হেফাজতে ইসলামের আমির ও হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, এ আন্দোলন দেশ কিংবা সরকারের বিরুদ্ধে ছিল না। এই আন্দোলন ছিল নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে।
তিনি বলেন, এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে জনতার ওপর এমন বর্বরোচিত হামলা বরদাশত করা যায় না। পুলিশের গুলিতে নিহতদের প্রতি ফোটা রক্তের বদলা নেওয়া হবে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
শনিবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে হেফাজত আমির এসব কথা বলেন।
জনতার বিক্ষোভে হামলায় নেতাকর্মী নিহত ও আহত হওয়ার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকে শনিবার সারা দেশে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ পালনের ঘোষণা দেন আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।
এসময় তিনি রোববার সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে হরতাল কর্মসূচী পালন করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে আমিরে হেফাজত বলেন, মোদির আগমনের প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকার বায়তুল মোকাররম, হাটহাজারী, যাত্রাবাড়ী, বি-বাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করে আনুমানিক ছয়জনকে শহীদ করা হয়েছে। গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে প্রায় চারশত প্রতিবাদীকে রক্তাক্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এভাবে গুলিবর্ষণের ন্যাক্কারজনক ঘটনা কখনো মেনে নেওয়া যায় না। কার নির্দেশে নিরীহ-নিরস্ত্র ছাত্রদেরকে এভাবে হামলা ও শহীদ করা হল—এর জবাব প্রশাসনকে অবশ্যই দিতে হবে এবং অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, মোদির আগমনের প্রতিবাদে ঢাকা ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে তৌহিদি জনতা। বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরতের ওপর হামলার সংবাদ পাওয়া গেছে।
‘হাটহাজারীতে আমার কলিজার টুকরা চার ভাইকে শহীদ করা হয়েছে। শহীদদের গা থেকে ঝরা এ রক্ত কভু বৃথা যেতে দেওয়া হবে না।’
পুলিশের গুলিতে নিহতদের ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সরকার প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান আল্লামা বাবুনগরী।
হুশিয়ারি উচ্চারণ করে আমিরে হেফাজত আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরও বলেন, যদি আর একজন তৌহিদি জনতার রক্ত ঝরে বা ওলামায়ে কেরামকে হামলা মামলা ও হয়রানি করা হয়; তাহলে এর প্রতিবাদে পুরো দেশে আন্দোলনের দাবানল জ্বলে উঠবে। প্রয়োজনে শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে পরামর্শ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হবে। সূত্র: যুগান্তর
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, হেফাজতকে কোনো হরতাল করতে দেওয়া হবে না। শুক্রবার রাতে সংবাদ মাধ্যমকে এসব কথা জানান তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের তাণ্ডবের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, শুক্রবার রাত ৮টায় পুরানা পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে শনিবার (২৭ মার্চ) বিক্ষোভ ও রবিবার (২৮ মার্চ) হরতালের ঘোষণা দেয় হেফাজতে ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আবদুর রব ইউসুফী।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে মুসল্লিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। পাশাপাশি জলকামানও ব্যবহার করা হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (এফএও) আয়োজনে খাদ্য সম্মেলনে যোগ দিতে তিন দিনের সফরে ইতালির রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৩ জুলাই) ভোরে কাতার এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী। রোম সফরে দেশটির সঙ্গে দুটি সমঝোতা স্মারক সই করবে বাংলাদেশ।
আগামী ২৪ থেকে ২৬ জুলাই ইতালির রোমে এফএওর আয়োজনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। জাতিসংঘের মহাসচিবের আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল এ ফোরামে যোগ দেবেন।
বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী মাহবুব আলী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।
গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সফর শেষে আগামী ২৬ জুলাই শেখ হাসিনা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সূত্র: ইত্তেফাক