ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ মার্চ, ২০২১, ২ চৈত্র ১৪২৭

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
Janata Bank
Rupalibank

গাংনীর চেংগাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন খেলাধুলা অনুষ্ঠিত


Ekushey Sangbad
গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
১১:০১ এএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
গাংনীর চেংগাড়া গ্রামে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন খেলাধুলা অনুষ্ঠিত

সভ্যতার ক্রমবিকাশ আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐহিত্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা। গ্রামীণ খেলাধুলা নির্মল আনন্দের জীবন্ত উৎস, বিনোদনের খোরাক। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর মধ্যে বেশিরভাগই আজ বিলুপ্তির পথে। তারপরও গ্রামীণ জনপদে এখনও কিছু খেলাধুলা চোখে পড়লেও উৎসাহ-উদ্দীপনা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তাও প্রায় বন্ধ হতে চলেছে। ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন খেলাধুলা ধরে রাখতে শুক্রবার মেহেরপুরের গাংনীর চেংগাড়া গ্রামে দিনব্যাপি এ খেলার আয়োজন করে যুব সমাজ।একসময় গ্রামীণ সমাজের শিশুরা পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে অবসর সময় কাটাত। বিকাল হলেই খোলা মাঠে দল বেঁধে খেলতে যেত। শিশু মানেই দৌড়ঝাঁপ, কোলাহল আর দুরন্তপনা। দুরন্তপনা ছাড়া যেন শৈশব কল্পনাই করা যায় না। অথচ প্রযুক্তির এ যুগে শিশুদের মধ্যে, বিশেষ করে শহরের শিশুদের মধ্যে দুরন্তপনা যেন আর নেই বললেই চলে। ঘরে বসে কম্পিউটার, মোবাইলে গেমস খেলতেই তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের প্রাচীন ক্রীড়া সংস্কৃতি। একসময় গ্রামীণ খেলাধুলা আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য বহন করত। 

বর্তমানে গ্রামীণ খেলা বিলুপ্ত হতে হতে আজ তার অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়াই কঠিন। দেশের বিভিন্ন এলাকার গ্রামাঞ্চলে একসময় প্রায় শতাধিক গ্রামীণ খেলাধুলার প্রচলন ছিল। তার মধ্যে ছেলেরা খেলত হা-ডু-ডু, ডাংগুলি, কাবাডি, লাটিম ঘোরানো, ঘুড়ি উড়ানো, নৌকাবাইচ, লাঠিখেলা, ষাঁড়ের লড়াই, মোরগ লড়াই, সহ আরও অনেক খেলা। 

স্কুলপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা স্কুলের টিফিন সময়ে নানা ধরনের গ্রামীণ খেলা নিয়ে মেতে থাকত। বর্তমানে শহরাঞ্চলে তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও খোলা জায়গা বা খেলার মাঠের স্বল্পতার কারণে এসব খেলা আর তেমন চোখে পড়ে না।এসব খেলা বাঁচাতে আলাদা ফেডারেশনের বিকল্প কিছু নাই। জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে ফাকা জায়গা সংকুচিত হওয়া। স্মার্ট ফোন,ল্যাপটপ ও ডেস্কটপে ভিডিও গেইমস খেলার কারণে এসব খেলা বিলুপ্তির পথে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া প্রেমীরা। বর্তমানে গ্রামীন খেলাধুলা সম্পর্কে ধারণা আছে এমন শিশুর সংখ্যা নেই বললেই চলে। খেলা দেখতে আসা চেংগাড়া গ্রামের শিশু মারিয়া জানায়,তার এই গ্রামীন খেলাধুলা দেখতে খুব ভালো লাগে। প্রতিবছর এমন আয়োজন করলে তাদের ভালো লাগবে।আয়োজক কমিটির সভাপতি জান মোহাম্মদ মিন্টু জানান, গ্রামীন খেলা ধুলাকে ধরে রাখার জন্য এই খেলার আয়োজন। এই খেলা প্রতিবছরই আয়োজন করি দুর দুরান্ত থেকেই এখা উপভোগ করতে আসে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান,আজকের এই খেলাধুলার মাধ্যমে হারিয়া যাওয়া খেলাধুলা আবার গ্রামীন জীবনে ফিরে আসবে। এই খেলা দেখে গ্রামের মানুষ যে আনন্দ উপভোগ করে বিশ্বকাপ খেলা দেখেও হইতো এত আনন্দ ভোপভোগ করেনা। গ্রামীন জনপদের কর্মমূখী মানুষকে একটু বিনোদন দিয়েই এই আয়োজন।

ষোলটাকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মনি বলেন,চেংগাড়া সহ এলাকার মানুষ অত্যান্ত ভালো মনের ও শান্তি প্রিয় মানুষ। আয়োজন বৃন্দ এ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের জন্য হারিয়ে বিলুপ্তি প্রায় গ্রামীন খেলা আয়োজন করেছে এজন্য তাদের কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। পাশাপাশি আগামীতে এ ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করলে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এই খেলা প্রতিটা অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে সরকারীভাবে পৃষ্টপোষকতার দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন,চেংগাড়া গ্রামের যুবসমাজ মাদক থেকে দুরে থেকে গ্রামীন খেলাধুলা আয়োজন করেছে এটা সকলের জন্য অনুকরনীয় হয়ে থাকবে।মেহেরপুর জেলা ক্রীড়া অফিসার আরিফ হোসেন জানান,গ্রামীন খেলাধুলাকে ধরে রাখতে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে। 

একুশে সংবাদ/ হা.জা /এস