শাল্লায় অসত্য সংবাদ করায় উপজেলার ৪জনকে আসামী করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ করেছেন হবিবপুর ইউপির ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী পাবেল আহমেদ।
আসামীরা হলো- শাল্লা থেকে প্রকাশিত স্বাধীনকণ্ঠ নামক একটি ওয়েবপোর্টালের সম্পাদক বকুল আহমেদ তালুকদার, নির্বাহী সম্পাদক শান্ত কুমার দাস তালুকদার, স্টাফ রিপোর্টার বিপ্লব রায় ও দৈনিক দিরাই-শাল্লা নামক অনলাইনের নির্বাহী সম্পাদক আনিসুল হক চৌধুরী মুন। পাবেল আহমেদের অভিযোগে উল্লেখ করা হয়-গত ১০ফেব্রুয়ারি স্বাধীনকণ্ঠ নামক অনলাইনে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি ভূয়া সংবাদ প্রকাশ করে। 'শাল্লায় পিআইসি'র সাইনবোর্ডে সিন্ডিকেট: মুখবন্ধ হাওর আন্দোলন নেতার' এই শিরোনামে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ প্রকাশিত করে ভাইরাল করে তারা। সংবাদে উল্লেখ করা হয় পদ-পদবীর নাম বিক্রি করেই ধরে চলছে ধান্দাবাজি ও চাঁদাবাজি। সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলেই ক্ষেপে উঠেন বিভিন্ন কর্মচারীর বিরুদ্ধে। এমনকি বাজার ব্যবসায়ীও ছাড় পায়নি তাদের রোষানল থেকে। একদিকে সাংবাদিকতার দাপট অন্যদিকে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের প্রভাবও পড়ছে ব্যবসায়ীদের উপর। তাও আবার অবৈধভাবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী পিআইসির সদস্যরা যে কোন স্থান থেকে তাদের সাইনবোর্ড বানানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু শাল্লায় ঘটছে ব্যতিক্রমী নীতি। পদ-পদবীর ভয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পিআইসির সাইনবোর্ডের কাজ দিতে বাধ্য হয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। তবে এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত আছেন চোরাপল্লী থেকে বেড়ে উঠা পাভেল আহমেদ। নারকিলা গ্রামের আব্দুর রহমান ছিলেন একজন পেশাদার চোর। উনার ছেলে হচ্ছেন পাভেল আহমেদ। সাইনবোর্ডের বিষয়ে জানতে চাইলে শাল্লা পওর বিভাগের শাখা কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম জানান আমরা সিন্ডিকেটে সাইনবোর্ড দেইনি।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়-পিআইসির সাইনবোর্ডের কাজ করেছেন স্থানীয় কমার্শিয়াল সান এ্যাডের পরিচালক ও শাল্লা প্রতিবন্ধী সমাজকল্যাণ সমিতির সভাপতি চিন্ময় দাস মাটি আর্টের পরিচালক প্রশান্ত তালুকদার। যারা শাল্লা উপজেলার প্রতিষ্ঠিত চিত্রশিল্পী। আমি এই সাইনবোর্ড সংক্রান্ত বিষয়ে কিছুই জানি না জড়িতও নই। অথচ আমাকে সিন্ডিকেট নামক ভূয়া সংবাদে জড়িয়ে যে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে তা নিঃসন্দেহে মানহানিকর ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নীতিমালার পরিপন্থী। আমি কখনো ধান্দাবাজি, চাঁদাবাজি ও নীরহ বাজার ব্যবসায়ীদের উপর প্রভাব খাটাইনি। আমি একজন মূলধারার গণমাধ্যমকর্মী ও সমাজকর্মী। এছাড়াও উক্ত বিবাদীগণ সাংবাদিকতার দাপট দেখিয়ে ২০১৭ সালের সংশোধিত কাবিটা নীতিমালা লঙ্ঘন করে উপজেলার ভান্ডাবিল হাওর উপ প্রকল্পের ১৩নং পিআইসি নেয় ওই কথিত সংবাদকর্মীরা। উক্ত প্রকল্পে ১৫লাখ ৮হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। যা ২০১৭ সালের কাবিটা নীতিমালার পরিপন্থী। ওই খবরও সংবাদ মাধ্যমে ফলাওভাবে প্রচার করে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায়। ২৬ ডিসেম্বর ২০২০ইং আনিসুল হক চৌধুরী মুন নির্বাহী সম্পাদিত দৈনিক দিরাই-শাল্লা নামক ওয়েবপোর্টালে প্রচার করে 'দিরাইয়ে যাত্রীবাহী বাসে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ করে। উক্ত সংবাদটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। সেখানে চলন্ত বাসে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল। এই মিথ্যা সংবাদটি দৈনিক দিরাই-শাল্লা নামক তার অনলাইনে প্রচার করে। ২মার্চ ২০১৮ সালে দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরে প্রকাশিত "শাল্লায় বাঁধ নির্মাণে দাবি" শিরোনামে বিপ্লব রায়ের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই চাঁদাদাবির বিষয়ে শাল্লা থানায় মামলা করেন তৎকালীন পিআইসির সভাপতি আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নীতি রঞ্জন রায়। বিপ্লব রায়ের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাটি শাল্লা থানায় রেকর্ডভূক্ত হয়। ওই মামলার আসামি করা হয় অজ্ঞাত আরো ৩-৪জনকে।
২মার্চ রাতে বিপ্লব রায় কথিত সংবাদকর্মীদের নিয়ে একলক্ষ টাকা চাঁদাদাবী করেছিল নীতি রঞ্জন রায়ের নিকট। ওই সংবাদ দৈনিক সুনামগঞ্জ প্রতিদিনসহ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। বিপ্লব রায় স্বাধীনকণ্ঠ নামক ভুঁইফোড় অনলাইনের স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে জানা গেছে। এছাড়াও সংবাদকর্মীর লেবাসে সাধারণ কৃষকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাদাবি করে আসছে উপরোক্ত বিবাদী ৪জন। চাঁদাবাজির মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিকও হয়ে গেছেন। যা আমার কাছে প্রমাণ আছে। এছাড়া আনিসুল হক চৌধুরী মুন আমাকে এবং আমার সংগঠনকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদটি বিভিন্ন গ্রুপে ও বিভিন্ন মানুষের ফেইসবুক পেইজে লিংক দেয়। পাশাপাশি বিপ্লব রায় এ নিউজটি শেয়ার করে ভাইরাল করে।
পাবেল আহমেদ বিবাদীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য শাল্লা থানা পুলিশ কাছে লিখিত আবেদন করেন। অভিযোগকারী পাবেল আহমেদ আসামীদের বিভিন্ন সময়ের চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন মিথ্যা সংবাদের ফটোকপি ও স্ক্রীনসর্টের ১০ সেট অনলাইন ও পত্রিকার ফটেকপি অভিযোগের সাথে যুক্ত করে থানায় জমা দেন।
এব্যপারে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) নাজমুল হক বলেন, সাংবাদিকদের বিষয়টি দুঃখজনক, অভিযোগ পেয়েছি ততন্দ সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/না/আ
আপনার মতামত লিখুন :