শনিবার রাজশাহী শহরস্থ নানকিং দরবার হলে ওয়াটারএইড ও বাংলেদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের যৌথ আয়োজনে এ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, এমপি। বাংলাদেশের রেলস্টেশনসমূহে যাত্রী সেবা ও ওয়াশ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিদ্যমান উত্তম চর্চাগুলোকে চিহ্নিত করে পারস্পারিক শিখন কর্মসূচীর মাধ্যমে সেগুলোকে কিভাবে অন্যান্য স্টেশনগুলোতেও ছড়িয়ে দেয়া যায় তার কলাকৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতেই এ কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়। এখানে সংশ্লিষ্ট স্টেশনের প্রতিনিধিগণ তাঁদের বিদ্যমান উত্তম চর্চাগুলো তুলে ধরেন এবং সেগুলোতে থেকে ভোটের মাধ্যমে মোট ৩ টি উত্তম চর্চাকে অন্য স্টেশনগুলোতেও ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এ কর্মশালায় রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের ২৫ টি নির্বাচিত রেলওয়ে স্টেশনের ৭০ জন প্রতিনিধিসহ বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় পর্যায়ের মোট ১০০ জন প্রতিনিধি এবং কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কর্মশালার সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, ‘’বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি বৃহৎ পরিবার। এ পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের সুযোগ সুবিধা ও সম্ভাবনা নিয়ে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশেষভাবে অবগত রয়েছেন। এর আধুনিকায়নের জন্য অতিরিক্ত লোকবল নিয়োগ, তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান, কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণসহ বেশ কিছু পরিকল্পনা ইতোমধ্যেই বস্তবায়নাধীন রয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, “ভাল কিছু করতে চাইলে, কেবল বাজেট নয়, প্রয়োজন সদ্বিচ্ছা আর ইতিবাচক মানসিকতা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক ইচ্ছা আর রেলপথ মন্ত্রী মহোদয়ের সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ রেলপথ এখন তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য তথা সাশ্রয়ী, নিরাপদ, আরামদায়ক এবং আধুনিক সেবাখাত হিসাবে গড়ে উঠতে চলেছে।
কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান বলেন, “প্রতিদিন নারী, প্রবীণ, শিশু এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ বিপুল সংখ্যক যাত্রী ট্রেন ব্যবহার করেন। কিন্তু ট্রেনে তাদের উপযোগী নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন সেবা নিশ্চিত করা এক ধরণের চ্যালেঞ্জ। তবে একই সাথে আমরা এটিও বিশ্বাস করি যে, ষ্টেশনগুলোতে রেলওয়ের কর্মী, যাত্রী এবং পরিচালকদের মাঝে বেশ কিছু ভাল কাজের উদাহারণ রয়েছে যা আমরা ইতিবাচকভাবে খুঁজে বের করে অন্যান্য স্টেশনেও চালু করতে পারি।
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের রেল স্টেশনগুলোতে পারস্পারিক শিখন (এইচএলপি) সম্প্রসারেেণর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে পেরে আমরা সত্যি আনন্দিত। এ অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা পাবলিক টয়লেটসহ স্টেশনগুলোতে একটি টেকসই ওয়াশ ব্যবস্থাপনার মডেল উদ্ভাবনসহ সেগুলোর একধরনের সাশ্রয়ী প্রযুক্তিগত সমাধানের লক্ষ্যেও কাজ করতে পারবো। এমনকি অদূর ভবিষ্যতে ওয়াটারএইডের পক্ষ থেকে রেলওয়ে টয়লেটগুলোর মানববর্জ্য নিরাপদ অপসারণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি পরিবেশসম্মত উপযুক্ত পদ্ধতি উদ্ভাবনকল্পে প্রয়োজনীয় গবেষণা পরিচালনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ওয়াটারএইড বাংলাদেশ এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে স্বাক্ষরিত তিন বছর মেয়াদি একটি সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) অধীনে ওয়াটারএইড বাংলাদেশ প্রাথমিকভাবে ঢাকার কমলাপুর, বিমানবন্দর স্টেশনসহ মোট তিনটি স্টেশনে পরিবেশবান্ধব ও আধুনিক পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও সংস্কারসহ স্টেশনগুলোতে পারস্পারিক শিখন সম্প্রসারণের মাধ্যমে যাত্রী সেবা ও ওয়াশ রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার মানোন্নয়নে বাংলাদেশ রেলওয়েকে কারিগরি সহায়তা প্রদান করবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদারের সভাপতিত্বে এ কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান, পলিসি এডভোকেসি ডাইরেক্টর পার্থ হেফাজ সেখ, পলিসি এডভাইজার মোঃ সফিকুল ইসলাম (অবঃ অতিঃ সচিব) এবং সিনিয়র ডিসেন্ট্রালাইজেশন ওয়াশ স্পেশালিস্ট জনাব শান্তনু লাহিড়ী প্রমূখ।
একুশে সংবাদ/আ
আপনার মতামত লিখুন :