পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভাসানচর নিয়ে আলজাজিরার প্রতিবেদনটি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশের প্রতি প্রতিহিংসা পরায়ন। গতকাল মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আলজাজিরার আসল উদ্দেশ্য মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা। উল্লেখ্য, সম্প্রতি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সাহায্য সংস্থাগুলো সতর্ক করেছে যে, ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুম সন্নিকটে, ভাসানচরে রোহিঙ্গারা তীব্র ঝড়ের কবলে পড়তে পারে এবং সেখানে খাদ্যসংকট দেখা দিতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেদনে কিছু লোকের সাক্ষাত্কার নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের মুখ ঢাকা ছিল। মিথ্যা সংবাদ প্রচারই তাদের উদ্দেশ্য। তাই এসব বিষয়ে কিছু বলার নেই।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ভাসানচর সরেজমিনে ঘুরে আসা জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারকে প্রাথমিক একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। যেখানে তারা সেখানকার ব্যবস্থাপনা ইতিবাচক উল্লেখ করেছে। ভাসানচর আশপাশের দ্বীপগুলোর চেয়ে বেশি নিরাপদ।
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একের পর এক আচরণবিধি ভঙ্গের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্থানীয় মন্ত্রী ও প্রার্থীর একাধিকার আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরপরও আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই যাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব ঘটনায় বিব্রত কমিশন ফের আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমতউল্লাকে নির্বাচন কমিশনে তলব করেছে।
আজ রবিবার বেলা ৩টায় সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী দুই দফা আচরণবিধি তিনি ভঙ্গ করেছেন বলে গণমাধ্যমের ফুটেজ দেখে আমাদের প্রতীয়মান হয়েছে। সেজন্য তাকে আমরা নির্বাচন ভবনে উপস্থিত হয়ে কারণ দর্শাতে বলেছি। এক্ষেত্রে তিনি যদি সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেন, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। আর যদি না দিতে পারেন, তবে কিছু না কিছু শাস্তি তো হবেই। কী শাস্তি হবে তা নির্ভর করবে অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায়। তিরস্কার যেমন শাস্তি তেমনি জেল-জরিমানা এবং প্রার্থিতা বাতিলের বিধানও আছে আইনে।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন পাঁচ সিটির ভোট সুষ্ঠু করতে বেশ তৎপর নির্বাচন কমিশন। জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত এই ভোটে বিএনপি অংশ না নিলেও ভোটকে সুষ্ঠু করার জন্য কোনো কমতি নেই কমিশনের।
ইতিমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় পার্টি-জাপার মহাসচিব বরাবর আচরণবিধি প্রতিপালনে সহযোগিতা চাওয়া হয়। কিন্তু পাঁচ সিটির আগে অনুষ্ঠিত গাজীপুরে বিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিধি ভঙ্গের কারণে গত ৩০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে সতর্ক করেছিল ইসি। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ইসিতে তলব করা হয়। এরপরও আরেকদফা বিধিভঙ্গ করেন সংশ্লিষ্ট তিন জনই।
গত বৃহস্পতিবার ছুটি রিসোর্টে গাজীপুর বাড়ীয়া ইউনিয়নের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। ঐ সভায় মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমতউল্লা অংশ নেন। নৌকার প্রার্থীর পক্ষে সংশ্লিষ্টরা প্রকাশ্যে ভোট প্রার্থনা করেন। ঐ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে জরুরি বৈঠকে আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য আজমত উল্লা খানকে ফের তলবের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ইসি।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল সভা করে নৌকার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেছেন; যেখানে প্রার্থী নিজে উপস্থিত ছিলেন। এটি সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) ২০১৬ বিধি-৫-এর পরিপন্থি বলে জানিয়েছে ইসি। এজন্য বিধির ৩২ ধারা অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিলের সুযোগ রয়েছে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠান। একান্ত সচিবের মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে পুনরায় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে সতর্ক করা হয়েছে। সূত্র: ই্ত্তেফাক
জীবনে কখনো ভাবিনি যে ছোট বেলার স্বপ্নের কোম্পানি গুগল থেকে আমার ইন্টারভিউ এর জন্য অফার আসবে আর আমাকে তা ফিরিয়ে দিতে হবে। তার পিছে কারনও ছিলো অবশ্য, সেটা পরেই বলি।
আমার শৈশব কাটে সাতক্ষীরাতে। বাবা মা ছিলেন চাকরিজীবি। স্কুল জীবনে কখনো তেমন আহামরি ভালো স্টুডেন্ট ছিলাম না। তৃতীয় শ্রেনীতে যখন সাতক্ষীরা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হয় তখন ক্লাসের শেষ ছেলেটি ছিলাম আমি, রোল ছিলো ৫৭। এবং পরের শ্রেনীগুলোতেও এই অবস্থার তেমন উন্নতি হয় নাই।
একটি মধ্যবিত্ত একান্নবর্তী পরিবারের সব থেকে বড় অভিবাবক হওয়ার কারনে বাবা-মার অনেক দায়িত্ব ছিলো, যে কারনে আমার প্রতি কখনো এক্সপেক্টেশন রাখতেন না। আমার যেদিকে ইচ্ছে ওইদিকেই লাইফ গোল সেট করার স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। যেই বিষয় আমার ভালো লাগতো, কেবল ওই বিষয়টাই বেশি পড়তাম সবসময়। যে কারনে একটা বিষয়ে ভালো ফলাফল আসলেও বাকিগুলোতে টেনেটুনে কেবল থার্ড টার্ম পরীক্ষায় পাস করেও পরের ক্লাসে উঠছি এমন অনেকবার ঘটেছে। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞান এবং টেকনোলজির প্রতি আগ্রহ আমার খুব বেশি ছিল। এখনও মনে আছে ক্লাস সিক্সে একবার একটি টেলিফোন বানিয়েছিলাম নিজের পেট প্রোজেক্ট হিসেবে। এইভাবেই কাটে স্কুল জীবন।
কলেজে উঠে প্রথম কম্পিউটার পাই। কলেজ প্রথম বর্ষে বন্ধু শুভর কাছ থেকে পাওয়া “নিটনের সি” বইটি দেখে কিছু বেসিক প্রোগ্রাম লিখছিলাম। তখন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন বুনতে শুরু করি। এবং মাইক্রোসফট, গুগলের মত কোম্পানিগুলোতে কোটি মানুষের জীবন সহজ করার সফটওয়্যার বানানোর দিবাস্বপ্ন দেখতে থাকতাম।
কলেজ শেষে এইচএসসি-তে রেজাল্ট তেমন ভাল হল না। বুয়েটের ফর্ম তুলতে পারলাম না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলেও মা জোর করলে রুয়েট, কুয়েটের ফর্ম তুলি। ভাগ্যক্রমে রুয়েটে স্বপ্নের ডিপার্টমেন্ট কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ার সুযোগ পেলাম। রুয়েট জীবন নিয়ে গল্প বলতে গেলে কয়েক রাত পার করে দেয়া যাবে। ডিপার্টমেন্টে আমি খুবই ভাল একটা ফ্রেন্ড সার্কেল পাই, যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী বন্ধু পাই।
পাশাপাশি হল লাইফটাও ইঞ্জয় করতে থাকি। রুয়েট লাইফটা জুনিয়র, সিনিয়র, ক্লাসমেটদের জন্যই মূলত আনন্দমুখর ছিলো। সেলিম হল, হামিদ হল, টিনশেড হলে থাকার মুহূর্তগুলো ছিল অবিস্মরণীয়। বিশেষ করে সন্ধ্যায় কারেন্ট চলে গেলেই টিনশেড হলের মাঝে গোল চত্বরে বসে সবাই মিলে বসে গান, মাঝে মধ্যে বাস্কেটবল গ্রাউন্ডে গিটার বাজানো, রাতে ১৫-২০ জন মিলে রাজশাহীর গলিতে গলিতে ঘুরে গান গাওয়া আজও মিস করি।
রুয়েট এসে সিনিয়রদের কাছ থেকে কমপিটেটিভ প্রোগ্রামিং-এর সাথে পরিচয় ঘটে। প্রোগ্রামিং করতে গিয়ে খেয়াল করলাম গণিতে আমার ব্যাসিক খুবই দুর্বল। সে সময় ক্লাস ৯-১০ এর গণিত বই থেকে শুরু করলাম। রুয়েটে আমাদের প্রোগ্রামিং এর জন্য তেমন সুবিধা ছিলনা। একটা অ্যালগরিদম শিখতে দেখা যেত ২-৩ সপ্তাহ লাগতো। এরপর আমরা একজন শিখে আরেকজনকে সেটা শেখাতাম। সে সময়টা প্রোগ্রামিং শেখার জন্য বেশ কষ্ট করতে হয়েছিল। অনেকবার এমনও হয়েছে যে নিজের টাকা দিয়ে প্রোগ্রামিং কনটেস্ট করতে গেছি আমরা যেখানে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি সব টীমগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই অর্থায়ন করে কনটেস্টে পাঠানো হতো।
মনে পড়ে আমাদের অ্যালগরিদম চর্চা করার কোন জায়গা না থাকায় রুয়েট প্লে-গ্রাউন্ডে বসে জুনিয়রদের সাথে হোয়াইট বোর্ড নিয়ে এক সাথে আলোচনা করার কথা। অনেক প্রচেষ্টার পর ফোর্থ ইয়ারে এসে আমাদের সবার এত বছরের চেষ্টা দেখে হেড স্যার আমাদের একটা ল্যাব দেন চর্চা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি ল্যাবের নাম দেন এনালাইটিক্যাল প্রোগ্রামিং ল্যাব। এটা হয়ে উঠেছিলো আমাদের প্রোগ্রামিং হাব।
রাজশাহীর গরমে মশার কামড় খেয়ে এই ল্যাবে জুনিয়রদের সাথে সারা রাত জেগে প্রোগ্রামিং করে ভোরবেলা তালাইমারী যেয়ে এক কাপ চা খাওয়ার স্মৃতিগুলো মনে পড়লে এখনও মুখের কোণে একটা হাসি চলে আসে। এই ল্যাবেই আমরা অনেক রকম অ্যাক্টিভিটি করতাম, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো “জ্ঞান-jam” নামক কনটেস্টটি। প্রতিবছর বিদায়ী ব্যাচের দায়িত্ব থাকে বিদায়ের আগে একটা “জ্ঞান-jam” আয়োজন করা। ভাবলেই খুবই গর্ব হয় যে সেই সংষ্কৃতিটা জুনিয়ররা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রোগ্রামিং এর পাশাপাশি আমরা RUET জীবনটা আরও মজার করার জন্য বেশ কয়েকটি সংগঠন বানাই সবাই মিলেই। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো Science and Astronomy Society of RUET (ASSR), চিরকুমার সংঘ, সমানুপাতিক, প্রচেষ্টা সহ বেশ কিছু সংগঠন।
আমি রুয়েটে এসে নিজস্ব "Reason to Live" নামের একটি লিস্ট তৈরি করি। কেও আমাকে কোন কিছু পারবো না এমন কিছু বললে আমি সেটা লিখে রাখতাম। যদি কখনও ভুল প্রমান করতে পারি এটা ভেবে। আলহামদুলিল্লাহ বেশ অনেকগুলোই ভুল প্রমান করতে পেরেছি। ফোর্থ ইয়ারে উঠে একবার একটা কনটেস্টে একটা প্রবলেমও সল্ভ করতে পারল না আমাদের টিম, আমরা খুবই লজ্জায় পড়ে যাই।
ডিপার্টমেন্টের এক শিক্ষিকা ক্লাসে সবার সামনে অপমান করে বলছিলেন, “রুয়েট থেকে কখনও কেও গুগল মাইক্রোসফটে চাকরি পাবে না। তাই পড়াশোনায় মনোযোগ দাও”। কথাটা খুবই গাঁয়ে লেগেছিলো। সেটা শোনার পর আমার এক বন্ধু রবিকে বলেছিলাম শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করবো আমি মাইক্রোসফট বা গুগলে যাওয়ার জন্য।
ক্যারিয়ারের শুরুটা হয় শেষ সেমিস্টার শুরুর ঠিক এক সপ্তাহ আগে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জব ফেয়ারে সেলিস রকিং সফটওয়্যার কোম্পানিতে চাকরি পাই। জীবনের মোড়টা ঘুরে সুইডেনের অ্যাডফেনিক্স এবি নামক স্টার্টআপে চাকরির মাধ্যমে। প্রথমে দেশ ছাড়া লাগবে ভেবে রিজেক্ট করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু সবার পরামর্শে এক্সেপ্ট করি। একটু ভ্রমণপিপাসু হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরে চাকরি অফার আসলেও ইউরোপকেই বেছে নিয়েছিলাম। এরপর সুইডেনের সনামধন্য ন্যাসডাক কোম্পানিতে চাকরি পাই। এর মাঝেই ২৩ মার্চ,২০১৮ তে ডাক আসে স্বপ্নের কোম্পানি থেকে। ফোনে যখন বলল মাইক্রোসফট কোম্পানি থেকে বলছেন, আমি ভেবেছি আমি হয়তো ভুল শুনেছি। বিশ্বাস হচ্ছিল না, উত্তেজনায় জিজ্ঞাস করে বসি,"তুমি সিরিয়াসলি মাইক্রোসফট থেকে বলছো?" চাকরি পাওয়ার খবর জানাতে ফোন দেই মা-বাবাকে। মা-বাবাকে চাকরির খবর দেয়ার পর খেয়াল করলাম আমার চোখে পানি চলে এসেছে। জীবনের এতো সময় পর আমি প্রথম বুঝতে পারলাম এটাই আনন্দের অশ্রু। অবশেষে ডেনমার্কে এসে জয়েন করি স্বপ্নের কোম্পানিতে। দিনটি ছিল ঈদের দিন। আমার জীবনের বেস্ট ঈদ। ইনফ্যাক্ট বেস্ট মোমেন্ট।
এবার আসি কেন আর একটা স্বপ্নের কোম্পানির ইনটারভিউ অফার আমাকে রিজেক্ট করতে হলো। মাইক্রোসফটে জব হওয়ার ঠিক তিন মাসের মধ্যেই গুগল থেকেও ইন্টারভিউ-এর ডাক আসে। কিন্তু কেবলই মাইক্রোসফটে জয়েন করার কারণে গুগলে আর ইন্টারভিউ দেয়া হয়নি। রিক্রুটারের সাথে এখনও মাঝে মধ্যে কনট্যাক্ট হলেও মাইক্রোসফট ছাড়ার মন এখনও হয় নাই।
আমির খানের থ্রি ইডিয়টস মুভিটা আমার খুবই প্রিয় একটা মুভি। এই মুভিতে যেমনটা দেখেছিলাম, আমি খুব করে চাইতাম এমন কিছু যেন আমার সাথেও হয়। এখন নিজের পছন্দের কাজ করছি, পৃথিবীর অন্যতম সেরা সফটওয়্যার কোম্পানিতে। বিকাল ৫টা পর্যন্ত অফিস থাকলেও অনেক সময়েই আমি রাত ৯টা পর্যন্ত অফিস করি। আমার কাজ আমার এতো প্রিয় বলেই হয়ত টের পাইনা সময় কখন চলে যাচ্ছে। বছর খানেক আগে ডেনমার্কে একটি শিক্ষক সেমিনার আয়োজন করে মাইক্রোসফট যেখানে আমাকে একটা টক দেয়া লাগছিলো। আমি সেখানে গিয়ে রুয়েটে আমার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করি। কিভাবে রুয়েটে RAPL, ASSR এর মত শিক্ষণীয় সংগঠনগুলো তৈরি করেছিলাম আমরা। সবাই বেশ মুগ্ধ হয়ে আমাদের কাহিনীগুলো শুনেছিলেন।
অন্য সবার মতই রুয়েটে থাকা অবস্থায় অনেক সময় নিজের মধ্যে হতাশা কাজ করত। মনে হত, যদি আশে পাশে কোন নিদর্শন থাকতো যাকে দেখলে মনে হতো যে আমরাও পারবো। সে সময়ে সামাদ ভাই, মুফতি ভাই, রিফাত ভাই, মেরিন ভাই সহ বেশ অনেকে ছিলেন যাদের অনুপ্রেরণায় নিজেকে অনেক বড় জায়গায় কল্পনা করতে পারতাম। এক-একজন মানুষের কাছে সফলতার মাপকাঠি এক-একরকম। প্রতিটা মানুষ তার নিজের মত করে সফল হয়। আমার মতে আমার মত below average একটা ছাত্রের মাইক্রোসফটে আসাকে যদি সত্যিই সফলতা মনে হয়ে থাকে, তাহলে আমি বলবো রুয়েটে প্রতিটা স্টুডেন্ট এর এই পটেনশিয়াল আছে।
আবু আসিফ খান চৌধুরী: সিএসসি, ১০ম ব্যাচ, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার, মাইক্রোসফট ডেভেলপমেন্ট কোপেনহেগেন