাম । শুরু হল মেসেজ পাঠানো । টুসিকে মাঝে মাঝেই মেসেজ পাঠাতাম । একদিন সাহস করে কল করে বসলাম । ও ফোন রিসিভ করার পর ভদ্র ভাষায় কিছু গালি শুনতে হল । তবুও নাছোড়বান্দার মত লেগেই রইলাম । মাঝে মাঝেই কল করতাম ।কিন্তু ও রিসিভ করতো না । তারপর কলেজ এ পরীক্ষা শুরু হুএ যাওয়ায় ব্যস্ততায় টুসির কথা ভুলেই গিয়েছিলাম । ওকে পাবার আশাও প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলাম । পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর হঠাৎ একদিন টুসির নাম্বার থেকে আমার মোবাইল এ একটা কল আসে ।
আমিতো আকাশ থেকে পড়লাম । ভয়ে ভয়ে কলটা রিসিভ করলাম । রিসিভ করার পর টুসি যে কথাগুলো বলেছিল সে কথাগুলো হচ্ছে :
আপনি কে সে সম্পর্কে আমি জানতে পেরেছি । তিথি আপু (আমার সেই মেয়ে ফ্রেন্ড ,যে টুসিদের বাসার নিচের ফ্ল্যাট এ থাকে) আমাকে সব বলেছে ।
কাউকে ভালো লাগলে সেটা বলতে হয় । কাপুরুষের মত ফোন দিয়ে কাউকে বিরক্ত করে ভালবাসা আদায় করা যায় না । আর কাউকে ভালবাসতে হলে তাকে বুঝতে হয় , ভালো লাগতে হয় , যাচাই করতে হয় । তারপর তো ভালবাসা । হুট করে ভালবাসার কথা বললেই ভালবাসা যায় না । ‘
এই কথাগুলো বলে ও লাইন কেটে দেয় ।
এভাবেই আমাদের রঙিন স্বপ্ন বোনা শুরু হয়ে ছিল । ওই দিনের ফোন কলের পর থেকে আমি সব সময় টুসির পাশে থাকার চেষ্টা করেছি । মাঝে মাঝেই ওর স্কুল এ যাওয়ার সময় সাইকেল দিয়ে রিকসার সাথে সাথে ওর স্কুল পর্যন্ত গিয়েছি । বিকালেও প্রায়ই ওর প্রাইভেট এ যাওয়ার সময় সাথে সাথে গিয়েছি । ও শুধু পিছনে ফিরে মুচকি হাসত । এই মুচকি হাসিটাই আমার কাছে চাদের আলো মনে হতো ।
এভাবে চলার দুই মাস পর টুসিকে সরাসরি প্রপোজ করলাম । ও কিছু না বলে শুধু একটু হেসেছিল । ২ দিন পর ও যখন আমার প্রস্তাবে হ্যাঁ’ বলল তখন আমি যে কি খুশি হয়েছিলাম সেটা বলে বোঝানো যাবে না ।
আমাদের দিনগুলো স্বপ্নের মত এগিয়ে যেতে লাগলো । টুসির ভালবাসায় নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ মনে হতো ।
আমার হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝেই টুসি জিজ্ঞেস করতো , আমাকে ছেড়ে কখনো যাবে নাতো ?’
আমি ওর হাতটা আরও শক্ত করে ধরে বলতাম , আমার এই লক্ষ্মী পাগলীটাকে ছেড়ে আমি কখনোই যাবোনা ।‘
এইভাবে স্বপ্নের ঘোরে অনেকগুল দিন কেটে গেলো । টুসি এস .এস .সি তে জি .পি . এ - ৫ পেয়ে ভিকারুন্নিসা কলেজ এ ভর্তি হল । ও ঢাকা চলে যাওয়ার আগের দিন আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কেদেছিল । ও ঢাকায় ওর খালার বাসায় থাকতো । কলেজ বন্ধ হলে ও যখন ময়মনসিংহ আসতো তখনি শুধু আমাদের দেখা হতো । আর ফোন এবং ফেসবুক এ তো সব সময় যোগাযোগ থাকতোই ।
আমিও ব্যস্ত হয়ে পড়লাম এইচ .এস . সি পরীক্ষা নিয়ে । কেটে যেতে লাগলো দিনগুলো ..........
এইচ.এস.সি পরীক্ষা হয়ে গেল । জি .পি . এ – ৫ পেয়ে ভালোভাবেই উত্তীর্ণ হলাম । তারপর শুরু হয়ে গেল ভর্তি যুদ্ধ । চান্স পেলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে । নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালি দিন আর টুসির ভালবাসা নিয়ে মুহূর্তগুলো ভালই কাটছিল । কিন্তু আমাদের সুখটা আর বেশি দিন স্থায়ী হল না । আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারে টুসির ফ্যামিলিতে জানাজানি হয়ে গেল । ফ্যামিলির চাপে এক সময় টুসি আমার সাথে যোগাযোগ করা বন্ধ করে দিল । ভেবেছিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে । কিন্তু , কিছুই ঠিক হল না । জীবনটা কালো অন্ধকারে ঢেকে গেলো হঠাৎ করেই । দিনের পর দিন কেটে যাচ্ছিলো । মোবাইলে কল আসলে মনে হতো এই বুঝি টুসি ফোন করলো । কিন্তু , সেই আশা আশাতেই থেকে যেতো । শুধু ভাবতাম , ফ্যামিলির চাপে ও আমাকে এত সহজেই ভুলে গেলো ।
প্রায় দেড় মাস পর যখন সত্যি ঘটনাটা জানতে পারলাম তখন আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো ।
আসলে , টুসি আরেকটি ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল । তাই , ফ্যামিলির চাপের অজুহাত দেখিয়ে ও আমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলো । হিমি নামে টুসির এক বান্ধবীর কাছ থেকে যেদিন কথা গুলো শুনেছিলাম সেদিন কিছুতেই নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না । মনে হচ্ছিলো এটা একটা স্বপ্ন , আর স্বপ্নটা বুঝি এখনি ভেঙে যাবে । যেই মানুষটাকে এত বেশি বিশ্বাস করতাম , এত বেশি ভালবাসতাম সেই মানুষটা আমাকে আজ এভাবে কষ্ট দিলো ।
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সেদিনই টুসিকে ফোন দিয়েছিলাম । ভেবেছিলাম সবই মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে । কিন্তু , সব কিছু ভুল প্রমাণিত করে টুসি যখন সত্যি ঘটনাটি স্বীকার করলো তখন আমি কিছুক্ষনের জন্য স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম । ইচ্ছা হচ্ছিলো দৌড়ে দূরে কোথাও পালিয়ে যাই ।
‘ কি দোষ ছিল আমার ? কি ভুল করেছিলাম আমি ? আমিতো শুধু ভালবেসেছিলাম । ‘
‘ হে আল্লাহ , আমার ভালোবাসাটাই কি দোষ ছিল । এটাই কি আমার ভুল ছিল । ‘
আসলে , এরকম দুঃখ পাওয়াটাই মনে হয় ভালোবাসা ।
কথাগুলো চিন্তা করতে করতে কখন যে অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে বুঝতেই পারলাম না । ঘর ভাঙল কালামের ডাকে ।
-শাফিন ভাই , আপনের চা তো অনেক আগেই ঠাণ্ডা হইয়া গেছে । আরেক কাপ চা বানায়া দেই ?
-না থাক । আজকে আর লাগবে না । আরেকদিন এসে খাবো ।
চায়ের কাপটা রেখে টাকা দিয়ে যখন চলে আসছিলাম , তখন আবার পিছন থেকে কালাম ডাক দিলো ।
-শাফিন ভাই , একটু শুইনা যান ।
যাওয়ার পর কালাম আমাকে ওর দোকানের পিছনে একটা গোলাপ গাছ দেখাল । গাছটাতে একটা গোলাপ ফুটে আছে । তখনি আমার গাছটার কথা মনে পড়লো । আমিতো একবারে ভুলেই গিয়েছিলাম । গত বছর , বৃক্ষ মেলা থেকে এই গোলাপ গাছটা কিনে টুসি এখানে এনে রোপণ করেছিলো । বলেছিল , আমাদের ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ গাছটা এখানে থাকবে । গাছটা ঠিকই রয়ে গেছে , কিন্তু আমাদের ভালোবাসাটা হারিয়ে গেছে ।
-শাফিন ভাই , আরেকদিন আসার সময় আফারে সাথে কইরা নিয়া আইসেন । আফা গাছে ফুল দেখলে অনেক খুশি হইব ।
সে কি আর কখনো আসবে এই দোকানে চা খেতে ? হয়তো আসবে অন্য কারো হাত ধরে ......... কথাগুলো চিন্তা করতে করতে হেঁটে যাচ্ছি পার্কের সেই চিরচেনা পথটি ধরে...............
ক্লাস এ ঢুকেই মিথিলার মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল। কারন তখনো কেউই এসে পৌঁছায়নি। শুধুমাত্র রাতুল পিছনের টেবিলটাতে একা বসে আছে। এই ছেলেটাকে মিথিলা একদমই পছন্দ করে না । ক্লাসের সবচেয়ে অমনোযোগী , বাজে ছাত্র হিসেবেই রাতুল পরিচিত । আর দেখতেও কেমন জানি অগোছালো। মাথার চুলগুলো উসকো-খুসকো । পরনের কাপড় গুলোও অপরিষ্কার । মিথিলাকে দেখলেই ছেলেটা কেমন জানি হা করে তাকিয়ে থাকে । এই কারনে ছেলেটাকে মিথিলার আরও বেশি অপছন্দ ।
বিকেলবেলা মিথিলা তার বান্ধবী লগ্নের সাথে কথা বলার এক পর্যায়ে জানতে পারলো যে তাদের ক্লাসের রাতুল , সুজয়ের কাছে মার খেয়ে মাথা ফাটিয়ে ফেলেছে ।
মিথিলা , সুজয়কে খুব ভাল করেই চেনে । আগে প্রায়ই রাস্তায় মিথিলাকে বিরক্ত করতো ।
বখাটে ছেলেরা তো মারামারি করবেই , এটাই তো স্বাভাবিক । তাই , রাতুলের মাথা ফাটানোর ব্যাপারটা মিথিলার মনে একটুও ছেদ ফেলল না ।
মিথিলা মন খারাপ করে কলেজের বারান্দায় দাড়িয়ে আছে । আজকে ওর পরীক্ষাটা খুবই খারাপ হয়েছে । পাশ করতে পারবে বলে মনে হয় না । এত চিন্তার কারন ছিল না যদি এটা নির্বাচনী পরীক্ষা না হয়ে সাধারণ কোন পরীক্ষা হতো । কিন্তু , নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশ না করতে পারলে তো সে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারবে না ।
পরের দিন কলেজে গিয়ে মিথিলা খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল । কারন, গত রাতে নাকি শর্ট-সার্কিট এ আগুন লেগে ওদের পরীক্ষার খাতা পুড়ে গেছে । তাই গতদিনের পরীক্ষাটা আবার অনুষ্ঠিত হবে ।
এইচ.এস.সি পরীক্ষা শেষ হওয়ার কিছুদিন পরেই মিথিলার ক্যান্সার ধরা পড়ল । ধীরে ধীরে রোগটা সারা দেহে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করল । কিন্তু , অপারেশন করতে যে পরিমাণ টাকা দরকার তা জোগাড় করাটা মিথিলার পরিবারের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিলো না । শেষ পর্যন্ত ধার-দেনা করে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা সংগ্রহ করে অপারেশন করা হল ।
আল্লাহের রহমতে এবং সবার দোয়ায় মিথিলা সুস্থ হয়ে উঠলো ।
সুস্থ হওয়ার কিছুদিন পরে মিথিলার কাছে একটা চিঠি আসে ।
চিঠিটা ছিল এইরকম :
প্রিয় মিথিলা ,
কলেজে যে দিন তোমাকে প্রথম দেখেছি সে দিন থেকেই তোমাকে অনেক ভালবেসে ফেলেছি । কিন্তু , একটা বখাটে ছেলের ভালবাসাকে তুমি কোনদিনই মেনে নেবে না । তাই , ভেবেছিলাম লুকিয়ে যতটা ভালবাসা যায় ততটাই ভালবাসবো ।
সুজয় যে দিন লোক ভাড়া করে এনেছিল তোমাকে কিডন্যাপ করার জন্য , সে দিন ওদের সাথে মারামারি করেছিলাম শুধু তোমাকে বাঁচাবো বলে।
লগ্নের কাছে জানতে পেরেছিলাম, তোমার নির্বাচনী পরীক্ষায় রসায়ন পরীক্ষাটা খুব খারাপ হয়েছিল । তাই, সে দিন রাতেই কলেজের অফিসে তালা ভেঙ্গে ঢুকে খাতা পুড়িয়ে দিয়েছিলাম শুধু তোমার মুখে একটু হাসি দেখব বলে। কিন্তু , দারোয়ানের কাছে ধরা পরে গিয়ে ছয় মাসের জেল হল। কলেজেরই ছাত্র কাজটা করেছে বলে ব্যাপারটা শর্ট-সার্কিট এ আগুন লেগেছে বলে চালিয়ে দেয়া হল। তাই আর এইচ.এস.সি পরীক্ষাটা দেয়া হল না।
জেল থেকে বের হয়ে শুনলাম, তুমি ক্যান্সার এ আক্রান্ত। টাকার অভাবে তোমার অপারেশন হচ্ছে না জেনে কোন উপায় না দেখে নিজের কিডনি বিক্রি করে টাকা সংগ্রহ করলাম শুধু তোমায় ভালবাসি বলে ।
আজ আমি জীবনের শেষ পর্যায় এ এসে উপস্থিত হয়েছি । আমার অবশিষ্ট কিডনিটা অনেক আগে থেকেই নষ্ট ছিল ।এখন অবস্থা দিনে দিনে আরও খারাপ হচ্ছে । ডাক্তার বলেছে, আর খুব বেশি দিন বাঁচবো না । তাই মারা যাওয়ার আগে ভাবলাম ,সেই কথাটা বলে যাই । যে কথাটা আজো তোমায় বলতে পারিনি ।
আমি তোমাকে ভালবাসি মিথিলা । অনেক ভালবাসি ।
ভাল থেকো ।
ইতি,
তোমাদের ক্লাসের সবচেয়ে বাজে ছেলে
রাতুল
মিথিলার চোখ দিয়ে পানি পড়তে পড়তে চিঠিটা ভিজে গেল ।
এক ধনী বাক্তি
রেস্টুরেন্ট এ
খাবার পর
সে ওয়েটার কে টিপস হিসেবে 5$ দিল ওয়েটার সেই টিপস পেয়ে অবাক হয়ে দাড়িয়ে থাকলো
লোকটি বুঝলেন আর জিগ্যেস করলেন " কি হল??
... ওয়েটারঃ আমি এটা ভেবে অবাক হচ্ছি আপনার ছেলে এক ই টেবিল এ বসে 500$... টিপস দেয় কিন্তু আপনি এত ধনী মানুষ হয়েও মাত্র
5$...?
লোকটি এর পর হাসলেন আর বললেন
"সে ধনী মানুষের ছেলে কিন্তু আমি একজন কাঠুরের সন্তান.."
(কখনো নিজের অতিত কে ভুলে যাবেন না কারন এটা আপনার সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক)