পার্বত্য চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক অস্থিরতার ঘটনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত হিসেবে দেখছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঘটনাকে আমি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করি না। এর সঙ্গে অনেক কিছু জড়িত আছে। একদিকে শূন্যতার সুযোগ নেয়া, অন্যদিকে জিও পলিটিক্সে যে পরিবর্তন ঘটছে মিয়ানমারকে কেন্দ্র করে আশ-পাশের অঞ্চলে, ওইদিকে ভারতবর্ষের মনিপুরে যে বিদ্রোহ, এসবগুলোকে যদি আপনি আনেন, জিওপলিটিক্সের এই ঘটনাগুলো ভেরি সিগনিফিকেন্ট বলে আমি মনে করি। যেহেতু এখন কমেন্ট করাটা ঠিক হবে না।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে, একটা বিরাজনীতিকরণের প্রক্রিয়াকে শুরু করার চেষ্টা করা। অন্যদিকে শেখ হাসিনা পার্শ্ববর্তী দেশে থেকে যে সমস্ত কথা বলছেন, সেগুলো কতটুকু সত্য-মিথ্যা আমি জানি না। তবে সেই কথাগুলো এখানে বড় ইম্প্যাক্ট তৈরি করছে। বলা যায় যে, উদ্বিগ্ন হবার কারণ আছে। আর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সচিবালয়ে আনসার বাহিনীর ঘেরাও, বিভিন্ন সংগঠনের নানা দাবি-দাওয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মব লিঞ্চিং’, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার বিভিন্ন ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ উল্লেখ করে সরকারকে অস্থিতিশীল করতেই করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের অস্থিরতার প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, যেমন শুক্রবার মেইন ঘটনাটা ঘটছে। আমাদের দলে যিনি প্রেসিডেন্ট ছিলেন দীপেন দেওয়ান, উনি আগে এমপি প্রার্থী ছিলেন, তিনি আমাকে ফোন করে বললেন যে, স্যার ইমিডিয়েটলি কারফিউ দিতে বলেন, কারফিউ ছাড়া একে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। তখন আমি জানার পরে যাদেরকে চিনি, তাদেরকে জানানোর পরে কারফিউ হয়নি, ১৪৪ ধারা দিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে। ঠিক এফেক্টিভ কন্ট্রোল তারা করতে পারেনি, এর মধ্যে এটা (ঘটনা) বিস্তারলাভ করেছে। এই যে দেরি হচ্ছে, এই দেরিটা কিন্তু ক্ষতির ব্যাপার হচ্ছে। এটাতে আমি তাদেরকে (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) দোষারোপ করছি না। যারা দায়িত্বে আছেন, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারকে সঠিকভাবে পরামর্শ দেয়া, এটা করা উচিত। আমার কাছে মনে হয়েছে যে, এক্ষেত্রে অনেকটা গ্যাপ আছে। সমস্যাটা ওই জায়গায়।
তিনি বলেন, এই সরকার খুবই সিরিয়াস, তারা করতে চান, তারা সব কিছু করতে পারেন। আমার কথা হচ্ছে, আমরা সহযোগিতা করি। ইতিমধ্যে তারা অনেক বড় বড় কাজে হাত দিয়েছেন- সেগুলো আমরা দেখি। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে বিএনপির পরামর্শ কি জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, প্রধান প্রধান দলগুলোর সঙ্গে কথা বলতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিষয়ে হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামে তো আমাদের চুক্তি আছে, এতো দিন কোনো সমস্যা হয়নি। এখানে শুধু পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা তা নয়, সামাজিক সমস্যা আছে। দীর্ঘকাল ধরে এসব সমস্যা সমাধান করা হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার এতো কথা বলেছে, চুক্তি করেছে কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করেনি। এসব কাজ একদিনে হবে না, ওদের সঙ্গে বসতে হবে, কথা বলতে হবে, বিষয়গুলোকে আলাপ-আলোচনা করেই সমস্যা সমাধান করতে হবে। সূত্র: মানবজমিন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আইন অনুযায়ী খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার আবেদন মঞ্জুর করা যাচ্ছেনা। কারণ সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ আইনে নেই।
রবিবার (৯ মে) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার আবেদন পর্যালোচনা করে তিনি এসব কথা বলেন। গতকাল রবিবার সকালে মতামতের জন্য কপি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে।
খালেদা জিয়া গত ১০ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। গত ২৭ এপ্রিল তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গত সোমবার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়েছিল। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।
ভারতে কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে রাজধানীর কুড়িলে বিশাল এক বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৮টায় প্রগতি সরণির বসুন্ধরা গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত একটি সমাবেশে বলেন, ভারতের সুপ্রিমকোর্টে পবিত্র কোরআন শরিফ সংশোধনের দাবিতে মামলা দায়েরকারী ওয়াসিম রিজভিকে গ্রেফতার করা হোক। ওয়াসিম রিজভির ছবি পদদলিত করার পাশাপাশি পোস্টারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মতো বাংলাদেশেও বিক্ষোভ চলছে।
ভারতের উত্তরপ্রদেশ শিয়া ওয়াকফ বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান রিজভির অভিযোগ করে বলেন, কোরআন শরিফের ২৬টি আয়াতে নাকি সন্ত্রাসবাদকে উৎসাহিত করা হয়েছে। তাই সেগুলোকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।
ওয়াসিম রিজভির ওই আবেদন বাতিল চেয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা মাহমুদ দরিয়াবাদী।
তিনি বলেন, ‘বিগত ১৪০০ বছর ধরে পবিত্র কোরআন শরিফ অবিকৃত অবস্থায় রয়েছে। এই ঐশী গ্রন্থের একটি শব্দও পরিবর্তন করার অপচেষ্টা কেউ করেনি। কোরআন শরিফের কোনো আয়াতেই সহিংসতাকে সমর্থন করা না।
ভারতের শিয়া পার্সোনাল ল’ বোর্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে— কোরআনের প্রত্যেকটি আয়াত চিরন্তন সত্য। এর সত্যতা নিয়ে কোনো বিতর্ক চলতে পারে না। প্রখ্যাত শিয়া আলেম মাওলানা কালবে জাওয়াদ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘ভারতের আইনশৃঙ্খলা খারাপ করার জন্য এবং মুসলিমদের মনোযোগ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য ওই চেষ্টা নিন্দনীয়।
ওয়াসিম রিজভির বিরুদ্ধে অন্যসব বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআইয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে তিনি এই পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকতে পারেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।