হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক রিসোর্ট কান্ডের পর হঠাৎ ধাক্কা খেয়েছে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম। পাশাপাশি সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা আটক হয়েছেন। অনেকে গ্রেফতার আতঙ্কে আছেন। এমতাবস্থায় সাংগঠনিক স্থবিরতা কাটাতে নানা ধরণের উদ্যোগী নিচ্ছেন হেফাজত ইসলাম।
ধরপাকড়, মামলা, গ্রেফতার ও সরকারের চাপ মোকাবিলায় নানা তৎপরতা শুরু করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। তারা দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি গঠন, জেলায় জেলায় আইনি সহায়তা সেল গঠন এবং বিভিন্ন দূতাবাসে স্মারকলিপি দেওয়াসহ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হাতে নিয়েছে। এছাড়া সমমনা ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবে বলে জানা গেছে।
রবিবার হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির রুদ্ধদ্বার বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে হেফাজতের কমিটি রয়েছে। এর বাইরে সারাদেশে ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করাসহ সংগঠনকে এগিয়ে নিতে ‘সাংগঠনিক সেল’ গঠিত হয়। এই সেলের দায়িত্ব দেওয়া হয় যুগ্ম-মহাসচিব জুনায়েদ আল হাবিব, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী ও সহকারী মহাসচিব মুফতি শাখাওয়াত হোসেনকে। তাদের মধ্যে আজিজুল হক ইসলামাবাদী বৈঠক শেষে বাড়ি ফেরার পর গ্রেফতার হন।
জুনায়েদ আল হাবিব বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, সাংগঠনিক সেলের মাধ্যমে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে সারা দেশের কমিটিগুলোর কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করা হবে। এ জন্য রোববারের সভায় তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে ৪০ বিশ্বনেতার চিঠি দেওয়া ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে বিশ্বের ৪০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির চিঠির প্রতিটি কথাই মিথ্যা। ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। হানিফ শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে দেশ, উন্নয়ন, সরকার ও শান্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুই দিন আগে সংবাদ মাধ্যমে হঠাৎ দেখলাম বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসকে নিয়ে বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে। হিলারি ক্লিনটন, বান কি মুনসহ বিশ্বের ৪০ জন নেতার নামে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এ চিঠি কাকে দিয়েছে? কারা দিয়েছে? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে নাকি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই চিঠি বিজ্ঞাপন আকারে দেখতে হবে? নিউজ আকারে আসেনি কেন?
তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস এই চিঠির কথা বলে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হচ্ছে। ড. ইউনূস নিজে সাজিয়ে লিখেছেন, যাদের নামের কথা লেখা হয়েছে সেসব নাম ব্যবহার করে নিজেকে সেভ করতে চায়। দারিদ্র্য বিমোচনে ৯০ লাখ মহিলা নাকি ঋণ নিয়েছেন। যারা ঋণ নিয়েছিল তাদের ভাগ্য পরিবর্তন ঘটেছে কিনা- জানা নেই। আমরা শুনেছি গ্রামীণ ব্যাংক থেকে যারা ঋণ নিয়েছিল পরে কিস্তি দিতে না পারায় মানুষের ঘরের টিন খুলে নিয়ে গিয়েছে। ঝিনাইদহে ৩৭ জন আত্মহত্যা করেছে। অনেকে নিঃস্ব হয়ে ঢাকায় রিকশা চালায় এমন অসংখ্য নজির আছে।
হানিফ বলেন, নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করেছেন এমন নজির নেই। দেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে তার বিন্দুমাত্র কন্ট্রিবিউশন নেই। উল্টো মানুষকে নিঃস্ব করে দেওয়ার অজস্র রেকর্ড আছে। দেশের দুর্যোগে, ঘূর্ণিঝড়ে কবে কারো পাশে তিনি এসে দাঁড়িয়েছেন এমন একটা নজিরও কেউ দেখাতে পারবে না।
ড. ইউনূসের সঙ্গে কিসের অন্যায় হচ্ছে- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। কোথায় কত টাকা আত্মসাৎ করেছেন তার তদন্ত হচ্ছে। নোবেল বিজয়ী কি আইনের ঊর্ধ্বে? আমেরিকার এক নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন মামলা হয়েছিল। পরে জেলেও গিয়েছিলেন। আইন সব দেশে সবার জন্য সমান। রাষ্ট্রের প্রধান হোন আর নোবেল বিজয়ী হোন না কেন অপরাধী হিসেবে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। ড. ইউনূস অন্যায় করেছেন। তাই গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণ টেলিকম নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। এটাকে হ্যারেসমেন্ট বলার কোনো সুযোগ নেই। এই চিঠি ষড়যন্ত্রের আলামত।
দেশের আলেম সমাজকে সঠিক তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, আমরা লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছি। এই দেশ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার সুযোগ নেই। মানুষ হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিতদের ইসলাম ধর্ম কখনো সমর্থন করে না। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে নারীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে পেট্রল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। মানুষ হত্যা করলে শাস্তি পেতে হয়। যারা সন্ত্রাসী, মানুষ হত্যা করে তাদের বিষয়ে সঠিক তথ্য মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট ও ইসলামী ডেমোক্রেটিক অ্যালাইন্স চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য মোস্তফা লুৎফুল্লাহ এমপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সহ-সভাপতি নুরুল আক্তার, গণতন্ত্রী পার্টি মহাসচিব ডা. শাহাদাত হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। সূত্র: বাসস
প্রেস বিজ্ঞপ্তি-
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টার-এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম মমতাজুল করিম ও সাধারণ সম্পাদক লায়ন সালেহ আহমেদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে বলেছেন- বাংলাদেশের নির্বাচন বিগত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি অবাধ ও সুষ্ঠ হয়েছে। আমাদের সংস্থার অনেক সদস্যই এ দেশের সুনাগরিক ও ভোটার তারা সবাই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন কেন্দ্রে ভোট প্রদান করতে পেরেছেন। এও দেখা গেছে যে, যার ভোট সেই দিয়েছে। অন্যবারের ন্যায় একজনের ভোট অন্যজন দেয়নি এবং তেমন কোন সহিংস ঘটনাও ঘটে নাই। তাহলে ঐসব তথাকথিত গণতন্ত্রের ধারক ও বাহক হিসাবে দাবীদার আতিপত্যবাদিরা কিভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। তাদের দেশেই আজ মানবতা ও গণতন্ত্র ভুলুন্ঠিত।
বার্তা প্রেরক
মো: শামীম হোসেন
দপ্তর সম্পাদক
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন
বাংলাদেশ চ্যাপ্টার