পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জের কৃতিসন্তান মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলতাফ হায়দার আর নেই ( ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। গত কাল ১৫ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ৯ঃ৪৩ টায় বিজয় দিবসের পূর্ব ভাগে ৮৪ বছর বয়সে এই বিজয়ী মহাবীরের জীবনাবসান ঘটে।
তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বার্ধক্য জনিত রোগে ভূগছিলেন।তাঁর মৃত্যুতে দক্ষিণ বঙ্গের তিন জেলা- বরিশাল,পটুয়াখালী, বরগুনা সহ নিজ উপজেলা মির্জাগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা সহ সর্বস্তরের লোকজনের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজ ১৬ ডিসেম্বর বুধবার বিকেল ৪ টায় স্থানীয় দেউলী পল্লী মঙ্গল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
এর আগে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ ও মির্জাগঞ্জ থানা পুলিশের একটি চৌকস দল এই মহা বীরকে গার্ড অফ অনার প্রদান করেন।এ সময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক,সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবি সংগঠনের কর্মকর্তা সহ হাজার হাজার জনতা উপস্থিত ছিলেন।
এ মহান বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ কালীন কমান্ডার ১৯৩৭ সনের ১৫ জুন উপজেলার ৪ নং দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের দেউলী গ্রামের আলহাজ্ব আঃ কাদের মৃধা ও মোসাঃ লাল বরু বেগম দম্পত্তির ঘরে জন্ম গ্রহন করেন। যৌবনকালে তিনি পাকিস্তানি আর্মিতে যোগদান করেন।স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে চাকুরী ছেড়ে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশমাতৃকার রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন সাব সেক্টর( পটুয়াখালী - মঠবাড়ীয়া) এর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯৭১ সালের ২৪ নভেম্বর মতান্তরে ২৩ নভেম্বর কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে বামনা থানা আক্রমন করেন।এতে রাজাকার, আলবদর,আলশামস ও পাকিস্তানি পুলিশের ৩৫ জন মারা যায়।এবং থানার সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ তিনি আয়ত্বে নেন। এর ফলে মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রের ঘাটতি দূর হয়ে যায়।ফলশ্রতিতে তিনি ও তার বাহিনীরা বীরবিক্রমে একে একে বেতাগী, বদনীখালী,পাথরঘাটা, মির্জাগঞ্জ শত্রুমূক্ত করে পটুয়াখালী জেলা শহরকে আক্রমণ করে শত্রু মূক্ত করেন। মৃত্যু কালে মরহুমের ২ স্ত্রী, ২ ছেলে ও ৬ মেয়ে রেখে গেছেন।
একুশে সংবাদ/র.খ/এস
আপনার মতামত লিখুন :