জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) ফেরাতে কমনওয়েলথ নেতাদের সহায়তা চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। একই সঙ্গে কমনওয়েলথের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য বৃদ্ধি, টিকা সহায়তা ও জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলায় কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।
কমনওয়েলথ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ভার্চ্যুয়াল এক বৈঠকে অংশ নেন ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বৈঠকে কমনওয়েলথ নেতারা বিপুল সংখ্যক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের আশ্রয় দেওয়ার সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন এবং ভাসানচরে তাদের আংশিক স্থানান্তরের বিষয়ে তুলে ধরেন। তিনি রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমার সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের সহায়তায় কমনওয়েলথ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড সংখ্যক ২৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ২১৮ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৯ জন।
রাজধানীতে ভর্তি রোগীদের মধ্যে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত হাসপাতালে ৫২ জন ও বেসরকারি হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে ১৬৬ জন।
এ নিয়ে সারাদেশের হাসপাতালে ভর্তি মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৬২ জন। মোট ভর্তি রোগীর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ৮২৮ এবং ঢাকার বাইরে ৩২ জন ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া চলতি মৌসুমে ডেঙ্গু সন্দেহে মারা যাওয়া চারজনের তথ্য পর্যালোচনার জন্য আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
অধিদফতর থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ (১ আগস্ট) পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশে মোট দুই হাজার ৮৯৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন দুই হাজার ২৯ জন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে নয়জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে তিনজন, মে মাসে ৪৩ জন, জুনে ২৭২ জন এবং জুলাইয়ে দুই হাজার ২৮৬ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। সূত্র: ইত্তেফাক
করোনার টিকা পাওয়া নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল, তা কিছুটা দূর হয়েছে। এর আগে যে পরিমাণ টিকা পাওয়া গেছে এবং যে পরিমাণ টিকা আসার পথে আছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় কম হলেও পরিস্থিতি এখন অপেক্ষাকৃত স্বস্তিদায়ক। বিশেষ করে জাপান থেকে অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা আসার পর প্রথম ডোজ নিয়ে যেসব মানুষ অপেক্ষা করেছিলেন, তাঁরা এখন দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারছেন।
অন্যদিকে টিকা দেওয়া নিয়ে শুরুতে অনেকের মধ্যে যে সংশয় ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল, তা-ও অনেকটা কেটে গেছে। টিকাকেন্দ্রগুলোয় বিপুলসংখ্যক মানুষের ভিড় প্রমাণ করে, তাঁরা টিকা নিতে আগ্রহী। কিন্তু সাধ আর সাধ্যের মধ্যে বিরাট ফারাক রয়ে গেছে। সরকার এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ টিকাকেন্দ্র করেছে, সেটি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এ কারণে বিভিন্ন টিকাকেন্দ্রে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। গতকাল একটি পত্রিকার পাতায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন হাসপাতালের ফটকে টিকাপ্রার্থী মানুষের দীর্ঘ সারির ছবি ছাপিয়েছে। এ ধরনের ভিড়ে কারও পক্ষে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব নয়। অনেকেরই টিকা নিতে এসে ফিরে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর প্রতিকার কী? প্রতিকার হলো অধিকসংখ্যক টিকাকেন্দ্র স্থাপন। অধিকসংখ্যক টিকাকেন্দ্র পরিচালনার জন্য অধিক লোকবলেরও প্রয়োজন হবে। কিন্তু সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ অজ্ঞাত কারণে ‘ধীরে চলা নীতি’ অনুসরণ করে চলেছে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় সারা দেশের শহরে ও গ্রামে ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী টিকাকেন্দ্র আছে। হাম-রুবেলা বা অন্য কোনো টিকার বিশেষ প্রচারণার সময় এসব কেন্দ্র থেকে এক দিনে প্রায় দুই কোটি শিশুকে টিকা দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত দেশে টিকা এসেছে ২ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ডোজ। ২৫ জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন ১ কোটি ২১ লাখ ৭০ হাজার ৪৪৫ জন। টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ৩৭২ জন। টিকার দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন ৪৩ লাখ ৫ হাজার ৯৬৫ জন। সে ক্ষেত্রে সরকারের প্রথম কর্তব্য হওয়া উচিত, প্রথম ডোজ পাওয়া ব্যক্তিদের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া। তাহলে করোনার টিকা কেন দিনে তিন লাখ ডোজ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলো? ভারতসহ যেসব দেশ অধিকসংখ্যক টিকা দিয়েছে, সেসব দেশে সংক্রমণের হার দ্রুত কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। অতএব, টিকা প্রদানে ধীরগতির কোনো যুক্তি আছে বলে মনে করি না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিনে ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে টিকা কর্মসূচির আওতায় আনতে হলে এই লক্ষ্যমাত্রা কমপক্ষে ১০ গুণ বাড়াতে হবে। দিনে কমপক্ষে ৩৫ লাখ মানুষকে টিকা দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে যোগ দিয়ে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনা যত দ্রুত কার্যকর করা যাবে, ততই মঙ্গল।
বিধিনিষেধের মধ্যেও করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বমুখী, মৃত্যু ও সংক্রমণের রেকর্ড হচ্ছে। এই অবস্থায় টিকা কর্মসূচি জোরদার করার বিকল্প নেই। সূত্র: প্রথম আলো