a বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি: ড. শেখ আকরাম আলী
ঢাকা সোমবার, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
https://www.msprotidin.com website logo

বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি: ড. শেখ আকরাম আলী


আরাফাত, মুক্তসংবাদ প্রতিদিন
মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:৪১
বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি ড শেখ আকরাম আলী

ছবিঃ সংগৃহীত

 

নিউজ ডেস্ক: ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি আমাদের সমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এর সূচনা ঘটে অবিভক্ত ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির জন্মের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনের শেষভাগে। যদিও সে সময় ভারতের সমাজে এটি খুব বেশি অগ্রসর হতে পারেনি, তবে একটি শ্রেণিবিহীন সমাজের ধারণা নিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে জাগ্রত করতে এর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। একটি বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠী কমিউনিজমের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে উঠেছিল এবং এটি সমাজের শ্রমজীবী শ্রেণির মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

যদিও পাকিস্তানের মানুষ কমিউনিজম পছন্দ করত না, তথাপি পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মুসলিম সমাজের মধ্যে এক শ্রেণির মানুষ গোপনে এটির প্রচার চালিয়ে যেত। সেই সময়ে কিছু কমিউনিস্ট চুপিচুপি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে নতুন এই রাজনৈতিক দলের ভিতরে থেকে গোপন উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ শুরু করেন।

কিন্তু অচিরেই কমিউনিস্টরা প্রকাশ্যে এসে 'ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (NAP, প্রো-মস্কো)' নামে নিজেদের রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এর আগেই মওলানা ভাসানী চীনপন্থী একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন, যার নামও ছিল NAP। উভয় দলের ছাত্র সংগঠনসমূহ পাকিস্তানের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে মাতৃসংগঠনের চেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

প্রথমদিকে আওয়ামী লীগ ছিল একটি উদার গণতান্ত্রিক দল, যাকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন দিত। কিন্তু দ্রুতই এই দলটি স্থানীয় pro-Indian এবং pro-Moscow গোষ্ঠীর আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়। এদের একটি অংশ দলীয় ভেতরে থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির এজেন্ডা বাস্তবায়নে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

ভাষা আন্দোলন তাদেরকে পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মুসলিম সমাজে মুক্তভাবে কাজ করার সুযোগ এনে দেয়। এই সময়ে, তথাকথিত কিছু প্রগতিশীল বুদ্ধিজীবী, বিশেষত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি শুরু করেন 'বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির' নামে। তারা সমাজে pro-Moscow বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচিতি লাভ করে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর ভাষাভিত্তিক বাঙালি জাতীয়তাবাদ যুক্ত পাকিস্তানের কাঠামোর ভেতরে ধীরে ধীরে ভিত্তি গড়ে তোলে। কিন্তু ১৯৬৬ সালে ঘোষিত ছয় দফা দাবির পর এই জাতীয়তাবাদ গতি পায় এবং কিছুদিনের মধ্যেই এটি পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের জন্য এক ম্যাগনা কার্টা হয়ে ওঠে। এর মাধ্যমে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতায় পরিণত হন। 

১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে এই জাতীয়তাবাদ তার প্রাথমিক বিজয় লাভ করে এবং শেখ মুজিব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হন। কিন্তু পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নিয়ে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যা শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ভেঙে যায়।

ভারত যুদ্ধের নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং বাংলাদেশের জনগণের ওপর প্রভুত্ব স্থাপন করে, যদিও স্বাধীনতার জন্য আমরা নিজেরাই যুদ্ধ করে লাখো প্রাণ বিসর্জন দিয়েছি। অনেকেই বলেন, ১৯৭১ সালে ইসলাম পরাজিত হয়েছে আর ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিজয়ী হয়েছে। কিন্তু তারা হয়তো জানেন না, ইসলাম চিরস্থায়ীভাবে টিকে থাকার জন্য এসেছে।

বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তার যাত্রা শুরু করে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু অচিরেই শেখ মুজিবের পতনের পর দৃশ্যপট দ্রুত পাল্টে যায় এবং সংবিধানে সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সরিয়ে আল্লাহ'র উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন করা হয়। শুধু তাই নয়, বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ চালু হয়। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির দ্রুত পতন ঘটে এবং বিএনপির মাধ্যমে একটি মধ্যপন্থী রাজনৈতিক সংস্কৃতির সূচনা ঘটে।

আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি অব্যাহত রাখে, তবে জাতীয় পরিচয় হিসেবে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ মেনে নেয়। তবে ২০০৮ সালে ভারতের ও আমেরিকার আশীর্বাদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি আবার ফিরে আসে।

আওয়ামী লীগ এখন ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি সামনে আনে, যাতে ভারত ও পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন পাওয়া যায়, যদিও বাংলাদেশের জনগণের বড় অংশ মুসলমান। ইসলাম ও মুসলমানদের রাজনীতি থেকে সরিয়ে বিশ্রামে পাঠানো হয়, যদিও ইসলাম শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে সমাজের গভীরে প্রোথিত।

বিএনপি, যদিও একটি মধ্যপন্থী দল, তাকে মৌলবাদ ও প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে আখ্যা দিয়ে ব্যাপক নিপীড়নের শিকার করা হয়। ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামি, শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের সময়কালজুড়ে অকথনীয় নির্যাতনের শিকার হয়। জামায়াতের নেতাকর্মীরা এমনভাবে টার্গেট করা হয়, যা সাম্প্রতিক ইতিহাসে নজিরবিহীন।

দেশটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিতে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এবং জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সমাজের সর্বত্র ধর্মনিরপেক্ষতার বিস্তার ঘটে। জনগণ আশা হারিয়ে ফেলে যে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে।

কিন্তু মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা তাঁর প্রিয় বান্দাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী, এবং তিনি রাতারাতি পরিস্থিতি পাল্টে দেন, যা কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ধর্মনিরপেক্ষতা এখন স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছে, কিন্তু এখনও বহু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি সক্রিয় রয়েছেন যারা ধর্মনিরপেক্ষ পরিবেশ টিকিয়ে রাখতে কাজ করছেন। এই প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে তারা জুলাই বিপ্লব ২০২৪–এর চেতনার বিরুদ্ধে আর কাজ করতে না পারে। সমাজ এখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে একটি প্রকৃত ইসলামি মূল্যবোধ ও চেতনার যাত্রা দেখার জন্য। ইসলামই বাংলাদেশের সমাজের ভিত্তি ও প্রধান শক্তি।

এখন রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব একত্রে থাকা, যাতে এই বিপ্লবের চেতনা স্থায়ী হয়। বিএনপি ও জামায়াত, যারা প্রধান অংশীদার, তাদের আরও বেশি দায়িত্ব নিয়ে প্রজ্ঞা ও পরিপক্বতার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে হবে। এর থেকে বিচ্যুতি জাতির জন্য দুর্যোগ ডেকে আনবে। 

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

‘শিশুবক্তা’ রফিকুলকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ


মুক্তসংবাদ প্রতিদিন ডেস্ক:
বৃহস্পতিবার, ২৫ মার্চ, ২০২১, ০৭:০৯
‘শিশুবক্তা’ রফিকুলকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

ফাইল ফটো: শিশুবক্তা-রফিকুল ইসলাম

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে রাজধানীতে যুব অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে আটক ‘শিশুবক্তা’ রফিকুল ইসলামকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর তিনি গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা করেন। সেখানে তিনি একটি মাহফিলে অংশ নেবেন বলে জানানো হয়।

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় দুপুর ১২টার পর তাকে রফিকুলকে আটক করা হয়। পরে বিকাল ৫টার দিকে অভিভাবকদের জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

পল্টন মডেল থানার ডিউটি অফিসার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কাজী আশরাফুল হক বলেন, আটক শিশুবক্তা রফিকুল ইসলামকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিকাল ৫টার দিকে পল্টন থানা থেকে তার অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে মতিঝিল শাপলা চত্বরে ছাত্র অধিকার পরিষদ মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। আধঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হন এবং এসময় শিশুবক্তা রফিকুল ইসলামসহ আরও ১১ জনকে আটক করে পুলিশ।

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম

বিএনপির আইনজীবী প্রতিনিধি দল ঠেকাতে আওয়ামী লীগের শোডাউন


এমএস.প্রতিদিন ডেস্ক:
মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১, ০৬:০৮
বিএনপির আইনজীবী প্রতিনিধি দল ঠেকাতে আওয়ামী লীগের শোডাউন

ফাইল ছবি

ঢাকা থেকে বিএনপির আইনজীবী প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) সকালে ফরিদপুরের সালথায় তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শনে যাবার খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত হয়ে উঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা। এসময় তারা লাঠিসোটা হাতে নিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সালথা-ফরিদপুর সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় এবং বিক্ষোভ মিছিল করে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ৫ এপ্রিল সালথার সরকারি বিভিন্ন দফতর ও থানায় হামলা চালিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতীরা। তারা সেদিন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আজ কিভাবে আবার সেই ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শনে আসেন। আমরা বেঁচে থাকতে সালথার মাটিতে তাদের ঢুকতে দেয়া হবেনা।

জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোদারেস আলী ইছা বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় ঢাকা থেকে বিএনপির একটি আইনজীবী প্রতিনিধি দল সালথার ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শনে আসার কথা ছিল। কারণবশত প্রোগ্রামটি স্থগিত করা হয়েছে।

এদিকে জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানান, বিএনপির ওই আইনজীবী প্রতিনিধি দল ঢাকা থেকে রওনা হয়ে আরিচা ঘাটে আসার পর সালথায় আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ ও শোডাউনের খবর পেয়ে তারা অনাকাংখিত পরিস্থিতি এড়াতে ফিরে আসেন।

সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও হেফাজতের নেতাদের ইন্ধনে তাদের সমর্থকরা সালথার সরকারি দফতরে সেদিন ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এখন আবার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শন করে মানুষকে বোকা বানাতে চায়। কিন্তু সালথার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তা হতে দেয়নি। তাদের আশার খবরে সবাই রাস্তায় নেমে এসেছে।
 

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন / কে. আলম
Share on Facebook

মুক্তসংবাদ প্রতিদিন এর সর্বশেষ

সর্বশেষ - রাজনীতি