৮৫ বছরের বয়োবৃদ্ধা ১৫ সন্তানের জননী জোহরা বিবি ৩৬ বছর যাবৎ ভাত না খেয়েই বেঁচে আছেন। সাতক্ষীরা জেলা শহরতলী কুখরালী গ্রামের ওই বৃদ্ধা এখনো দিব্যি সুস্থ রয়েছেন। ভাত না খাওয়ার বিষয়ে জোহারা বিবি বলেন, ‘আমার আব্বা মান্দার মোড়ল ভারতের বশিরহাট থানার মেজ দারোগা ছিল।
সাকচুড়া আমাদের গ্রামের নাম। ছোট বেলায় আব্বা আমারে মোড়ল পরিবারে বিয়ে দেয়। আমার বয়স যখন তের বছর তখন আমার বড় ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলের বয়স এখন ৭১ বছর। আল্লাহ আমার ১৫ জন সন্তান দিয়েছে। আমার দুই জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে মারা গেছে। আল্লাহর রহমতে ১০ জন সন্তান জীবিত আছে, সাত জন ছেলে ও তিন জন মেয়ে।’
জোহারা বিবি আরো বলেন, ‘আমার ছোট ছেলের জন্মের দুই তিন বছর পর আমার পেটে অনেক ব্যথা যন্ত্রণা হত। ছেলেরা বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পেট কাটতে হবে জানায়। কিন্তু আমি তো পেট কাটবো না। পেটের যন্ত্রণায় আমার খাওয়া কমে যায়। তখন আমি শাকসবজি, তরিতরকারি আর মুড়ি খেতাম। এর পর থেকে আমার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়।’
‘এরপর থেকে আমি আর কখনো ভাত খায়নি। এখন সকালে বিস্কুট আর চা, দুপুরে মুড়ি ভিজিয়ে তরিতরকারি দিয়ে খায়, কখন কখন অল্প মাছ ও মাংস খাই, আর রাতে বিস্কুট আর চা খাই। আমি চশমা ছাড়া কোরআন শরিফ পড়তে পারি, তবে চশমা পড়লে ভাল হয়। শরিল (শরীর) আর আগের মত নেই, আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে, বয়স হচ্ছে তো’- বলেও উল্লেখ করেন জোহারা বিবি।
এ বিষয়ে জোহরা বিবির বড় ছেলে নুর ইসলাম মোড়ল জানান, মার ছোট বেলা থেকে পেটে একটু ব্যথা যন্ত্রণা ছিল। ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে পেটের যন্ত্রণা বৃদ্ধি পেলে আমরা মাকে ডাক্তারের কাছে নিলে ডাক্তার জানায় টিউমার হয়েছে অপারেশন করতে হবে। কিন্তু মা অপারেশন করবে না। ডাক্তারের ওষুধ খায় আর মা ভাত খাওয়া বাদ দেয় এতে মার পেটের যন্ত্রণা ধীরে ধীরে কমে যায়।
নুর ইসলাম মোড়লে বলেন, ‘১৯৮৫ সালের পর থেকে মা আর ভাত খায়নি। মা ভাত না খাওয়ায় প্রথমে আমরা অনেক চিন্তিত ছিলাম কিন্তু মা সুস্থ থাকায় আমাদের চিন্তা দূর হয়। তারপর থেকে মা যা খেতে চায় তা খাওয়ানোর চেষ্টা করি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি মা সুস্থ থেকে বাকী জীবন পার করতে পারে।’
দেশের শিল্প খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ৪৮ ব্যক্তিকে ‘বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ’ ব্যক্তি হিসেবে (সিআইপি-শিল্প) নির্বাচিত করেছে সরকার। ২০১৭ সালের জন্য মনোনীত এসব সিআইপিরা এক বছরের জন্য পরিচয়পত্র পাবেন, যা দিয়ে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবেন। বুধবার (১৩ নভেম্বর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
আগামী ২০ নভেম্বর রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সিআইপি সম্মাননা দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এবং এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদের ৬ জনসহ আটটি ক্যাটাগরিতে ৪২ জন সিআইপি সম্মাননা পাবেন। ২০১৭ সালের জন্য মনোনীত এসব সিআইপি এক বছরের জন্য পরিচয়পত্র পাবেন, যা দিয়ে বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিতে পারবেন।
জাতীয় শিল্প উন্নয়ন পরিষদ (এনসিআইডি) ক্যাটাগরিতে সিআইপি (শিল্প) নির্বাচিত হয়েছেন ৬ জন, বৃহৎ শিল্প (উৎপাদন) খাতে সিআইপি হয়েছেন ১৫ জন, বৃহৎ শিল্প (সেবা) খাতের ৫ জন, মাঝারি শিল্প (উৎপাদন) খাতে ৯ জন, মাঝারি শিল্প (সেবা) খাতের ৩ জন, ক্ষুদ্র শিল্প (উৎপাদন) খাতের ৫ জন, ক্ষুদ্র শিল্প (সেবা) খাতের ১ জন, মাইক্রো শিল্প খাতে ২ জন এবং কুটির শিল্প খাতে ২ জন সিআইপি (শিল্প) নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচিত সিআইপিরা কার্ড পাওয়ার পর থেকে এক বছরের জন্য ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণের সময় বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণের অগ্রাধিকার পাবেন। সহজে ভিসা পাওয়ার জন্য তাদের অনুকূলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে ‘লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন’ দেবে। বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ-২ ব্যবহারের সুবিধা এবং সচিবালয়ে প্রবেশের পাস পাবেন তারা।
এছাড়া, সরকারি হাসপাতালে স্ত্রী, সন্তান ও নিজের চিকিৎসা সেবা গ্রহণে অগ্রাধিকার পাবেন। সরকার শিল্পবিষয়ক নীতিনির্ধারণী কোনো কমিটিতে সিআইপিদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে পারবে।
বিদেশে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বৈঠকের সুযোগ পাবেন সরকারি নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্রতিপক্ষের গুলিতে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ৯ অনুসারী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বসুরহাট পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে এধরণের ঘটনা ঘটে। আহতরা সবাই ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন।
আহতদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর সবাইকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
হাসপাতালের ডাক্তার আবু নাছের জানান, ছররা গুলিতে আহত ৮ জনকে জরুরি বিভাগ থেকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। বাকি একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হয়।
আহতরা হলেন- পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন (৪৭), ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ জিসান (২৩), সামছুল হকের ছেলে মো. সবুজ (৪০), আবদুল লতিফ দুলালের ছেলে রুহুল আমিন সানি (৩০), মোস্তফা মেস্তরীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন (২৮), পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের এনামুল হকের ছেলে দেলোয়ার হোসেন সুমন (২৭), চরকাঁকড়ার মোশারেফ হোসেনের ছেলে দিদার (৩৫), মৃত মোস্তফার ছেলে মাঈন উদ্দিন কাঞ্চন (৪২), এমদাদুল হকের ছেলে সওশাদ (৩৫)। আহতরা সবাই বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী।
পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম বকুল জানান, ৯নং ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, আদর্শপাড়া ও শান্তিপাড়া থেকে কাদের মির্জার অনুসারীরা একত্রিত হয়ে পৌরসভায় যাওয়ার জন্য জড়ো হচ্ছিল। এসময় প্রতিপক্ষ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুর রশিদ মঞ্জুর সমর্থকরা বেপরোয়াভাবে গুলি চালালে কাদের মির্জার লোকজন আহত হয়।
অপরদিকে সেতুমন্ত্রীর ভাগিনা মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কোনো লোক বাসা থেকে বের হয়নি। কাদের মির্জার লোকজন মিছিল করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে শুনেছি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি জানান, পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে কাদের মির্জার অনুসারীরা মিছিল করতে চাইলে প্রতিপক্ষরা গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় আবদুল কাদের মির্জা রাত ৯টায় পৌরসভার নিজ কার্যালয় থেকে ফেসবুক লাইভে এসে এএসপি শামীম, ইউএনও জিয়া, ওসি রনি ও অ্যাসিল্যান্ড সুভাতকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আলটিমেটাম দিয়েছেন।