ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া।
বুধবার দিল্লির রুশ দূতাবাস টুইটারে লিখেছে, ‘সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের নিরাপত্তা বাহিনী এই ছাত্রছাত্রীদের পণবন্দি করেছে এবং তাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। যেকোনো উপায়ে তাদের রাশিয়া যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে। এর সম্পূর্ণ দায় কিয়েভের।’ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়রও দাবি, যে সব ভারতীয় শিক্ষার্থী ইউক্রেন ছেড়ে রাশিয়ায় যেতে চাইছেন, তাদের খারকিভে আটকে রাখা হয়েছে। রাশিয়ায় পৌঁছতে পারলেই তাদের বাড়ি ফেরানো হবে।
বুধবার প্রথমে জানা যায়, দিল্লির চাপে ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’-এর ব্যবস্থা করছে রাশিয়া। ইউক্রেনের ঘড়িতে তখন বেলা দেড়টা। ভারতীয় শিক্ষার্থীদের মোবাইলে দূতাবাস থেকে মেসেজ আসে, খারকিভ ছাড়তে হবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে পৌঁছে যেতে হবে পিসোচিন, বাবায় বা বেজলিউডিভকা-য়। শিক্ষার্থীরা গুগল ম্যাপ ঘেঁটে দেখেন, পিসোচিন খারকিভ থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে। বাবায় প্রায় ১২ কিলোমিটার। আর বেজলিউডিভকার দূরত্ব ১৬ কিলোমিটার।
এতখানি রাস্তা কিভাবে যাওয়া হবে? বাস, গাড়ি মিলছে না। স্টেশনে ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে উঠতে গেলে অনেককে মারধর করে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। ভাবতে ভাবতেই এক ঘণ্টা পরে মোবাইলে ফের মেসেজ আসে, বাস, ট্রেন, গাড়ি না পেলে অন্তত পায়ে হেঁটে ওই তিনটি এলাকায় পৌঁছতেই হবে। যেকোনো উপায়ে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে খারকিভ থেকে বেরিয়ে ওই তিনটি জনপদের যে কোনও একটিতে পৌঁছে যেতে হবে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, খারকিভে চূড়ান্ত হামলা চালানোর আগে রাশিয়ার পুতিন প্রশাসনই ভারতীয় শিক্ষার্থীদের জন্য এই ‘সেফ প্যাসেজ’-এর বন্দোবস্ত করে দিয়েছে। ওই কারণেই এত কম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের খারকিভ ছাড়তে বলা হয়। কোথায়, কত ক্ষণের মধ্যে যেতে হবে, তা-ও রাশিয়াই বলে দিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, 'ওই সব জায়গা, সময় কোনোটাই আমরা ঠিক করিনি। রাশিয়ার তথ্যের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।'
মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাশিয়ার বাহিনী খারকিভে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলা বর্ষণ শুরু করেছিল। ওই সময়ই খারকিভে কর্নাটকের ছাত্র নবীন শেখরাপ্পার মৃত্যু হয়। বাঙ্কারে বহু ছাত্রছাত্রী আটকে থাকলেও তাদের পক্ষে বেরিয়ে অন্য কোথাও যাওয়া সম্ভব ছিল না। এর পরেই ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা দিল্লিতে রাশিয়ার ভাবী রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপভকে ডেকে পাঠিয়ে দাবি করেন, ভারতীয়দের জন্য ‘সেফ প্যাসেজ’-এর বন্দোবস্ত করা হোক। ইউক্রেনের একের পর এক এলাকা রাশিয়ার দখলে চলে যাওয়ার পর সেখান থেকেই ভারতীয় শিক্ষার্থীদের বের করে আনা সম্ভব কি না, তা নিয়েও নয়াদিল্লি মস্কোর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। খারকিভে বিপুলসংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সেখানেই যে সব চেয়ে বেশি ভারতীয় শিক্ষার্থী রয়েছেন, মোদি সে কথা পুতিনকে জানান। এর পর দুই দেশ যোগাযোগ করে শিক্ষার্থীদের ‘সেফ প্যাসেজ’টি চূড়ান্ত করে।
বুধবার সকালে রাশিয়ার প্যারাট্রুপাররা খারকিভ শহরে নেমে পড়লে নতুন করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়। ভাবী রুশ রাষ্ট্রদূত জানান, মস্কো ভারতীয়দের রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্তের মধ্যে দিয়ে ‘সেফ প্যাসেজ’ করে দিতে একটি ‘মানবিক করিডর’ তৈরির চেষ্টা করছে। খারকিভে অন্তত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস রয়েছে। এখানেই ভারতীয়দের সংখ্যা সব থেকে বেশি ছিল। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ও বুধবার সকালেও অনেকে ট্রেনে করে খারকিভ ছেড়েছেন। উল্টো দিকে ভারতীয় পড়ুয়াদের অভিযোগ, হাজার খানেক ছাত্রছাত্রী রেল স্টেশনে পৌঁছে গেলেও শুধুমাত্র ইউক্রেনের নাগরিকদেরই ট্রেনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই পড়ুয়াদের কাছে বার্তা যায়, ট্রেন না পেলে তারা যেন ১১-১২ কিলোমিটার পায়ে হেঁটেই খারকিভ থেকে বেরিয়ে যান। অরিন্দম বলেন, 'আমরা জানি, সমস্যা রয়েছে। কিন্তু ওখানে যুদ্ধ চলছে। সকলের নিরাপত্তার জন্যই তাদের যেকোনো উপায়ে নিরাপদ এলাকায় পৌঁছতে বলা হয়েছে।'
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রের ইঙ্গিত, খারকিভ থেকে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে গেলে, সেখান থেকে রাশিয়ার সেনার সাহায্যেই তাদের ইউক্রেন সীমান্ত পার করিয়ে রাশিয়ায় নিয়ে আসা যেতে পারে। এর জন্য ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের একটি ছোট দল দেশের পূর্বে, রাশিয়ার সীমান্তবর্তী এলাকায় পৌঁছনোর চেষ্টা করছে। উল্টো দিকে মস্কোয় ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীরা ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার বেলগর্ড ও কুর্স্ক শহরে পৌঁছে গেছে।
এরই মধ্যে আজ ইউক্রেনে ২২ বছরের ভারতীয় ছাত্র চন্দন জিন্দালের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। পাঞ্জাবের বার্নালার চন্দন ভিনিতসিয়ায় মেডিক্যাল কলেজে পড়তেন। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি হাসপাতালে আইসিইউ-তেএ ভর্তি ছিলেন। তার বাবা শিশন কুমারও ওখানেই রয়েছেন। তিনি রোমানিয়া হয়ে ছেলের লাশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করেছেন। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি'র প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি বলেছেন, ইরানিদের প্রতিটি ভোট শত্রুদের কাছে যেন একেকটি ক্ষেপণাস্ত্র। আজ শুক্রবার তেহরানে নির্বাচনে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ বিষয়ক এক বৈঠকে অংশগ্রহণ শেষে এসব কথা বলেন।
জেনারেল সালামি আরও বলেছেন, ইরানের শত্রুরা এবারের নির্বাচনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের স্টাইলে ওঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু ইরানের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে শত্রুদেরকে জবাব দিচ্ছে। একেকটি ভোট শত্রুর ওপর একেকটি ক্ষেপণাস্ত্রের মতো আঘাত হানছে, এ যেন শত্রুদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র-বৃষ্টি।
তিনি বলেন, ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি শত্রুদের সব অসৎ চিন্তা ও পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেবে। আইআরজিসির প্রধান বলেন, নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা পুলিশ বাহিনীকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
আজ ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি সিটি কাউন্সিলসহ স্থানীয় পরিষদের মূল নির্বাচন, পার্লামেন্ট ও বিশেষজ্ঞ পরিষদের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ভোটগ্রহণও চলছে।
সকাল ৭টা থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের বিপুল উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তারা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। ভোটার উপস্থিতি বেশি হলে প্রয়োজনে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে জানানো হয়েছে। সূত্র: বিডিপ্রতিদিন
ভারতে আটক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের কথিত পৃষ্ঠপোষক বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে দেশে ফিরেয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
আজ রবিবার দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে গণমাধ্যমকে তিনি এ তথ্য জানান।
এর আগে সীমান্ত পারি দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানাকে আটক করে বিএসএফ। শনিবার বিএসএফের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘সোহেল রানা স্বীকার করেছেন অবৈধভাবে ভারত সীমান্ত পার হয়ে নেপালের কাঠমুণ্ড যেতে চেয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্য ছিল তার।’
সোহেল রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শুক্রবার রাতে স্থানীয় মেখলিগঞ্জ থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিএসএফ। সোহেলের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত সব জিনিস মেখলিগঞ্জ পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়। এরপর শনিবার তাকে কোচবিহার জেলা আদালতে তোলা হলে, তার ৩ দিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।