অভিনয় ছেড়ে ইসলামের পথে মনোনিবেশ করলেন রোডিজ খ্যাত ভারতীয় টিভি তারকা সাকিব খান। তিনি জানান, তিনি কাশ্মীর থেকে এসেছেন এবং বর্তমানে তিনি বিনোদন জগত ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে এই ঘোষণা দেন সাকিব খান।
তিনি বলেন, তিনি আগামীতে আর কখনো অভিনয় এবং মডেলিং করবেন না। এমন নয় যে, আমার কাছে কাজ ছিল না অথবা আমি বশ্যতা স্বীকার করেছি। আমার হাতে ভালো কাজ ও প্রোজেক্ট ছিল। সবটাই আল্লার ইচ্ছে। আল্লাহ নিশ্চই আমার জন্য আরো ভালো কিছু ভেবে রেখেছেন।
বিনোদন দুনিয়াকে বিদায় জানানোর কারণ হিসেবে সাকিব খান আরও জানান, ‘আমি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছিলাম এবং আমার ইসলাম ধর্মের প্রতি অবিচার করছিলাম। আমি প্রতিদিন নামাজ পড়তাম তবে শান্তি এবং আল্লাহ প্রতি মনযোগ দিতে পারছিলান না। তাই আমি আল্লাহ-র কাছে আত্মসমর্পন করছি।'
পবিত্র মাহে রমজান আল্লাহকে একান্ত করে আপন করে নেয়ার মাস এবং নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নেয়ার মাস। এ মাসের বিশেষ মাহাত্ম হচ্ছে লাইলাতুল কদর। তাইতো মুমিনের হৃদয় কাঁদে লাইলাতুল কদরের প্রত্যাশায়।
বিগত বছরে আত্মায় সংগোপনে সঞ্চিত তাবৎ পাপ অপরাধ ও হৃদয়াভ্যন্তরে পুঞ্জীভূত সব পঙ্কিলতাকে ধুয়ে মুছে সাফ করে সজ্জিতরূপে সজ্জনে পরিণত হওয়ার মাস হল রমজান।
যারা এ মাসের প্রতিটি সময়কে বিশেষ ইবাদত বন্দেগিতে রত থেকে অতিবাহিত করতে পারবেন তারাই কেবল আল্লাহপাকের প্রিয়ভাজন হবেন। বসন্ত মৌসুমে ফুটন্ত ফুলের সমারোহ হতে মধু আহরণ করে মৌ-মক্ষিকা যেমন সেই মৌসুমকে সার্থক করে তেমনিভাবে একনিষ্ঠ চিত্তের খোদা প্রেমিকগণ রমজানে নিবেদিত ইবাদত গোজারের মাধ্যমে জীবনোদ্দেশ্যকে সার্থক করে এবং আবিষ্কার করে নেয় রমজানের সেই রাতটিকে- যে রাতের ইবাদত হাজার মাস চেয়েও অধিক মর্যাদাবান।
প্রত্যেক মুমিন বান্দার জন্য ‘লাইলাতুল কদর’-এর আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থ রয়েছে, আর তা হলো, এটা এমন এক রাত, যখন মুমিন এক মহান আশীর্বাদ লাভ করতে পারে।
প্রসিদ্ধ একটি হাদিস দ্বারা একথা সাব্যস্ত যে, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কদরের রাতে যে ব্যক্তি ঐকান্তিক বিশ্বাসের সাথে আল্লাহর পুরস্কার লাভের আশা করে, তার অতীতের সব গুণাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়’ (বোখারি, প্রথম খণ্ড)।
আমাদের দেশে ২৭ রমজানের রাতকেই লাইলাতুল কদর হিসেবে পালন করা হয়। তবে হাদিসে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লাইলাতুল কদর অন্বেষণের সময় কখন হবে সে বিষয়ে উপদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘রমজান মাসের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে লাইলাতুল কদর অন্বেষণ কর’ (বোখারি)। হাদিসের ভাষ্যমতে, রমজান মাসের শেষাংশের যেকোনো বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে যেকোনো রাতই লাইলাতুল কদর হতে পারে।
মহান এ রাত সম্পর্কে আল্লাহপাক তার পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনে বলেন, ‘এবং তোমাকে কিসে অবহিত করবে যে, লাইলাতুল কদর কি? লাইলাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষাও উত্তম। ঐ রাতে ফেরেশতাগণ এবং কামেল রূহ সকল তাদের প্রতিপালকের হুকুম অনুযায়ী যাবতীয় বিষয়সহ নাযেল হয়’ (সুরা কাদর)।
এ রাত কখন আসে, কিভাবে আসে এবং কেমন আরাধ্য আত্মার কাছে মহিমান্বিত এ রজনী ধরা দেয়, সে বিষয়ে আমাদেরকে অবগত হতে হবে।
হজরত রাসুল পাক (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের জীবনে আগত প্রতিটি রমজানের শেষ দশকের কোন এক বেজোড় রাত্রিতে এ সম্মানিত রজনীকে সন্ধান করো’ (বোখারি)।
অর্থাৎ রমজানের ত্রিশটি দিবস অসম্ভব কঠোর সাধনায় অবিরাম আরাধনার পর এ মাসের প্রায় শেষ প্রান্তে এসেই কেবল একজন আরাধক সেই রাতের সন্ধান লাভ করতে পারে। আর এটাই হলো রমজানের নিবিড় ইবাদতের মর্মকথা।
অতএব, ঐশী পুণ্যে পরিপূর্ণ এ রাতের সন্ধান লাভ করা কোন সাধারণ বিষয় নয় এবং এটি কোন সাধারণ কাজও নয়। যে মহাজন বছরের প্রতিটি দিবস ও রাত সাতিশয় সাধনায় দ্বীনের ইবাদতে ব্রত থেকে পুণ্যতায় পূর্ণ হতে পারবেন কেবল তিনিই সন্ধান পাবেন সে রাতের সওগাত সম্ভার।
মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘স্মরণ রেখো, আল্লাহর স্মরণেই হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে’ (১৩:২৮)।
মুমিন মাত্রই মাহে রমজানের পবিত্রতায় আল্লাহ স্মরণের মাত্রাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেয়, ইবাদতের একাগ্রতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়। এমন কোন পুণ্যের কাজ নেই যা কিনা সে হাতছাড়া করে।
আল্লাহ প্রেমিকের অন্বেষণ মাত্র একটাই থাকে আর তা হলো, লাইলাতুল কদরকে লাভ করা। এ প্রাপ্যতার মাঝেই সে আত্মার শান্তি আর এ উপার্জনের মাঝেই সে জীবনের সার্থকতা খুঁজে পায়। প্রতিটি বছর রমজান তার সেই স্বর্গ-সুধা প্রদানের জন্যই আমাদের প্রত্যেককে আহ্বান করে।
তাই আসুন! রমজানের এ শেষ ক’টিদিন সিয়াম সাধনায় নিবিড়চিত্তে নিবেদিত হয়ে সেই মাহাত্ম্য আহরণে মত্ত হই, যার মাঝে প্রকৃত সুখ নিহিত। কেননা এই শেষ দশকেই আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে আত্মার নাজাতের প্রতিশ্রুতিসহ লাইলাতুল কদরের উপহার রেখেছেন।
এমনিভাবে বিভিন্ন ইবাদতে খোদা মানুষের আত্মার মঙ্গলার্থে নানান উপায়ে মজুত রেখেছেন তার অনন্যসব অবদান। এসব ব্যবস্থাদি মানুষের প্রতি খোদার অনুকম্পা প্রদর্শনেরই প্রমাণ।
তাই আমাদের উচিত হবে খোদা সকাশে ধর্ণা দিয়ে সেসব অনুকম্পাদি আহরণ করা। নচেৎ জীবন হবে মূল্যহীন। আমরা তো কোনভাবেই প্রত্যাশা করতে পারি না যে, আমাদের জীবনে আবারও এ রমজান ফিরে আসবে।
আমরা যদি আমাদের প্রণান্ত প্রচেষ্টা ও আল্লাহর দয়ায় সেই নেয়ামত পেয়েই যাই তখন আমাদের কি করা উচিত?
এক্ষেত্রে রাসুল করিম (সা.)-এর উপদেশ বাণী হল, তিনি (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা লাইলাতুল কদরের সন্ধান পাবে, তখন এ দোয়াটি পাঠ করবে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি, হে আল্লাহ তুমি অবশ্যই ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমা করাকে পছন্দ কর, কাজেই তুমি আমাকে ক্ষমা কর’ (তিরমিজি)।
হে আমাদের পরম প্রিয় করুণাময় খোদা! তুমি আমাদের প্রত্যেককে ক্ষমা কর এবং রমজানের সবকটি নেয়ামত আমাদের প্রত্যেককে দান কর আর লাইলাতুল কদর লাভে আমাদেরকে ধন্য কর, আমিন।
লেখক: ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট/masumon83@yahoo.com/সূত্র:যুগান্তর
ডিম মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় সাতটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে র্যাব।
প্রতিষ্ঠানগুলোর চারটি ডিমের দোকান, একটি ফলের দোকান ও দুটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। আজ সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
র্যাব-১ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। র্যাব সূত্র আরো জানায়, সম্প্রতি কতিপয় অসাধু ব্যক্তি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সুযোগে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি মজুত করে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি করে আসছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-১ ছায়াতদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এর ধারাবাহিকতায় উত্তর বাড্ডার সাঁতারকুল রোড এলাকায় আবদুল্লাহ স্টোর, এমবিএ ট্রেডার্স, সুমন ডিমের আড়ত, ফলের মেলা, কামরুল রেস্টুরেন্ট, নিউ গ্রিন ঢাকা রেস্টুরেন্ট ও আমিন ট্রেডার্সে ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হয়। র্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাদির শাহর নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়।
র্যাব-১ সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) পারভেজ রানা গণমাধ্যমকে বলেন, ডিম মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রির অপরাধে ওই সাত প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, অভিযানে আমিন ট্রেডার্সের মালিক নুরুল আমিন (৪৫), সুমন ডিম আড়তের মালিক সুমনকে (২৫), এমবিএ ট্রেডার্সের মালিক মাহবুবুল আলম (৪৫) ও আবদুল্লাহ স্টোরের মালিক আমিনুলকে (৪৯) ৩০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়া ফলের মেলার মালিক রাসেলকে (৩৫) ২০ হাজার টাকা ও নিউ গ্রিন ঢাকা রেস্টুরেন্টের মালিক সৈয়দ আ. হান্নানকে (৪৮) ৫০ হাজার টাকা এবং কামরুল রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী পরিমল চন্দ্র দেকে (৫১) ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সূত্র: প্রথম আলো