প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা হেফাজতের তান্ডবের চিত্র জাতীয় সংসদে তুলে ধরে বলেছেন, হেফাজত আগুন নিয়ে খেলছে। এক ঘরে আগুন লাগলে সেই আগুন অন্য ঘরেও চলে যেতে পারে। সেটা কি আপনাদের হিসেবে নেই। তিনি বলেন, একজন মুসলমানের দায়িত্ব আরেকজন মুসলমানের জানমাল হেফাজত ও রক্ষা করা। কিন্তু হেফাজতের নামে তারা জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছেন। পবিত্র ইসলাম ধর্মকে তারা ছোট করে দিচ্ছেন। কিছু লোকের জন্য এই ধর্মে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের নাম জুড়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এসব বরদাস্ত করা হবে না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদের সংক্ষিপ্ত দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি হেফাজতে ইসলামের তান্ডবের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, তাদের কারণে ২৬ মার্চ অনেক মানুষের জীবন গেছে, এর জন্য দায়ী তো তারা। আর বিএনপি-জামায়াত তাদের মদদ দিচ্ছে। এই লজ্জা শুধু বাংলাদেশের জনগণের না, এই লজ্জা পৃথিবীর সব মুসলমানের।
শেখ হাসিনা বলেন, এরা ধর্মের নামে ব্যবসা শুরু করেছে। এদের এত অর্থ কোথা থেকে আসে? এই বিনোদনের টাকা কোথা থেকে আসে সেটাও একটা প্রশ্ন। হেফাজতের কর্মকান্ড জনগণ দেখেছে। এর বিচার দেশবাসী করবে। আর আইন তার আপন গতিতে চলবে।
সংসদ নেতা বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। পবিত্র ধর্মকে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট করে দিচ্ছে তারা। তাদের কর্মকান্ডের জন্য বহু মানুষের জীবন গেছে। ২৬ মার্চ অনেক মানুষের জীবন গেছে। এর জন্য দায়ী তো তারা। আমি শুধু এইটুকু বলব, দেশবাসী যেন একটু ধৈর্য ধরেন। আমার কাছে বিস্তারিত তথ্য আছে। আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধরেই এগোতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছি, সেই সময় যে ঘটনাগুলো ঘটানো হলো এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় যেসময় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি ঠিক সেই সময়, হ্যাঁ আমাদের অনেক বিদেশি অতিথি আসছে। অনেকে বার্তা দিচ্ছেন। ব্রিটেনের রানী থেকে শুরু করে সৌদি বাদশা সবার বার্তা আমরা পাচ্ছি। এত বড় একটা সম্মান বাংলাদেশ পাচ্ছে। সেখানে কারা খুশি হতে পারে নাই?
২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসার কথা। তাকে আসতে দেওয়া যাবে না, বাধা দেওয়া হলো কেন? হেফাজতের প্রতি প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম কর্মসূচি দেয়, তারা কি দেওবন্দে যায় না শিক্ষা গ্রহণ করতে? তারা যদি এ সমস্ত ঘটনা ঘটায় তবে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে দেওবন্দে যাবে কীভাবে সেটা কি তারা একবারও চিন্তা করেছে। আমরা তো কওমি মাদরাসায় সনদ দিচ্ছি। তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। তাদের কারিকুলাম ঠিক করে দিচ্ছি। যাতে তারা দেশে-বিদেশে চাকরি পায়, তার ব্যবস্থাও করে দিচ্ছি। তারপরেও কেন তারা এই তান্ডব ঘটাল?
প্রথমে বিএনপি তাদেরকে সমর্থন দিচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত জোট কীভাবে সমর্থন দিচ্ছে সেটাই আমার প্রশ্ন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি আসবেন সেখানে তাদের আপত্তি। তিনি বলেন, আমার খুব অবাক লাগে বিএনপির কর্মকান্ড দেখে। প্রথমে খুব আপত্তি হেফাজতের সঙ্গে যত রকমের মদদ দেওয়া এবং জ্বালাও পোড়াও করার যে পরামর্শ সেটাও তারা দিয়েছে।
পরবর্তীতে যখন দিয়েছিলেন তখন আবার তারা সমর্থন দেয় এদের রাজনৈতিক কোনো আদর্শ নেই। কোনো আদর্শ নিয়ে তারা চলে না। বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালের ২১ মে রাজিব গান্ধী মৃত্যুবরণ করেন। তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আমরা যোগদান করেছিলাম তখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। তখন বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে প্রায় সবাই এসেছিলেন। আমেরিকা থেকে, ব্রিটেনের প্রিন্স চার্লস, ইয়াসির আরাফাতসহ সবাই উপস্থিত।
ইয়াসির আরাফাত সাহেব বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেখে হ্যান্ডশেক করার জন্য হাত বাড়ালেন খালেদা জিয়া হাত গুটিয়ে বসে থাকলেন। কিন্তু সেই খালেদা জিয়াকে দেখলাম নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে হ্যান্ডশেক করার ছবি। সেই হাত যেন আর ছাড়ে না। শুধু তাই না তার সঙ্গে টেলিফোনে তার যে সেই খিলখিল হাসি। তার যে হাসির আওয়াজ সেটাও তো সবার কানে গেছে। আবার যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মোদি সাহেব আসবেন তখন বাধা দেওয়া হয় এবং হেফাজতের সঙ্গে হাত মেলাল কেন? কী ঘটনা ঘটিয়েছে তারা?
তিনি বলেন, যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করি তখন শুরু করল হেফাজতের তান্ডব। হেফাজত তো একা নয় হেফাজতের সঙ্গে জামায়াত-বিএনপিও জড়িত। তাদের প্রত্যেকটা কর্মকান্ডে দেখা যায়। হেফাজতের সবাই যে এর মধ্যে জড়িত তাও কিন্তু না। এটাও বাস্তবতা। তারপরেও দেখেছি ২৬ মার্চ হেফাজত একটা গুজব ছড়াল। কী বায়তুল মোকাররমে মানুষ মারা হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। তারা ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে সহিংসতা চালায় এবং ২৭ ও ২৮ মার্চ হেফাজত এবং বিএনপি-জামায়াতের বিবৃতি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিক অংশ।
২৮ মার্চ হরতাল দিয়ে সারা দেশে পরিকল্পিতভাবে তারা তান্ডব চালায়। আওয়ামী লীগ অফিস, দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘর, সরকারি অফিস আদালত, পরিবহনে হামলা ও ভাঙচুর এবং পোড়ানো হয়। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়ি ঘর বেছে বেছে পোড়ানো হয়। তারা ছোট শিশুদের সামনে নিয়ে এসেছে। তাদের হাতে লাঠি অস্ত্র এবং সবার ব্যাগের ভিতরে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোরআন শরিফ পুড়িয়ে দিয়েছে। কী ধর্মে বিশ্বাস করে যে তারা কোরআন শরিফ পর্যন্ত পোড়ায়। ইসলাম তো শান্তির ধর্ম। ইসলাম ধর্মের নামে এই জ্বালাও পোড়াও এটা কীভাবে আসল।
২০১৩ সালে দেখেছি বিএনপি-জামায়াত কীভাবে চলন্ত গাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে। কোনো কিছু হলেই আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বাসায় আগুন দেওয়া। আগুন নিয়ে খেলছে তারা। এক ঘরে আগুন লাগলে তো সেই আগুন অন্য ঘরেও চলে যেতে পারে। সেটা কি তাদের হিসেবে নেই। রেলস্টেশন, ভূমি অফিস, ডিসি অফিস সব জায়গায় তারা আগুন দিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের বাড়িঘর সেগুলোতে যদি আগুন লাগে তখন তারা কী করবে? জনগণ কি শুধু বসে বসে এগুলো সহ্য করবে?
প্রধানমন্ত্রী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণার কথা উল্লেখ করে বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। আজই (রবিবার) আমি প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেছি। হয়তো মানুষের একটু কষ্ট হবে। কিন্তু মানুষের জীবনটা তো আগে। আগে জীবনটা বাঁচাতে হবে। তিনি বলেন, সবকিছু আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা প্রথমে এক সপ্তাহের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরতে হবে, সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। আমরা টিকার দ্বিতীয় ডোজ শুরু করব। আরও টিকা আনা হবে, টিকা আনার ব্যবস্থা করব।
পার্লারকর্মী নারীকে নিয়ে বিনোদন হেফাজত নেতা মামুনুলের : হেফাজত নেতা মামুনুল হকের একজন পার্লারকর্মী নারীকে নিয়ে সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে বিনোদন করার ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতকালই (শনিবার) আপনারা দেখেছেন। রিসোর্টে নারী নিয়ে অবস্থান এবং সেখানে হেফাজতের ভাঙচুরের ঘটনা। এদের চরিত্রটা কী তা বলতে চাই না। ধর্ম ও পবিত্রতার কথা বলে অপবিত্র কাজ করে ধরা পড়ে।
সোনারগাঁয়ে রিসোর্টে হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ধরা পড়ল। তা ঢাকার জন্য নানা রকম চেষ্টা করেছে তারা (হেফাজত)। ওই নারীকে মামুনুল হক বউ হিসেবে পরিচয় দেয়। আবার নিজের বউয়ের কাছে বলে অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমি এটা বলেছি, মানে এই পরিচয় দিয়েছে। যারা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে তারা এরকম মিথ্যা কথা বলতে পারে, অসত্য কথা বলতে পারে? তারা কী ধর্ম পালন করবে, মানুষকে কী ধর্ম শেখাবে? কয়েক দিন আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে, এখন সুন্দরী নারী নিয়ে বিনোদন করতে গেলেন! ইসলাম পবিত্র ধর্ম, সেই পবিত্র ধর্মকে এরা কলুষিত করছে। বিনোদনের এসব অর্থ আসে কোথা থেকে? সূত্র:বিডিপ্রতিদিন
বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। বুধবার (৩০ জুন) বিধিনিষেধ আরোপ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এ সময়ে জরুরি সেবা দেয়া দফতর-সংস্থা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস, যন্ত্রচালিত যানবাহন, শপিংমল-দোকানপাট বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে শিল্প-কারখানা, জনসমাবেশ হয় এমন কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না এই সময়ে।
বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে করোনাভাইরাসজনিত রোগ (কোভিড-১৯) সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ২১টি শর্ত যুক্ত করে ১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সকাল ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ হয়েছে বলে জানানো হয়।
শর্তসমূহঃ
১. সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
২. সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন (অভ্যন্তরীণ বিমানসহ) ও সকল প্রকার যন্ত্রচালিত যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
৩. শপিংমল/মার্কেটসহ সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
৪. সকল পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৫. জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক (বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান-ওয়ালিমা, জন্মদিন, পিকনিক, পার্টি ইত্যাদি), রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
৬. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৭. ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
৮. আইনশৃঙ্খলা এবং জরুরি পরিষেবা, যেমন- কৃষি পণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি ইত্যাদি), খাদ্যশস্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, কোভিড-১৯ টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সম্পর্কিত কার্যাবলি, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস/জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন ও ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।
৯. পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/লরি/কাভার্ড ভ্যান/কার্গো ভেসেল এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
১০. বন্দরসমূহ (বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল) এবং তৎসংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ এ নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
১১. শিল্প-কারখানাসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালু থাকবে।
১২. কাঁচাবাজার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠন/বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
১৩. অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না। নির্দেশনা অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
১৪. টিকা কার্ড প্রদর্শন সাপেক্ষে টিকা গ্রহণের জন্য যাতায়াত করা যাবে।
১৫. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খাবার বিক্রয় (অনলাইন/টেকওয়ে) করতে পারবে।
১৬. আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকবে এবং বিদেশগামী যাত্রীরা তাদের আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট প্রদর্শন করে গাড়ি ব্যবহারপূর্বক যাতায়াত করতে পারবে।
১৭. স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদে নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দেবে।
১৮. ‘আর্মি ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ বিধানের আওতায় মাঠ পর্যায়ে কার্যকর টহল নিশ্চিত করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ প্রয়োজনীয় সংখ্যক সেনা মোতায়েন করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় সেনা কমান্ডারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।
১৯. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেলা পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভা করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও আনসার নিয়োগ ও টহলের অধিক্ষেত্র, পদ্ধতি ও সময় নির্ধারণ করবেন। সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে বিশেষ কোন কার্যক্রমের প্রয়োজন হলে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিবেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ এ বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
২০. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
২১. স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক তার পক্ষে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয় ক্ষমতা প্রদান করবেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় এর আগে গত ২৮ জুন থেকে তিন দিনের সীমিত বিধিনিষেধ দেয় সরকার। সেই বিধিনিষেধের মেয়াদ আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় শেষ হবে।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ৫১ জন। এ নিয়ে করোনাভাইরাসে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ২৭ হাজার ৫৮ জন।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে শনাক্ত হয়েছে ১,৯০১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৪১ জন।
আজ বুধবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আরও জানানো হয়, গত ১ দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৩,৮৭৩ জন করোনারোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৫৪১ জন।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮ হাজার ৬১৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ।