নেত্রকোনার মদন উপজেলার বনতিয়শ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মালামাল বিক্রি করে টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বিরুদ্ধে।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, কোন বিদ্যালয় বা সরকারি স্বীকৃত কোন প্রতিষ্ঠান মালামাল বিক্রি করতে গেলে উপজেলা প্রশাসন টেন্ডারের মাধ্যমে মালামাল বিক্রি করা ও বিকৃত মালামালের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া বিধান রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায় মদন উপজেলার বনতিয়শ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘরের ছাউনির৭২ পিস টিন ৪ টি কাঠের দরজা ও ৪০টি বেঞ্চ সরকারি নিয়ম নীতি অনুসরণ না করে বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শাহিন সুলতানা ও সভাপতি খসরু নোমান। এছাড়াও স্কুলের প্রাক-প্রাথমিকের বিভিন্ন খেলার সামগ্রী স্কুল সভাপতি তার নিজ বাড়িতে দখলে রেখেছেন
রবিবার (১৪ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বনতিয়শ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের চালের ট্রিন চারটি কাঠের দরজা ও চল্লিশটি বেঞ্চ সরকারি নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহিনা সুলতানা ও সভাপতি খসরু রোমান টাকা আত্মসাৎ করে নিয়েছে বলে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সহ-সভাপতি লেহাজ উদ্দিনবিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ।
বনতিয়শ্রী গ্রামের তহির উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন, আলী আকবর, জোসনা বেগম ও সাইফুল ইসলামসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানান, স্কুলের বিভিন্ন পরিত্যক্ত সরঞ্জামাদি বিশেষ করে স্কুল ভবনের ছাউনির টিন, ৪ টি কাঠের দরজা বেঞ্চ বিক্রি করেও টাকা আত্মসাৎ করেছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক। এছাড়াও তারা আরো অভিযোগ করেন বনতিয়শ্রী গ্রামের একটি মাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও ওই স্কুলে নামের কোন সাইনবোর্ড অথবা স্কুলের দেয়ালে স্কুলের নাম লেখা নেই। তারা আরও অভিযোগের করে বলেন, এর আগেও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাহিন সুলতানাকে অপসারণ করার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর গ্রামের অনেক মানুষ গণস্বাক্ষর করে অভিযোগ তৈরি করেছিল। প্রধান শিক্ষিকা ক্ষমতাবান হওয়ায় বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় লোকদেরকে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করে তা নামেমাত্র সমাধানের নাটক করে আটকে দেন। এলাকার কোন মানুষকে তোয়াক্কা না করেই তার নিজের মত করে কার্য সম্পাদন করে আসছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্কুলের শিক্ষক বলেন, স্কুলের সভাপতি খসরু নোমান ও প্রধান শিক্ষিকা শাহিন সুলতানা দীর্ঘদিন যাবৎ আত্মসাৎ করে আসছেন। স্কুলের ছাওনির ৭২ পিস ঢেউটিন ৪ টি কাঠের দরজা ও চল্লিশটি বেঞ্চ বিক্রি করেছেন। যার কোন হিসাব নিকাশের হদিস পাওয়া যায়নি।
বনতিয়শ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি খসরু নোমান জানান, অভিযোগ করেছে করে থাকলে কি আর করা যাবে এত দূর এগিয়েছে এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি খোঁজ খবর নিয়ে দেখি
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বনতিয়শ্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষিকা শাহিন সুলতানা জানান, অভিযোগ করে থাকলে করেছে। আমার যা হবার হবে সমস্যা নেই। কিন্তু আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আছে তদন্ত করে দেখবেন। আমি এসব কিছু বিক্রি করিনি।
মদন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন জানান, স্কুলের মালামাল বিক্রি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের কোনো মালামাল বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একুশেসংবাদ/সাকের/অমৃ
আপনার মতামত লিখুন :