কুমিল্লার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত চিহ্নিত হয়েছে, তাকে শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, কুমিল্লার পূজা মণ্ডপে যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তাকে আমরা শনাক্ত করেছি। সে বার বার তার অবস্থান পরিবর্তন করছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাকে আমরা ধরে ফেলতে পারব।
মঙ্গলবার ‘র্যাবের প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন’ শীর্ষক কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
র্যাবের সব ব্যাটালিয়ন ও ক্যাম্প পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোত্তম ও সার্বিক ব্যবহার বিস্তৃত করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব সদর দফতরে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
যারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, উসকানি দিচ্ছেন, তাদের খুব শিগগিরই গ্রেফতার করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, আজ পর্যন্ত কোনো পূজা মণ্ডপে কোনো কিছু ঘটেনি। কিন্তু এবার দেখছি অপ্রীতিকর কিছু ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে কিছু উগ্র মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি উপাসনালয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে। সেখানে পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়েছে। সেখানে ৪ জন মারা গেছেন। আজ আরেকজন মেডিকেলে মারা গেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেন এই হত্যাকাণ্ড, কেন এই মৃত্যু; কার উদ্দেশ্য সফল হওয়ার জন্য এই মৃত্যু? আমরা দেখলাম পরিতোষ নামে এক অল্প বয়সী ছেলে ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দিয়েছে। সেটা কেন্দ্র করে সহিংসতা। আমাদের পুলিশ বাহিনী তার বাড়ি ঘর রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। তাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কিন্তু ইতোমধ্যে তার পাশের গ্রামে অগ্নি সংযোগ লুটপাট ভাঙচুর হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ বা জনকল্যাণমুখী প্রকল্প নিয়ে আসতে বলেছেন।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় সভাপতিতে তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মেগা প্রজেক্ট করা যাবে না, তবে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ প্রকল্প বা কল্যাণমুখী প্রকল্পে কোনো আপস করা যাবে না।’
একনেক সভাপতি শেখ হাসিনা যে কোনো বড় প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি দেশের সর্বত্র অনাবাদি জমি চিহ্নিত করে চাষের জন্য প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উৎপাদন বাড়াতে হবে। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’ উদ্ধৃতি দিয়ে মান্নান বলেন, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জেলা প্রশাসকদের সহায়তায় অনাবাদি জমি চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী চলমান বিশ্ব মন্দার মধ্যে সবাইকে মিতব্যয়ী হতে এবং অপচয় বন্ধ করতে বলেছেন। সূত্র : ইউএনবি
করোনা ঝুঁকির কারণে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ১৪ দিন চিকিৎসা শেষে আজ শুক্রবার বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের ছাড়পত্র পাওয়ার পর রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি। বিকাল সাড়ে ৫টায় হাসপাতাল থেকে বের হয়ে ৬টা পাঁচ মিনিটে বাসায় পৌঁছান তিনি।
মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদার হাসপাতাল কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, করোনার সংক্রমণ বাড়ার কারণে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রাখা যাচ্ছে না।
এখন তাঁর করোনা হলে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে চলে যাবেন। তাই পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল বোর্ড তাঁকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শাহাবুদ্দিন বলেন, খালেদা জিয়া এখনো অসুস্থ। তবে স্থিতিশীল আছেন। লিভার সিরোসিসের কারণে তিনি আবার রক্তক্ষরণের উচ্চঝুঁকিতে আছেন। তবে কিডনি জটিলতা কাটানো সম্ভব হয়েছে। এখনো তাঁর হৃদপিণ্ডে দুইটা ব্লক রয়ে গেছে।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া তীব্র বুকে ব্যথা নিয়ে গত ১০ জুন গভীর রাতে বসুন্ধরায় এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে দ্রুত এনজিওগ্রাম করে তার হৃদযন্ত্রে একটি স্টেন্ট বসানো হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান বলেন, আন্তর্জাতিক নির্দেশনা হলো যেই রক্তনালীর ব্লকের কারণে সমস্যা হচ্ছে ওইটা অপসারণ করে রোগীকে বাঁচানো। যাদের অন্য রক্তনারীর ব্লক অপসারণ না করলে মৃত্যুর ঝুঁকি আছে অথবা রোগীর কিডনি, লিভার বা হৃদযন্ত্রের অন্য কোনো সমস্যা নেই তাঁদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ব্লক অপসারণ করা হয়।
মেডিক্যাল বোর্ড সদস্য অধ্যাপক এএফএম সিদ্দিকী বলেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিরের ফলোআপ করা হয়নি ৬ মাসে। তাঁর আবার রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা আছে। প্রযুক্তিগত নানা সীমাবদ্ধতার কারণে তাঁর সুষ্ঠু চিকিৎসা এই দেশে সম্ভব নয়। সেটা বিশ্বের কিছু দেশে উন্নত সেন্টারে করতে পারলে ভালো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্য ডা. এ জে এম জাহিদ হোসেন, ডা. শেখ ফরিদ আহমেদ, ডা. মো. জাফর ইকবাল, ডা. আল মামুন এবং হাসপাতালের মেডিক্যাল প্রমোশন বিভাগের প্রধান বিনয় কাউল উপস্থিত ছিলেন। সূত্র: কালের কন্ঠ