আজ শুক্রবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনেই বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে জন্ম নেয় একটি ভূখণ্ড, যার নাম বাংলাদেশ। লাল সবুজের এ দেশটির স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকী আজ।
আজ থেকে ৫০ বছর আগে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে বাঙালি জাতি এই কাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করে। এই দিনটি বাঙালি জাতির সংগ্রামমুখর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। ১৯৭১ সালের এই দিন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
এদিকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ দিনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর বছরও। এবার তাই উদযাপনেও যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা। এ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানরা ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে আসছেন। অংশ নিচ্ছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর যৌথ অনুষ্ঠানে। গত ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিন ব্যপী বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে সুবর্ণ জয়ন্তীর উদযাপন উপলক্ষে আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর আক্রমণ শুরু করে। অপারেশন সার্চ লাইটের নামে শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা। এই গণহত্যা শুরু হওয়ার পরপরই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান।
বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার সর্বস্তরের মানুষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুধু এ দেশের জনগণই নয়, আক্রান্ত জাতি ও সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়ায় এবং বাংলাদেশের পক্ষে সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয় প্রতিবেশী দেশ ভারত। মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র, আশ্রয় ও খাদ্য দিয়ে সহায়তা করে ভারত। এই সময় আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক পরিসরে বিশাল ভূমিকা রাখে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (রাশিয়া)।
সোভিয়েত ইউনিয়নের এই ভূমিকা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আরও ত্বরান্বিত করে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুক্তিকামী ও গণতন্ত্রকামী মানুষ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী ও বীরত্বপূর্ণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ ও দুই লাখ মা বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৬ ডিসেম্বর বাঙালি জাতি বিজয় লাভ করে।
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের দেওয়া বক্তব্যকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘মাহবুব তালুকদার মিথ্যাচার করেন। তিনি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য দেন। হয়তো তার কোনো এজেন্ডা আছে, সেটা বাস্তবায়নের জন্য তিনি এমন বক্তব্য দেন।’
বৃহস্পতিবার (০৬ জানুয়ারি) সোনারগাঁও হোটেলে ভোটার তালিকায় পরিচয়হীনদের পিতা-মাতার নাম লিপিবদ্ধকরণে জটিলতা নিরসন শীর্ষক কর্মশালা শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
মাহবুব তালুকদারের এ বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাংবাদিকদের বলেন, উনি তো সব সময় এরকম বলেন। একেকটা সময় একেকটা শব্দ চয়ন করেন। এই কথাগুলো অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রচারমূলক। নির্বাচন কমিশনকে অপবাদ দেওয়া কথা।
সিইসি আরও বলেন, ‘ভোটযুদ্ধ আছে, ভোট নেই! তাহলে ৭৫ শতাংশ ভোটার কোথা থেকে আসে? টেলিভিশনে দেখেছেন, সারিবদ্ধভাবে নারী-পুরুষ দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেন। তাহলে এরা কারা? এরা কি ভোটার নন? সুতরাং ওনার কথার কোনো সংগতি নেই।’
এর আগে গতকাল বুধবার পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচন পর্যবেক্ষণ শেষে মাহবুব তালুকদার বলেছিলেন, সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ যেন ইউপি নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। এখন ভোটযুদ্ধে যুদ্ধ আছে, ভোট নেই। ইউপি নির্বাচনে এখন উৎসবের বাদ্যের বদলে বিষাদের করুণ সুর বাজছে। নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। সূত্র: ইত্তেফাক
সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা নেটওয়ার্কের অর্থনীতিবিদেরা এমন আশঙ্কা ব্যক্ত করার পর ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তারা সুদের হার আরেক দফা বাড়ানোর কথা ভাবছেন।
গতকাল রবিবার এ নিয়ে ফেডারেল রিজার্ভের সঙ্গে নীতি-নির্ধারকরা অনির্ধারিত এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
অর্থনীতিবিদদের ধারণা, পতনের ঝুঁকি ত্বরান্বিত হতে পারে সুদের হার বাড়ালেই। কারণ, তার ফলে সরকারি বন্ড এবং মর্টগেজ-বন্দকীর নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সম্পদের মূল্য কমে যাবে। এতে আমানতকারিদের পক্ষে স্বাভাবিক লেন-দেন চালিয়ে নেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়তে পারে। এসব কারণেই সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক সংকটে পড়ে দেউলিয়া ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে।
সামাজিক বিজ্ঞান গবেষণা নেটওয়ার্কের অর্থনীতিবিদদের মতে, ব্যাংকের সম্পদের দাম একেবারে তলানিতে যাওয়ার ফলেই বীমাহীন আমানতকারিরা গচ্ছিত অর্থ দ্রুত সরিয়ে ফেলেন এবং ব্যাংকিং সিস্টেমকে লন্ডভন্ড হয়ে যায়। ১৮৬টি ব্যাংকও অনুরূপ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে, যা ঠেকাতে সঠিক নীতিমালার কোন বিকল্প নেই। অর্থাৎ এসব ব্যাংকের পতন ঠেকাতে বেল আউটের মতো প্রক্রিয়া অবলম্বন তথা ফেডারেল সরকারের হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে।
অর্থনীতি নিয়ে যারা গবেষণা করেন তারা বলেছেন, ‘কোনো ব্যাংকের আমানতকারিরা যদি খুব দ্রুত তাদের জমানো অর্ধেক অর্থ উইথড্র করেন, তাহলেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক পতনের ঝুঁকিতে পড়ে।’
রবিবার প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকিং জায়েন্ট ইউবিএস বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং ব্যবস্থায় টালমাটাল অবস্থার অবসানের অভিপ্রায়ে নীতি-নির্ধারকদের সমন্বয়ে একটি চুক্তির আওতায় প্রায় ৩.২৫ বিলিয়ন ডলারে কঠিন সংকটে পতিত ‘ক্রেডিট সুইস ব্যাংক’ কিনে নিচ্ছে। এটি ছিল ইউবিএসের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী একটি ব্যাংক। ফেডারেল রিজার্ভ এবং আরো ৫টি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোমবার থেকে শুরু হওয়া তাদের ডলারের ‘অদলবদল’ ব্যবস্থায় তারল্য বাড়ানোর জন্যে সমন্বিত পদক্ষেপের ঘোষণা দেয়।
ফেডারেল ব্যাংক অব কানাডা, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, ব্যাংক অব জাপান, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক এবং সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে এই পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারপারসন জেরমি পাওয়েল বুধবার সুদের হার বৃদ্ধির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাতে পারেন। গত বছরের ৮ বার সুদের হার বৃদ্ধির মতো আরেক দফা পদক্ষেপ নেবেন কি না সে সিদ্ধান্ত দেবেন।
জেরমি পাওয়েল ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, প্রত্যাশিত ত্রৈমাসিক শতাংশের চেয়ে বেশি হার বাড়াতে পারেন। কারণ, মুদ্রাস্ফীতি প্রত্যাশা অনুযায়ী হ্রাস পাচ্ছে না। অপরদিকে শ্রমবাজার শক্তিশালী রয়ে গেছে। তিনি সে ধারণা পোষণ করেছিলেন সিলিকন ভ্যালি এবং সিগন্যাচার ব্যাংক পতনের আগে।
গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার ফার্স্ট রিপাবলিকান ব্যাংক যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের ১১টি ব্যাংক থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলারের জরুরি ঋণ নিয়েছে, আর এটি করা হয়েছে বাইডেন প্রশাসনের মধ্যস্থতায়।
ফার্স্ট রিপাবলিকান ব্যাংক কর্তপক্ষ দাবি করেছে যে, ঘনঘন সুদের হার বৃদ্ধি করায় ব্যাংকের সম্পদের মূল্য কমেছে। এতে করে আমানতকারিরা ভয় পেয়ে যায় এবং একাউন্ট থেকে অর্থ সরিয়ে নেওয়ায় ব্যাংক পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়ে।
এদিকে, বাইডেনের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বারবার দাবি করছেন যে, ব্যাংকিং সেক্টর নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই কিন্তু অর্থনীতিবিদেরা দাবি করেন বাস্তবতা ভিন্ন। এর ফলে ছোট ও মাঝারি ধরনের সকল ব্যাংক থেকে গ্রাহকেরা আমানত উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সূত্র: বিডি প্রতিদিন