সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২২ দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে চালু হচ্ছে গণপরিবহন। জানা গেছে, কাল ভোর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সব জেলায় বাস চালুর ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। এক্ষেত্রে আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।
এদিকে সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে- মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী গাড়িতে ওঠাতে পারবে না এবং গাড়ির স্টাফদের মালিক মাস্ক সরবরাহ করবেন। গাড়িতে সিটের অর্ধেক যাত্রী বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
লকডাউনে মালিক-শ্রমিকেরা অনেক কষ্টে জীবন-যাপন করছেন। এক্ষেত্রে রুট মালিক সমিতি ও পরিবহন কোম্পানির জিপির নামে কোনো ধরনের অর্থ গাড়ি থেকে আদায় করা যাবেনা বলে জনানো হয়।
দেশে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ঠেকাতে বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। আগামী সাত দিনের মধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মঙ্গলবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রিসভা বিভাগের সঙ্গে আলোচনার একদিন পর ওমিক্রন ঠেকাতে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমকে জানান মন্ত্রী।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কেবিনেটের সঙ্গে গতকাল মিটিং করেছি। বেশ কিছু পরামর্শ ও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এগুলো এখনো ফাইনাল না। কেবিনেট থেকে এগুলো ফাইনাল করা হবে। এর আগে যে আলোচনা হয়েছে, করোনাভাইরাস রুখতে হবে একারনেই এ সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, যানবাহনে মাস্ক ছাড়া চলাচল করা যাবে না। যারা চলাচল করবেন তাদের জরিমানার মধ্যে পড়তে হবে। পরিবহনের মধ্যে বাস থাকবে, ট্রেন থাকবে এবং লঞ্চ থাকবে এটা একটা সিদ্ধান্ত মোটামুটি হয়েছে। আমাদের প্রস্তাবনায় রয়েছে। তারপর বাস এবং অন্যান্য যানবাহনে যাত্রী অর্ধেক নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রেস্টুরেন্ট-হোটেল সেখানেও মাস্ক পড়ে যেতে হবে। মাস্ক ছাড়া গেলে দোকানদারসহ উভয়ের ফাইন হবে। দোকানের সময়সীমাও কমিয়ে আনা হয়েছে। রাত ৮টা পর্যন্ত ১০টার পরিবর্তে, এটাও প্রস্তাব করা হয়েছে। টিকা নেওয়ার জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে। রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে ভ্যাকসিন কার্ড অবশ্যই দেখাতে হবে।
স্কুল চলবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। সংক্রমন বেশি বৃদ্ধি পেলে স্কুলের বিষয় চিন্তাভাবনা করা হবে, এটাকে চালানো যাবে কিনা। এখনো আমরা সে সিদ্ধান্ত নেইনি, সে পরিস্থিতি এখনো বিরাজ করছে না।
তিনি বলেন, অনেকে জিজ্ঞেস করে লকডাউন দেওয়া হবে কিনা, পাশের দেশে তো দিয়েছে। আমরা এখনো সে চিন্তা করছি না। যদি পরিস্থিতি হাতের বাহিরে চলে যায়, সংক্রমন অনেক বৃদ্ধি পায় তাহলে লকডাউনের চিন্তা মাথায় আছে। পাশাপাশি আমাদের বর্ডারগুলো স্ক্রিনিং আরো জোরদার করা হয়েছে এবং কোয়ারেন্টিনে যারা থাকবে তারা যাতে বাহিরে ঘোরাফেরা না করে এজন্য পুলিশ পাহারা দেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টি দিতে বলা হয়েছে।
‘ডিসি এসপিদের বলা হয়েছে তারা এ নির্দেশ যখন পাবে তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করেন। আগে ১৫ দিন সময় দেয়ার কথা বলা হয়েছিলো কিন্তু আজ প্রপোজ করেছি ১৫ দিন নয় সাত দিন দেয়ার জন্য। এটা কেবিনেট সচিবকে বলা হয়েছে তিনিও একমত পোষণ করেছেন। এটা সাত দিন পরেই নির্দেশগুলো বাস্তবায়ন কার্যকর শুরু হবে।’
করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
জাহিদ মালেক বলেন, আপনারা জানেন যে পৃথিবীতে ওমিক্রন বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশের দেশেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও কিছু রোগী পাওয়া গেছে যারা ওমিক্রনে আক্রান্ত। আমরা লক্ষ্য করছি সপ্তাহখানেক যাবত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। গত ১০ দিন আগেও এটা ২০০ থেকে আড়াইশর মধ্যে ছিলো। গতকাল এটা পৌণে ৭শ হয়ে গেছে। যেভাবে বাড়ছে এটা আশঙ্কাজনক।’ সূত্র: যুগান্তর
আজ শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে দুইফেরিতে তাড়াহুড়ো করে উঠতে গিয়ে এখন পর্যন্ত ৭ জন নিহত এবং অর্ধশতাধিক আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। আজ বুধবার (১২ মে) শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার যাওয়ার পথে শাহ পরান ও এনায়েতপুরী নামের দুইটি ফেরিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এর আগে শিমুলিয়া- বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরিতে হুড়োহুড়িতে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছিল।
ঘাট ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ১০টার দিকে যাত্রী বোঝাই করে শিমুলিয়া ঘাট থেকে রো রো ফেরি শাহ-পরান ছেড়ে আসে। বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাবাজার ৩ নং ফেরি ঘাটে নোঙর করে ফেরিটি। এ সময় অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় নামার সময় তাড়াহুড়ো করায় এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
বুধবার ভোর থেকেই শিমুলিয়াঘাটে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়তে থাকে। কয়েক দফা বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হলেও ঠেকানো যাচ্ছিলো না মানুষের চাপ। শেষ পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিসি ঘাটে ফেরির সংখ্যা বাড়াতে বাধ্য হয়। এমনকি আজ বুধবার ১২ মে সকালে যাত্রীর চাপ কমাতে কয়েকটি লঞ্চ চলাচলের অনুমতিও দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঈদের বাকি আরো একদিন তাই যাত্রীদের তাড়াহুড়ো না করার অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসির) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) সাফায়েত আহমেদ বলেন ঘাটে এখন ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। এ নৌরুটে স্বাভাবিক ভাবেই ফেরি চলাচল করেছে।