রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্র পারমাণবিক চুল্লির পাত্র (রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল পাত্র) এবং স্টিম জেনারেটর রাশিয়া থেকে আরএনপিপিতে পৌঁছেছে।
চুল্লিপাত্রসহ স্টিম জেনারেটর দেখতে বৃহস্পতিবার রূপপুর প্রকল্পে যাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের নেতৃত্বে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশের মংলা বন্দর থেকে নৌবাহিনীর একটি দল নদী পথে যন্ত্রাংশগুলো কড়া নিরাপত্তার মাধ্যমে আরএনপিপির নৌ বন্দরে নিয়ে আসেন। আজ বুধবার দুপুরে আরএনপিপি সাইড অফিস, এএসই (এটমস্ট্রয়এক্সপোট) স্থানীয় অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আরএনপিপি ও এএসই স্থানীয় কার্যালয় সূত্র মতে, চলতি বছরের আগস্টের শেষ সপ্তাহে রাশিয়ার পেট্রোজাবাদ বন্দর থেকে ভলগা নদী দিয়ে যন্ত্র দুটি নিয়ে একটি বিশেষ জাহাজ (বার্জ) বাংলাদেশের রূপপুর প্রকল্পের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। জাহাজটি সমুদ্র পথে ১৪ হাজার কিলোমিটার আন্তর্জাতিক নৌপথ পাড়ি দিয়ে গত ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের মংলা বন্দরে এসে পৌঁছায়। সেখান থেকে পদ্মানদী দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রকল্প এলাকায় নির্মিত জেটিতে জাহাজটি নোঙর করে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানান, রাশিয়া থেকে এতটা পথ পাড়ি দিয়ে যন্ত্রগুলো রূপপুরে পৌঁছানোয় প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে আস্থা আরো বাড়বে। একই সঙ্গে রাশিয়া থেকে আসা যন্ত্রপাতিগুলো পর্যবেক্ষণ করতে রূপপুর প্রকল্পে যাওয়া হবে।
মন্ত্রী আরো জানান, রূপপুর প্রকল্পের সকল যন্ত্রপাতি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তৈরি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মান মেনে নির্ধারিত সময়সূচি ঠিক রেখেই ও করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আরএনপিপিতে পুরোদমে কাজ চলছে।
রূপপুর প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর জানান, আগামী বছরের প্রথমের দিকে রিয়্যাক্টর প্রেসার ভ্যাসেল প্রকল্পে নির্মাণকৃত ভৌত কাঠামোর ভেতর স্থাপন করা হবে। এরপর কাঠামোর উপরিভাগে ছাদ নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার ঋণ ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়ন করা হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক প্রকল্প (আরএনপিপি)। জনবল প্রশিক্ষণসহ প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে। যার নব্বই ভাগ ঋণ হিসেবে দিচ্ছে রাশিয়া। চুক্তি অনুযায়ী পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট আগামী ২০২২ সালে এবং ২০২৩ সালে দ্বিতীয় ইউনিটটির নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা রয়েছে রাশিয়ান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট (এএসই)। একই সঙ্গে পরের বছর থেকেই পারমাণবিক চুল্লিতে জ্বালানি হিসেবে ইউরেনিয়াম লোড করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। তাই ইতোমধ্যে আরএনপিপির প্রথম ইউনিটের ভৌত কাঠামোর কাজ প্রায় শেষ হয়েছে।
একুশে সংবাদ/এআরএম
আপনার মতামত লিখুন :